Ajker Patrika

পোপের মৃত্যুতে শোক জানাল ইসরায়েল, পরে মুছেও ফেলল

অনলাইন ডেস্ক
পোপ ফ্রান্সিস। ছবি: সংগৃহীত
পোপ ফ্রান্সিস। ছবি: সংগৃহীত

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে সামাজিক মাধ্যমে ইসরায়েলের সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে পরে তা মুছে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও জল্পনা। যদিও ইসরায়েল সরকার এই শোকবার্তা মুছে ফেলার কোনো আনুষ্ঠানিক কারণ জানায়নি।

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট দাবি করেছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সমালোচনা করায় পোপের প্রতি অসন্তোষ থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার, ইসরায়েলের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট (@Israel) থেকে একটি বার্তা পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা ছিল, ‘শান্তিতে বিশ্রাম নিন, পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর স্মৃতি আশীর্বাদধন্য হোক।’ এর সঙ্গে জেরুজালেমের পশ্চিম দেয়ালে (ওয়েস্টার্ন ওয়াল) পোপের সফরের একটি ছবিও যুক্ত করা হয়।

জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, পোপ ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিছু বিবৃতি’ দিয়েছিলেন এবং সামাজিক মাধ্যমে এই শোকবার্তা ‘ভুলবশত’ প্রকাশ করা হয়েছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে মন্তব্য চাওয়া হয়েছিল। তবে তারা সাড়া দেয়নি।

এর আগে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এবং লেবাননের রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন হিজবুল্লাহ। দুই সংগঠনই তাঁর আন্তধর্মীয় সংলাপ ও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষার প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছে।

৮৮ বছর বয়সে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস গত নভেম্বরে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, পোপের এই মন্তব্য ছিল ইসরায়েলের প্রতি তাঁর অন্যতম কঠোর সমালোচনা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে পোপ গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছিলেন। রোমের প্রধান ইহুদি রাব্বি তাঁর এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন। রাব্বি পোপের এই মন্তব্যকে ‘নির্বাচিত ক্ষোভ’ বলে আখ্যায়িত করেন।

ইসরায়েল বরাবর গাজা অভিযানে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, শুধু হামাস এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।

উগ্র ডানপন্থী ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদী দলগুলোর জোটের নেতৃত্ব দেওয়া ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পোপের মৃত্যুতে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ সোমবার পবিত্র ভূমি এবং বিশ্বজুড়ে খ্রিষ্টানদের প্রতি শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। পোপ ফ্রান্সিসকে ‘গভীর বিশ্বাস এবং সীমাহীন করুণার মানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।

শত শত বছরের শত্রুতার পর, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ক্যাথলিক চার্চ এবং ইহুদি ধর্মের মধ্যে সম্পর্কের বেশ উন্নতি হয়েছে। পোপ ফ্রান্সিস তাঁর ১২ বছরের নেতৃত্বকালে সাধারণত কোনো সংঘাতে পক্ষ নেওয়া থেকে সতর্ক ছিলেন এবং তিনি ইহুদি বিদ্বেষী গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের নিন্দা করেছিলেন। একই সঙ্গে, যুদ্ধের সময় তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যায় গাজার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন।

২০১৪ সালে পোপ ফ্রান্সিস ইহুদি ধর্মের পবিত্রতম প্রার্থনাস্থল জেরুজালেমের পশ্চিম প্রাচীর পরিদর্শন করেন এবং জেরুজালেম ও বেথলেহেমকে বিভক্ত করা ইসরায়েলের তৈরি একটি প্রাচীরের অংশেও প্রার্থনা করেন।

এই বিতর্কিত শোকবার্তা এবং তা মুছে ফেলার ঘটনা ইসরায়েল ও ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে সম্পর্কের জটিলতাকেই সামনে নিয়ে এসেছে। পোপের মৃত্যুর পর ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্বজুড়ে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

চীনা পণ্যে শুল্ক ‘উল্লেখযোগ্য’ পরিমাণে কমিয়ে সুখে বসবাসের ঘোষণা ট্রাম্পের

২৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪১৪ কোটি টাকার অনিয়ম

কাশ্মীরে হামলায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ না হলে মানবজাতির সামনে ‘চরম অন্ধকার’, ভ্যান্সের হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত