Ajker Patrika

কেউ সাহায্য নিয়ে আসেনি: ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের হাতায় প্রদেশের বাসিন্দারা

আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩: ০৪
কেউ সাহায্য নিয়ে আসেনি: ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের হাতায় প্রদেশের বাসিন্দারা

সিরিয়া ও তুরস্কের সীমান্তবর্তী এলাকায় গতকাল সোমবারেরে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে। হাজার হাজার ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো আটকা পড়ে আছেন শত শত মানুষ। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। 

তুরস্কে হাতায় প্রদেশের বাসিন্দারা বলছেন, সেখানে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। কিন্তু তাদের উদ্ধার করতে তেমন কেউ এগিয়ে আসছে না। ভূমিকম্পের পর থেকে এখন পর্যন্ত খুব সামান্যই সরকারি সাহায্য পাওয়া গেছে। 

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাতের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিধ্বস্ত বাড়ি–ঘরের বাসিন্দারা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছেন। রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। 

ডেনিজ নামের হাতায়ার এক বাসিন্দা বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে অঝোরে কাঁদছিলেন। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘তারা (ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে যারা) মারা যাচ্ছি, মারা যাচ্ছি...ও আল্লাহ...আমাদের বাঁচাও...বাঁচাও বলে চিৎকার করছিল। কিন্তু আমরা কীভাবে তাদের বাঁচাব? সকাল থেকে এখানে কেউ নেই (সরকারি উদ্ধারকর্মী)।’ 

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে হাতায় প্রদেশের প্রধান বিমানবন্দরের রানওয়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছে। 

মিডল ইস্ট আই নিউজের তুরস্কের ব্যুরো প্রধান রাগিপ সোয়লু এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, ‘প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু উদ্ধারকারীরা এখনো সেখানে (হাতায় প্রদেশে) পৌঁছাতে পারেনি। শহর থেকে যারা কথা বলে, তারা শুধু নাকি কান্না করতে পারে। এটাই তাদের একমাত্র কাজ। এ ছাড়া তারা আর কিছু পারে না।’ 

সিরিয়া ও তুরস্কের উত্তর-দক্ষিণ সীমান্তবর্তী এলাকায় গতকাল সোমবার ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত উভয় দেশের ৪ হাজার ৮০০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কে ৩ হাজার ৩৮১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর আহত ১৫ হাজারের বেশি। সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০০ জনে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরতায় অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন হয়, তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমাচ্ছিলেন। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পরই আরেকটি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। পরের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের এলবিস্তান এলাকায়। ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত