Ajker Patrika

৩৮ বছর বয়সেই ২০০ বাড়ির মালিক, বছরে আয় ১১ কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৪৭
Thumbnail image
হায়াতো কাওয়ামুরা ২০০টি বাড়ি থেকে বছরে প্রায় ১১ কোটি টাকা আয় করেন। ছবি: কিউকিউ ডট কম

জাপানে পরিত্যক্ত বসতবাড়ির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জাপান সরকারের জন্য এটি একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হয়ে দেখা দিলেও কারও কারও জন্য নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। অনেক উদ্যোক্তা এখন এসব পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায় বিনিয়োগ করছেন।

সম্প্রতি এই ব্যবসায় আলোচনায় এসেছেন ওসাকার ৩৮ বছর বয়সী হায়াতো কাওয়ামুরা।

২০০টি পুরোনো ও জরাজীর্ণ বাড়ি কিনেছেন তিনি। সেগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে ভাড়া দিচ্ছেন। এখন বছরে ভাড়া পাচ্ছেন ১৪ কোটি ইয়েন বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ কোটি টাকা।

ছোটবেলা থেকেই নানা নকশার বসতবাড়ির প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন কাওয়ামুরা। পাহাড়ে বসে দূরে শহরের সারি সারি বাড়ি দেখতেন।

পরবর্তীতে ছাত্রজীবনে এসে এই আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। সেসময় প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি দেখতে যেতেন কাওয়ামুরা। তবে তখন এসব বাড়ি কেনার সামর্থ্য ছিল না তাঁর।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্নাতক শেষ করে কাওয়ামুরা একটি প্রোপার্টি রেন্টাল কোম্পানিতে যোগ দেন। এই চাকরি তাঁর আগ্রহ আরও উসকে দেয়। কিন্তু এই চাকরি বেশি দিন করতে পারেননি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধের জেরে তাঁর বসের পদাবনতি হয়। এই ব্যাপারটি দেখে কাওয়ামুরার মনে হয়, অন্যের অধীনে কাজ করায় অনেক ঝুঁকি।

কাওয়ামুরা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছিলাম পদোন্নতি দক্ষতার ওপর নয়, বরং আপনার বস আপনাকে পছন্দ করেন কিনা তার ওপর নির্ভর করে।’ তিনি খেয়াল করেন, তাঁর বেতন পরিশ্রমের তুলনায় অনেক কম। আর কাজের চাপও অনেক বেশি।

তিনি বলেন, ‘আমি এই পরিমাণ আয় চেয়েছিলাম, যা পেলে আমাকে আর বেতনের দিকে চেয়ে থাকতে হবে না।’

তাই আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়ার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাওয়ামুরা টাকা জমাতে শুরু করেন। ২৩ বছর বয়সে প্রথমবার এক নিলামে প্রায় ১৪ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কেনেন। এরপর ফ্ল্যাটটি তিনি বার্ষিক ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকায় ভাড়া দেন।

এর ঠিক ছয় বছর পর, এই ফ্ল্যাটটিই তিনি বিক্রি করেন ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকায়।

কাওয়ামুরার এটিকে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে লুফে নেন। সস্তায় পাওয়া যায় এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলের জরাজীর্ণ বাড়িগুলো টার্গেট করেন তিনি। এগুলোর দাম ৭ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার মধ্যে ছিল।

এভাবে জাপানের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ি কিনতে শুরু করেন কাওয়ামুরা। এসব বাড়ির বেশির ভাগই জরাজীর্ণ বা পুরোনো ছিল। কিছু ছিল বেওয়ারিশ, যেগুলো তিনি অল্প দামে নিলামে কিনে নেন। এভাবে প্রায় ২০০টি বাড়ির মালিক হন কাওয়ামুরা। তিনি এই বাড়িগুলো সংস্কার করেন এবং ভাড়া দেন। ২০১৮ সালে করপোরেটের চাকরি ছেড়ে কাওয়ামুরা প্রতিষ্ঠা করেন নিজের রিয়েল এস্টেট ফার্ম ‘মেরি হোম’।

বর্তমানে এই ২০০ বাড়ি থেকে কাওয়ামুরার বার্ষিক আয় প্রায় ১১ কোটি টাকা! কাওয়ামুরা বলেন, ‘আমি কখনই রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখিনি। রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ, একটি দীর্ঘমেয়াদি খেলা, যার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য এবং মনোযোগ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত