Ajker Patrika

ইরানের বিজয়ের কথা শুনেই রেজা পাহলভি হাসপাতালে

অনলাইন ডেস্ক
রেজা পাহলভি। ছবি: সংগৃহীত
রেজা পাহলভি। ছবি: সংগৃহীত

অভূতপূর্ব এক ছবি-তেহরানের ইনকিলাব স্কয়ার। বারো দিন শেষে যুদ্ধবিরতির পর ইরানিদের উচ্ছাস-আনন্দগাথা, শোকগাথা প্রকাশের মিলনমেলার সাক্ষী হলো তেহরানের প্রাণকেন্দ্রে থাকা ঐতিহাসিক ইনকিলাব স্কয়ার। খামেনি সরকারের সেই বিজয় সুখের শক সইতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন রেজা পাহলভি।

নেপথ্যে সুখের স্বপ্ন দেখা আমেরিকা প্রবাসী রেজা পাহলভির মেয়ে জানিয়েছে, তার বাবা গত কয়েক ঘণ্টা আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। যখন যুদ্ধবিরতির খবর তার কানে গেছে তখনই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন।

আজকে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে আগ্রাসন তার পেছনে রয়েছেন রেজা পাহলভি। যে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ হলো তার পেছনে তিনি আছেন। ইরানের শাসনব্যবস্থাকে বদলে দিয়ে আবার সেই পাহলভি শাসনে ফিরিয়ে নেওয়ার অলীক স্বপ্ন দেখছেন এই পাহলভি রাজপুত্র! কিন্তু সে স্বপ্নে গুড়ে বালি। ইরানের মানুষের কাছে তিনি এবং তার পূর্বসূরি খলনায়ক। ইরানের মানুষকে হত্যা করে এ দেশের মাটিতে তাদের ঠাঁই হবে না সে কথা ইরানি জাতির আজকের ছবি বলে দেয়।

ইরানের সামরিক-বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অপরাধের প্রতিশোধ গ্রহণকারী ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করতে তেহরানের ইনকিলাব স্কয়ারে জনতার ঢল নামে। হাজার হাজার মানুষ হাতে পতাকা, ইসলামি বিপ্লবের এবং শহীদদের ছবি নিয়ে বিজয় উদযাপনের খোলা ময়দানে হাজির হয়েছেন। নারী-পুরুষ ইরানের বিজয়ের স্লোগান দিয়েছেন।

ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক, ধ্বংস হোক এ স্লোগানও তাদের কণ্ঠে। কারণ ওই আগ্রাসী দেশ দুটি তাদের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে আসছে কয়েক যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে এবং নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরাচ্ছে। তেহরানবাসী এ উদযাপনে তাদের শিশু সন্তানটিকে ঘরে রেখে আসেনি। কাঁধে শিশু সন্তান হাতে শহীদদের ছবি কিংবা ইরানের পতাকা-কী সে অভূতপূর্ব দৃশ্য! এ ছবি মনে করিয়ে দেয় তারা বিভক্ত নয়-এক এবং একাত্মতা। ইরানি জাতির এই একটি বিষয় দেখেছি সব সময়-ছোট্ট শিশুটিও বিপ্লবী। তারা জানে তাদের দেশমাকে, মাটিকে এবং সংস্কৃতিকে কীভাবে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে হয়। এ শিক্ষা বিশ্বের বহু দেশের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।

১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের সর্বস্তরের মানুষের এ বিজয় উদযাপন ভুলিয়ে দেয় বিভীষিকাময় বারো দিনের কষ্টের কথা; ভুলিয়ে দেয় প্রতি মুহূর্তের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা। বারো দিন কেন, যদি এ যুদ্ধ বারো বছরও চলে কিংবা চলত তাতেও ইরানি জাতি বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত হতো না, পেছন ফিরে তাকাত না। সর্বস্তরের ইরানি জনগণের মুখের ইস্পাত কঠিন ছবিই সে কথা বলে দেয়। তারা নিজের শরীরের রক্তের শেষবিন্দু দিয়ে হলেও মহান ইরানকে রক্ষা করত। এ জাতির অতীত ইতিহাসে এমন নজির ঢের আছে।

শুধু ইনকিলাব স্কয়ার নয়; তেহরানের আরও অনেক স্থানসহ ইরানজুড়ে তারা বিজয় মিছিল করেছে, তাদের সংহতির জানান দিয়েছে। তাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা পোষণ করেছে।

বারো দিনের যুদ্ধের বিজয় উদযাপন ইরানের ভ‚খণ্ড পেরিয়ে মধ্যপ্রাচের আরও অনেক দেশ যারা দখলদার ইসরাইলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। রক্ত ও সম্পদ বিলিয়ে দিচ্ছে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করতে গিয়ে। সেসব দেশেও বিজয় উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। লেবাননের রাজধানী বৈরুতের উপকণ্ঠ দাহিয়েতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ছবি দিয়ে বিশাল ব্যানার লাগানো হয়েছে।

গাজা, ইয়েমেনসহ বিশ্বের যারাই ইরানকে ভালোবাসেন তারা খুশিতে কেউ বা আনন্দ অশ্রু ঝরিয়েছেন, কেউ বা আনন্দ মিছিলে যোগ দিয়েছেন কেউ বা তার খুশির বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে ইরান যেন এক ফিনিস। সাম্রাজ্যবাদ, দখলদার শক্তি, অন্যায়, অত্যাচার, অনাচার, সন্ত্রাস ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে একমাত্র ইরান একা দাঁড়িয়েছে বুক চিতিয়ে হয় তাদের হৃদয়ে কাঁপন ধরাতে, পরাজিত কিংবা পরাভ‚ত করতে না হয় শহীদ হতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত