Ajker Patrika

ইটভাটার জন্য নদীতে বাঁধ

অরূপ রায়, ধামরাই থেকে
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ০৯
ইটভাটার জন্য নদীতে বাঁধ

বছর দেড়েক আগে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করা হয় ঢাকার ধামরাই উপজেলা দিয়ে বয়ে চলা গাজীখালী নদী। সেই নদীর ওপর দিয়ে ইটভাটার মাটি ও ইটবোঝাই ট্রাক চলাচলের জন্য বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পানিপ্রবাহ। উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাঁও ও গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের মখদুমপাড়া এলাকায় গাজীখালী নদীর ওপর এ বাঁধ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালীপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সামসুল হকসহ স্থানীয় কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে মাটির ব্যবসা করে আসছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাঁরা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে মাটি খননের পর ইটভাটার মালিক ও ব্যক্তির কাছে তা বিক্রি করে থাকেন। মাটি ট্রাকে করে ক্রেতার প্রতিষ্ঠান বা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁরা মখদুমপাড়া এলাকায় গাজীখালী নদীতে বাঁধ দিয়েছেন। ওই বাঁধ দিয়েই মাটি বহনকারী ট্রাক চলাচল করে। দীর্ঘদিনেও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ অপসারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

নওগাঁও এলাকায় বাঁধ দেওয়া হয়েছে নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাটামালিকেরা মাটি ও ইট পরিবহনে অনুমতি ছাড়াই নদীতে ওই বাঁধ দিয়েছিলেন। ধামরাইয়ের নওগাঁওয়ের কেবিসি ব্রিকস ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার আহাদ ব্রিকস নামের দুটি ইটভাটার ট্রাক এ বাঁধ দিয়ে চলাচল করে।

গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, ধামরাইয়ের কাওয়ালীপাড়া বাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে মখদুমপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধের ১০০ গজ দূরে নদীতীরে খননযন্ত্র দিয়ে চাষের জমি থেকে মাটি কাটার পর তা ট্রাকে ভরা হচ্ছে। নদীর ওপর দেওয়া বাঁধ পেরিয়ে এ ট্রাকগুলো মাটি নিয়ে চলাচল করছে।

জানতে চাইলে ওই এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সামসুল হকসহ কয়েকজন ব্যক্তি মাটির ট্রাক চলাচলের জন্য মাস দেড়েক আগে নদীতে বাঁধ দিয়েছেন। এর ফলে নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার অপর এক কৃষক বলেন, নদীতীরের যেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছে, তা প্রায় সবই সরকারি জমি। প্রভাবশালীদের টাকা দিয়ে তাঁরা মাটি কেটে বিক্রি করছেন।

নওগাঁও এলাকায় গিয়ে নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গাজীখালী নদীতে দেওয়া বাঁধের ওপর দিয়ে ট্রাকে মাটি ও ইট পরিবহন করতে দেখা যায়। এ ছাড়া বাঁধের ওপর দিয়ে জনসাধারণকে চলাচল করতে দেখা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ চলমান থাকায় বিকল্প হিসেবে জনসাধারণ বাঁধ ব্যবহার করছেন। তবে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার আগেই সেখান বাঁধ ছিল, যা নির্মাণ করেছিলেন ইটভাটার মালিকেরা।

বাঁধ দেওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে সামসুল হক বলেন, নদীতে বাঁধ ও নদীর তীর থেকে মাটি কাটার জন্য তাঁদের কোনো অনুমতি নেই। স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করে তাঁরা নদীর ওপর বাঁধ দিয়েছেন। মাটি পরিবহনের জন্য তাঁরা এ বাঁধ ব্যবহার করছেন।

এদিকে, নওগাঁওয়ের বাঁধের ব্যাপারে কেবিসি ব্রিকসের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা বাঁধ দেননি। সেতুর নির্মাণকাজ চলমান থাকায় জনসাধারণের চলাচলের জন্য বাদ দেওয়া হয়েছে।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেন, নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নদীর ওপর দেওয়া বাঁধ দিয়ে জনসাধারণ চলাচল করেন। তবে বাঁধ নির্মাণের কোনো অনুমতি ছিল না। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে বাঁধটি ভেঙে দেওয়া হবে। মখদুমপাড়ার বাঁধটি পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

ঢাবিতে পাঁচ প্যানেলে ভোটের যুদ্ধ

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এনসিপির মাহিন সরকারকে বহিষ্কার

এনবিআর কর্মকর্তার কাণ্ড: কৃত্রিম অঙ্গের ঘোষণা দিয়ে ৪৫০ টন গয়না আমদানি

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত