Ajker Patrika

সব বিমানবন্দরে পাখি শনাক্ত করার ক্যামেরা বসাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া

আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮: ০১
মুআন বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। ছবি: এএফপি
মুআন বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। ছবি: এএফপি

গত ২৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার মুআন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। এই দুর্ঘটনাটিকে দেশটির ইতিহাসে সংঘটিত সবচেয়ে ভয়াবহ ‘আকাশ দুর্ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই দুর্ঘটনার ভয়াবহতার পর দেশের সব বিমানবন্দরে বার্ড ডিটেকশন (পাখি শনাক্তকরণ) ক্যামেরা ও রাডার স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে সিউল।

বর্তমানে দেশটির ইনচন, গিম্পো, গিমহে ও জেজু বিমানবন্দরে এই ধরনের ক্যামেরা রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে সব বিমানবন্দরে এই সিস্টেম স্থাপনের পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ।

বেসামরিক বিমান পরিবহন উপমন্ত্রী জু জং-ওয়ান বলেন, বিমান দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিস্তৃত পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বিমানবন্দরগুলোকে বিশেষ পরিদর্শন অভিযান চালানো হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সব বিমানবন্দরে অন্তত একটি করে থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব স্থাপনা বিশেষভাবে পাখিদের আকৃষ্ট করে, সেগুলো নিয়ে সমীক্ষা চালানো হবে।

এ ছাড়া, মাঝারি ও বড় আকারের পাখিদের বিমানবন্দর থেকে দূরে রাখতে ‘মোবাইল সোনিক ডিভাইস’ অর্থাৎ পাখিদের তাড়ানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সব বিমানবন্দরে পাখি শনাক্তকরণের জন্য রাডার বসানো হবে, যাতে দূরবর্তী পাখিদের আগেভাগে চিহ্নিত করা যায় এবং উড়োজাহাজের জন্য প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা উন্নত করা যায়। এই রাডারগুলো পাখির আকার ও তাদের গতিপথ শনাক্ত করবে। সেসব তথ্য এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের কাছে পাঠানো হবে। সে অনুযায়ী তারা পাইলটদের নির্দেশনা দেবেন।

জেজু এয়ারের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি ১৮১ জন আরোহী নিয়ে থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার মুআন শহরে যাচ্ছিল। মুআন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় আগুন ধরে বিস্ফোরিত হয়। পাইলট প্রথমবার অবতরণ করার চেষ্টা করার আগে পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের সতর্কতা দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার অবতরণের চেষ্টার সময় ল্যান্ডিং গিয়ার না খোলায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম জানায়, জেজু এয়ার ফ্লাইটের উভয় ইঞ্জিনে পাখির পালক পাওয়া গেছে। যা উড়োজাহাজটির সঙ্গে পাখির ধাক্কায় দুর্ঘটনার বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে।

পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তদন্ত আরও জটিল হয়ে উঠেছে। কারণ, বিধ্বস্ত ফ্লাইটের ব্ল্যাক বক্স দুর্ঘটনার চার মিনিট আগেই রেকর্ডিং বন্ধ করে দেয়।

এ কারণে এখনো দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছেন দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অধৈর্য হয়ে পুতিন-এরদোয়ানের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়লেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

হাদিকে বলেছিলাম—‘র’ তোকে বাঁচতে দেবে না: বোন মাছুমা

হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা

ইরানে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদি গ্রেপ্তার

আসিফ মাহমুদের র‍্যালি পরিণত হলো হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিলে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এপস্টাইন ফাইল: নতুন ছবিতে বিল ক্লিনটন ও বিল গেটসসহ প্রভাবশালী অনেকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নতুন প্রকাশিত ছবিতে বিল ক্লিনটন ও বিল গেটসের মতো প্রভাবশালীদের দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত
নতুন প্রকাশিত ছবিতে বিল ক্লিনটন ও বিল গেটসের মতো প্রভাবশালীদের দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

যৌন পাচারকারী জেফরি এপস্টাইনের এস্টেট থেকে হাউস ডেমোক্র্যাটদের প্রকাশিত ১৯টি নতুন ছবিতে দেখা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাঁর পূর্বসূরি বিল ক্লিনটন এবং ব্রিটেনের সাবেক রাজপুত্র অ্যান্ড্রুকে। ২০১৯ সালে যৌন পাচারের অভিযোগে জেল হেফাজতে থাকাকালীন এপস্টাইনের মৃত্যু হয়। সেই এস্টেট থেকে হাউস ওভারসাইট কমিটি মোট ৯৫ হাজার ছবি হাতে পেয়েছে। এর মধ্যে থেকে প্রথম ধাপে ১৯টি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রকাশিত ছবিগুলোতে কোনো ক্যাপশন বা প্রেক্ষাপট না থাকলেও, এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি সাদা-কালো ছবিতে তাঁকে ছয়জন নারীর সঙ্গে দেখা গেছে। যদিও ট্রাম্প একসময় এপস্টাইনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন, তবে যৌন পাচারের অভিযোগ ওঠার অনেক আগেই তিনি এপস্টাইন থেকে দূরত্ব তৈরি করেন বলে জানা যায়।

