Ajker Patrika

বাংলাদেশকে অবশ্যই মানবাধিকারকর্মীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে: জাতিসংঘ

আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৩, ২২: ০৯
বাংলাদেশকে অবশ্যই মানবাধিকারকর্মীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে: জাতিসংঘ

বাংলাদেশে মানবাধিকারকর্মীরা যেন নির্ভয়ে এবং নিরাপদ পরিবেশে তাঁদের বৈধ কাজগুলো পরিচালনা করতে পারেন তার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে বিশেষজ্ঞ দলটি নিবন্ধন বাতিল হওয়া বাংলাদেশি মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর প্রসঙ্গ টানেন।

এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর প্রতিনিধিদের ওপর সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে বাংলাদেশকে।

গত বছরের জুনে মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর সব ধরনের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সরকার। এ বিষয়ে জাতিসংঘ প্রতিনিধিরা বলেছেন, মানবাধিকারকর্মী এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্য এ ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিকে ব্যবহার করা হয়েছে।

‘অধিকার’ সংগঠনের প্রতিনিধিরা জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রক্রিয়ার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে বলেও জানান তাঁরা।

এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকার ইস্যুতে রিপোর্ট বন্ধ করাসহ জাতিসংঘকে প্রতিনিধিদের সহযোগিতা করা থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা বলে উল্লেখ করেন বিশেষজ্ঞরা।

অধিকার-এর নবায়ন আবেদন ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের জুনে নিবন্ধন বাতিল করে দেওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশি এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো (এনজিওএবি) এর কাছে অপেক্ষমাণ ছিল। নবায়ন আবেদনটি বাতিল করে অধিকারকে বিভ্রান্তিকর তথ্য, বিশ্বের কাছে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে মারাত্মক কলঙ্কিত এবং দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টির দায়ে অভিযুক্ত করেছিল এনজিওএবি।

বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, বাংলাদেশে মানবাধিকারকর্মী ও সংস্থার ওপর যে হয়রানি চলছে তা অধিকারের মামলাটিতেই প্রতিফলিত হয়। এই বিষয়টি আইসিসিপিআর-এর ধারা ২২-এর অধীনে ‘প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার অধিকার’-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।

আরও বলা হয়, বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ‘অধিকার’-এর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের ১০ বছর পরও সংগঠনটির সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান এবং পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ভুয়া, বিকৃত এবং মানহানিকর তথ্য প্রকাশের অভিযোগে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

গত ৫ এপ্রিল একজন সাইবার ট্রাইব্যুনাল বিচারক অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়াকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেওয়া বন্ধ করে দেন। তিনটি শুনানির পর যখন বিচারক অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে অনাগ্রহী ছিলেন, সে সময় প্রসিকিউটর আরও তদন্তের জন্য একটি আবেদন জমা দেন, যা নিয়ে আপত্তি জানান মানবাধিকারকর্মীরা।

গত ১৫ মে মানবাধিকারকর্মীদের আপত্তি নাকচ করে প্রসিকিউশনের অনুরোধ মঞ্জুর করেন বিচারক। এ ছাড়া আদালতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমতি না দেওয়ায় এমন সিদ্ধান্তের ভিত্তি সম্পর্কে স্পষ্টতা দিতেও ব্যর্থ হন বিচারক। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, আইনি প্রক্রিয়ায় সুবিচার না পাওয়ার পাশাপাশি গণমাধ্যমে সাংগঠনিক এবং ব্যক্তিগত উভয় পর্যায়ে অধিকার-এর কর্মীরা মানহানির শিকার হচ্ছেন।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মানহানির মাধ্যমে বাংলাদেশে সংগঠনগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা, খ্যাতি এবং মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চলছে।

এ অবস্থায় যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান ও সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি তাঁরা অধিকার-এর নেতা ও মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান এবং এএসএম নাসিরউদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মীর বিরুদ্ধে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিহিংসামূলক বিচারিক হয়রানি এবং অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। মানবাধিকারকর্মীরা যেন নির্ভয়ে নিরাপদ পরিবেশে তাঁদের বৈধ কাজ পরিচালনা করতে পারেন সে আশাও ব্যক্ত করেন তাঁরা।

মানবাধিকারকর্মীদের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ প্রতিনিধি মিসেস মেরি ললর, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাসংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি মিসেস আইরিন খান, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সভার স্বাধীনতার অধিকারের বিশেষ প্রতিনিধি ক্লেমেন্ট নাইলেটোসি ভউল বিবৃতি দেওয়া ওই বিশেষজ্ঞ দলটির মধ্যে অন্যতম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রুয়া নির্বাচন: বিএনপিপন্থীদের বর্জন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জামায়াতপন্থী ২৭ জন নির্বাচিত

‘পাপ কাহিনী’র হাত ধরে দেশের ওটিটিতে ফিরল অশ্লীলতা

সৌদি আরবের কেনা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে দেওয়ার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের, প্রত্যাখ্যান করে কিসের ইঙ্গিত দিল রিয়াদ

সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় সমন্বয়ক পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, আটক ৫

আগের তিন ভোটের নির্বাচনী কর্মকর্তারা দায়িত্ব পাবেন না

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত