Ajker Patrika

পশ্চিমবঙ্গে আবারও শক্তি বাড়ছে বামদের

কলকাতা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮: ৪০
Thumbnail image

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ৩৭ বছরের মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই পুনরুত্থানের স্বপ্ন দেখছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বামপন্থী ছাত্র-যুবারা। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার অখ্যাত গ্রাম থেকে উঠে আসা এই নারীর বাংলা বা মেঠো হিন্দিতে দেওয়া জ্বালাময়ী ভাষণ শুনতে ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার ছাত্র-যুবা। বর্তমানে তিনি ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের (ডিওয়াইএফআই) পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক। 

দলীয় কমরেডদের কাছে ক্যাপ্টেন নামে পরিচিত এই রাজনীতিবিদ তরুণদের সঙ্গে নিয়ে রীতিমতো ঝড় তুলতে শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর তীক্ষ্ণ ভাষণে নাকাল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বামপন্থী বক্তা হিসেবে জনপ্রিয়তায় এরই মধ্যে দলের প্রবীণ নেতাদেরও অনেকটা পেছনে ফেলে দিয়েছেন মীনাক্ষী। তাঁর পরিষ্কার কথা, ন্যায়বিচার চাই। শাসকদল তৃণমূলের চুরি-গুন্ডামি এবং বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও ধনীদের তোষণ করার অর্থনীতির বিরুদ্ধে ইনসাফ চেয়ে রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। 

টানা ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় থাকলেও বর্তমানে বিধানসভার ২৯৪টি আসনের মধ্যে একটিও বামদের দখলে নেই। পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যেও বামদের কোনো আসন নেই। এই অবস্থা থেকেও ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বামপন্থী দল সিপিএম। দলের যুব সংগঠনের হাত ধরে দলটি আবারও তৃণমূল ও বিজেপির সঙ্গে লড়াই করে নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া। 

কোভিড মহামারির সময় বামপন্থী ‘রেড ভলান্টিয়ার্সরা’ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা কুড়ালেও তা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলেনি। সামনেই পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেখান থেকেই দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেই বার্তাকে বাস্তব রূপ দিতেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মীণাক্ষী মুখার্জি, শতরূপ ঘোষ থেকে শুরু করে দলের তরুণ প্রজন্ম। 

গত ২০ সেপ্টেম্বর কলকাতার ধর্মতলায় হাজার হাজার ছাত্র-যুবকের উপস্থিতিতে ক্যাপ্টেন মীণাক্ষীর ইনসাফ সমাবেশের পর বিরোধীরাও আবারও ভাবতে শুরু করেছে সিপিএমকে নিয়ে। শুরু হয়েছে পাল্টা প্রচারও। সংগঠনকে শক্তিশালী করে শাসক দল তৃণমূল ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপির কাছ থেকে নিজেদের হারানো জমি কতটা কেড়ে নিতে তাঁরা পারেন, সেটা বলবে ভবিষ্যৎ। তবে মীণাক্ষীকে ঘিরে যেভাবে বামপন্থী ছাত্র-যুবারা নতুন করে সংঘবদ্ধ হচ্ছেন, তাতে বেশ আশাবাদী প্রবীণ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিকাশর্জন ভট্টাচার্যরা। 

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মতে, বামদের ৩৪ বছরের সন্ত্রাস ও অপশাসন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভুলতে পারবেন না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সিপিএমকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ। তাতে অবশ্য মীণাক্ষীদের কিছু যায়-আসে না। মীণাক্ষীর মতে, ক্ষমতা নয়, মানুষকে তাঁর ন্যায্য অধিকার ও বিচার পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি শুরু করেছেন বামপন্থী ছাত্র-যুবারা। ভয় পেয়ে তাই তৃণমূল ও বিজেপি সেটিং করে চলছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত