Ajker Patrika

ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার অস্ত্রাগারে ড্রোন হামলা চালাল ইউক্রেন 

আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২৩, ১২: ৩৩
ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার অস্ত্রাগারে ড্রোন হামলা চালাল ইউক্রেন 

ক্রিমিয়া উপদ্বীপে রাশিয়ার একটি গোলাবারুদ ডিপোতে ইউক্রেন ড্রোন হামলা করেছে। এ ঘটনার পর বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম কের্চ সড়ক ও রেল সেতুতে যান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। আজ রোববার এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউক্রেন বলেছে, তাদের সেনাবাহিনী মধ্য ক্রিমিয়ার ‘অস্থায়ীভাবে দখলকৃত’ ওকটিয়াব্রস্কে এলাকায় একটি তেল ডিপো ও রাশিয়ান সেনাবাহিনীর গুদাম ধ্বংস করে দিয়েছে।

এই অঞ্চল নিযুক্ত মস্কোর গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ শনিবার জানিয়েছেন, ক্রিমিয়ার একটি গোলাবারুদ ডিপোতে ড্রোন হামলার জেরে চারপাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসবাসরত বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে উপদ্বীপকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তকারী সেতুতে সংক্ষিপ্তভাবে সড়ক যান চলাচল স্থগিতও করা হয়।

সের্গেই আকসিওনভ আরও জানান, হামলার ফলে একটি গোলাবারুদ ডিপো বিস্ফোরিত হয়েছে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের শেয়ার করা ফুটেজে ক্রিমিয়ার ওই স্থানে ধূসর ধোঁয়ার ঘন কুণ্ডলী দেখা গেছে।

আকসিওনভ পরে জানান, হামলার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সমস্ত রেল চলাচল সাময়িকভাবে ব্যাহত হলেও পরে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।

তবে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির একাধিক বার্তা সংস্থা বলেছে, ওই হামলার পর ১২ জনের চিকিৎসাসহায়তার প্রয়োজন হয়েছে এবং চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া।

এদিকে ওই হামলার পর ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম সড়ক ও রেল সেতুতে যান চলাচলও সংক্ষিপ্তভাবে বন্ধ হয়ে যায়। উপদ্বীপটির যে স্থানে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেখান থেকে ক্রিমিয়ান এই সেতু প্রায় ১৮০ কিলোমিটার (১১০ মাইল) পূর্বে অবস্থিত।

পাঁচ দিন আগে ওই সেতুতে বিস্ফোরণে দুজন নিহত এবং ব্রিজের রাস্তার একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সেতুতে সেটিই ছিল দ্বিতীয় বড় হামলা।

১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সরবরাহ রুটে পরিণত হয়েছে। কারণ ইউক্রেনের দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ সৈন্যদের কাছে অস্ত্র ও সামরিক রসদ পাঠানোর অন্যতম পথক্রিমিয়া উপদ্বীপের দীর্ঘ এই সেতু।

এ ছাড়া দীর্ঘ এই সড়ক ও রেল সেতুটি গত বছরের অক্টোবরেও একটি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ক্রেমলিন সে সময় বলেছিল, ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছিল। অবশ্য কয়েক মাস পর ইউক্রেন পরোক্ষভাবে ওই হামলার কথা স্বীকার করে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত শুক্রবার বলেন, রুশ-নির্মিত এই সেতুটি ইউক্রেনীয় বাহিনীর কাছে বৈধ লক্ষ্যবস্তু। কারণ এটি রাশিয়ার সামরিক সরবরাহের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

রয়টার্স বলছে, ব্রিজে নানা দুর্ঘটনার জন্য রাশিয়া উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং একটি অফিশিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেল মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখলে নিয়েছিল রাশিয়া। অবশ্য বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ মস্কোর এই দখলদারিকে স্বীকৃতি দেয়নি।

এ ছাড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অন্যদিকে রাশিয়া বলেছে, রুশ বাহিনী কৃষ্ণসাগরের এই উপদ্বীপ দখল করার পর সেখানে গণভোট অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানেই দেখা গেছে, ক্রিমিয়ানরা সত্যিকার অর্থেই রাশিয়ার অংশ হতে চায়। যদিও সেই গণভোটকে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ স্বীকৃতি দেয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত