Ajker Patrika

নানা ‘ব্যাধিতে ভুগছে’ বক্ষব্যাধি হাসপাতাল

শামিমুজ্জামান, খুলনা
নানা ‘ব্যাধিতে ভুগছে’ বক্ষব্যাধি হাসপাতাল

১০০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের বয়স ৫৮ বছর। দক্ষিণাঞ্চলের বক্ষব্যাধি রোগীদের জন্য স্বাধীনতার আগে ১৯৬৫ সালে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর অবস্থান নগরীর মীরেরডাঙ্গায়। আয়তন ৭ একর; কিন্তু যথাযথ সংস্কারকাজের অভাবে হাসপাতালটির দ্বিতল ভবনের সব কটি ওয়ার্ড ও কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে।

ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রোগীদের শৌচাগার, অকেজো পড়ে রয়েছে এক্স-রে যন্ত্র, রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরও সংকট। সব মিলিয়ে সরকারি হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে অনীহা বাড়ছে রোগীদের।

জানা গেছে, নামমাত্র কয়েক দফায় সংস্কারকাজ করা হলেও দীর্ঘস্থায়ী কোনো সংস্কারকাজ করা হয়নি হাসপাতাল ভবনের। ফলে বক্ষব্যাধি সারানোর জন্য যে হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা, সেটি এখন নিজেই ব্যাধিতে ভুগছে বলে এখানে চিকিৎসা নিয়ে আসা রোগী, স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

শুধু হাসপাতালের অবকাঠামো ও জনবল-সংকটই নয়, এখানের পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা বলে অসন্তোষের কথা উঠে এসেছে রোগীর স্বজনের বক্তব্যে।

সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজন মো. এনামুল বলেন, ‘হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন নষ্ট। বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হয়। হাসপাতালের পরিবেশ নোংরা।

এখান থেকে রোগী নিয়ে যেতে পারলে স্বস্তি পাব।’ এদিকে শুধু রোগীদেরই নয়, হাসপাতালের প্রধানও জানালেন নানা সংকট আর সমস্যার কথা। খুলনা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, তিন-চার মাস আগে খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) হাসপাতালের ভবনটি মেরামত অনুপযোগী ঘোষণা দিয়ে পুনর্নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

হাসপাতালের সাতটি আবাসিক ভবন দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ফলে হাসপাতালের নার্স ও স্টাফদের আবাসন সমস্যাও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল আরও বলেন, ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীদের ১৮৪টি পদের বিপরীতে জনবল আছে ১২২ জন। শূন্য রয়েছে ৬২টি পদ। এর মধ্যে দুজন বিশেষজ্ঞসহ ১১ জন চিকিৎসকের পদ খালি রয়েছে। বর্তমানে তত্ত্বাবধায়কসহ পাঁচজন চিকিৎসক কর্মরত। তবে মাত্র চারজন চিকিৎসা কর্মকর্তা দিয়ে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ থাকলেও কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। হাসপাতালে নার্সের পদ রয়েছে ১১৪টি। সেখানে কর্মরত ৮৬ জন। এ ছাড়া তিন মাস ধরে হাসপাতালের দুটি এক্স-রে মেশিনই অকেজো পড়ে রয়েছে। বর্তমানে ভর্তি রোগী রয়েছেন ৩০ জন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরও বলেন, ‘জরাজীর্ণ ভবন এবং পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনগুলো পুনরায় নির্মাণ করা হবে। এ জন্য খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া এক্স-রে মেশিন সচল করতে ঢাকায় যোগাযোগ করা হয়েছে। খুব শিগগির এক্স-রে মেশিন সচল করা সম্ভব হবে। তবে হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে কথা বলেছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত