Ajker Patrika

চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যা: আরজি কর হাসপাতালের ৩ ফোনকল ফাঁস

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে এক নারী চিকিৎসককে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার তিন সপ্তাহ পার হলেও এখনো উন্মোচিত হয়নি পুরো ঘটনার রহস্য। ভুক্তভোগীর মায়ের প্রশ্ন, সেদিনের পুরো ঘটনা কবে স্পষ্ট হবে? তাঁর এমন সংশয়ের মধ্যেই পুলিশের কাছ থেকে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে গেছে এ মামলার তদন্তকাজ। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় গত বৃহস্পতিবার ঘটনার দিন সকালের টেলিফোন দাবি করে তিনটি ফোনকল রেকর্ডিংয়ের ক্লিপ সামনে আসে। ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমও সেই ক্লিপ প্রচার করে। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, ফোনকল তিনটির যে রেকর্ডিং ভাইরাল হয়েছে, সেটি তারাও শুনেছে। তবে তারা এর সত্যতা যাচাই করেনি। 

ওই ফোনকলগুলোতে দুই নারী ও এক পুরুষের কণ্ঠ শোনা যায়। দাবি করা হয়, পুরুষ কণ্ঠটি নির্যাতিতার বাবার। অন্য দুই নারী কণ্ঠের একটি নির্যাতিতার মায়ের এবং একটি আরজি কর হাসপাতালের কোনো এক কর্মকর্তার। 

ফোনকলে প্রথমেই ভুক্তভোগীর মা-বাবাকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছার অনুরোধ করা হয়। বলা হয়, তাঁদের মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তাঁদের যেতে হবে। মা-বাবা বারবার জিজ্ঞেস করছেন, মেয়ের কী হয়েছে? কিন্তু তাঁর স্পষ্ট উত্তর কোনো দেওয়া হচ্ছে না। শুধু বলা হচ্ছে, তিনি চিকিৎসক নন। তাই কিছু বলতে পারবেন না। 

দ্বিতীয় ক্লিপটিতে বলা হয়, মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে ইমারজেন্সিতে ভর্তি করা হয়েছে। মা-বাবা যেন দ্রুত পৌঁছে যান। এ সময় নিজেকে সহকারী সুপার বলে পরিচয় দেন ওই নারী। তৃতীয় ক্লিপে বলা হয়, ওই চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ আছে। হাসপাতালের অন্য কর্মকর্তারাও আছেন। 

তিনটি ফোনকলের কথাগুলো তাঁদের কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসকের মা-বাবা জানিয়েছেন, তাঁরা টেলিভিশন দেখছেন না। তাই অডিও ক্লিপগুলো শোনেননি। তবে এর আগে তাঁরা আদালতে জানিয়েছিলেন, ঘটনার দিন সকালে হাসপাতাল থেকে তাঁদের কাছে দুটি ফোন গিয়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, যে তিনটি ফোনকলের ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, সেগুলো কি ভুক্তভোগীর মা-বাবার উল্লিখিত দুই ফোনকলের অংশবিশেষ? নাকি তিনটি ফোনকলই করা হয়েছিল! 

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই ফোনকলগুলোর ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর কলকাতা পুলিশ তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে বলা হয়, প্রথম থেকেই তারা বলে আসছে, নির্যাতিতার পরিবারকে তারা ফোন করেনি, এটাই তার প্রমাণ। এর আগে আরও একটি ভাইরাল ক্লিপ সামনে এলে কলকাতা পুলিশ এমন তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন করেছিল। ওই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে বহু মানুষ ঘুরছে। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি আছেন পুলিশ কর্মকর্তারাও। রয়েছেন ফরেনসিক চিকিৎসকেরা। 

সিবিআই সূত্রের দাবি, সেদিন যথাসময়ে ঘটনাস্থল ঘিরে দেওয়া হয়নি। ফলে বহু ফরেনসিক তথ্য নষ্ট হয়েছে। কলকাতা পুলিশের দাবি, ছবিতে যাদের দেখা যাচ্ছে, তারা ১১ ফুটের একটি অংশে আছে। বাকি ৪০ ফুট ঘিরে দেওয়া হয়েছিল, যা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে না। তবে পুলিশের এই দাবির সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের সবাই একমত নন। 

সিবিআই সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, আদালতে এই মামলার আগামী শুনানিতে পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাটের অভিযোগ তোলা হতে পারে। যে প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীর মরদেহ এবং ক্রাইম সিন থেকে ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সিবিআই। যে কারণে ওই দিন যে দুই ফরেনসিক চিকিৎসক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। 

সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় যে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের প্রমাণ সংগ্রহের কথা, ঘটনাস্থলে তাঁদের দেখা যায়নি বলে অভিযোগ উঠছে। প্রশ্ন উঠছে, যে বিশেষজ্ঞরা দ্রুত ফরেনসিকের নমুনা সংগ্রহ করলেন, তাঁরা কার নির্দেশে সে কাজ করলেন? কেন বাকি বিশেষজ্ঞদের সেখানে ডাকা হলো না?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত