Ajker Patrika

সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে সুইডেন-ইরানি নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান

সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে সুইডেন-ইরানি নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান

সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে সুইডেন-ইরানি নাগরিক হাবিব চাবের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। ২০১৮ সালে ইরানে মিলিটারি প্যারেডে সন্ত্রাসী হামলার মূল হোতা হাবিব ছিলেন বলে দাবি ইরানের। 

হাবিব চাব ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুজেস্তান প্রদেশের আদিবাসী আরবদের স্বাধীনতার জন্য একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সুইডেনে নির্বাসিত জীবন-যাপন করতেন। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্ক থেকে ইরানি গুপ্তচরেরা তাঁকে গ্রেপ্তার করে। 

সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম বলেছেন, তার সরকার ইরানকে চাবের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করতে অনুরোধ করেছিল। মৃত্যুদণ্ড একটি অমানবিক এবং অমার্জনীয় শাস্তি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশের মতো সুইডেনও যেকোনো পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিরোধিতা করে। 

ইরানের বিচার বিভাগ হাবিবকে হারাকাত আল-নিদাল বা আহভাজের মুক্তির জন্য আরব সংগ্রাম আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে। ইরানের দাবি, ২০১৮ সালে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে হামলার পেছনে দায়ী ছিল হারাকাত আল-নিদাল। 

তেল-সমৃদ্ধ প্রদেশটিতে একটি বড় আরব সংখ্যালঘু রয়েছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে তেহরান শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। 

আহভাজ শহরে ২০১৮ সালে একটি সামরিক কুচকাওয়াজে ইসলামিক রিপাবলিক ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সৈন্যদের ওপর গুলি চালায় একদল বন্দুকধারী। এতে সৈন্যসহ ২৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। 

ইস্তাম্বুলের এক নারী নানা প্রলোভন দিয়ে হাবিবকে তুরস্কে ডেকেছিলেন। ওই নারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেই তুরস্কে অবস্থানরত ইরানি গুপ্তচরেরা হাবিবকে আটক করে। এরপর তুরস্কে অবস্থানরত ইরানি এক শীর্ষ অপরাধী তার চ্যানেলে হাবিবকে ইরানে পাঠায়। 

এদিকে ইরান কর্তৃপক্ষ কখনোই জানায়নি হাবিবকে কীভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের হামলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন একবার একটি প্রতিবেদন করেছিল। 

ইরানের প্রসিকিউটরেরা বলেছেন, হাবিব ২০০৫ সাল থেকে ইসরায়েলের মোসাদ এবং সুইডেনের সাপো গুপ্তচর সংস্থার অধীনে কাজ করেছে। এ সময়কালে তিনি হামলায় জড়িত ছিলেন। 

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, এই মৃত্যুদণ্ড এক বর্বর শাসনামলের নির্মম ও কাপুরুষতাপূর্ণ কাজ। 

ইরান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বৈত নাগরিকত্ব বা বিদেশি স্থায়ী বসবাসরত কয়েক ডজন ইরানিকে গ্রেপ্তার করেছে। বেশির ভাগই গুপ্তচরবৃত্তি এবং জাতীয় নিরাপত্তার অভিযোগে। 

ইরানের বিচার বিভাগ বলেছে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এ বছর আরও দুজন দ্বৈত-নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারিতে ইরান ব্রিটিশ-ইরানি নাগরিক আলী রেজা আকবরীকে এবং এপ্রিলে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট জার্মান-ইরানি জামশিদ শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। যা জামশিদ অস্বীকার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত