Ajker Patrika

বৈরী আবহাওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত, নিহত বেড়ে ৪ হাজার ৩০০

আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০: ১৮
বৈরী আবহাওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত, নিহত বেড়ে ৪ হাজার ৩০০

শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়া লন্ডভন্ড। গতকাল সোমবার ভোরের দিকে ভূমিকম্পের পর থেকে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। গতকাল রাতভর উদ্ধারকাজ চলে, এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিধ্বস্ত বাড়ি–ঘরের বাসিন্দারা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছেন। রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দেশে মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে প্রায় ২ হাজার ৯০০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০০ জনে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, নিহতদের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়বে। ডব্লিউএইচও–এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা যা জানা গেছে, সেটা পর্যাপ্ত নয়। এই সংখ্যা এখনকার তুলনায় আটগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ দিকে ভূমিকম্পের কারণে দেখা দেওয়া চরম মানবিক সংকট মোকাবিলায় তুরস্ক ও সিরিয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইসরায়েল, রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ। 

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরতায় আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলটি গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমাচ্ছিলেন। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পরই আরেকটি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। পরের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের এলবিস্তান এলাকায়। ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। 

ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। এসব মানুষের বেশির ভাগই ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীদের অভিযান চলছে। 

ইউএসজিএস আরও জানায়, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাসহ দেশটির অন্যান্য শহরে এবং পার্শ্ববর্তী সিরিয়াসহ প্রতিবেশী দেশ লেবানন, সাইপ্রাস, ইসরায়েলেও এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। এরপর কয়েকবার পরাঘাত আঘাত হানে। এগুলোর মধ্যে একটি ছিল ৬ দশমিক ৪ ও একটি ৬ দশমিক ৫ মাত্রার। 

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ভূমিকম্পে হতাহতদের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করে এই বিপর্যয় মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এক টুইটার পোস্টে বলেন, ‘ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের সকল নাগরিককে সমবেদনা জানাই। আশা করি আমরা দ্রুত এ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারব।’ 

তুরস্ক সীমান্তে থাকা সিরিয়ার আল–শিফা হাসপাতালের চিকিৎসক শাজুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এখন কোনো বিছানা ফাঁকা নেই। এই মুহূর্তে ৩০০ থেকে ৪০০ জন রোগী ভর্তি আছেন। আক্ষরিক অর্থেই এক বিছানায় এখন দুই থেকে তিনজন করে রোগী রয়েছেন।’ 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত