Ajker Patrika

আলোক ফাঁদের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে

বাসাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, ১১: ২৭
আলোক ফাঁদের ব্যবহার  জনপ্রিয় হচ্ছে

বাসাইল উপজেলায় ধানখেতে কীটনাশক ব্যবহার না করে আলোর ফাঁদ পেতে ক্ষতিকর পোকা দমন করা হচ্ছে। খেত সুরক্ষায় আলোর ফাঁদের ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। এতে ক্ষতিকর পোকা দমনের পাশাপাশি উপকারী পোকা শনাক্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হয়। ইতিমধ্যে এই পদ্ধতি কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনে একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। আলোক ফাঁদ তৈরিতে হারিকেন, বৈদ্যুতিক বাল্ব ও সৌরবিদ্যুতের সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ধানখেত থেকে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের খুঁটির সাহায্যে মাটি থেকে ২-৩ ফুট ওপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে এর নিচে একটি পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রাখা হয়। সন্ধ্যার পর এই আলোক ফাঁদের আলোয় আকৃষ্ট হয়ে ধানখেতের বিভিন্ন পোকামাকড় এসে পাত্রের পানিতে পড়ে।

এভাবে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ধানসহ ফসলের ক্ষতিকর ও উপকারী পোকার উপস্থিতি নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অতি অল্প খরচে তৈরি এ আলোক ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতেও বেশ দৃষ্টিনন্দন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, পশুপাখি ও মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। কীটনাশক প্রয়োগে ফসলের শত্রু পোকার পাশাপাশি মিত্র পোকাও ধ্বংস হয়। এতে ফসলি জমির পরিবেশ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে দিনদিন। যা ভবিষ্যতে কৃষিক্ষেত্রের জন্য একটি বড় রকম বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষি বিভাগের।

তাই কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব ও ধানের ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষা করতে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে মাঠপর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলার প্রতিটি ব্লকে আলোকফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে।

কৃষকেরাও পরিবেশবান্ধব আলোক ফাঁদ ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এতে জমিতে অপ্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রা কমছে। ফলে একদিকে কৃষকের সাশ্রয় হচ্ছে উৎপাদন খরচ। অপরদিকে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার বলেন, ব্লাস্ট ও কারেন্ট পোকা প্রতিরোধে কৃষকদের মাঝে লিফলেট, প্রেসক্রিপশন বিতরণ করা হচ্ছে। হাটে-বাজারে ভিডিও প্রদর্শন, উঠান বৈঠক, দলীয় আলোচনা সভার মাধ্যমে আলোক ফাঁদের উপকারিতা সম্পর্কে কৃষকদের অবহিত করা হচ্ছে। আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থ সাশ্রয়ী পদ্ধতি। এতে চাষিরা নিজেরাই ক্ষতিকর ও উপকারী পোকা শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত