Ajker Patrika

সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে চীন–ভারতের নতুন পদক্ষেপ

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
প্রতীকী ছবি

ভারত ও চীন সীমান্ত পরিস্থিতি আরও স্থিতিশীল করতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ। একই সঙ্গে পূর্ব লাদাখের দীর্ঘস্থায়ী সামরিক অচলাবস্থা সমাধানে অক্টোবরে হওয়া চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত হয়েছে উভয় পক্ষ।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লিতে চীন-ভারত সীমান্ত বিষয়ে ‘ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালটেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন (ডব্লিউএমসিসি)–এর ৩২ তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই দেশ কূটনৈতিক ও সামরিক চ্যানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখা এবং সীমান্ত এলাকায় টেকসই শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার বিষয়ে একমত হয়।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উভয় পক্ষ সীমান্ত-সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের বিষয়ে ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছে এবং তা সামগ্রিক ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে সম্মত হয়েছে।’

২০২০ সালের মে মাসে শুরু হওয়া পূর্ব লাদাখের সামরিক অচলাবস্থা চূড়ান্তভাবে শেষ হয় গত অক্টোবরে, ডেমচক ও দেপসাং অঞ্চল থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের দুই দিন পর রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বৈঠক করেন।

সেই বৈঠকে উভয় পক্ষ একাধিক সংলাপ প্রক্রিয়া পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেন, যার মধ্যে সীমান্ত সংক্রান্ত ‘বিশেষ প্রতিনিধি’ সংলাপ অন্যতম। ভারতীয় পক্ষের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চীনের পক্ষে এই দায়িত্বে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে উভয় পক্ষ ২০২০ সালের সীমান্ত উত্তেজনার ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার পক্ষে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা এড়ানো যায় সে ব্যাপারে আলোচনায় আগ্রহী।

বৈঠকে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যকর করে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে নিয়মিত যোগাযোগের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া বিভাগের যুগ্ম সচিব গৌরঙ্গলাল দাস। চীনের প্রতিনিধিত্ব করেন সীমান্ত ও মহাসাগরীয় বিষয়ক দপ্তরের মহাপরিচালক হং লিয়াং।

দিল্লিতে অবস্থানকালে হং লিয়াং ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে হওয়া চুক্তি হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ভারত ও চীনের সেনারা পূর্ব লাদাখের ডেমচক এবং দেপসাং এলাকায় প্রতি সপ্তাহে পালা করে টহল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নভেম্বরে প্রথম পর্যায়ের টহল সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, উভয় পক্ষ পর্যায়ক্রমে প্রতি সপ্তাহে একবার টহল দেবে। এটি সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে এবং বিশ্বাস স্থাপন করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। উভয় পক্ষের কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলোর টেকসই সমাধান নিশ্চিত করা গেলে, শুধু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়, পুরো অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়ন জোরদার হবে। সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে দুই দেশের এ রকম আলোচনা ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিশা দেখাতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত