যুক্তরাজ্যের লন্ডনের সায়েন্স মিউজিয়াম তথা বিজ্ঞান জাদুঘরের সবুজ জ্বালানি বিভাগ গঠনের জন্য আদানি গ্রুপের নবায়নযোগ্য জ্বালানি শাখা ৪০ লাখ পাউন্ড অনুদান দিয়েছে। বিতর্কিত এই সহযোগিতার ফলে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় শুরু হয়েছে ব্রিটেনে। একই সঙ্গে আদানি গ্রুপের ব্যাপক কয়লা ব্যবসার ওপর গভীর পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা কার্যালয়ের নথিপত্রে প্রথমবারের মতো এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে সায়েন্স মিউজিয়ামের বিরুদ্ধে ‘গ্রিনওয়াশিং’—এর পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আদানির কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটির দুই ট্রাস্টি পদত্যাগও করেছেন। গ্রিনওয়াশিং হলো এমন এক প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো প্রতিষ্ঠান ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে ভিত্তিহীন বা অপ্রমাণিত দাবি উপস্থাপন করে, যাতে তাদের পণ্যগুলো প্রকৃতপক্ষে যতটা পরিবেশবান্ধব বা পরিবেশের জন্য ইতিবাচক, তার চেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব বলে মনে হয়।
অধিকার গোষ্ঠী ‘কালচার আনস্টেইন্ড’ যুক্তরাজ্যের তথ্যপ্রাপ্তির স্বাধীনতার আওতায় সরকারের কাছ থেকে বের করে এনে তা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানায়।
আদানি গ্রুপের ব্যবসায় বন্দর থেকে শুরু করে গণমাধ্যম পর্যন্ত বিস্তৃত। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে গোষ্ঠীটি ভারতের বৃহত্তম নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনকারী সংস্থা হয়ে উঠেছে। আবার একই সঙ্গে এটি দেশটির অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি কয়লা খনি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ‘নির্লজ্জ’ করপোরেট প্রতারণার অভিযোগ তোলে। আদানি এসব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। এরপর গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন বিচার বিভাগ ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি ও অন্যান্য নির্বাহীদের বিরুদ্ধে একটি ভারতীয় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় অভিযোগ গঠন করে। এই অভিযোগে বলা হয়, এই প্রকল্পের জন্য আদানি ও তাঁর সহযোগীরা ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়েছিল। তবে আদানি গ্রুপ এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে।
সায়েন্স মিউজিয়াম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী স্যার ইয়ান ব্ল্যাচফোর্ড অতীতেও তেল ও গ্যাস কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতার পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন। তবে আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা চুক্তির কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। বিশেষ করে, মার্কিন আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার পরও আদানির অনুদান গ্রহণের নৈতিক মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ব্ল্যাচফোর্ড।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদী আন্দোলনকারীদের অভিযোগের অন্ত নেই। গত বছর আদানির নবায়নযোগ্য শক্তি প্রদর্শনী ‘এনার্জি রেভলিউশন: দ্য আদানি গ্রিন এনার্জি গ্যালারি’ও ব্যাপক সমালোচনা কুড়িয়েছে।
তবে কেবল লন্ডন সায়েন্স মিউজিয়াম নয়, যুক্তরাজ্যের অন্যান্য জাদুঘরও জীবাশ্ম জ্বালানি সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্য সমালোচিত হয়েছে। ২০২৩ সালে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের দেশটির পেট্রোলিয়াম কোম্পানি বিপির কাছ থেকে ৫০০ কোটি পাউন্ড গ্রহণ করে।
আদানি গ্রুপ সায়েন্স মিউজিয়ামকে মাত্র ৪০ লাখ পাউন্ড দিলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই প্রতিষ্ঠানটি ১২৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান পেয়েছে। সায়েন্স মিউজিয়াম জানিয়েছে, তারা বাণিজ্যিক সংবেদনশীলতার কারণে কোনো নির্দিষ্ট পৃষ্ঠপোষকতার চুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে না। তবে তারা জানিয়েছে যে, তাদের অভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে।
মিউজিয়াম আরও জানিয়েছে, তারা তাদের এনার্জি রেভলিউশন গ্যালারিতে পাঁচ লাখেরও বেশি দর্শনার্থীকে স্বাগত জানিয়েছে। আর ‘আদানি গ্রিন এনার্জির উদার পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। আদানি গ্রিন এনার্জি একটি প্রধান নবায়নযোগ্য শক্তি কোম্পানি।’
ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা কার্যালয়ের নথি থেকে আরও দেখা গেছে, ২০২২ সালের এপ্রিলে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের আহমেদাবাদে আদানি গ্রুপের সদর দপ্তরে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে এক বৈঠকে গৌতম আদানি প্রতিরক্ষা খাতে অংশীদারত্ব ও যুক্তরাজ্যে সম্ভাব্য বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন এবং বলেন, তিনি ব্রিটিশ অ্যারোস্পেসের আদলে ভারতেরও অ্যারোস্পেস কোম্পানি গড়ে তুলতে চান।
ভারতের প্রতিরক্ষা খাত বেসরকারি কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত হওয়ার ফলে আদানি গ্রুপসহ একাধিক শক্তিশালী ভারতীয় কনগ্লোমারেট এই খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। আহমেদাবাদের বৈঠকে জনসন উল্লেখ করেন, যুক্তরাজ্য প্রতিরক্ষা প্রকল্প যেমন ফিউচার কমব্যাট এয়ার সিস্টেম ও নৌবাহিনীর প্রপালশন ব্যবস্থার উন্নয়নে ভারতের সঙ্গে অংশীদার হতে চায়।
বৈঠকের নথিতে উল্লেখ করা হয় যে, আদানি বলেন, তাঁর লক্ষ্য ছিল ভারতের নিজস্ব অ্যারোস্পেস কোম্পানি গড়ে তোলা। যেখানে গোয়েন্দা, নজরদারি ও সাইবার নিরাপত্তা; বিমান প্রতিরক্ষা; চালকবিহীন প্ল্যাটফর্ম এবং পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নির্মাণ করা হবে। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টিকে স্বাগত জানান জনসন।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, সে সময় আদানি গ্রুপ হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিনিয়োগ করছিল এবং মনে করেছিল, এটি রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য ভারতের অন্যতম শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হয়ে উঠবে। এক পৃথক নথিতে বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপ তখন শেফিল্ডভিত্তিক সবুজ হাইড্রোজেন প্রযুক্তি কোম্পানি আইটিএম পাওয়ারের সঙ্গে রপ্তানির বিষয়ে আলোচনাও করেছিল।
আদানির সঙ্গে ২০২১ সালের অক্টোবর ও ২০২২ সালের এপ্রিলে জনসনের বৈঠক হয়। সেই দুই বৈঠকের সারসংক্ষেপেও উঠে এসেছে যে, সে সময় মার্কিন কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেছিলেন—গৌতম আদানি ভারতের একটি সৌরশক্তি প্রকল্পে ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। একই সময়ে, নথিতে উল্লেখ রয়েছে যে—আদানির কনগ্লোমারেট লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে একটি ব্যবসা তালিকাভুক্ত করার কাজ ‘চূড়ান্ত করছিল’। তবে সেই প্রচেষ্টা আজও বাস্তবায়িত হয়নি।
২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট সামিটে গৌতম আদানির সঙ্গে জনসনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই ‘সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতের’ প্রস্তুতির জন্য একটি সংক্ষিপ্ত নোট তৈরি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, আদানি এই বৈঠকে সায়েন্স মিউজিয়ামের ব্ল্যাচফোর্ড ও তখনকার চেয়ার ডেম মেরি আর্চারের সঙ্গে কথা বলবেন।
এই নোটে জনসনকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তিনি ‘সবুজ বিনিয়োগের পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে আদানির দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইতে পারেন এবং জানতে পারেন, ব্রিটিশ সরকার এ ক্ষেত্রে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে। বিশেষ করে বন্দর, সরবরাহ ব্যবস্থা, হাইড্রোজেন ও ডেটা সেন্টারের ক্ষেত্রে।’
এতে আরও বলা হয়, আদানি গ্রুপ কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে একটি প্ল্যাটফর্ম খুঁজছিলেন যাতে তারা তাদের নেট-জিরো পরিকল্পনার ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু, পরিহাসের বিষয় হলো, আদানি গ্রুপের ব্যবসায় একটি বড় অংশই জৈব জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল।
সায়েন্স মিউজিয়ামে আদানির পৃষ্ঠপোষকতায় চালু হওয়া সবুজ জ্বালানি শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আদানি বলেছিলেন, তিনি যুক্তরাজ্যে সম্ভাব্য বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তবে তাঁর মূল মনোযোগ ভারতের ‘বিশাল বাজারের’ দিকেই থাকবে।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনের সায়েন্স মিউজিয়াম তথা বিজ্ঞান জাদুঘরের সবুজ জ্বালানি বিভাগ গঠনের জন্য আদানি গ্রুপের নবায়নযোগ্য জ্বালানি শাখা ৪০ লাখ পাউন্ড অনুদান দিয়েছে। বিতর্কিত এই সহযোগিতার ফলে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় শুরু হয়েছে ব্রিটেনে। একই সঙ্গে আদানি গ্রুপের ব্যাপক কয়লা ব্যবসার ওপর গভীর পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা কার্যালয়ের নথিপত্রে প্রথমবারের মতো এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে সায়েন্স মিউজিয়ামের বিরুদ্ধে ‘গ্রিনওয়াশিং’—এর পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আদানির কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটির দুই ট্রাস্টি পদত্যাগও করেছেন। গ্রিনওয়াশিং হলো এমন এক প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো প্রতিষ্ঠান ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে ভিত্তিহীন বা অপ্রমাণিত দাবি উপস্থাপন করে, যাতে তাদের পণ্যগুলো প্রকৃতপক্ষে যতটা পরিবেশবান্ধব বা পরিবেশের জন্য ইতিবাচক, তার চেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব বলে মনে হয়।
অধিকার গোষ্ঠী ‘কালচার আনস্টেইন্ড’ যুক্তরাজ্যের তথ্যপ্রাপ্তির স্বাধীনতার আওতায় সরকারের কাছ থেকে বের করে এনে তা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানায়।
আদানি গ্রুপের ব্যবসায় বন্দর থেকে শুরু করে গণমাধ্যম পর্যন্ত বিস্তৃত। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে গোষ্ঠীটি ভারতের বৃহত্তম নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনকারী সংস্থা হয়ে উঠেছে। আবার একই সঙ্গে এটি দেশটির অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি কয়লা খনি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ‘নির্লজ্জ’ করপোরেট প্রতারণার অভিযোগ তোলে। আদানি এসব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। এরপর গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন বিচার বিভাগ ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি ও অন্যান্য নির্বাহীদের বিরুদ্ধে একটি ভারতীয় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় অভিযোগ গঠন করে। এই অভিযোগে বলা হয়, এই প্রকল্পের জন্য আদানি ও তাঁর সহযোগীরা ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়েছিল। তবে আদানি গ্রুপ এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে।
সায়েন্স মিউজিয়াম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী স্যার ইয়ান ব্ল্যাচফোর্ড অতীতেও তেল ও গ্যাস কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতার পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন। তবে আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা চুক্তির কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। বিশেষ করে, মার্কিন আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার পরও আদানির অনুদান গ্রহণের নৈতিক মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ব্ল্যাচফোর্ড।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদী আন্দোলনকারীদের অভিযোগের অন্ত নেই। গত বছর আদানির নবায়নযোগ্য শক্তি প্রদর্শনী ‘এনার্জি রেভলিউশন: দ্য আদানি গ্রিন এনার্জি গ্যালারি’ও ব্যাপক সমালোচনা কুড়িয়েছে।
তবে কেবল লন্ডন সায়েন্স মিউজিয়াম নয়, যুক্তরাজ্যের অন্যান্য জাদুঘরও জীবাশ্ম জ্বালানি সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্য সমালোচিত হয়েছে। ২০২৩ সালে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের দেশটির পেট্রোলিয়াম কোম্পানি বিপির কাছ থেকে ৫০০ কোটি পাউন্ড গ্রহণ করে।
আদানি গ্রুপ সায়েন্স মিউজিয়ামকে মাত্র ৪০ লাখ পাউন্ড দিলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই প্রতিষ্ঠানটি ১২৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান পেয়েছে। সায়েন্স মিউজিয়াম জানিয়েছে, তারা বাণিজ্যিক সংবেদনশীলতার কারণে কোনো নির্দিষ্ট পৃষ্ঠপোষকতার চুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে না। তবে তারা জানিয়েছে যে, তাদের অভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে।
মিউজিয়াম আরও জানিয়েছে, তারা তাদের এনার্জি রেভলিউশন গ্যালারিতে পাঁচ লাখেরও বেশি দর্শনার্থীকে স্বাগত জানিয়েছে। আর ‘আদানি গ্রিন এনার্জির উদার পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। আদানি গ্রিন এনার্জি একটি প্রধান নবায়নযোগ্য শক্তি কোম্পানি।’
ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা কার্যালয়ের নথি থেকে আরও দেখা গেছে, ২০২২ সালের এপ্রিলে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের আহমেদাবাদে আদানি গ্রুপের সদর দপ্তরে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে এক বৈঠকে গৌতম আদানি প্রতিরক্ষা খাতে অংশীদারত্ব ও যুক্তরাজ্যে সম্ভাব্য বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন এবং বলেন, তিনি ব্রিটিশ অ্যারোস্পেসের আদলে ভারতেরও অ্যারোস্পেস কোম্পানি গড়ে তুলতে চান।
ভারতের প্রতিরক্ষা খাত বেসরকারি কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত হওয়ার ফলে আদানি গ্রুপসহ একাধিক শক্তিশালী ভারতীয় কনগ্লোমারেট এই খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। আহমেদাবাদের বৈঠকে জনসন উল্লেখ করেন, যুক্তরাজ্য প্রতিরক্ষা প্রকল্প যেমন ফিউচার কমব্যাট এয়ার সিস্টেম ও নৌবাহিনীর প্রপালশন ব্যবস্থার উন্নয়নে ভারতের সঙ্গে অংশীদার হতে চায়।
বৈঠকের নথিতে উল্লেখ করা হয় যে, আদানি বলেন, তাঁর লক্ষ্য ছিল ভারতের নিজস্ব অ্যারোস্পেস কোম্পানি গড়ে তোলা। যেখানে গোয়েন্দা, নজরদারি ও সাইবার নিরাপত্তা; বিমান প্রতিরক্ষা; চালকবিহীন প্ল্যাটফর্ম এবং পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নির্মাণ করা হবে। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টিকে স্বাগত জানান জনসন।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, সে সময় আদানি গ্রুপ হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিনিয়োগ করছিল এবং মনে করেছিল, এটি রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য ভারতের অন্যতম শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হয়ে উঠবে। এক পৃথক নথিতে বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপ তখন শেফিল্ডভিত্তিক সবুজ হাইড্রোজেন প্রযুক্তি কোম্পানি আইটিএম পাওয়ারের সঙ্গে রপ্তানির বিষয়ে আলোচনাও করেছিল।
আদানির সঙ্গে ২০২১ সালের অক্টোবর ও ২০২২ সালের এপ্রিলে জনসনের বৈঠক হয়। সেই দুই বৈঠকের সারসংক্ষেপেও উঠে এসেছে যে, সে সময় মার্কিন কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেছিলেন—গৌতম আদানি ভারতের একটি সৌরশক্তি প্রকল্পে ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। একই সময়ে, নথিতে উল্লেখ রয়েছে যে—আদানির কনগ্লোমারেট লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে একটি ব্যবসা তালিকাভুক্ত করার কাজ ‘চূড়ান্ত করছিল’। তবে সেই প্রচেষ্টা আজও বাস্তবায়িত হয়নি।
২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট সামিটে গৌতম আদানির সঙ্গে জনসনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই ‘সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতের’ প্রস্তুতির জন্য একটি সংক্ষিপ্ত নোট তৈরি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, আদানি এই বৈঠকে সায়েন্স মিউজিয়ামের ব্ল্যাচফোর্ড ও তখনকার চেয়ার ডেম মেরি আর্চারের সঙ্গে কথা বলবেন।
এই নোটে জনসনকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তিনি ‘সবুজ বিনিয়োগের পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে আদানির দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইতে পারেন এবং জানতে পারেন, ব্রিটিশ সরকার এ ক্ষেত্রে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে। বিশেষ করে বন্দর, সরবরাহ ব্যবস্থা, হাইড্রোজেন ও ডেটা সেন্টারের ক্ষেত্রে।’
এতে আরও বলা হয়, আদানি গ্রুপ কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে একটি প্ল্যাটফর্ম খুঁজছিলেন যাতে তারা তাদের নেট-জিরো পরিকল্পনার ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু, পরিহাসের বিষয় হলো, আদানি গ্রুপের ব্যবসায় একটি বড় অংশই জৈব জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল।
সায়েন্স মিউজিয়ামে আদানির পৃষ্ঠপোষকতায় চালু হওয়া সবুজ জ্বালানি শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আদানি বলেছিলেন, তিনি যুক্তরাজ্যে সম্ভাব্য বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তবে তাঁর মূল মনোযোগ ভারতের ‘বিশাল বাজারের’ দিকেই থাকবে।
ইউক্রেন ও রাশিয়া পরস্পরের বিরুদ্ধে সাময়িক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘কেবল প্রচারের উদ্দেশ্যে’ এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার করেছেন।
৮ ঘণ্টা আগেসৌদি আরবে পবিত্র নগরী মক্কায় প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম জারি করেছে দেশটির সরকার। আগামী ২৩ এপ্রিল (২৫ শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি) থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মক্কায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে অবশ্যই সরকারিভাবে ইস্যু করা প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে...
১২ ঘণ্টা আগেগতকাল শনিবার, চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালারি গেরাসিমভের সঙ্গে বৈঠকের পর বিশেষ এই ‘ইস্টার ট্রুস’ ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ঘোষণা অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ রাখবে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।
১৫ ঘণ্টা আগেঅস্ত্রসমর্পণ করছে না ইরান সমর্থিত লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গত শুক্রবার হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির প্রধান নাঈম কাশেম। ইসরায়েলের আগ্রাসী আচরণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হিজবুল্লাহ কোনো আলোচনায় বসবে না বলেও জানান তিনি।
১৬ ঘণ্টা আগে