এ ছাড়া ছবিগুলোতে স্টিভ ব্যানন, বিল গেটস, রিচার্ড ব্র্যানসন, হার্ভার্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ল্যারি সামারস এবং আইনজীবী অ্যালান ডারশোভিৎজ-সহ আরও বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দেখা গেছে। অন্য একটি ছবিতে ট্রাম্পের ক্যারিক্যাচার (ব্যঙ্গচিত্র) এবং ‘I’m HUUUUGE!’ লেখা-সহ কনডমের একটি বাটি দেখা যায়, যার পাশে ‘$ 4.50’ মূল্যের একটি সাইনও রয়েছে।

এর আগে অবশ্য এপস্টাইনের ব্যক্তিগত জেটে ভ্রমণ করার কথা স্বীকার করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। তবে তাঁর মুখপাত্রের মাধ্যমে তিনি জানান, এপস্টাইনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা ছিল না। অন্যদিকে, এপস্টাইনের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পর প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাঁর রাজকীয় উপাধি ও বিশেষাধিকার হারিয়েছেন, যদিও তিনি কোনো ভুল করার কথা অস্বীকার করেছেন।

ডেমোক্র্যাটরা জানিয়েছে, বিচার বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত মামলার নথিপত্রের বাইরে এই ছবিগুলো প্রকাশের ফলে এপস্টাইন তদন্তে নথি প্রকাশে ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্বের অনীহার বিপরীতে চাপ বাড়ানো সম্ভব হবে।

ওভারসাইট কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট রবার্ট গার্সিয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হোয়াইট হাউসের এই লুকোচুরির সমাপ্তি ঘটানোর এবং জেফরি এপস্টাইন ও তাঁর ক্ষমতাধর বন্ধুদের শিকার হওয়া মানুষদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার সময় এসেছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই ছবিগুলো এপস্টাইন এবং বিশ্বের কিছু ক্ষমতাধর পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলেছে। আমরা সত্য প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত থামব না। বিচার বিভাগকে অবিলম্বে সমস্ত নথিপত্র প্রকাশ করতে হবে।’

উল্লেখ্য, রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি ইতিমধ্যে এপস্টাইন এস্টেট থেকে পাওয়া হাজার হাজার নথি, ই-মেল এবং কথোপকথন প্রকাশ করেছে। সেই ই-মেলগুলোতে এপস্টাইন দাবি করেছেন, ট্রাম্প এপস্টাইনের অন্যতম প্রধান অভিযোগকারী ভার্জিনিয়া জিওফ্রির (প্রয়াত) সঙ্গে ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়েছেন’। ট্রাম্প ‘মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন’। যদিও তরুণীদের প্রলুব্ধ করে বেআইনি কাজে ব্যবহার করার কারণে এপস্টাইনকে তাঁর মার-এ-লাগো ক্লাব থেকে বের করে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন ট্রাম্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অধৈর্য হয়ে পুতিন-এরদোয়ানের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়লেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

হাদিকে বলেছিলাম—‘র’ তোকে বাঁচতে দেবে না: বোন মাছুমা

হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা

ইরানে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদি গ্রেপ্তার

আসিফ মাহমুদের র‍্যালি পরিণত হলো হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিলে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লাতিন আমেরিকাজুড়ে শিগগির ‘স্থল অভিযান’ শুরু করবেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০০
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ অংশ হিসেবে লাতিন আমেরিকায় মাদক চক্রগুলোর বিরুদ্ধে স্থল অভিযান শুরু করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তাঁর এই ঘোষণা মূলত এই অঞ্চলে সামরিক পদক্ষেপ সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়। তবে তিনি কখন বা কোথায় আক্রমণ শুরু হবে তা নির্দিষ্ট করেননি।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম চোশুন ইলবোর খবরে বলা হয়েছে, গতকাল ১২ ডিসেম্বর ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সমুদ্রপথে প্রবেশকারী ৯৬ শতাংশ মাদক আটকে দিয়েছি। আমরা এখন স্থল অভিযান শুরু করব, আর স্থলভাগ অনেক সহজ। এটি শিগগির ঘটবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর বা যুদ্ধ মন্ত্রণালয় (মিনিস্ট্রি অব ওয়ার) সেপ্টেম্বর থেকে ভেনেজুয়েলার নিকটবর্তী ক্যারিবীয় সাগর এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরসহ লাতিন আমেরিকার অন্যান্য উপকূলীয় জলসীমায় ‘মাদক পরিবহনকারী জাহাজ’ হিসেবে চিহ্নিত জাহাজ ডুবিয়ে দিয়ে আসছে। এতে বিপুল প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

এর আগে গত আগস্টে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ‘বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মাদক পাচারকারী’র তকমা দেন ট্রাম্প। তাঁকে আটকের তথ্যের জন্য পুরস্কার ২৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প সমুদ্রপথের চাপ ছাড়াও বারবার স্থল অভিযানের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন। যদিও আগে এই ধরনের মন্তব্য মাদুরো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। ট্রাম্প এবার বলেছেন যে স্থল হামলা শুধু ভেনেজুয়েলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য যে ভেনেজুয়েলাই হতে হবে, এমনটি নয়। যারা আমাদের দেশে মাদক নিয়ে আসে, তাদের সবাইকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে।’

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক সমস্যাকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে দেখছে এবং মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইকে কার্যত একটি ‘যুদ্ধ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে সামরিক পদক্ষেপের বৈধতা বারবার তুলে ধরেছে। ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, যদি মাদকের অতিরিক্ত মাত্রায় মৃত্যুর সংখ্যাকে যুদ্ধের হতাহতের মতো করে গণনা করা হয়; তবে ‘এটি একটি তুলনাহীন যুদ্ধ হবে।’

ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে স্থল হামলা চালাবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্য এর আগে ‘সামরিক অভিযানের জন্য সুস্পষ্ট আইনি ভিত্তির অভাব’ উল্লেখ করেছেন। ব্লুমবার্গ মূল্যায়ন করেছে যে ‘স্থল হামলা লাতিন আমেরিকান অঞ্চলে পরিস্থিতির গুরুতর বৃদ্ধি বোঝাবে।’

এই বিষয়ে মাদুরো বলেছেন, ‘যদি আমরা কোনো বিদেশি আক্রমণের মুখোমুখি হই, তবে শ্রমিক শ্রেণিকে সাধারণ ধর্মঘট ও গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আরও উগ্র বিপ্লব অনুসরণ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অধৈর্য হয়ে পুতিন-এরদোয়ানের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়লেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

হাদিকে বলেছিলাম—‘র’ তোকে বাঁচতে দেবে না: বোন মাছুমা

হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা

ইরানে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদি গ্রেপ্তার

আসিফ মাহমুদের র‍্যালি পরিণত হলো হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিলে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানুয়ারিতেই হতে পারে গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, সেনা প্রস্তুত করছে ইন্দোনেশিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১৫
১৫ মাসের সামরিক অভিযানে গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। ফাইল ছবি
১৫ মাসের সামরিক অভিযানে গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। ফাইল ছবি

আগামী বছরের শুরুর দিকেই গাজায় জাতিসংঘ অনুমোদিত আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বাহিনীতে যোগ দিতে সেনা প্রস্তুত করতে শুরু করেছে ইন্দোনেশিয়া। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আগামী মাস, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে গাজা উপত্যকায় আন্তর্জাতিক সেনা মোতায়েন করা হতে পারে, যারা জাতিসংঘের অনুমোদিত একটি স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠন করবে। তবে ফিলিস্তিনি জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসকে কীভাবে নিরস্ত্র করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী হামাসের সঙ্গে লড়াই করবে না। তাঁরা বলেন, বহু দেশ এতে অবদান রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং মার্কিন কর্মকর্তারা বর্তমানে এই বাহিনীর আকার, কাঠামো, বাসস্থান, প্রশিক্ষণ এবং নিয়মাবলি নিয়ে কাজ করছেন।

কর্মকর্তারা জানান, গাজার জন্য আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীর পরিকল্পনা করতে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে দোহায় অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে একটি সম্মেলনের আয়োজন করবে। তাঁরা বলেন, ২৫টির বেশি দেশ এই সম্মেলনে প্রতিনিধি পাঠাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যেখানে নেতৃত্ব কাঠামো এবং গাজা বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

কর্মকর্তারা জানান, একজন আমেরিকান টু-স্টার জেনারেলকে এই বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এই বাহিনী মোতায়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রথম ধাপে দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে ১০ অক্টোবর একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি শুরু হয় এবং হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে ও ইসরায়েল আটক ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দিয়েছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শান্তি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের জন্য বর্তমানে পর্দার আড়ালে অনেক নীরবে পরিকল্পনা চলছে। আমরা একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে চাই।’

এদিকে ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে—তারা গাজায় স্বাস্থ্য ও নির্মাণ-সংক্রান্ত কাজের জন্য ২০ হাজার পর্যন্ত সৈন্য মোতায়েন করতে প্রস্তুত। ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রিকো সিরাইত বলেন, ‘এটি এখনো পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির পর্যায়ে রয়েছে।’

‘আমরা এখন মোতায়েন করা বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো প্রস্তুত করছি।’

ইসরায়েল এখনো গাজার ৫৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে উপত্যকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাকি হামাস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বাস করে।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, এই পরিকল্পনার অনুমোদন দেবে তথাকথিত বোর্ড অব পিস বা শান্তি পরিষদ। এই বাহিনী বর্তমানে ইসরায়েলের দখলে থাকা এলাকায় মোতায়েন করা হবে। এরপর ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা অনুসারে আন্তর্জাতিক এই বাহিনী নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করলে ইসরায়েলি সেনারা ‘নিরস্ত্রীকরণের সঙ্গে যুক্ত মানদণ্ড, মাইলফলক এবং সময়সীমার ভিত্তিতে’ ধীরে ধীরে সরে যাবে।

১৭ নভেম্বর গৃহীত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব বোর্ড অব পিস এবং এর সঙ্গে কাজ করা দেশগুলোকে আইএসএফ প্রতিষ্ঠা করার অনুমোদন দিয়েছে। ট্রাম্প বুধবার বলেছেন, কোন বিশ্বনেতারা ‘বোর্ড অব পিসে’ থাকবেন, তা আগামী বছরের শুরুতে ঘোষণা করা হবে।

নিরাপত্তা পরিষদ আইএসএফকে নতুন প্রশিক্ষিত ও পরীক্ষিত ফিলিস্তিনি পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করে নিরাপত্তা স্থিতিশীল করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে ‘গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার মাধ্যমে, যার মধ্যে সামরিক, সন্ত্রাসী এবং আক্রমণাত্মক পরিকাঠামো ধ্বংস ও পুনর্নির্মাণ প্রতিরোধ, সেই সঙ্গে অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে অস্ত্রের স্থায়ীভাবে অপসারণও অন্তর্ভুক্ত।’

তবে এটি ঠিক কীভাবে কাজ করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ বৃহস্পতিবার উল্লেখ করেছেন, আইএসএফকে নিরাপত্তা পরিষদ গাজাকে ‘সমস্ত প্রয়োজনীয় উপায়ে’ নিরস্ত্রীকরণের জন্য অনুমোদন দিয়েছে, যার অর্থ বলপ্রয়োগ।

তবে হামাস জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সঙ্গে নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি আলোচনা করেনি এবং গোষ্ঠীটির অবস্থান হলো, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা নিরস্ত্র হবে না।

বিপরীতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভাষণে বলেছেন, দ্বিতীয় ধাপটি নিরস্ত্রীকরণ এবং অস্ত্র প্রত্যাহারের দিকে এগোবে।

তিনি বলেন, ‘এখন একটি প্রশ্ন উঠেছে: আমেরিকায় আমাদের বন্ধুরা এই কাজটি করার জন্য একটি বহুজাতিক টাস্ক ফোর্স প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করতে চায়।’

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি তাদের বলেছি, আমি এটিকে স্বাগত জানাই। এখানে কি স্বেচ্ছাসেবকেরা আছেন? আসতে পারেন। আমরা জানি, এই বাহিনী কিছু নির্দিষ্ট কাজ করতে পারে...কিন্তু কিছু জিনিস তাদের ক্ষমতার বাইরে এবং সম্ভবত মূল কাজটি তাদের ক্ষমতার বাইরে; তবে আমরা তা দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অধৈর্য হয়ে পুতিন-এরদোয়ানের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়লেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

হাদিকে বলেছিলাম—‘র’ তোকে বাঁচতে দেবে না: বোন মাছুমা

হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা

ইরানে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদি গ্রেপ্তার

আসিফ মাহমুদের র‍্যালি পরিণত হলো হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিলে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তীব্র শীতে গাজায় প্রাণ সংহারকারীর ভূমিকায় ‘বায়রন’, নিহত অন্তত ১৪

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজায় অস্থায়ী আশ্রয়ের সামনে জমে যাওয়া পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছে এক শিশু। ছবি: এএফপি
গাজায় অস্থায়ী আশ্রয়ের সামনে জমে যাওয়া পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছে এক শিশু। ছবি: এএফপি

যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় যুদ্ধবিরতির লংঘন ক্বরেই চলছে ইসরায়েল। প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি হামলায় অঞ্চলটিতে কেউ না কেউ নিহত হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রাণ সংহারকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ঝড় বায়রন। এরই মধ্যে বৃষ্টিপাত, জলাবদ্ধতা ও শীতে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে শিশুসহ অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

গাজার অভ্যন্তরীণ ও জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, ঝড় বাইরন গাজা উপত্যকায় আঘাত হেনেছে। এতে কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক হামলার কারণে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো আগে থেকেই বিপন্ন ছিল, তার ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে গেল। তীব্র বাতাস, অবিরাম বৃষ্টি এবং ভেঙে পড়া কাঠামোর নিচে চাপা পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উত্তর গাজার বীর আন-নাজা এলাকায় বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়া একটি বাড়ি ঝড়ের কারণে ধসে পড়লে পাঁচজন মারা যান।

পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে গাজা সিটির রেমাল পাড়ায় দেয়াল ভেঙে তাঁবুর ওপর পড়লে আরও দুজন নিহত হন। এর আগের দিন শাতি শরণার্থী শিবিরে একটি স্থাপনা ধসের কারণে আরও একজন মারা যান, এবং আল-মাওয়াসিতে এক নবজাতক ঠান্ডায় জমে গিয়ে মারা যায়।

গাজার চিকিৎসা কর্মীরা ঠাণ্ডাজনিত কারণে মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধির খবর দিয়েছেন। আল-শিফা হাসপাতালের একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, নয় বছর বয়সী হাদিল আল-মাসরি গাজা সিটির পশ্চিমে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে মারা গেছেন, অন্যদিকে শিশু তাইম আল-খাওয়াজা শাতি শিবিরে মারা গেছে।

খান ইউনিসে আট মাস বয়সী রাহাফ আবু জাজার মারা যায় তার পরিবারের তাঁবু বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হওয়ার পরে। আত্মীয়-স্বজনরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় তাদের নিজেদের বাড়ি ধ্বংস হওয়ার পর পরিবারটি ছাদহীন, বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়িতে আশ্রয় খুঁজছিল।

শিশুটির দাদা বলেন, ‘গতকাল আমরা তার মায়ের চিৎকার শুনে চমকে গেলাম। সে বলছিল, “আমার ছেলের শরীর নীল হয়ে গেছে!” তাই আমরা ছেলেটিকে নিয়ে আল-রান্তিসি হাসপাতালে গেলাম।’ তিনি বলেন, তীব্র ঠাণ্ডায তার সব অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তার মস্তিষ্ক খারাপ হতে শুরু করে এবং এটাই তার শেষ ছিল।’

আল জাজিরার ইব্রাহিম আল-খালিলি দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি থেকে জানান, ঝড় বায় রন দুর্বল আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে মারাত্মক ফাঁদে পরিণত করেছে।

তিনি বলেছেন, ‘কর্মকর্তারা সতর্ক করছেন যে বন্যা, ভারী বৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টি হতে পারে, যা আজও অব্যাহত থাকবে। এটি ৭৬১টি স্থানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মানুষকে হুমকির মুখে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার মধ্যে বহু শিশু রয়েছে। এখানে, ভারী বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে তাঁবুগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, পরিবারগুলো তাদের অস্থায়ী আশ্রয়গুলো ধ্বংসের সম্মুখীন।’

উপকূলরেখার বড় অংশ ধসে পড়েছে, সমুদ্র থেকে কয়েক মিটার দূরে পাতা তাঁবুগুলোকে আরও বিপন্ন করছে। আল-খালিলি বলেন, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে স্থান থেকে স্থানান্তরে বাধ্য হওয়া পরিবারগুলো এখন ‘অতিরিক্ত চাপের’ মুখোমুখি।

তিনি বলেন, ‘তাঁবুগুলো ভেঙে পড়ছে; ঠান্ডা অসহনীয়। আসলে, তাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই। যা ঘটছে তা বিপর্যয়কর।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি কেবল একটি ঝড় নয়; যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার পরেও এটি বাস্তুচ্যুতির এক নতুন ঢেউ। এখানকার অনেকেই আমাকে বলেছেন, এই বন্যার পরে সত্যিই নতুন যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং মানুষ তাদের দুর্বল আশ্রয়গুলো ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অধৈর্য হয়ে পুতিন-এরদোয়ানের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়লেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

হাদিকে বলেছিলাম—‘র’ তোকে বাঁচতে দেবে না: বোন মাছুমা

হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা

ইরানে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদি গ্রেপ্তার

আসিফ মাহমুদের র‍্যালি পরিণত হলো হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিলে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত