Ajker Patrika

গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনে কাজ করছে ফ্রান্স–ব্রিটেন, আগ্রহী যেসব দেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ১০ অক্টোবর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত ভবনগুলোর পাশে শিশু কোলে এক নারী অন্যান্য ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন। ছবি: এএফপি
গত ১০ অক্টোবর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত ভবনগুলোর পাশে শিশু কোলে এক নারী অন্যান্য ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন। ছবি: এএফপি

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করছে ফ্রান্স ও ব্রিটেন। ফ্রান্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে প্যারিস ও লন্ডন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করার কাজ করছে। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য হবে—গাজায় ভবিষ্যতে একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনের ভিত্তি তৈরি করা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নাজুক যুদ্ধবিরতি টিকে থাকায় এখন গাজায় নিরাপত্তা স্থিতিশীল রাখতে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুই জ্যেষ্ঠ মার্কিন উপদেষ্টা।

প্যারিসে সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র পাসকাল কঁফাভরো বলেন, এমন একটি বাহিনীর জন্য জাতিসংঘের ম্যান্ডেট থাকা জরুরি। এতে আন্তর্জাতিক আইনি ভিত্তি শক্তিশালী হবে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে বাহিনীতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও সহজ হবে।

তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স তার অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এমন একটি আন্তর্জাতিক মিশন গঠনের বিষয়ে। এই মিশনকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব গৃহীত হওয়া দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা রয়েছে।’

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনও বহু দেশের সঙ্গে কথা বলছে যারা এই আন্তর্জাতিক বাহিনীতে অংশ নিতে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি সম্ভাব্য প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করছি, যা এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে।’

গত ১০ অক্টোবর প্যারিসে ইউরোপীয় ও আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ফ্রান্স। সেখানে গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনের নানা দিক, বিশেষ করে কীভাবে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।

কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, এই স্থিতিশীলতা বাহিনী জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক শান্তিরক্ষী বাহিনী হবে না এবং জাতিসংঘ এর জন্য অর্থায়নও করবে না। বরং নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব হাইতির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠানোর মতোই হতে পারে।

সে ক্ষেত্রে প্রস্তাবে মিশনের উদ্দেশ্য ও অনুমোদন নির্দিষ্ট করা হবে এবং অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে ‘সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে’ বলা হবে—যার অর্থ প্রয়োজনে বলপ্রয়োগও করা যেতে পারে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মঙ্গলবার পার্লামেন্টে বলেন, ‘স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনে কিছুটা সময় লাগবে। এর কার্যপরিধি এখনো তৈরি হচ্ছে। বাহিনী গঠনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব থাকবে—অন্তত আমি তাই আশা করি—তবে বিস্তৃত কাঠামো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

মার্কিন উপদেষ্টারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে তাদের মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, কাতার ও আজারবাইজান। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই ডজন সেনা ওই অঞ্চলে অবস্থান করছে, যারা ‘সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানের’ ভূমিকা পালন করছে বলে জানা গেছে।

ইতালি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তারা এই বাহিনীতে অংশ নিতে আগ্রহী। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো গত ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বলেন, যদি জাতিসংঘের প্রস্তাব গৃহীত হয়, তবে ইন্দোনেশিয়া গাজায় শান্তি স্থাপনে ২০ হাজার বা তারও বেশি সেনা পাঠাতে প্রস্তুত।

এদিকে, ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গত মাসে বিপুল সমর্থনে একটি ঘোষণাপত্র অনুমোদন করেছে, যা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানায়। এতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা মিশন গঠনেরও সমর্থন জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাদের’ দাবি মেনে সনদের অঙ্গীকারনামায় জরুরি সংশোধন আনল কমিশন

অঙ্গীকারনামায় সংশোধনীর পরও বিক্ষোভ, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ রণক্ষেত্র

দুই দাবিতে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মঞ্চে অবস্থান ‘জুলাই যোদ্ধাদের’

জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা

জুলাই জাতীয় সনদের ৫ নম্বর দফা সংশোধনের যে প্রস্তাব দিলেন সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত