Ajker Patrika

ইসরায়েলকে আর অস্ত্র দেবে না জার্মানি, খেপেছেন নেতানিয়াহু

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১১: ৩৩
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন। ছবি: এএফপি
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন। ছবি: এএফপি

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের জেরে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎস গতকাল শুক্রবার এই ঘোষণা দেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জার্মানির এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন।

জার্মানি বরাবরই ইসরায়েলের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইসরায়েলি পরিকল্পনা ঘোষণার পর জার্মানির এই সিদ্ধান্ত তাদের দীর্ঘদিনের নীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেয়।

চ্যান্সেলর মের্ৎস গাজার সাধারণ জনগণের দুর্দশায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের সর্বশেষ সামরিক পরিকল্পনা হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং বাকি জিম্মিদের মুক্ত করার লক্ষ্য পূরণে কীভাবে সাহায্য করবে, তা ‘ক্রমেই অস্পষ্ট’ হয়ে উঠছে।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে, জার্মান সরকার এখন থেকে গাজা উপত্যকায় ব্যবহার হতে পারে এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির অনুমোদন দেবে না।’

মের্ৎসের ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হলোকাস্টের পর ইহুদিদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণ চালানো হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ন্যায্য যুদ্ধকে সমর্থন করার পরিবর্তে, জার্মানি ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে হামাসের সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করছে।’

জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব জিউসও মের্ৎসের এই সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেছে এবং সরকারের প্রতি হামাসের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত জার্মানি ইসরায়েলে ৪৮৫ মিলিয়ন ইউরো (৫৬৫ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। এসব সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে— আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, অস্ত্রের যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম এবং সাঁজোয়া যান।

চ্যান্সেলর মের্ৎস তাঁর বিবৃতিতে আবারও বলেন যে ‘হামাসের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করার অধিকার ইসরায়েলের আছে’ এবং জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির আলোচনা তাদের প্রধান অগ্রাধিকার। তবে তিনি বলেন, ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার নতুন সামরিক পরিকল্পনা এই লক্ষ্যগুলো পূরণে কীভাবে সাহায্য করবে তা স্পষ্ট নয়।

জার্মানির উপ-চ্যান্সেলর লার্স ক্লিঙ্গবাইল এই সিদ্ধান্তকে ‘যথাযথ’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজায় মানবিক দুর্ভোগ অসহনীয়।

সম্প্রতি একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৬৬ শতাংশ জার্মান নাগরিক চান সরকার গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড পরিবর্তনের জন্য আরও বেশি প্রভাব রাখুক।

জার্মানির এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এলো, যখন গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং কানাডার মতো দেশগুলো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করলেও জার্মানি এই পদক্ষেপ থেকে বিরত রয়েছে। তারা মনে করে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলোচনার মাধ্যমেই এই স্বীকৃতি আসা উচিত। জার্মানি গাজায় আকাশপথে মানবিক সাহায্য পাঠাচ্ছে এবং ইসরায়েলের প্রতি পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানি নকশার ড্রোন হয়ে গেছে রাশিয়ার, ক্ষোভ বাড়ছে তেহরানে

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর ‘দমন-পীড়নে’ ২০২ শিক্ষকের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ক্রয় চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত

নির্বাচনের আগে এসআই-এএসআইদের ব্যক্তিগত তথ্য তালাশে পুলিশ

যারা একাত্তরে ফিরতে চায়, তারা চব্বিশ অস্বীকার করে: নাহিদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত