Ajker Patrika

ধূমপানমুক্ত পরিবেশ অর্জনে আফগানিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩: ৩২
Thumbnail image

তামাক নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক মানদণ্ডে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আইনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা রাখার সুযোগ এর অন্যতম প্রধান কারণ বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত ‘গ্লোবাল টোব্যাকো এপিডেমিক প্রতিবেদন-২০২৩ এবং বাংলাদেশ পরিস্থিতি’ বিষয়ে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (এটিএমএ) আয়োজিত ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তারা এমন মন্তব্য করেন। 

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীরা প্রতিদিন গড়ে ১৬টি সিগারেট পান করে থাকেন। যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ আফগানিস্তান ও নেপালে এই হার যথাক্রমে ৭ ও ১২টি। 

ভাচুর্য়াল বৈঠকে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এবারের প্রতিবেদনে ধূমপানমুক্ত পরিবেশের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) থাকলে অধূমপায়ীদের পাশাপাশি সেবাকর্মীরাও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। 

থাইল্যান্ড, নেপাল, আফগানিস্তানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ সূচকে ভালো করলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। তবে ডিএসএ বাতিলের প্রস্তাব সংবলিত খসড়া সংশোধনীটি পাশ হলে বাংলাদেশও এসব দেশের কাতারে পৌঁছাবে। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে। তবে খসড়া সংশোধনী অনুযায়ী বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন এবং তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ বন্ধ হলে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে আরও ভালো করবে। ইতিমধ্যে বিশ্বের ৫০টি দেশ বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছে এবং ৬২টি দেশ তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। 

ভার্চুয়াল বৈঠকে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ অর্জনে আমরা আফগানিস্তান ও নেপালের চেয়ে পিছিয়ে আছি, আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। আইনের খসড়া সংশোধনীটি যাতে দ্রুত পাস হয় সে বিষয়ে আমাদের কাজ করে যেতে হবে, হতাশ হওয়া চলবে না।’ 

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, ‘আইনের খসড়ায় যেসব প্রস্তাবনা আমরা রেখেছি; সেগুলো পাস করতে পারলে ডব্লিউএইচওর পরবর্তী প্রতিবেদনে আমাদেরও অগ্রগতি হবে। তবে তামাক কোম্পানিগুলো এই অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’ 

সিটিএফকের বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোনো ধূমপায়ীর নৈতিক অধিকার নেই অধূমপায়ীকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা বাতিল সংবলিত আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত পাস করতে হবে।’ 

নিউজ টুয়েন্টি ফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক শাহনাজ মুন্নী বলেন, ‘হোটেল-রেস্তোরাঁয় আমরা প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছি। ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা থাকায় এটি ঘটছে। এই বিধান বাতিল করতে হবে।’ 

প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভার সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল বৈঠকে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে এটিএমের কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

উল্লেখ্য, গ্লোব্যাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশে আচ্ছাদিত কর্মস্থলে কাজ করেন এমন প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৪২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। প্রায় ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানজনিত বিভিন্ন অসুখে ভোগে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত