Ajker Patrika

আ.লীগের প্রার্থীরা ধরাশায়ী

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ২৭
আ.লীগের প্রার্থীরা ধরাশায়ী

সাতক্ষীরায় তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে সাত উপজেলার মধ্যে পাঁচ উপজেলার ৫১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে।

গত রোববার তৃতীয় ধাপে দেবহাটার ৫টি ও কালীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৫১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের ১৮ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ১৭ জন, বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র ১০ জন, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকে ১ ও স্বতন্ত্র ১ জন, জামায়াতে ইসলামীর ৩ জন এবং ওয়ার্কার্স পার্টির একজন ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রথম ধাপের নির্বাচনে তালা উপজেলায় নৌকার প্রার্থী ৫, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ২, স্বতন্ত্র ২, জামায়াতের এক এবং ওয়ার্কার্স পার্টির একজন বিজয়ী হয়েছেন। এ উপজেলায় বাকি রয়েছে কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। যা চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। কলারোয়া উপজেলায় নৌকার প্রার্থী ৪ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৫ জন এবং একজন বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এ ইউনিয়ন পরিষদে বাকি রয়েছে কেরালকাতা ও কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এ দুটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ৩টিতে, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ৫টিতে, বিএনপি স্বতন্ত্র ২টিতে, জাপা ১টিতে ও জামায়াত ২টিতে জয়লাভ করেছেন। সাতক্ষীরা সদরে আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দুবছর পর।

গত রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউপির মধ্যে ১টিতে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বাকি ৪টি ইউপি ৩টিতে বিএনপি স্বতন্ত্র এবং একটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৫টিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। বাকি ৭টির মধ্যে ১টি জাতীয় পার্টি, ২টিতে বিএনপি স্বতন্ত্র এবং ৪টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন। এ নির্বাচনে সাতক্ষীরার তালার একটি, কলারোয়ার দুটি এবং শ্যামনগরের ৯টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম ধাপের নির্বাচন। এ নির্বাচনে শ্যামনগরের তিনটি এবং আশাশুনির ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ করা হবে।

দুএকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জেলার সুশীল সমাজ মনে করেন। জেলা নাগরিক নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী যতবার স্থানীয় নির্বাচন হয়েছে এর মধ্যে এবারের নির্বাচনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ভোটারদের কাছে অন্য একমাত্রা যোগ করেছে। প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্যে করা গেছে। নারী-পুরুষ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন।

জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আনিসুর রহিম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। বিশেষ করে পুলিশ, র‍্যাব, গোয়েন্দার কঠোর নজরদারির কারণে জেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মানুষ ভোট উৎসবে মেতে উঠতে পেরেছে। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পায়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগে এক ধরনের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে বিশ্বাস ও আস্থার জায়গাটি ধরে রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সুশীল সমাজের নেতারা।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজমুল হাসান জানান, নির্বাচনে যার যা দায়িত্ব সবাই ঠিকমতো পালন করছেন বলেই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। আগামী দুই ধাপের নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...