Ajker Patrika

আমেরিকাকে মহান করতে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ এশিয়ার জন্য দুঃসংবাদ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ২৭
Thumbnail image
এশিয়ার দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি মেক্সিকো, কানাডা এবং চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক বাড়াবেন। এই ঘোষণা তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিন ২০ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে। এর আগে, নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, সব ধরনের আমদানি পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করবেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন আনবে। বিশেষত, এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়তে পারে।

যদিও সম্ভাব্য পরিণতি অনিশ্চিত, তবে এই শুল্ক—যা আমদানি পণ্যের ওপর কর হিসেবে কার্যকর হবে—এশিয়ার দেশগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ করে, যেসব দেশের বৈদেশিক আয় যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল।

গত বছর, জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ১৪৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছিল, যা দেশটির মোট রপ্তানির প্রায় ২০ শতাংশ। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। দুই দেশের মধ্যে সে বছর ১১৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য লেনদেন হয়েছিল।

তবে চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের পরিকল্পিত শুল্ক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশকে লাভবান করতে পারে। কারণ, চীন থেকে কারখানাগুলো সরিয়ে এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে স্থাপন করা হতে পারে। জুতার ব্র্যান্ড স্টিভ ম্যাডেন চলতি মাসের শুরুতে ঘোষণা করেছে, তারা ট্রাম্পের শুল্ক এড়াতে চীনে তাদের উৎপাদন অর্ধেক কমিয়ে ফেলবে এবং কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো ও ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশে উৎপাদ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

২০২৩ সালে চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ভারত এবং জাপান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকেও যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ পণ্য প্রবেশ করেছে। মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম আমদানি উৎস। তবে একক দেশ বিবেচনায় ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সর্বাধিক আমদানি করেছে মেক্সিকো থেকে, এর পরে ছিল চীন এবং কানাডা। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ১০টি আমদানিকারক দেশের মধ্যে ছয়টি এশিয়ার।

তবে পণ্য প্রবাহ সমানুপাতিক নয়, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনেক এশীয় দেশের বাণিজ্য ঘাটতি আছে। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র ওই দেশগুলো থেকে বেশি আমদানি করে, কিন্তু রপ্তানি করে কম। ২০২৪ সালের প্রথম নয় মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ঘাটতি ছিল চীনের সঙ্গে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল মেক্সিকো এবং তৃতীয় স্থানে ছিল ভিয়েতনাম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি আছে। যদিও গত এক বছরে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে, তবে ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোর সঙ্গে ঘাটতি বাড়ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের আমদানি কমানোর চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আমদানি শুল্ক বাড়াতে চান যাতে, বাণিজ্য ঘাটতি কমানো বা সম্পূর্ণরূপে দূর করা যায়। তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, তাঁর শুল্ক কার্যত আমেরিকানদের জন্য একটি কর হিসেবে কাজ করবে। কারণ, কোম্পানিগুলো আমদানি করা পণ্যের বাড়তি খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেবে, যার ফলে দেশীয় বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে।

মার্কিন পাইকারি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অটোজোনের সিইও ফিলিপ ড্যানিয়েল সেপ্টেম্বরে একটি আয় প্রতিবেদনে বলেন, ‘যদি আমরা শুল্কের মুখোমুখি হই, তাহলে আমরা সেই শুল্কের খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেব।’

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত