Ajker Patrika

সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজ ছিনতাই করে যেভাবে, সতর্ক করল ইইউ নেভি

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারের কোনো তৎপরতা এখনও শুরু হয়নি। মুক্তিপণের বিষয়ে জলদস্যুদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো যোগাযোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সোমালিয়ার পুলিশ ও আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর সম্মিলিত দলের অভিযান শুরুর প্রস্তুতির খবর থাকলেও জাহাজ মালিক বা বাংলাদেশ সরকার এবিষয়ে অবহিত নয়।

ভারত মহাসাগরে টহলে থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর (ইইউ নেভি) আটলান্টা অপারেশনের একটি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর পিছু নিয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীও দূর থেকে নজরদারি চালাচ্ছে।

ইইউ নেভি বলছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষ দিক থেকে সোমালিয়ার অববাহিকায় জলদস্যুতা ও অপহরণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনার খবর মিলেছে, যাতে সোমালিয়ার উপকূলে জলদস্যুদের আক্রমণের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের শেষে জলদস্যুদের কর্মকাণ্ড আরও সহজ হতে পারে।

জলদস্যুরা জাহাজ ছিনতাই করে যেভাবে

মাস্তুল জাহাজ আটক ও ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে সাধারণত জলদস্যুদের কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এটাকেই পরে তারা মাদার শিপ বা মূল জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করে। সেটা নিয়ে তাঁরা স্বাভাবিক চলাচলের ভান করে এবং সুযোগ বুঝে তাঁরা মাদার শিপ থেকে সাগরে ছোট নৌকা নামিয়ে দেয়। এগুলোই পূর্ব সোমালি উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল বা তার চেয়ে দূরে চলাচলরত জাহাজে হামলা করে। এখান থেকে এডেন উপসাগরে হামলার সম্ভাবনাও খারিজ করা যায় না।

টার্গেট করা জাহাজ হামলা ঠেকাতে না পারলে জলদস্যুরা জাহাজে উঠে যায়। জাহাজকে কব্জায় নেওয়ার পর সেটিকে সোমালি উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিম্মি করে রেখে মুক্তিপণ নিয়ে আলোচনা চালাতে থাকে। তবে এমভি রুয়েন (গত ১৬ মার্চ ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে মুক্ত) ছিনতাই করে সোমালিয়ার উপকূলে নোঙর করা পর সেটিকে বেশ কয়েকবার অজানা কারণে নোঙর তুলতে দেখা গেছে।

সম্প্রতি জলদস্যুতার হুমকি বেড়ে যাওয়ায় সোমালিয়া অববাহিকায় সোমালিয়ার উপকূলের কাছে চলাচলরত জাহাজগুলিকে উচ্চ সতর্কতা অবস্থায় থাকতে বলেছে ইইউ নেভি। সোমালিয়ার উপকূলের দিকে যাত্রা শুরুর আগে সর্বোত্তম নিরাপত্তা অনুশীলন (বিএমপি৫) অনুসরণ করে বিশেষ মনোযোগের সঙ্গে নিরাপত্তা মহড়ার আয়োজনের জোরালো সুপারিশ করা হয়েছে।

কেএসআরএম গ্রুপের কয়লাবোঝাই জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে। জিম্মি করার সাত দিন হতে চললেও মুক্তিপণের কোনো দাবি করেনি জলদস্যুরা। নাবিকদের আত্মীয়স্বজন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছেন।

ইইউ নেভির ধারণা, এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিনতাই হওয়া মাল্টার পতাকাবাহী বাল্ক ক্যারিয়ার রুয়েনকে ব্যবহার করেছে জলদস্যুরা। রুয়েনকে এরই মধ্যে ভারতের নৌবাহিনী উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি ৩৫ সোমালি জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর মধ্যে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিককে উদ্ধারে সোমালিয়ার পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর সম্মিলিত দল অভিযান শুরুর প্রস্তুতি চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

একটি বিবৃতিতে পুন্টল্যান্ড পুলিশ বলেছে, আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের পরিকল্পনা করছে—এমন রিপোর্ট পাওয়ার পর পুন্টল্যান্ড পুলিশ বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। এবিষয়ে ভারতের নৌবাহিনীর কাছ থেকে রয়টার্স মন্তব্য চাইলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

গতকাল রোববার পুন্টল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা জলদস্যুদের কাছে পাঠানোর সময় মাদকবাহী একটি গাড়ি জব্দ করেছে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত