তামান্না তাসকীন
স্নায়ুর বিকাশজনিত সমস্যা হিসেবে অটিজমকে সমগ্র বিশ্বে পরিচিত করা এবং অটিস্টিক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০৭ সাল থেকে ২ এপ্রিলকে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এ বছর ১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সচেতনতা-স্বীকৃতি-মূল্যায়ন: শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’।
আসলে অটিজম যে কোনো রোগ নয়, তা এখন সর্বজনস্বীকৃত হলেও সবাই যে অটিজমকে বুঝতে পারছে তা কিন্তু বলা যাবে না। বিশ্বে বর্তমানে অটিজম আক্রান্তের হার ধরা হয়েছে ১: ১০০, যা দুই বছর আগেও ছিল ১: ৩৬। অটিজম আক্রান্তের এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, অথচ এখনো এর সর্বজনস্বীকৃত কারণ আবিষ্কৃত হয়নি। অটিজমে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের আক্রান্তের হার প্রায় পাঁচ গুণ।
এটি মস্তিষ্কের বিকাশগত অসম্পূর্ণতার এমন একটি বৈকল্য, যা শিশুর জন্মের পর থেকে তিন বছর বয়সের মধ্যেই প্রকাশিত হয়ে থাকে এবং সারা জীবন অবস্থান করে। অটিস্টিক শিশুরা প্রত্যেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়ে থাকলেও কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য প্রায় সব শিশুর মধ্যেই লক্ষ করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে আচরণের পুনরাবৃত্তি, আঁখি সংযোগ করতে না পারা, একই রুটিনে অভ্যস্ততা, নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেওয়া, নিজের জগতে ডুবে থাকা, অর্থহীন শব্দ করা ইত্যাদি।
সামাজিক যোগাযোগের সীমাবদ্ধতার সমস্যার কারণে অনেক সময় অটিস্টিক শিশুদের কিছু বুঝতে পারছে না বলে মনে হলেও আসলে তারা সবকিছুই বুঝতে ও শুনতে পারে; যদিও তাদের বোঝার ও শোনার ক্ষমতা সাধারণ মানুষ থেকে ভিন্ন। অটিজমকে নীল রঙের সঙ্গে তুলনা করা হয়। বেদনার এই নীল রঙের উদ্দেশ্য হলো অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিকে বোঝা ও তার গ্রহণযোগ্যতাকে স্বীকার করে নেওয়া।
অটিজম নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করতে এবং অটিস্টিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের মর্যাদা দিতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে মাসব্যাপী অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করে আসছে। আজ অটিজমের আরেকটি পরিচয় তৈরি হয়েছে। আর তা হলো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে অটিস্টিক ব্যক্তিদের পরিচিতি। পাশাপাশি এসব ব্যক্তির নাগরিক সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই আইনে অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিশ্চিতকরণের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। এ ছাড়া অটিস্টিক শিশুদের স্কুলমুখী করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে বিশেষ ভাতা। জাতিসংঘ ২০০৬ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য যে অধিকার সনদ ঘোষণা করেছিল তাতে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশও ছিল। সেই মোতাবেক বাংলাদেশ সরকার নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট বোর্ড গঠন করে কাজ শুরু করে।
প্রতিবছর অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করা হলেও এই দিবসের সুফল তখনই আসবে, যখন এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের তাদের স্বাভাবিক ও দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সহযোগিতা করা হবে। অটিস্টিক ব্যক্তিরা ভান বা অভিনয় বোঝে না। তাই তাদের সঙ্গে ইতিবাচক আচরণ করতে হবে। তাদের বোঝা মনে করার দিন এখন আর নেই। রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। অটিস্টিক ব্যক্তিকে মর্যাদা দেওয়ার অর্থ তাকে নিয়ে সমাজে এগিয়ে যেতে হবে।
তবে এ জন্য তাদের পরিবারের পাশে সবাইকে থাকতে হবে। যেকোনো জনবহুল জায়গা, যেমন বাজার, খেলার মাঠ, বাস বা ট্রেনস্টেশন, কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে অথবা ডাক্তারের চেম্বারে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য না করা, প্রয়োজনে তাদের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। অটিজমকে অভিশাপ হিসেবে যাঁরা মন্তব্য করেন, তাঁদের মনোভাব বদলে যাবে যদি তাঁরা জানতেন যে অটিস্টিক শিশুরা কোনো দিন মিথ্যে বলতে পারে না। তারা আসলেই দেবশিশু। শুধু সাধারণ জীবনযাপনের দক্ষতা অর্জন করতে পারলেই তারা তাদের জীবনধারা বদলে দিতে পারবে। আর এ জন্য দরকার পরিবার ও রাষ্ট্রের সাহচর্য, দয়া বা করুণা নয়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, সমাজকর্ম, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা
স্নায়ুর বিকাশজনিত সমস্যা হিসেবে অটিজমকে সমগ্র বিশ্বে পরিচিত করা এবং অটিস্টিক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০৭ সাল থেকে ২ এপ্রিলকে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এ বছর ১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সচেতনতা-স্বীকৃতি-মূল্যায়ন: শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’।
আসলে অটিজম যে কোনো রোগ নয়, তা এখন সর্বজনস্বীকৃত হলেও সবাই যে অটিজমকে বুঝতে পারছে তা কিন্তু বলা যাবে না। বিশ্বে বর্তমানে অটিজম আক্রান্তের হার ধরা হয়েছে ১: ১০০, যা দুই বছর আগেও ছিল ১: ৩৬। অটিজম আক্রান্তের এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, অথচ এখনো এর সর্বজনস্বীকৃত কারণ আবিষ্কৃত হয়নি। অটিজমে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের আক্রান্তের হার প্রায় পাঁচ গুণ।
এটি মস্তিষ্কের বিকাশগত অসম্পূর্ণতার এমন একটি বৈকল্য, যা শিশুর জন্মের পর থেকে তিন বছর বয়সের মধ্যেই প্রকাশিত হয়ে থাকে এবং সারা জীবন অবস্থান করে। অটিস্টিক শিশুরা প্রত্যেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়ে থাকলেও কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য প্রায় সব শিশুর মধ্যেই লক্ষ করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে আচরণের পুনরাবৃত্তি, আঁখি সংযোগ করতে না পারা, একই রুটিনে অভ্যস্ততা, নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেওয়া, নিজের জগতে ডুবে থাকা, অর্থহীন শব্দ করা ইত্যাদি।
সামাজিক যোগাযোগের সীমাবদ্ধতার সমস্যার কারণে অনেক সময় অটিস্টিক শিশুদের কিছু বুঝতে পারছে না বলে মনে হলেও আসলে তারা সবকিছুই বুঝতে ও শুনতে পারে; যদিও তাদের বোঝার ও শোনার ক্ষমতা সাধারণ মানুষ থেকে ভিন্ন। অটিজমকে নীল রঙের সঙ্গে তুলনা করা হয়। বেদনার এই নীল রঙের উদ্দেশ্য হলো অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিকে বোঝা ও তার গ্রহণযোগ্যতাকে স্বীকার করে নেওয়া।
অটিজম নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করতে এবং অটিস্টিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের মর্যাদা দিতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে মাসব্যাপী অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করে আসছে। আজ অটিজমের আরেকটি পরিচয় তৈরি হয়েছে। আর তা হলো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে অটিস্টিক ব্যক্তিদের পরিচিতি। পাশাপাশি এসব ব্যক্তির নাগরিক সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই আইনে অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিশ্চিতকরণের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। এ ছাড়া অটিস্টিক শিশুদের স্কুলমুখী করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে বিশেষ ভাতা। জাতিসংঘ ২০০৬ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য যে অধিকার সনদ ঘোষণা করেছিল তাতে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশও ছিল। সেই মোতাবেক বাংলাদেশ সরকার নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট বোর্ড গঠন করে কাজ শুরু করে।
প্রতিবছর অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করা হলেও এই দিবসের সুফল তখনই আসবে, যখন এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের তাদের স্বাভাবিক ও দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সহযোগিতা করা হবে। অটিস্টিক ব্যক্তিরা ভান বা অভিনয় বোঝে না। তাই তাদের সঙ্গে ইতিবাচক আচরণ করতে হবে। তাদের বোঝা মনে করার দিন এখন আর নেই। রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। অটিস্টিক ব্যক্তিকে মর্যাদা দেওয়ার অর্থ তাকে নিয়ে সমাজে এগিয়ে যেতে হবে।
তবে এ জন্য তাদের পরিবারের পাশে সবাইকে থাকতে হবে। যেকোনো জনবহুল জায়গা, যেমন বাজার, খেলার মাঠ, বাস বা ট্রেনস্টেশন, কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে অথবা ডাক্তারের চেম্বারে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য না করা, প্রয়োজনে তাদের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। অটিজমকে অভিশাপ হিসেবে যাঁরা মন্তব্য করেন, তাঁদের মনোভাব বদলে যাবে যদি তাঁরা জানতেন যে অটিস্টিক শিশুরা কোনো দিন মিথ্যে বলতে পারে না। তারা আসলেই দেবশিশু। শুধু সাধারণ জীবনযাপনের দক্ষতা অর্জন করতে পারলেই তারা তাদের জীবনধারা বদলে দিতে পারবে। আর এ জন্য দরকার পরিবার ও রাষ্ট্রের সাহচর্য, দয়া বা করুণা নয়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, সমাজকর্ম, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