Ajker Patrika

কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া

কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া

কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে প্রাণী অধিকার নিয়ে সচেতনতা বেড়ে যাওয়ায় প্রাচীন এ বিতর্কিত সংস্কৃতি চিরতরে নিষিদ্ধ করা হবে। আজ শুক্রবার দেশটির ক্ষমতাসীন দলের প্রধান নীতিনির্ধারক এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কোরিয়ার কুকুরের মাংস খাওয়ার সংস্কৃতি বাইরের দেশগুলোতে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বিবেচনায় বেশ সমালোচিত। সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে দেশটির মধ্যেও এ সংস্কৃতি ঘিরে বিরোধিতা শুরু হয়েছে, বিশেষ করে, দক্ষিণ কোরিয়ার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।

সরকারি কর্মকর্তা ও প্রাণী অধিকার কর্মীদের মধ্যে এক বৈঠকে ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির প্রধান নীতিনির্ধারক ইউ ইউই–ডং বলেন, ‘কুকুরের মাংস খাওয়ার বিষয়ে সামাজিক দ্বন্দ্ব এবং বিতর্কের অবসান ঘটানোর জন্য একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের সময় এসেছে।’

চলতি বছর সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য একটি বিল উত্থাপন করবেন বলে জানান ইউ। তিনি আরও বলেন, প্রত্যাশিত দ্বিপক্ষীয় সমর্থন নিয়ে বিলটি পার্লামেন্টে পাস হওয়া উচিত।

বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী চুং হোয়াং–কেউন বলেন, সরকার শিগগিরই একটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে এবং কুকুরের মাংসের বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্তদের ব্যবসা বন্ধ করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ সহায়তা করবে।

ফার্স্ট লেডি কিম কেওন হি কুকুরের মাংস ভক্ষণের বিরোধিতায় সব সময়ই বেশ সরব ছিলেন। তিনি এবং তাঁর স্বামী প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউল বেশ কয়েকটি আশ্রয়হীন কুকুর পুষছেন।

কুকুরের মাংস বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্তদের বিক্ষোভের মুখে কুকুরের মাংস বিরোধী বিলগুলো এর আগে পাস হয়নি। এ ছাড়া কৃষক ও রেস্তোরাঁ মালিকদের জীবিকার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞার মধ্যে তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ড (অর্থাৎ তিন বছর পর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে) এবং ব্যবসাগুলোকে কুকুরের মাংস বেচাকেনা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। 

কুকুরের মাংস খাওয়া কোরীয় উপদ্বীপে একটি প্রাচীন চর্চা এবং গ্রীষ্মের উত্তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হিসেবে বিশ্বাস করা হয়। তবে আগের তুলনায় এখন এর প্রচলন বেশ কমে এসেছে। যদিও এখনো বয়স্ক অনেকে কুকুরের মাংস খান এবং বিশেষ কয়েকটি রেস্তোরাঁয় এখনো এটি পরিবেশন করা হয়। 

প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলো নিষেধাজ্ঞার এ ধারণাকে স্বাগত জানিয়েছে। হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই নিষ্ঠুরতার অবসান ঘটাতে যারা কঠোর প্রচার চালিয়েছেন তাঁদের সবার স্বপ্ন সত্য হয়েছে।’ 

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ১ হাজার ১৫০টি কুকুর প্রজনন খামার, ৩৪টি কসাইখানা, ২১৯টি বিতরণ সংস্থা এবং কুকুরের মাংস বিক্রি করে এমন প্রায় ১ হাজার ৬০০ রেস্তোরাঁ রয়েছে। 

গত বছর গ্যালাপ কোরিয়ার এক জরিপে দেখা গেছে, ৬৪ শতাংশ মানুষ কুকুরের মাংস খাওয়ার বিরোধিতা করেন। জরিপ অনুসারে, গত এক বছরে মাত্র ৮ শতাংশ উত্তরদাতা কুকুরের মাংস খেয়েছেন, যেখানে ২০১৫ সালে এ অনুপাত ছিল ২৭ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত