আলমগীর আলম
রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী আচরণ, খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যের পার্থক্য নিয়ে একটি জনপ্রিয় তত্ত্ব আছে। সেটিকে বলা হয় ‘ব্লাড টাইড ডায়েট’ বা রক্তের গ্রুপভিত্তিক খাদ্যতত্ত্ব। এই তত্ত্বের মূল প্রবর্তক ড. পিটার ডি’আডামো। তিনি তাঁর বই ‘ইট রাইট ফোর টাইপ’ (১৯৯৬)-এ দাবি করেন, রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী মানুষের শরীরের হজম, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও খাদ্যের প্রয়োজন ভিন্ন হয়। রক্তের গ্রুপ অনুসারে খাবার খেলে মানুষ সুস্থ থাকতে পারে সহজে। সেই সঙ্গে তিনি খাবারকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। এর এক ভাগ উপকারী, একটি পরিহারযোগ্য এবং অন্যটি নিরপেক্ষ।
গ্রুপ অনুসারে মানুষের বৈশিষ্ট্য ও খাবার
গ্রুপ ‘ও’: শিকারি। শিকারি বলতে আদি মানুষ, যারা শিকার করে খাবার খেত। তাদের রক্তের গ্রুপ সাধারণত ছিল ‘ও’। ফলে তাদের প্রাণিজ খাবার হজম হলেও শস্যভিত্তিক খাবার ভালো হজম হয় না।
গ্রুপ ‘এ’: চাষাবাদকারী। এরা নিরামিষভোজী। নিরামিষ খাবার এদের জন্য বেশি উপযোগী। যে অঞ্চলে প্রাণিজ খাবার ছিল না, সেই অঞ্চলে তারা ফলমূল খেয়ে জীবনযাপন করত। কৃষিসভ্যতা গড়ে ওঠার সময় মানুষ ‘এ’ গ্রুপের রক্ত পায়।
গ্রুপ ‘বি’: যাযাবর। দুগ্ধজাত খাবার, শস্য ও মাংস খেতে পারে। এই গ্রুপের মানুষ সবই খেতে পারত; বিশেষ করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে যারা টিকে থাকত, তারা ফসল ফলিয়ে খেতে পারত, আবার শিকার করেও খেতে পারত।
গ্রুপ ‘এবি’: আধুনিক রক্তের গ্রুপ। মাঝামাঝি খাদ্যতালিকা। এর বৈশিষ্ট্য রান্না করে খাবার খাওয়া। এই গ্রুপের মানুষ সবই অল্প অল্প খেতে পারে।
বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি
এই তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ খুব শক্ত নয়। বেশ কিছু গবেষণা এই তত্ত্বকে বাতিল করে দিয়েছে। তার মধ্যে ২০১৩ সালে ‘আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা বলেছে, রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী খাদ্যতালিকার কার্যকারিতা প্রমাণিত নয়।
এ ছাড়া কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৪ সালে আরেকটি গবেষণায় জানায় যে এই তত্ত্ব অনুযায়ী খাদ্য খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যগত কিছু উপকার হতে পারে, কিন্তু তা রক্তের গ্রুপের কারণে নয়।
তত্ত্বটি কীভাবে জনপ্রিয় হলো
তারপরও কিন্তু এই তত্ত্ব বেশ জনপ্রিয়। এর কারণ হলো, ব্যক্তিকেন্দ্রিক সুস্বাস্থ্যের জন্য মানুষ এই রীতি অনুশীলন করে উপকৃত হয়েছে। অনেকে নিজের রক্তের গ্রুপের ভিত্তিতে খাদ্য নির্বাচন করাকে সুস্বাস্থ্যের জন্য ‘বিশেষভাবে’ প্রয়োজনীয় মনে করে। এ ছাড়া কিছু খাদ্য পরিবর্তন করার ফলে ওজন বা হজমে উন্নতি হয়েছে কিছু মানুষের। কৌতূহলী মানুষ রক্তের গ্রুপের কারণে মিলিয়ে দেখেছে এবং আবিষ্কার করেছে, খাদ্য পরিবর্তনের ফলে হজমের উন্নতি হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এই নিয়ম মেনে চলে সুস্থতাবোধ করছে, এই নিয়মে অসুস্থ হওয়ার হার কমেছে।
রক্তের কোন গ্রুপের জন্য কোন খাবার
গ্রুপ ও
উপকারী খাবার
গরু, ভেড়া ও মুরগির মাংস, ব্রকলি, রসুন, পেঁয়াজ, পালংশাক, খেজুর, আনার, অলিভ অয়েল, আখরোট, ফ্ল্যাক্স সিড, আদা, হলুদ, মরিচগুঁড়া।
নিরপেক্ষ খাবার
ভাত, সয়াবিন তেল, গাজর, লেটুস, আপেল, আঙুর, দুধবিহীন দই।
নিষিদ্ধ খাবার
গম, ভুট্টা, বার্লি, গরুর দুধ, পনির, আলু, বাঁধাকপি, কমলা, স্ট্রবেরি, কাজু, পেস্তা।
গ্রুপ এ
উপকারী খাবার
ব্রকলি, কুমড়া, গাজর, রসুন, পালংশাক, আনারস, ব্লুবেরি, চেরি, আপেল, ওটস, ভাত, টোফু, সয়াবিন, অলিভ অয়েল, বাদাম, আখরোট।
নিরপেক্ষ খাবার
মটর, ডাল, সাদা চাল, দুধবিহীন দই।
নিষিদ্ধ খাবার
গরু, ভেড়া ও হাঁসের মাংস, পনির, দুধ, টমেটো, আলু, বাঁধাকপি, কমলা, কলা, পেঁপে।
গ্রুপ বি
উপকারী খাবার
ভেড়ার মাংস, দুধ, দই, পনির, স্যামন, ওটস, ভাত, শাক, বাঁধাকপি, বিট, আঙুর, কলা, পেঁপে।
নিরপেক্ষ খাবার
মাঝেমধ্যে মুরগির মাংস, বাদাম, টোফু, কমলা, আনার।
বিরূপ বা এড়াতে হবে
মুরগি ও হাঁসের মাংস, ভুট্টা, গম, বার্লি, টমেটো, অলিভ অয়েল, কাজু, তিল।
গ্রুপ এবি
উপকারী খাবার
স্যামন, টুনা, ম্যাকেরেল, দই, পনির, দুধ (সীমিতভাবে), ব্রকলি, ফুলকপি, রসুন, আনারস, চেরি, আঙুর, ওটস, ভাত, আখরোট, চিনাবাদাম।
নিরপেক্ষ খাবার
সয়াবিন, টোফু, স্পেল্ট রুটি, কমলা।
বিরূপ বা এড়াতে হবে
লাল মাংস, ভুট্টা, গম, কলা, নারকেল, ক্যাফেইন, অ্যালকোহল।
পরামর্শ দিয়েছেন: খাদ্য, পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী আচরণ, খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যের পার্থক্য নিয়ে একটি জনপ্রিয় তত্ত্ব আছে। সেটিকে বলা হয় ‘ব্লাড টাইড ডায়েট’ বা রক্তের গ্রুপভিত্তিক খাদ্যতত্ত্ব। এই তত্ত্বের মূল প্রবর্তক ড. পিটার ডি’আডামো। তিনি তাঁর বই ‘ইট রাইট ফোর টাইপ’ (১৯৯৬)-এ দাবি করেন, রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী মানুষের শরীরের হজম, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও খাদ্যের প্রয়োজন ভিন্ন হয়। রক্তের গ্রুপ অনুসারে খাবার খেলে মানুষ সুস্থ থাকতে পারে সহজে। সেই সঙ্গে তিনি খাবারকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। এর এক ভাগ উপকারী, একটি পরিহারযোগ্য এবং অন্যটি নিরপেক্ষ।
গ্রুপ অনুসারে মানুষের বৈশিষ্ট্য ও খাবার
গ্রুপ ‘ও’: শিকারি। শিকারি বলতে আদি মানুষ, যারা শিকার করে খাবার খেত। তাদের রক্তের গ্রুপ সাধারণত ছিল ‘ও’। ফলে তাদের প্রাণিজ খাবার হজম হলেও শস্যভিত্তিক খাবার ভালো হজম হয় না।
গ্রুপ ‘এ’: চাষাবাদকারী। এরা নিরামিষভোজী। নিরামিষ খাবার এদের জন্য বেশি উপযোগী। যে অঞ্চলে প্রাণিজ খাবার ছিল না, সেই অঞ্চলে তারা ফলমূল খেয়ে জীবনযাপন করত। কৃষিসভ্যতা গড়ে ওঠার সময় মানুষ ‘এ’ গ্রুপের রক্ত পায়।
গ্রুপ ‘বি’: যাযাবর। দুগ্ধজাত খাবার, শস্য ও মাংস খেতে পারে। এই গ্রুপের মানুষ সবই খেতে পারত; বিশেষ করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে যারা টিকে থাকত, তারা ফসল ফলিয়ে খেতে পারত, আবার শিকার করেও খেতে পারত।
গ্রুপ ‘এবি’: আধুনিক রক্তের গ্রুপ। মাঝামাঝি খাদ্যতালিকা। এর বৈশিষ্ট্য রান্না করে খাবার খাওয়া। এই গ্রুপের মানুষ সবই অল্প অল্প খেতে পারে।
বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি
এই তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ খুব শক্ত নয়। বেশ কিছু গবেষণা এই তত্ত্বকে বাতিল করে দিয়েছে। তার মধ্যে ২০১৩ সালে ‘আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা বলেছে, রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী খাদ্যতালিকার কার্যকারিতা প্রমাণিত নয়।
এ ছাড়া কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৪ সালে আরেকটি গবেষণায় জানায় যে এই তত্ত্ব অনুযায়ী খাদ্য খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যগত কিছু উপকার হতে পারে, কিন্তু তা রক্তের গ্রুপের কারণে নয়।
তত্ত্বটি কীভাবে জনপ্রিয় হলো
তারপরও কিন্তু এই তত্ত্ব বেশ জনপ্রিয়। এর কারণ হলো, ব্যক্তিকেন্দ্রিক সুস্বাস্থ্যের জন্য মানুষ এই রীতি অনুশীলন করে উপকৃত হয়েছে। অনেকে নিজের রক্তের গ্রুপের ভিত্তিতে খাদ্য নির্বাচন করাকে সুস্বাস্থ্যের জন্য ‘বিশেষভাবে’ প্রয়োজনীয় মনে করে। এ ছাড়া কিছু খাদ্য পরিবর্তন করার ফলে ওজন বা হজমে উন্নতি হয়েছে কিছু মানুষের। কৌতূহলী মানুষ রক্তের গ্রুপের কারণে মিলিয়ে দেখেছে এবং আবিষ্কার করেছে, খাদ্য পরিবর্তনের ফলে হজমের উন্নতি হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এই নিয়ম মেনে চলে সুস্থতাবোধ করছে, এই নিয়মে অসুস্থ হওয়ার হার কমেছে।
রক্তের কোন গ্রুপের জন্য কোন খাবার
গ্রুপ ও
উপকারী খাবার
গরু, ভেড়া ও মুরগির মাংস, ব্রকলি, রসুন, পেঁয়াজ, পালংশাক, খেজুর, আনার, অলিভ অয়েল, আখরোট, ফ্ল্যাক্স সিড, আদা, হলুদ, মরিচগুঁড়া।
নিরপেক্ষ খাবার
ভাত, সয়াবিন তেল, গাজর, লেটুস, আপেল, আঙুর, দুধবিহীন দই।
নিষিদ্ধ খাবার
গম, ভুট্টা, বার্লি, গরুর দুধ, পনির, আলু, বাঁধাকপি, কমলা, স্ট্রবেরি, কাজু, পেস্তা।
গ্রুপ এ
উপকারী খাবার
ব্রকলি, কুমড়া, গাজর, রসুন, পালংশাক, আনারস, ব্লুবেরি, চেরি, আপেল, ওটস, ভাত, টোফু, সয়াবিন, অলিভ অয়েল, বাদাম, আখরোট।
নিরপেক্ষ খাবার
মটর, ডাল, সাদা চাল, দুধবিহীন দই।
নিষিদ্ধ খাবার
গরু, ভেড়া ও হাঁসের মাংস, পনির, দুধ, টমেটো, আলু, বাঁধাকপি, কমলা, কলা, পেঁপে।
গ্রুপ বি
উপকারী খাবার
ভেড়ার মাংস, দুধ, দই, পনির, স্যামন, ওটস, ভাত, শাক, বাঁধাকপি, বিট, আঙুর, কলা, পেঁপে।
নিরপেক্ষ খাবার
মাঝেমধ্যে মুরগির মাংস, বাদাম, টোফু, কমলা, আনার।
বিরূপ বা এড়াতে হবে
মুরগি ও হাঁসের মাংস, ভুট্টা, গম, বার্লি, টমেটো, অলিভ অয়েল, কাজু, তিল।
গ্রুপ এবি
উপকারী খাবার
স্যামন, টুনা, ম্যাকেরেল, দই, পনির, দুধ (সীমিতভাবে), ব্রকলি, ফুলকপি, রসুন, আনারস, চেরি, আঙুর, ওটস, ভাত, আখরোট, চিনাবাদাম।
নিরপেক্ষ খাবার
সয়াবিন, টোফু, স্পেল্ট রুটি, কমলা।
বিরূপ বা এড়াতে হবে
লাল মাংস, ভুট্টা, গম, কলা, নারকেল, ক্যাফেইন, অ্যালকোহল।
পরামর্শ দিয়েছেন: খাদ্য, পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে সাতজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সাতজনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়।
২ ঘণ্টা আগেগত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর (২) মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এ সময় আরও ২৬২ জন ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেসত্য বলুন তো, রাতে যতটা সময় ঘুমান, তার চেয়ে বেশি সময় কি ঘুমানোর চেষ্টাতেই কেটে যায়? তাহলে এ সমস্যায় শুধু আপনিই ভুগছেন না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি তিনজনে একজন এমন ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। যদিও বলা হয়, কোনো ব্যক্তির দিনে ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন। শিশুদের জন্য সেটা আরও বেশি...
১১ ঘণ্টা আগেচুলকানি এমন এক অনুভূতি, যা শরীরে আঁচড়ে দিতে ইচ্ছা জাগায়। সব মানুষের অনুভূতির মাত্রা ও সংবেদনশীলতা এক রকম নয়। ফলে অল্প সমস্যার কারণেও বেশি চুলকানি অনুভূত হয়। চর্মরোগ ছাড়াও অনেক সাধারণ কারণ এবং বিভিন্ন অঙ্গের রোগের বহিঃপ্রকাশ চুলকানির মাধ্যমে শুরু হতে পারে।
১১ ঘণ্টা আগে