Ajker Patrika

দুর্ধর্ষ এক সিরিয়াল কিলারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল জাপান

অনলাইন ডেস্ক
২০১৭ সালে গ্রেপ্তারের পর তাকাহিরো শিরাইশি। ছবি: সিএনএন
২০১৭ সালে গ্রেপ্তারের পর তাকাহিরো শিরাইশি। ছবি: সিএনএন

প্রায় তিন বছর পর আবারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো জাপানে। এবার ফাঁসি দেওয়া হয়েছে ‘টুইটার কিলার’ নামে পরিচিত তাকাহিরো শিরাইশিকে। তিনি অন্তত ৯ জনকে হত্যা ও ছিন্নভিন্ন করার অপরাধে দণ্ডিত ছিলেন। তাঁর শিকারদের অধিকাংশই ছিলেন নারী।

সিএনএন জানিয়েছে, ৩৪ বছর বয়সী শিরাইশিকে আজ শুক্রবার টোকিওর ডিটেনশন হাউসে ফাঁসি দেওয়া হয়। ২০২০ সালে তিনি ৯ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আটজন নারী ও এক পুরুষ।

শিরাইশিকে ২০১৭ সালের অক্টোবরে জাপানের কানাগাওয়া প্রদেশের জামা শহরে অবস্থিত একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মূলত আত্মহত্যার প্রবণতা প্রকাশ করা ২৩ বছর বয়সী এক নারীর খোঁজে পুলিশ শিরাইশির অ্যাপার্টমেন্টে গিয়েছিল। ওই নারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে টুইটারে (বর্তমানে এক্স) আত্মহত্যার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

তল্লাশি চালাতে গিয়েই এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হয় পুলিশ। শিরাইশির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তারা তিনটি কুলার বক্স ও পাঁচটি কনটেইনার উদ্ধার করে। এগুলোর মধ্যে ছিল মানুষের মাথা, হাড় ও ক্ষতবিক্ষত মাংস।

এই ভয়াবহ ঘটনাটি গোটা জাপানকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল।

জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা এনএইচকে এবং টিভি আসাহি জানিয়েছে, শিরাইশির হাতে নিহতদের বয়স ছিল ১৫ থেকে ২৬-এর মধ্যে। তাদের প্রায় সবাই তৎকালীন টুইটারে আত্মহত্যার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছিলেন এবং শিরাইশি সেই সব পোস্ট দেখে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

টুইটারে একটি ছদ্মনামে আত্মহত্যা প্রবণ তরুণ-তরুণীদের নিজ বাসায় আমন্ত্রণ জানাতেন শিরাইশি। আত্মহত্যায় সহায়তার আশ্বাস দিতেন। তবে আদালতে তিনি স্বীকার করেন, নিজের যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্যই তিনি তাদের শিকারে পরিণত করেন।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাকাহিরো শিরাইশিকে ৯ জনকে হত্যা, ধর্ষণ ও শরীর ছিন্নভিন্ন করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তিনি তাদের দেহাংশ নিজের অ্যাপার্টমেন্টে রেখে দিয়েছিলেন।

শিরাইশির আইনজীবী প্রথমে রায়ের বিরুদ্ধে টোকিও উচ্চ আদালতে আপিল করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় দণ্ড চূড়ান্ত হয়।

জাপানের বিচারমন্ত্রী কেইসুকে সুজুকি বলেছেন, ‘এই মামলাটি ছিল চরম স্বার্থপর ও বিকৃত মানসিকতার ফল, যেখানে যৌন ও আর্থিক তৃপ্তির জন্য ৯টি প্রাণ শেষ হয়ে যায় মাত্র দুই মাসের মধ্যে। এটি সমাজে তীব্র শোক ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আমি ভিকটিম ও তাদের পরিবারের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি।’

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর এনএইচকে-কে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এক ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম, সে (শিরাইশি) যেন তার বাকি জীবনটা অপরাধ নিয়ে অনুশোচনায় কাটাক, মৃত্যুদণ্ডে যেন সে নিষ্কৃতি না পায়।’

শিরাইশির মৃত্যুদণ্ড ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর জাপানে এটি প্রথম কার্যকর হওয়া মৃত্যুদণ্ড। জাপানে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় এবং তা চরম গোপনীয়তায় সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তারিখ আগে জানানো হয় না এবং অনেক সময় পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীদেরও পরে জানানো হয়।

বিচারমন্ত্রী সুজুকি বলেন, ‘আদালতের দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের রায় চূড়ান্ত হয়েছে। সব বিষয় গভীরভাবে বিবেচনা করে আমি এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত