Ajker Patrika

আক্রমণ ও প্রতিহতের সক্ষমতা কমে আসছে দুই দেশেরই

অনলাইন ডেস্ক
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একটি অংশ। ছবি: এএফপি
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একটি অংশ। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতে হামলার তুলনামূলক একটি চিত্র তুলে ধরেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্রিটিক্যাল থ্রেটস প্রজেক্ট এবং ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (সিটিপি-আইএসডব্লিউ)। তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ইরান ইসরায়েলে যে পরিমাণ হামলা করেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইরানে তার পাঁচ গুন বিমান হামলা চালিয়েছে।

সিটিপি-আইএসডব্লিউ জানিয়েছে, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলা শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর ১৯৭টি নিশ্চিত বা রিপোর্টকৃত বিমান হামলার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর বিপরীতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে মাত্র ৩৯টি ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা প্রতিহত করার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, সাম্প্রতিক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সংখ্যা ‘উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস’ পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র এবং সংরক্ষণাগার ধ্বংস হওয়াকে দায়ী করা হয়েছে।

অপরপক্ষে ইসরায়েলেরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা ক্রমেই কমে আসছে। এতে করে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার ক্ষেত্রে ইসরায়েল দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলে প্রায় ৯টি হামলার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হামলাটি ছিল গতকাল মঙ্গলবার ভোরের দিকে, যখন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র একযোগে ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। যদিও এর অধিকাংশই ধ্বংস করা হয়েছে, তবে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং তাদের ধ্বংসাবশেষ হার্জলিয়া নামক একটি এলাকায় আঘাত হেনেছে। এই এলাকায় সামরিক ঘাঁটি বা সামরিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে বলে মনে করছে ইরান।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা ইরানের প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থান ধ্বংস করেছে। তাদের বিশ্বাস, ইরানিরা এখন তাদের ইচ্ছামতো বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারবে না।

ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, শনিবারের পর থেকে ইরানের নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা কমেছে। শনিবার রাত থেকে রোববার পর্যন্ত দুই শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল ইরান; কিন্তু রোববার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৬৫টি এবং সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ৩০টি। এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সক্ষমতা ক্রমে কমছে।

তবে, কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতি ঘটাচ্ছে। সর্বশেষ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে শুক্রবার থেকে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মোট ২৪ জন ইসরায়েলি নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছে।

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অ্যারো ইন্টারসেপ্টরের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে করে ইরান থেকে আসা দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার ইসরায়েলের সক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন কয়েক মাস ধরে এই সক্ষমতা সমস্যার বিষয়ে অবগত ছিল এবং ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে স্থল, সমুদ্র এবং আকাশে থাকা সিস্টেম দিয়ে শক্তিশালী করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘গোলাবারুদ সম্পর্কিত বিষয়ে’ মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত