Ajker Patrika

তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৫৩

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ১২
Thumbnail image
তিব্বতের ভূমিকম্প অনুভূত হয় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতেও। ভয়ে লোকজন খোলা অংশে বেরিয়ে আসেন। ছবি: এএফপি

হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত চীনা ভূখণ্ড তিব্বতে ভয়াবহ শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরও অন্তত ৬২ জন। চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সম্প্রচারমাধ্যম সিজিটিএনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার সকালে চীনের তিব্বতের পার্বত্য অঞ্চলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৫৩ জন নিহত এবং ৬২ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া, শিগাতসের যে অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছে, সেখানে প্রায় ৮০ লাখ মানুষের বাস।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় আজ সকাল ৯টায় তিব্বতের পবিত্র শহর শিগাতসে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। অঞ্চলটি প্রধান একটি ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইনের ওপর অবস্থিত হওয়ায় এখানে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা।

প্রথম ভূকম্পনের পর আশপাশের এলাকায় আরও একাধিক আফটার শকের খবর পাওয়া গেছে। কম্পন পাশের নেপাল ও ভারতের কিছু অংশেও অনুভূত হয়েছে। অনুভূত হয়েছে ভুটান ও বাংলাদেশ থেকেও।

শিগাতসে তিব্বতের অন্যতম পবিত্র শহর হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি পানচেন লামার ঐতিহ্যবাহী আবাসাস্থল। যিনি তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মে দালাই লামার পরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা।

চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে ভূমিকম্পের মাত্রা কিছুটা কম, অর্থাৎ ৬ দশমিক ৮ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ১ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেঙে পড়া ভবনের ছবি প্রকাশিত হয়েছে এবং আরও বেশ কয়েকটি শক্তিশালী আফটার শকের খবর পাওয়া গেছে।

চায়না আর্থকোয়েক নেটওয়ার্কস সেন্টারের গবেষক জিয়াং হাইকুন চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভিকে বলেছেন, ‘একটি বড় ভূমিকম্পের পরে একটি ধীর ক্রমশ ম্লান হওয়ার প্রক্রিয়া ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আরও একটি প্রায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে, তবে বড় কোনো ভূমিকম্পের আশঙ্কা কম।’

চীনের বিমানবাহিনী উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে এবং দুর্গত এলাকায় ড্রোন পাঠিয়েছে। এ অঞ্চলটি মাউন্ট এভারেস্টের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে তীব্র ঠান্ডার কারণে। এই এলাকায় বিদ্যুৎ এবং পানির সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং প্রাণহানি কমানোর জন্য সর্বাত্মক অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানোর এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিব্বতের ভূমিকম্প ব্যুরো বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা এখনো সংখ্যা যাচাই করছে বলে হতাহতের বিষয়ে কোনো আনুমানিক তথ্য দিতে পারেনি।

নেপালে কম্পন অনুভূত হলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে এভারেস্টের কাছে নেপালের নামচে অঞ্চলের একজন স্থানীয় কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।

এই অঞ্চল ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটগুলোর একটি প্রধান ফল্ট লাইনের কাছে অবস্থিত। এ কারণে এই অঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ২০১৫ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নিহত এবং ২০ হাজারের বেশি আহত হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত