Ajker Patrika

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাসহ যেভাবে প্রতিশোধের কথা ভাবছে ইসরায়েল 

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ইসরায়েলজুড়ে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইরানে পারমাণবিক স্থাপনা ও তেল কূপের মতো কৌশলগত স্থাপনায় হামলার কথা ভাবছে তেল আবিব। ইসরায়েলি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া, ইরানি নেতৃত্বকে গুপ্তহত্যা করা এবং দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হামলার কথাও ভেবেছে ইসরায়েল।

ইরানের তেল কূপগুলোতে হামলার বিষয়টি ইরানের অর্থনীতিতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে, গত বছরের অক্টোবরের ৭ তারিখ থেকে শুরু হওয়া মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা আরও উসকে উঠতে পারে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল বুধবার দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তেল আবিবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হেডকোয়ার্টারে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইহুদি নববর্ষ রশ হাসানাহের ছুটি শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইসরায়েল থেকে ইরানে আক্রমণের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত, আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি, মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া এবং গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রনেন বার উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নেতানিয়াহুর সামরিক সহযোগী মেজর জেনারেল রনেন গফম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর চিফ অব স্টাফ জাচি ব্রাভারম্যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি একটি সূত্র এক্সিওসকে জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে ইরানের হামলা পর জেরুসালেমে একটি ভূগর্ভস্থ বাংকারে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে, ইসরায়েল ইরানি হামলার জবাব সামরিকভাবে উপায়েই দেবে। তবে এটি কীভাবে এই জবাব দেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত সেই বৈঠকে নেওয়া হয়নি।

মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে এই হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। আর এ কারণেই ইসরায়েল এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি নির্দিষ্টভাবে। গতকাল বুধবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর টেলিফোনে কথা বলার কথা ছিল।

israel-2এর আগে, গত এপ্রিলে ইরান ইসরায়েলে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। এবার, গত মঙ্গলবার দেশটি ১৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি, তারা অধিকাংশই আটকে দিয়েছে। তবে ইরান দাবি করেছে, তাদের ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। সেই হামলার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইরান বড় ভুল করেছে, তাদের চড়া মূল্য চোকাতে হবে।’

তবে ইরান ইসরায়েলি হামলার জবাব কীভাবে দেবে সেটিও বিবেচনা করছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। তাদের আশঙ্কা, ইসরায়েলকে ইরানে গুরুতর আঘাত হানলে, ইরান নিজেই একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু করতে পারে। এ বিষয়ে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কীভাবে আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জানাবে সে বিষয়ে আমাদের একটি বড় প্রশ্ন আছে। তবে আমরা সম্ভাবনাটি বিবেচনায় নিয়েছি যে, তারা পরিপূর্ণভাবে জড়িয়ে যাবে এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের খেলা হবে।’

ইসরায়েলি রাজনীতিবিদেরাও ইরানকে কড়া জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ের লাপিদ বুধবার সকালে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রতিক্রিয়া অবশ্যই কঠোর হতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘একটি সামরিক প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি, আমাদের অবশ্যই একটি সামগ্রিক আঞ্চলিক রাজনৈতিক কৌশলও তৈরি করতে হবে। যা সামরিক সাফল্যকে কৌশলগত সাফল্যে পরিবর্তন করবে।’

iran 3ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত তো একধাপ এগিয়ে স্পষ্টভাবে ইসরায়েলকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেল স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমাদের ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে, আমাদের ইরানের শক্তি কেন্দ্রগুলোতে আক্রমণ করতে হবে এবং আমাদের সরকারের উচিত এখনই আক্রমণ করা।’

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গতকাল বুধবার ইরানের ওপর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া জানানো ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে সমর্থন করার ইঙ্গিত দিয়েছে। হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘এই হামলার পরিণতি হবে গুরুতর’ এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছে, ‘এমনটা করতে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করবে।’ ইসরায়েল কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, এটি সক্রিয় আলোচনার একটি বিষয় এবং তেহরানের পরিণতি কী হয় তা দেখতে হবে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বুধবার পশ্চিমা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়াকে সমর্থন করলেও, তারা বিশ্বাস করে যে এই জাতীয় প্রতিক্রিয়া সীমিত হওয়া উচিত এবং সংঘাত বৃদ্ধির পরিণতি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন দেশটি। তবে মার্কিন কংগ্রেসে বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির এবং ইসরায়েলপন্থী ডেমোক্র্যাটরা এরই মধ্যে, হোয়াইট হাউসকে কঠোর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত