Ajker Patrika

‘মিসরীয় ছাত্রীকে হয়রানি’র ঘটনা থেকে কিরগিজ ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৯ মে ২০২৪, ২১: ০৫
Thumbnail image

কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে ‘মিসরীয় এক ছাত্রীকে হয়রানি’র ঘটনা থেকে স্থানীয় ও বিদেশিদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে ভারত ও পাকিস্তানের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে ঘটনা নিয়ে বিদেশি গণমাধ্যম মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলে দেশটির সরকারি ভাষ্য।

১৩ মে মিসরীয় এক ছাত্রীকে স্থানীয় কিরগিজরা হয়রানি করে বলে পাকিস্তানের জিও টিভি ও ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়।

পাকিস্তানি মেডিকেল ছাত্র মোহাম্মদ আবদুল্লাহর বরাতে জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরীয় ছাত্রীকে কিরগিজরা হয়রানি করার পর থেকে সংঘর্ষের শুরু। তবে মিসরীয় ছাত্ররা স্থানীয় ছাত্রদের মারধরের পরপরই সংঘর্ষের শুরু হয়। এরপর কিরগিজরা বিশকেকজুড়ে পাকিস্তানিসহ বিদেশি ছাত্রদের ওপর হামলা শুরু করে। সেখানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও আছেন। 

কিরগিজস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ওই দিন রাজধানীর একটি হোস্টেলের কম্পাউন্ডে স্থানীয় দুজনকে মারধরা করেন বিদেশি ছাত্ররা। ওই ঘটনায় চার মিসরীয় ছাত্রকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। আলামেদিন মার্কেটের কাছে বিদেশি শিক্ষার্থীদেরএকটি হোস্টেলের প্রাঙ্গণে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির ওপর চড়াও হয় প্রায় ১০ জন বিদেশি। স্থানীয়দের আক্রান্ত হওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে। 

প্রতিশোধ নিতে গত শুক্রবার রাতে প্রায় শ খানেক বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জড়ো হন ওগোনবায়েভা স্ট্রিটে। সেখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে হামলা চালায় স্থানীয়রা। গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত চলে বিদেশিদের ওপর স্থানীয়দের হামলা। পুলিশ পরদিন সকালের মধ্যে প্রতিবাদকারী স্থানীয়দের শান্ত করতে সমর্থ হয়। এই হামলার ঘটনায় অন্তত ২৯ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে কিরগিজস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বিশকেকের পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ শান্ত এবং তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানায় মন্ত্রণালয়। বিদেশি গণমাধ্যম এবং সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলো, বিশেষ করে পাকিস্তানে ইচ্ছাকৃতভাবে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। 

বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, ব্লগার এবং বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের কেবল কিরগিজস্তানের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অফিশিয়াল এবং যাচাই করা তথ্য গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। 

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘর্ষের সময় কোনো ধর্ষণ এবং গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। বিশকেকে বসবাসকারী বিদেশি শিক্ষার্থী এবং বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সব পরিষেবা প্রধানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শহরের পরিস্থিতি প্রতিদিন পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ফৌজদারি মামলার অংশ হিসেবে চার বিদেশিকে একটি অস্থায়ী আটক কেন্দ্রে রাখা হয়েছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গুরুতর আহত বা ধর্ষণের কোনো মামলা নথিভুক্ত করা হয়নি। রাজধানীর পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল।

এদিকে হামলার ঘটনায় সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ আবাসস্থলে সতর্কতার সঙ্গে অবস্থানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, উজবেকিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস একই সঙ্গে কিরগিজস্তানের জন্যও দায়িত্বপ্রাপ্ত। বিশকেকে সম্প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর দূতাবাস পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। দূতাবাস এ বিষয়ে কিরগিজস্তান সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে। 

প্রতিবেদন অনুসারে, ১৩ মে কিরগিজ ও মিসরীয় ছাত্রদের মধ্যে লড়াইয়ের ভিডিও গত শুক্রবার ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে স্থানীয়রা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে আক্রমণ করে, সেখানে বিপুলসংখ্যক পাকিস্তানি এবং অন্য দেশের শিক্ষার্থী বসবাস করেন। এ ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বাসভবনেও হামলা হয়।
 
কিরগিজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, চার পাকিস্তানিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং একজনকে চোয়ালের আঘাতের জন্য চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত