Ajker Patrika

সিসিক নির্বাচন: লড়ার ইঙ্গিত আরিফুলের, আপত্তি ইভিএমে

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
আপডেট : ২৪ মে ২০২৩, ১৫: ৪৫
সিসিক নির্বাচন: লড়ার ইঙ্গিত আরিফুলের, আপত্তি ইভিএমে

লন্ডন থেকে গতকাল রোববার দেশে ফিরেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, সে প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর এখনো মেলেনি। সিলেট নগরের কুমারপাড়ার বাসভবনে গতকাল বেলা ৩টার দিকে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া কৌশলী বক্তব্যে আরিফুল নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দেন। আজকের পত্রিকাকে এই ইঙ্গিতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তাঁর একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি।

তবে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও মেয়রের আপত্তি ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ নিয়ে। এবারের ঈদের পর ইভিএম বাতিলে নগরবাসীকে নিয়ে আন্দোলনেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন মেয়র আরিফুল। মেয়রের সেই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি দাবি করেছেন, ইভিএম বাতিল হলে শুধু সিলেট নয়; পাঁচ সিটি নির্বাচনেই বিএনপির প্রার্থীরা দলীয়ভাবে অথবা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

সিসিক নির্বাচন প্রসঙ্গে মেয়র আরিফুল বলেন, ‘নগরের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে আমি অবগত আছি। তাঁদের এই আশার মূল্যায়ন আমি করব। অতীতে যেভাবে সিলেট নগরের উন্নয়নে কাজ করেছি, ভবিষ্যতেও সুযোগ পেলে সেভাবেই কাজ করতে চাই। ঈদের পর নগরের ৪২টি ওয়ার্ডের জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনে যাব কি না, তা স্পষ্ট করব।’

ইভিএমের ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মেয়র আরিফুল বলেন, ‘এ সরকারের যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের সদিচ্ছা থাকত, তাহলে ইভিএম দিত না। যেখানে সারা দেশে ইভিএম বাতিল করা হয়েছে। এ ইভিএম দেওয়া হয়েছে কেবল পাঁচটি সিটিতে। আর ইভিএম দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে অনির্বাচিত করার সুযোগ রয়েছে। আপনারা সবাই অবগত, ইতিমধ্যে প্রশাসনেও তাদের পছন্দমতো লোক পরিবর্তন করা হয়েছে। এই ইভিএম পদ্ধতিতে আপনাদের ভোটের মূল্যায়ন থাকবে কি না, চিন্তা করে দেখবেন। আপনারা ভোট দেবেন, সেই ভোটের ফল অন্যদিকে যোগ হবে। সেই পাতানো খেলায় আমরা যাব কি না, এ বিষয়ে নগরবাসীকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ২১ জুন। দল নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই নিজের প্রার্থিতা নিয়ে দোলাচলে বর্তমান মেয়র অরিফুল হক চৌধুরী। তাঁর কর্মী-সমর্থকদের দাবি, টানা দুই মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়ে আরিফুল সিলেটে অনেক উন্নয়নকাজ করেছেন। এবার নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা বেশি। তবে যেহেতু তাঁর দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না, তাই অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন আরিফুল।

এ অবস্থায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপ করতে আরিফুল হক ২ এপ্রিল ইতালি হয়ে লন্ডনে যান। এ ব্যাপারে মেয়র বলেন, ‘তিনি আমাকে একটি সিগন্যাল দিয়েছেন। তিনি কী সিগন্যাল দিয়েছেন তা অচিরেই আমি খোলাসা করব।’ 

আরিফুল সিটি নির্বাচন নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার না করায় সিলেট নগরে তাঁর সম্পর্কে দুটি বিষয় আলোচনায় রয়েছে। তিনি দল থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক কমিটির ব্যানারে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। সেই প্রস্তুতিও নাকি আগেই নিয়ে রেখেছেন মেয়র। এ ছাড়া নিজ দলের অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে আরিফুল নির্বাচনে অংশ না-ও নিতে পারেন। এ জন্য তাঁকে দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হতে পারে। বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলে সিলেট-১ বা সিলেট-৪ সংসদীয় আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন।

আরিফুল হকের ঘনিষ্ঠ স্থানীয় বিএনপির নেতারা বলছেন, সিলেট বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদধারী নেতাদের অনেকের সঙ্গে আরিফুলের সুসম্পর্ক নেই। তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। দলের বাইরেও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে তাঁর আলাদা সুসম্পর্ক রয়েছে। এসব কারণে মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য স্থানীয়ভাবে আরিফুলের ওপর আলাদা চাপ সৃষ্টি হয়েছে। আপাতত ধোঁয়াশা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি প্রার্থী হবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত