Ajker Patrika

হিন্দি বিতর্কে দুই দশক পর এক মঞ্চে উদ্ধব-রাজ

অনলাইন ডেস্ক
২০০৫ সালের পর এই প্রথম এক মঞ্চে উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ ঠাকরে। ছবি: সংগৃহীত
২০০৫ সালের পর এই প্রথম এক মঞ্চে উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ ঠাকরে। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় দীর্ঘ দুই দশক ধরে রাজনৈতিক দূরত্ব বজায় রাখা দুই চাচাতো ভাই উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ ঠাকরে অবশেষে একসঙ্গে এলেন মুম্বাইয়ের এক জনসভায়। শুক্রবার আয়োজিত ‘আওয়াজ মারাঠিচা’ (মারাঠিদের কণ্ঠস্বর) শীর্ষক এই সমাবেশে শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) ও মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) যৌথভাবে অংশ নেয়। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালের পর এই প্রথম তাঁরা এক মঞ্চ ভাগ করে নিলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে মহারাষ্ট্রের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে বাধ্যতামূলক করার যে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয় মহাযুতি জোট সরকার, তাকে কেন্দ্র করে এই দুই ঠাকরের পুনর্মিলন ঘটেছে। রাজ্য সরকার পরে সেই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়, যা উদ্ধব-রাজ জোটের কাছে ‘মারাঠি গর্বের জয়’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ভাষণে রাজ ঠাকরে বলেন, ‘বাল ঠাকরে যা পারেননি, দেবেন্দ্র ফাডনবিস তা করে দেখিয়েছেন— আমাদের এক করেছেন।’ তিনি বিরোধীদের হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘তোমাদের ক্ষমতা বিধান ভবনে, আর আমাদের ক্ষমতা রাস্তায়।’ রাজ প্রশ্ন তোলেন, ‘তিন ভাষার এই ফর্মুলা কোথা থেকে এল? এটা তো কেন্দ্রীয় সরকারের চাপিয়ে দেওয়া। সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে ইংরেজিতে চলছে, আর শুধু মহারাষ্ট্রেই কেন হিন্দি বাধ্যতামূলক?’

রাজ স্পষ্ট করে বলেন, ‘হিন্দি মাত্র ২০০ বছরের পুরোনো ভাষা। মুম্বাই বা মহারাষ্ট্রে হাত দিলে ফল ভোগ করতে হবে। মারাঠি ভাষার বিষয়ে কোনো আপস নয়। কেউ এই ভাষা নিয়ে নাটক করলে গালে এক থাপ্পড় দিতে হবে। কিন্তু মনে রাখবেন, অযথা কাউকে মারধর করা উচিত নয়।’

এই জনসভা ছিল ২০০৫ সালের মালভন উপনির্বাচনের পর দুই ভাইয়ের প্রথম একসঙ্গে জনসমক্ষে আসা। তখনো বাল ঠাকরের নেতৃত্বে শিবসেনা ছিল ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু সেই নির্বাচনের কিছুদিন পরই রাজ ঠাকরে দল ছেড়ে দেন। শিবাজি পার্কে এক আবেগঘন সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা দেন, ‘সম্মান চেয়েছিলাম, অপমানই পেলাম। আপনাদের সঙ্গে আর না।’ এরপরই রাজ গঠন করেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)। বাল ঠাকরের উত্তরাধিকার ঘিরে দলের ভেতরকার দ্বন্দ্বই ছিল এর মূল কারণ।

রাজ ঠাকরের বক্তব্যের পর উদ্ধব ঠাকরে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘অনেক বছর পর রাজ আর আমি এক মঞ্চে। ও আমাকে ‘‘মাননীয়’’ বলেছে, তাই আমিও বলছি, ‘‘মাননীয় রাজ ঠাকরে।”’

উদ্ধব আরও বলেন, ‘আজ এখানে সবাই দলের বিভাজন ভুলে শুধুই মারাঠির জন্য একত্রিত হয়েছে। আমরা এক হয়েছি, একসঙ্গে থাকব।’ তিনি বিজেপির এক রাষ্ট্র, এক নির্বাচন ধারণা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘ওরা সবকিছু এক করতে চায়। আমরা হিন্দু ও হিন্দুস্তানের পক্ষে, কিন্তু হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।’

আগামী বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল ​​করপোরেশন (বিএমসি) নির্বাচন ঘিরে এই একত্র হওয়া নিছক সাংস্কৃতিক কর্মসূচি নয়, বরং একটি বড় রাজনৈতিক সিগন্যাল বলেই দেখা হচ্ছে। একসময় প্রতিদ্বন্দ্বী দুই নেতা এখন এককভাবে মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির রক্ষায় সোচ্চার হচ্ছেন, যা বিজেপির জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সালিস না মেনে মামলা, ক্ষিপ্ত মেম্বার-চেয়ারম্যানরা হত্যা করেন মা ও ছেলে-মেয়েকে: র‍্যাব

স্বরূপকাঠিতে বিএনপি সভাপতিকে ‘আ.লীগের দোসর’ বললেন পরাজিত প্রার্থী

১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, ভারতীয় নিরব মোদির বেলজিয়ান ভাই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার

বরযাত্রীদের বিলাসবহুল গাড়ি উঠে গেল কলেজের দেয়ালে, বরসহ নিহত ৮

ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে বাংলাদেশের আম্পায়ারকে নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণ কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত