Ajker Patrika

সাতক্ষীরা উপকূলে ধান হয় না, ঘেরে মারা যাচ্ছে মাছও

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৪, ১২: ০৬
সাতক্ষীরা উপকূলে ধান হয় না, ঘেরে মারা যাচ্ছে মাছও

সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততার কারণে একদিকে ব্যাহত হচ্ছে ধান চাষ; অন্যদিকে ঘেরে পানি ধরে রাখতে না পারায় দাবদাহে মরে যাচ্ছে বাগদা মাছ। ধান, মাছ কোনোটিরই আবাদে সফল না হওয়ায় আর্থিক সংকট প্রকট হচ্ছে উপকূলীয় এলাকার চাষিদের। তবে সংকট উত্তরণে ক্লাস্টার পদ্ধতিতে মাছ চাষের পরামর্শ মৎস্য কর্মকর্তাদের। 

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার প্রধান অর্থকরী খাত সাদা সোনা খ্যাত বাগদা। জেলায় ১ লাখ ৫০ হাজার টন মাছ উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে বাগদা ৩০ হাজার টন। তবে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে চলতি বছর প্রায় ৭ কোটি টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। 

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার মাছ। আবার গরমকালে ঘেরে পানি কম থাকায় দাবদাহে মাছ মারা যাচ্ছে। বর্ষাকালে জলাবদ্ধ থাকায় কৃষক রোপা আমন ধান ফলাতে পারছেন না। এ ছাড়া গরমকালে মিঠাপানির অভাবে বোরো আবাদ করতে না পারায় অনাবাদি থাকছে বহু হেক্টর জমি। 

প্রতাপনগর ইউনিয়নের তালতলা এলাকার আরশাদ আলী বলেন, ‘একদিকে লবণাক্ততা, অন্যদিকে দাবদাহ। ফলে মাছ যেমন হচ্ছে না, ধানও হচ্ছে না। টেকসই বেড়িবাঁধ ও পরিকল্পিত স্লুইসগেট হলে ধানও হবে, মাছও হবে।’ 

কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ জানান, উপকূলবর্তী এলাকার বিলে ধান, মাছ কোনো কিছুই হচ্ছে না। স্লুইসগেট না থাকায় নদীর লোনাপানি এলাকার মিঠাপানির পুকুরে ঢুকে মাছ মারা যাচ্ছে। 

জেলা মৎস্য চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, ‘লবণপানির কারণে ধান চাষ সম্ভব হচ্ছে না। আবার মাছ চাষও আশানুরূপ নয়। তাই উপকূলীয় পরিবেশকে মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা দরকার, যাতে আমরা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারি।’

জেলায় সাধারণত মাছ চাষ হয় সনাতন পদ্ধতিতে। কয়েক গুণ বেশি হারে মাছ পেতে গুচ্ছ (ক্লাস্টার) পদ্ধতিতে চাষের পরামর্শ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিছুর রহমানের। তিনি বলেন, বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি নতুন নতুন এলাকা লবণাক্ততায় ভরে যাচ্ছে।

চাষিরা সনাতন পদ্ধতিতে মাছ চাষ করায় কাঙ্ক্ষিত লাভ পাচ্ছে না। সাসটেইন্যাবল কোস্টাল মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় বাগদার চাষ সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে সরকার। চাষিদের ক্লাস্টার পদ্ধতিতে মাছ চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে।

ক্লাস্টার পদ্ধতিতে কয়েক গুণ বেশি মাছ পাওয়া যায়। এ ছাড়া গরমকালে ঘেরের পানির স্তর কমপক্ষে ৫-৬ ফুট রাখতে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় এলাকায় কৃষিজমি কমছে। আইলার আগে ১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হতো। বর্তমানে হচ্ছে ৯০ হাজার হেক্টরে। কৃষিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের ওপর জোর দেন এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত