Ajker Patrika

১০ বছর ধরে শিকলবন্দী শুকুর

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৩৪
১০ বছর ধরে শিকলবন্দী শুকুর

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বড়টিয়া ইউনিয়নের বড়টিয়া গ্রামের মৃত ছবেদ আলীর ছোট ছেলে শুকুর আলী (৩২)। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। কৃষিকাজ করে জোটাতেন নিজের লেখাপড়ার খরচ। শান্ত-শিষ্ট ছেলে হিসেবে গ্রামের সবাই তাঁকে আদর করতেন। তবে ১৫ বছর আগে হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারান তিনি। উপযুক্ত চিকিৎসাবঞ্চিত শুকুর ১০ বছর ধরে আছেন শিকলবন্দী।

শুকুরের মা মতি বেগম (৬০) অন্যের বাড়িতে কাজ করে তাঁর খাবার জোটান। টাকার অভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। এত অভাবের পরও শুকুরের মেলেনি প্রতিবন্ধী ভাতাসহ সরকারি কোনো সহযোগিতা।

সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙাচোরা ছাপরা ঘরে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে শুকুরকে। ঘরের দুই পাশে বেড়া নেই। রোদ-বৃষ্টি কিংবা ঝড়ের দিনে এখানেই থাকতে হয় তাঁকে। কেউ ডাকলে সাড়া দেন শুকুর। তবে কথার উত্তর দিতে চান না। বাড়িতে

ছাপার সঙ্গেই লাগানো আরেকটি ঘরে মতি বেগম বাস করেন। খড়ের বেড়ার এই ঘরটিও জরাজীর্ণ। দরজা নেই। পুরোনো কাপড়ের টুকরা সেলাই করে বানানো হয়েছে ঘরের দরজা।

মতি বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেটা অনেক ভালো ছিল। গ্রামের সবাই তাকে ভালো জানত। ছোটবেলায় ওর বাবা মারা গেছে। কৃষিকাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ জোটাত। কিন্তু হঠাৎ করেই মাথা খারাপ হয়ে যায়। কী কারণে এমনটা হলো তা বলত পারব না।’

স্থানীয় বাসিন্দা শামীম মিয়া বলেন, উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। যদি কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়, তাহলে পরিবারটির খুবই উপকার হতো।’

ঘিওর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মানসিক রোগীর চিকিৎসায় সহযোগিতা দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে তাঁর প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা প্রশাসন থেকে চিকিৎসা সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়ে তিনি আলোচনা করবেন বলে জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত