মামুনুর রশীদ

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে। এই অনার্সে ভর্তি একটি কঠিন পরীক্ষা। কিন্তু ওই দুই বছরের কোর্সে পরীক্ষাটি শিথিল। পরীক্ষাটিও তেমন কঠিন কিছু নয়, তবে সুবিধা শিক্ষকদের। যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এসে থাকে, তার শতকরা কুড়ি ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা হয়, বাকিটা শিক্ষকেরা ভাগাভাগি করে নেন। যেসব বিভাগে এই কোর্সটি চালু আছে, সেসব বিভাগের বিপুল আয় এবং শিক্ষকেরা ধনী থেকে আরও ধনী হয়ে যাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে নানা ধরনের কোচিং চালু আছে। বিসিএস কোচিং, তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বহু বছর ধরে একটা বৈকালিক আড্ডা হতো, এই আড্ডা সাধারণত শিক্ষাবিষয়ক এবং সৃজনশীল আড্ডা। সেই আড্ডা দখল করে ফেলেছে কোচিং ক্লাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও বিসিএস দিয়ে থাকেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা গর্বের বিষয় হয়ে থাকে কোথায়, কতজন বিসিএস পাস করল। কৃতকার্য শিক্ষকেরা অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বিসিএসে যোগ দেন এবং কৃতকার্য হওয়ার পর শিক্ষকতা ছেড়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে একটা গর্বের বিষয়ও দাঁড়িয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বের বিষয়। কিন্তু শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন কোন কারণে, তা ভাবনার বিষয়।বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞানতত্ত্বের জায়গা। এখানে শুধু জ্ঞান নয়, জ্ঞানের যে তত্ত্ব, সেটিও আবিষ্কারের জায়গা। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা যোগ দিচ্ছেন? তাঁদের কাছে কি জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ? নাকি প্রশাসনিক কাজ? আমি দু-চারজন শিক্ষককে চিনি, যাঁরা শিক্ষক হয়ে পরবর্তীকালে পুলিশ, কাস্টমস অফিসার, আমলা হয়েছেন। যদি তাঁরা আমলাই হবেন, তবে কেন শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন? আমলা হওয়াই কি তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল? তা-ও কাস্টমসের আমলা! দেশের কাস্টমস বা পুলিশিব্যবস্থাকে উন্নত করা কি তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, নাকি একটি চাকরিই মুখ্য ছিল, যে চাকরিতে প্রচুর উপার্জন সম্ভব? সেই পথ ধরেই লাখ লাখ ছাত্র এখন ছুটছে এসব প্রশাসনিক চাকরির জন্য, যার মধ্যে আছেন শিক্ষকেরাও।
প্রতিবছর কতজনই-বা নিয়োগ হয় এসব চাকরিতে? কিন্তু লাখ লাখ ছাত্রের অকৃতকার্য হওয়া এবং দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জীবনের বাকি সময় কাটাতে হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যাঁরা প্রশাসনে আসেন, তাঁরা সবাই মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক। কোনো সৃজনশীল জ্ঞান তাঁদের মধ্যে থাকা সম্ভব নয়। কারণ, পরীক্ষাটি হয় অত্যন্ত যান্ত্রিক উপায়ে। এমসিকিউ পরীক্ষায় সম্পূর্ণভাবে মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক এবং ছাত্ররা কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করে এ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। দেখা যায়, পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও ওই কোচিংভিত্তিক। তাই জ্ঞান এখানে কোনো মুখ্য বিষয় নয়। অনেক দিন ধরে আমি কোচিংয়ের বিরুদ্ধে লিখে আসছি। একবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোচিং নিষিদ্ধ হয়েছিল; কিন্তু বেশি দিন তা টেকেনি। কারণ, যারা কোচিং করে, তাদের হাত এত দিনে খুব লম্বা হয়ে গেছে, তারা কোনো আইনকানুনের ধার ধারে না।
সরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকেরা ক্লাসে কিছু না পড়িয়ে ছাত্রদের কোচিংয়ে আহ্বান করেন। ছাত্ররা এখন সাতজন কোচিং মাস্টারের অধীন পড়ালেখা করে। অভিভাবকদের দাবি—তাঁর সন্তানকে জিপিএ-৫ পেতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সময় আমি দেখেছি, জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্র একটি রচনা লিখতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ একটি ছাত্রকেও ভর্তির উপযুক্ত মনে করেনি।
আমাদের মতো দরিদ্র দেশেও শিক্ষায় জনগণের লগ্নি কম নয়। কিন্তু এই লগ্নি ক্রমাগতই ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়গুলো মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আজ নম্বর মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে, শিক্ষা হয়ে গেছে পণ্য এবং বাণিজ্য। এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে স্বাস্থ্য-বাণিজ্য ও মূল্যবোধহীন অমানবিক শিক্ষার ফলাফলে দেশটি হয়ে যাচ্ছে প্রবলভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। এই প্রবণতা রোধ করা দিন দিন অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
প্রতিদিন খবরের কাগজে বিরাট অংশজুড়ে থাকছে দুর্নীতির সংবাদ অথচ পরাধীন দেশে দুর্নীতির একটি সংবাদ প্রকাশ হলে তা নিয়ে একটা বড় ধরনের হইচই পড়ে যেত।
এখন আর তা হয় না, মানুষের গা-সওয়া হয়ে গেছে এসব। এই গা-সওয়া পরিস্থিতি অবশেষে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা মুশকিল। একটা কথা ঠিক, অন্যায় এবং অধর্মের একটা শেষ আছে। ভারতে কংগ্রেস সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম বহুদিন রাজত্ব করেছে। কিন্তু দুর্নীতির ফলে তারা ক্ষমতা হারিয়েছে। এবং ক্ষমতা চলে গেছে একেবারে উল্টো পথে। ধর্মকে ব্যবহার করে সে দেশে একটা সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা তার প্রতিবেশীদের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এই পরিস্থিতি কখনোই ভারতের জন্য কাম্য ছিল না। আমাদের দেশেও মৌলবাদী দলগুলো তৃণমূল পর্যায়ে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জে, শহরে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়ে হিজাব ও বোরকা পরা নারীদের সমাগম দেখতে পাই। তার মানে ব্যাপক পরিমাণ মাদ্রাসায় কর্মরতরা একটা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
এই মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যেও একটা বড় অংশ দুর্নীতিপরায়ণ। তাঁরা ধর্ষণের মতো নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। একেবারেই নামমাত্র মাদ্রাসা রেখে বছরের পর বছর সরকারের টাকা খেয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির ছায়া এসব ধর্মব্যবসায়ীকেও উৎসাহিত করছে।
শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে পণ্য, স্বাস্থ্য এবং সরকারের অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে চলেছে একধরনের সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংসের দিকে। এ কথা ঠিক, দেশে অনেক ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে, তাতে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার বিনিয়োগ করছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আসছে। কিন্তু সেই সঙ্গে যদি মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা যুক্ত না হয়, তাহলে সবটাই মূল্যহীন হয়ে পড়বে।
আমলাতন্ত্রে আজকাল কোনো জবাবদিহি নেই বললেই চলে। তারা শাসকে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা এটাকে নিছক ব্যবসা হিসেবে দেখছেন, যেহেতু অধিকাংশই রাজনৈতিক নেতা-ব্যবসায়ী। মানুষ বিচারহীনতায় দীর্ঘসূত্রতা দেখে দেখে অসহায় হয়ে পড়ছে। এই অসহায়ত্ব একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রের সব ধরনের শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলবে।
সবচেয়ে লক্ষণীয় দুর্নীতিপরায়ণ লোকটিই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার! এই যে নতুন ধরনের একটি মনস্তাত্ত্বিক ধারা, একে অবহেলা করে আমরা কিন্তু পরিত্রাণ পাব না।
এর মধ্যে এসেছে করোনা মহামারি। আবারও ধেয়ে আসছে তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে ওমিক্রন। এখান থেকেও ব্যবসায়ীরা প্রচুর মুনাফা লুটবেন। দেখা গেছে, গত দুই বছরে ব্যবসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এই মহামারিতে ব্যবসা কীভাবে উন্নয়নের পথে সাহায্য করে, তা-ও ভাববার বিষয়। এই সবটা মিলিয়ে একটা গভীর বিবেচনা প্রয়োজন। বিবেচনাই-বা কারা করবেন?
শহরের অতি আলোকোজ্জ্বল জীবন দেখে সারা দেশটার সব রকমের উন্নতি হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে অদ্ভুত এক জগৎ যাঁরা গড়ে তুলছেন, তাঁরাও এই অর্থকে ভোগ করতে পারবেন কি না, সেটাও বিবেচনায় রাখবেন। ইতিমধ্যে জেনেছি, সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কঠোর হতে শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন রাষ্ট্রও তার মানি লন্ডারিংয়ের টাকাকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। অতএব দিন দিন সময়টা কঠোর হয়ে উঠছে। সার্বিক বিবেচনায় একটু পরামর্শ কি দিতে পারি? স্থির হও স্থির হও, কোথা যাও কোথা যাও…

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে। এই অনার্সে ভর্তি একটি কঠিন পরীক্ষা। কিন্তু ওই দুই বছরের কোর্সে পরীক্ষাটি শিথিল। পরীক্ষাটিও তেমন কঠিন কিছু নয়, তবে সুবিধা শিক্ষকদের। যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এসে থাকে, তার শতকরা কুড়ি ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা হয়, বাকিটা শিক্ষকেরা ভাগাভাগি করে নেন। যেসব বিভাগে এই কোর্সটি চালু আছে, সেসব বিভাগের বিপুল আয় এবং শিক্ষকেরা ধনী থেকে আরও ধনী হয়ে যাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে নানা ধরনের কোচিং চালু আছে। বিসিএস কোচিং, তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বহু বছর ধরে একটা বৈকালিক আড্ডা হতো, এই আড্ডা সাধারণত শিক্ষাবিষয়ক এবং সৃজনশীল আড্ডা। সেই আড্ডা দখল করে ফেলেছে কোচিং ক্লাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও বিসিএস দিয়ে থাকেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা গর্বের বিষয় হয়ে থাকে কোথায়, কতজন বিসিএস পাস করল। কৃতকার্য শিক্ষকেরা অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বিসিএসে যোগ দেন এবং কৃতকার্য হওয়ার পর শিক্ষকতা ছেড়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে একটা গর্বের বিষয়ও দাঁড়িয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বের বিষয়। কিন্তু শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন কোন কারণে, তা ভাবনার বিষয়।বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞানতত্ত্বের জায়গা। এখানে শুধু জ্ঞান নয়, জ্ঞানের যে তত্ত্ব, সেটিও আবিষ্কারের জায়গা। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা যোগ দিচ্ছেন? তাঁদের কাছে কি জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ? নাকি প্রশাসনিক কাজ? আমি দু-চারজন শিক্ষককে চিনি, যাঁরা শিক্ষক হয়ে পরবর্তীকালে পুলিশ, কাস্টমস অফিসার, আমলা হয়েছেন। যদি তাঁরা আমলাই হবেন, তবে কেন শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন? আমলা হওয়াই কি তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল? তা-ও কাস্টমসের আমলা! দেশের কাস্টমস বা পুলিশিব্যবস্থাকে উন্নত করা কি তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, নাকি একটি চাকরিই মুখ্য ছিল, যে চাকরিতে প্রচুর উপার্জন সম্ভব? সেই পথ ধরেই লাখ লাখ ছাত্র এখন ছুটছে এসব প্রশাসনিক চাকরির জন্য, যার মধ্যে আছেন শিক্ষকেরাও।
প্রতিবছর কতজনই-বা নিয়োগ হয় এসব চাকরিতে? কিন্তু লাখ লাখ ছাত্রের অকৃতকার্য হওয়া এবং দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জীবনের বাকি সময় কাটাতে হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যাঁরা প্রশাসনে আসেন, তাঁরা সবাই মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক। কোনো সৃজনশীল জ্ঞান তাঁদের মধ্যে থাকা সম্ভব নয়। কারণ, পরীক্ষাটি হয় অত্যন্ত যান্ত্রিক উপায়ে। এমসিকিউ পরীক্ষায় সম্পূর্ণভাবে মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক এবং ছাত্ররা কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করে এ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। দেখা যায়, পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও ওই কোচিংভিত্তিক। তাই জ্ঞান এখানে কোনো মুখ্য বিষয় নয়। অনেক দিন ধরে আমি কোচিংয়ের বিরুদ্ধে লিখে আসছি। একবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোচিং নিষিদ্ধ হয়েছিল; কিন্তু বেশি দিন তা টেকেনি। কারণ, যারা কোচিং করে, তাদের হাত এত দিনে খুব লম্বা হয়ে গেছে, তারা কোনো আইনকানুনের ধার ধারে না।
সরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকেরা ক্লাসে কিছু না পড়িয়ে ছাত্রদের কোচিংয়ে আহ্বান করেন। ছাত্ররা এখন সাতজন কোচিং মাস্টারের অধীন পড়ালেখা করে। অভিভাবকদের দাবি—তাঁর সন্তানকে জিপিএ-৫ পেতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সময় আমি দেখেছি, জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্র একটি রচনা লিখতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ একটি ছাত্রকেও ভর্তির উপযুক্ত মনে করেনি।
আমাদের মতো দরিদ্র দেশেও শিক্ষায় জনগণের লগ্নি কম নয়। কিন্তু এই লগ্নি ক্রমাগতই ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়গুলো মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আজ নম্বর মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে, শিক্ষা হয়ে গেছে পণ্য এবং বাণিজ্য। এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে স্বাস্থ্য-বাণিজ্য ও মূল্যবোধহীন অমানবিক শিক্ষার ফলাফলে দেশটি হয়ে যাচ্ছে প্রবলভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। এই প্রবণতা রোধ করা দিন দিন অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
প্রতিদিন খবরের কাগজে বিরাট অংশজুড়ে থাকছে দুর্নীতির সংবাদ অথচ পরাধীন দেশে দুর্নীতির একটি সংবাদ প্রকাশ হলে তা নিয়ে একটা বড় ধরনের হইচই পড়ে যেত।
এখন আর তা হয় না, মানুষের গা-সওয়া হয়ে গেছে এসব। এই গা-সওয়া পরিস্থিতি অবশেষে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা মুশকিল। একটা কথা ঠিক, অন্যায় এবং অধর্মের একটা শেষ আছে। ভারতে কংগ্রেস সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম বহুদিন রাজত্ব করেছে। কিন্তু দুর্নীতির ফলে তারা ক্ষমতা হারিয়েছে। এবং ক্ষমতা চলে গেছে একেবারে উল্টো পথে। ধর্মকে ব্যবহার করে সে দেশে একটা সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা তার প্রতিবেশীদের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এই পরিস্থিতি কখনোই ভারতের জন্য কাম্য ছিল না। আমাদের দেশেও মৌলবাদী দলগুলো তৃণমূল পর্যায়ে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জে, শহরে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়ে হিজাব ও বোরকা পরা নারীদের সমাগম দেখতে পাই। তার মানে ব্যাপক পরিমাণ মাদ্রাসায় কর্মরতরা একটা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
এই মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যেও একটা বড় অংশ দুর্নীতিপরায়ণ। তাঁরা ধর্ষণের মতো নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। একেবারেই নামমাত্র মাদ্রাসা রেখে বছরের পর বছর সরকারের টাকা খেয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির ছায়া এসব ধর্মব্যবসায়ীকেও উৎসাহিত করছে।
শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে পণ্য, স্বাস্থ্য এবং সরকারের অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে চলেছে একধরনের সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংসের দিকে। এ কথা ঠিক, দেশে অনেক ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে, তাতে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার বিনিয়োগ করছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আসছে। কিন্তু সেই সঙ্গে যদি মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা যুক্ত না হয়, তাহলে সবটাই মূল্যহীন হয়ে পড়বে।
আমলাতন্ত্রে আজকাল কোনো জবাবদিহি নেই বললেই চলে। তারা শাসকে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা এটাকে নিছক ব্যবসা হিসেবে দেখছেন, যেহেতু অধিকাংশই রাজনৈতিক নেতা-ব্যবসায়ী। মানুষ বিচারহীনতায় দীর্ঘসূত্রতা দেখে দেখে অসহায় হয়ে পড়ছে। এই অসহায়ত্ব একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রের সব ধরনের শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলবে।
সবচেয়ে লক্ষণীয় দুর্নীতিপরায়ণ লোকটিই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার! এই যে নতুন ধরনের একটি মনস্তাত্ত্বিক ধারা, একে অবহেলা করে আমরা কিন্তু পরিত্রাণ পাব না।
এর মধ্যে এসেছে করোনা মহামারি। আবারও ধেয়ে আসছে তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে ওমিক্রন। এখান থেকেও ব্যবসায়ীরা প্রচুর মুনাফা লুটবেন। দেখা গেছে, গত দুই বছরে ব্যবসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এই মহামারিতে ব্যবসা কীভাবে উন্নয়নের পথে সাহায্য করে, তা-ও ভাববার বিষয়। এই সবটা মিলিয়ে একটা গভীর বিবেচনা প্রয়োজন। বিবেচনাই-বা কারা করবেন?
শহরের অতি আলোকোজ্জ্বল জীবন দেখে সারা দেশটার সব রকমের উন্নতি হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে অদ্ভুত এক জগৎ যাঁরা গড়ে তুলছেন, তাঁরাও এই অর্থকে ভোগ করতে পারবেন কি না, সেটাও বিবেচনায় রাখবেন। ইতিমধ্যে জেনেছি, সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কঠোর হতে শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন রাষ্ট্রও তার মানি লন্ডারিংয়ের টাকাকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। অতএব দিন দিন সময়টা কঠোর হয়ে উঠছে। সার্বিক বিবেচনায় একটু পরামর্শ কি দিতে পারি? স্থির হও স্থির হও, কোথা যাও কোথা যাও…
মামুনুর রশীদ

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে। এই অনার্সে ভর্তি একটি কঠিন পরীক্ষা। কিন্তু ওই দুই বছরের কোর্সে পরীক্ষাটি শিথিল। পরীক্ষাটিও তেমন কঠিন কিছু নয়, তবে সুবিধা শিক্ষকদের। যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এসে থাকে, তার শতকরা কুড়ি ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা হয়, বাকিটা শিক্ষকেরা ভাগাভাগি করে নেন। যেসব বিভাগে এই কোর্সটি চালু আছে, সেসব বিভাগের বিপুল আয় এবং শিক্ষকেরা ধনী থেকে আরও ধনী হয়ে যাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে নানা ধরনের কোচিং চালু আছে। বিসিএস কোচিং, তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বহু বছর ধরে একটা বৈকালিক আড্ডা হতো, এই আড্ডা সাধারণত শিক্ষাবিষয়ক এবং সৃজনশীল আড্ডা। সেই আড্ডা দখল করে ফেলেছে কোচিং ক্লাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও বিসিএস দিয়ে থাকেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা গর্বের বিষয় হয়ে থাকে কোথায়, কতজন বিসিএস পাস করল। কৃতকার্য শিক্ষকেরা অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বিসিএসে যোগ দেন এবং কৃতকার্য হওয়ার পর শিক্ষকতা ছেড়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে একটা গর্বের বিষয়ও দাঁড়িয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বের বিষয়। কিন্তু শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন কোন কারণে, তা ভাবনার বিষয়।বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞানতত্ত্বের জায়গা। এখানে শুধু জ্ঞান নয়, জ্ঞানের যে তত্ত্ব, সেটিও আবিষ্কারের জায়গা। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা যোগ দিচ্ছেন? তাঁদের কাছে কি জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ? নাকি প্রশাসনিক কাজ? আমি দু-চারজন শিক্ষককে চিনি, যাঁরা শিক্ষক হয়ে পরবর্তীকালে পুলিশ, কাস্টমস অফিসার, আমলা হয়েছেন। যদি তাঁরা আমলাই হবেন, তবে কেন শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন? আমলা হওয়াই কি তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল? তা-ও কাস্টমসের আমলা! দেশের কাস্টমস বা পুলিশিব্যবস্থাকে উন্নত করা কি তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, নাকি একটি চাকরিই মুখ্য ছিল, যে চাকরিতে প্রচুর উপার্জন সম্ভব? সেই পথ ধরেই লাখ লাখ ছাত্র এখন ছুটছে এসব প্রশাসনিক চাকরির জন্য, যার মধ্যে আছেন শিক্ষকেরাও।
প্রতিবছর কতজনই-বা নিয়োগ হয় এসব চাকরিতে? কিন্তু লাখ লাখ ছাত্রের অকৃতকার্য হওয়া এবং দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জীবনের বাকি সময় কাটাতে হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যাঁরা প্রশাসনে আসেন, তাঁরা সবাই মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক। কোনো সৃজনশীল জ্ঞান তাঁদের মধ্যে থাকা সম্ভব নয়। কারণ, পরীক্ষাটি হয় অত্যন্ত যান্ত্রিক উপায়ে। এমসিকিউ পরীক্ষায় সম্পূর্ণভাবে মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক এবং ছাত্ররা কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করে এ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। দেখা যায়, পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও ওই কোচিংভিত্তিক। তাই জ্ঞান এখানে কোনো মুখ্য বিষয় নয়। অনেক দিন ধরে আমি কোচিংয়ের বিরুদ্ধে লিখে আসছি। একবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোচিং নিষিদ্ধ হয়েছিল; কিন্তু বেশি দিন তা টেকেনি। কারণ, যারা কোচিং করে, তাদের হাত এত দিনে খুব লম্বা হয়ে গেছে, তারা কোনো আইনকানুনের ধার ধারে না।
সরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকেরা ক্লাসে কিছু না পড়িয়ে ছাত্রদের কোচিংয়ে আহ্বান করেন। ছাত্ররা এখন সাতজন কোচিং মাস্টারের অধীন পড়ালেখা করে। অভিভাবকদের দাবি—তাঁর সন্তানকে জিপিএ-৫ পেতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সময় আমি দেখেছি, জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্র একটি রচনা লিখতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ একটি ছাত্রকেও ভর্তির উপযুক্ত মনে করেনি।
আমাদের মতো দরিদ্র দেশেও শিক্ষায় জনগণের লগ্নি কম নয়। কিন্তু এই লগ্নি ক্রমাগতই ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়গুলো মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আজ নম্বর মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে, শিক্ষা হয়ে গেছে পণ্য এবং বাণিজ্য। এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে স্বাস্থ্য-বাণিজ্য ও মূল্যবোধহীন অমানবিক শিক্ষার ফলাফলে দেশটি হয়ে যাচ্ছে প্রবলভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। এই প্রবণতা রোধ করা দিন দিন অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
প্রতিদিন খবরের কাগজে বিরাট অংশজুড়ে থাকছে দুর্নীতির সংবাদ অথচ পরাধীন দেশে দুর্নীতির একটি সংবাদ প্রকাশ হলে তা নিয়ে একটা বড় ধরনের হইচই পড়ে যেত।
এখন আর তা হয় না, মানুষের গা-সওয়া হয়ে গেছে এসব। এই গা-সওয়া পরিস্থিতি অবশেষে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা মুশকিল। একটা কথা ঠিক, অন্যায় এবং অধর্মের একটা শেষ আছে। ভারতে কংগ্রেস সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম বহুদিন রাজত্ব করেছে। কিন্তু দুর্নীতির ফলে তারা ক্ষমতা হারিয়েছে। এবং ক্ষমতা চলে গেছে একেবারে উল্টো পথে। ধর্মকে ব্যবহার করে সে দেশে একটা সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা তার প্রতিবেশীদের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এই পরিস্থিতি কখনোই ভারতের জন্য কাম্য ছিল না। আমাদের দেশেও মৌলবাদী দলগুলো তৃণমূল পর্যায়ে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জে, শহরে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়ে হিজাব ও বোরকা পরা নারীদের সমাগম দেখতে পাই। তার মানে ব্যাপক পরিমাণ মাদ্রাসায় কর্মরতরা একটা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
এই মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যেও একটা বড় অংশ দুর্নীতিপরায়ণ। তাঁরা ধর্ষণের মতো নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। একেবারেই নামমাত্র মাদ্রাসা রেখে বছরের পর বছর সরকারের টাকা খেয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির ছায়া এসব ধর্মব্যবসায়ীকেও উৎসাহিত করছে।
শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে পণ্য, স্বাস্থ্য এবং সরকারের অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে চলেছে একধরনের সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংসের দিকে। এ কথা ঠিক, দেশে অনেক ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে, তাতে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার বিনিয়োগ করছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আসছে। কিন্তু সেই সঙ্গে যদি মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা যুক্ত না হয়, তাহলে সবটাই মূল্যহীন হয়ে পড়বে।
আমলাতন্ত্রে আজকাল কোনো জবাবদিহি নেই বললেই চলে। তারা শাসকে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা এটাকে নিছক ব্যবসা হিসেবে দেখছেন, যেহেতু অধিকাংশই রাজনৈতিক নেতা-ব্যবসায়ী। মানুষ বিচারহীনতায় দীর্ঘসূত্রতা দেখে দেখে অসহায় হয়ে পড়ছে। এই অসহায়ত্ব একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রের সব ধরনের শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলবে।
সবচেয়ে লক্ষণীয় দুর্নীতিপরায়ণ লোকটিই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার! এই যে নতুন ধরনের একটি মনস্তাত্ত্বিক ধারা, একে অবহেলা করে আমরা কিন্তু পরিত্রাণ পাব না।
এর মধ্যে এসেছে করোনা মহামারি। আবারও ধেয়ে আসছে তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে ওমিক্রন। এখান থেকেও ব্যবসায়ীরা প্রচুর মুনাফা লুটবেন। দেখা গেছে, গত দুই বছরে ব্যবসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এই মহামারিতে ব্যবসা কীভাবে উন্নয়নের পথে সাহায্য করে, তা-ও ভাববার বিষয়। এই সবটা মিলিয়ে একটা গভীর বিবেচনা প্রয়োজন। বিবেচনাই-বা কারা করবেন?
শহরের অতি আলোকোজ্জ্বল জীবন দেখে সারা দেশটার সব রকমের উন্নতি হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে অদ্ভুত এক জগৎ যাঁরা গড়ে তুলছেন, তাঁরাও এই অর্থকে ভোগ করতে পারবেন কি না, সেটাও বিবেচনায় রাখবেন। ইতিমধ্যে জেনেছি, সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কঠোর হতে শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন রাষ্ট্রও তার মানি লন্ডারিংয়ের টাকাকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। অতএব দিন দিন সময়টা কঠোর হয়ে উঠছে। সার্বিক বিবেচনায় একটু পরামর্শ কি দিতে পারি? স্থির হও স্থির হও, কোথা যাও কোথা যাও…

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে। এই অনার্সে ভর্তি একটি কঠিন পরীক্ষা। কিন্তু ওই দুই বছরের কোর্সে পরীক্ষাটি শিথিল। পরীক্ষাটিও তেমন কঠিন কিছু নয়, তবে সুবিধা শিক্ষকদের। যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এসে থাকে, তার শতকরা কুড়ি ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা হয়, বাকিটা শিক্ষকেরা ভাগাভাগি করে নেন। যেসব বিভাগে এই কোর্সটি চালু আছে, সেসব বিভাগের বিপুল আয় এবং শিক্ষকেরা ধনী থেকে আরও ধনী হয়ে যাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে নানা ধরনের কোচিং চালু আছে। বিসিএস কোচিং, তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বহু বছর ধরে একটা বৈকালিক আড্ডা হতো, এই আড্ডা সাধারণত শিক্ষাবিষয়ক এবং সৃজনশীল আড্ডা। সেই আড্ডা দখল করে ফেলেছে কোচিং ক্লাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও বিসিএস দিয়ে থাকেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা গর্বের বিষয় হয়ে থাকে কোথায়, কতজন বিসিএস পাস করল। কৃতকার্য শিক্ষকেরা অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বিসিএসে যোগ দেন এবং কৃতকার্য হওয়ার পর শিক্ষকতা ছেড়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে একটা গর্বের বিষয়ও দাঁড়িয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বের বিষয়। কিন্তু শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে বিসিএসের চাকরিতে যোগ দেন কোন কারণে, তা ভাবনার বিষয়।বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞানতত্ত্বের জায়গা। এখানে শুধু জ্ঞান নয়, জ্ঞানের যে তত্ত্ব, সেটিও আবিষ্কারের জায়গা। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা যোগ দিচ্ছেন? তাঁদের কাছে কি জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ? নাকি প্রশাসনিক কাজ? আমি দু-চারজন শিক্ষককে চিনি, যাঁরা শিক্ষক হয়ে পরবর্তীকালে পুলিশ, কাস্টমস অফিসার, আমলা হয়েছেন। যদি তাঁরা আমলাই হবেন, তবে কেন শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন? আমলা হওয়াই কি তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল? তা-ও কাস্টমসের আমলা! দেশের কাস্টমস বা পুলিশিব্যবস্থাকে উন্নত করা কি তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, নাকি একটি চাকরিই মুখ্য ছিল, যে চাকরিতে প্রচুর উপার্জন সম্ভব? সেই পথ ধরেই লাখ লাখ ছাত্র এখন ছুটছে এসব প্রশাসনিক চাকরির জন্য, যার মধ্যে আছেন শিক্ষকেরাও।
প্রতিবছর কতজনই-বা নিয়োগ হয় এসব চাকরিতে? কিন্তু লাখ লাখ ছাত্রের অকৃতকার্য হওয়া এবং দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জীবনের বাকি সময় কাটাতে হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যাঁরা প্রশাসনে আসেন, তাঁরা সবাই মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক। কোনো সৃজনশীল জ্ঞান তাঁদের মধ্যে থাকা সম্ভব নয়। কারণ, পরীক্ষাটি হয় অত্যন্ত যান্ত্রিক উপায়ে। এমসিকিউ পরীক্ষায় সম্পূর্ণভাবে মুখস্থবিদ্যাকেন্দ্রিক এবং ছাত্ররা কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করে এ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। দেখা যায়, পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও ওই কোচিংভিত্তিক। তাই জ্ঞান এখানে কোনো মুখ্য বিষয় নয়। অনেক দিন ধরে আমি কোচিংয়ের বিরুদ্ধে লিখে আসছি। একবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোচিং নিষিদ্ধ হয়েছিল; কিন্তু বেশি দিন তা টেকেনি। কারণ, যারা কোচিং করে, তাদের হাত এত দিনে খুব লম্বা হয়ে গেছে, তারা কোনো আইনকানুনের ধার ধারে না।
সরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকেরা ক্লাসে কিছু না পড়িয়ে ছাত্রদের কোচিংয়ে আহ্বান করেন। ছাত্ররা এখন সাতজন কোচিং মাস্টারের অধীন পড়ালেখা করে। অভিভাবকদের দাবি—তাঁর সন্তানকে জিপিএ-৫ পেতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সময় আমি দেখেছি, জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্র একটি রচনা লিখতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ একটি ছাত্রকেও ভর্তির উপযুক্ত মনে করেনি।
আমাদের মতো দরিদ্র দেশেও শিক্ষায় জনগণের লগ্নি কম নয়। কিন্তু এই লগ্নি ক্রমাগতই ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়গুলো মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আজ নম্বর মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে, শিক্ষা হয়ে গেছে পণ্য এবং বাণিজ্য। এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে স্বাস্থ্য-বাণিজ্য ও মূল্যবোধহীন অমানবিক শিক্ষার ফলাফলে দেশটি হয়ে যাচ্ছে প্রবলভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। এই প্রবণতা রোধ করা দিন দিন অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
প্রতিদিন খবরের কাগজে বিরাট অংশজুড়ে থাকছে দুর্নীতির সংবাদ অথচ পরাধীন দেশে দুর্নীতির একটি সংবাদ প্রকাশ হলে তা নিয়ে একটা বড় ধরনের হইচই পড়ে যেত।
এখন আর তা হয় না, মানুষের গা-সওয়া হয়ে গেছে এসব। এই গা-সওয়া পরিস্থিতি অবশেষে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা মুশকিল। একটা কথা ঠিক, অন্যায় এবং অধর্মের একটা শেষ আছে। ভারতে কংগ্রেস সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম বহুদিন রাজত্ব করেছে। কিন্তু দুর্নীতির ফলে তারা ক্ষমতা হারিয়েছে। এবং ক্ষমতা চলে গেছে একেবারে উল্টো পথে। ধর্মকে ব্যবহার করে সে দেশে একটা সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা তার প্রতিবেশীদের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এই পরিস্থিতি কখনোই ভারতের জন্য কাম্য ছিল না। আমাদের দেশেও মৌলবাদী দলগুলো তৃণমূল পর্যায়ে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জে, শহরে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়ে হিজাব ও বোরকা পরা নারীদের সমাগম দেখতে পাই। তার মানে ব্যাপক পরিমাণ মাদ্রাসায় কর্মরতরা একটা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
এই মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যেও একটা বড় অংশ দুর্নীতিপরায়ণ। তাঁরা ধর্ষণের মতো নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। একেবারেই নামমাত্র মাদ্রাসা রেখে বছরের পর বছর সরকারের টাকা খেয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির ছায়া এসব ধর্মব্যবসায়ীকেও উৎসাহিত করছে।
শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে পণ্য, স্বাস্থ্য এবং সরকারের অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে চলেছে একধরনের সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংসের দিকে। এ কথা ঠিক, দেশে অনেক ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে, তাতে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার বিনিয়োগ করছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আসছে। কিন্তু সেই সঙ্গে যদি মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা যুক্ত না হয়, তাহলে সবটাই মূল্যহীন হয়ে পড়বে।
আমলাতন্ত্রে আজকাল কোনো জবাবদিহি নেই বললেই চলে। তারা শাসকে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা এটাকে নিছক ব্যবসা হিসেবে দেখছেন, যেহেতু অধিকাংশই রাজনৈতিক নেতা-ব্যবসায়ী। মানুষ বিচারহীনতায় দীর্ঘসূত্রতা দেখে দেখে অসহায় হয়ে পড়ছে। এই অসহায়ত্ব একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রের সব ধরনের শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলবে।
সবচেয়ে লক্ষণীয় দুর্নীতিপরায়ণ লোকটিই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার! এই যে নতুন ধরনের একটি মনস্তাত্ত্বিক ধারা, একে অবহেলা করে আমরা কিন্তু পরিত্রাণ পাব না।
এর মধ্যে এসেছে করোনা মহামারি। আবারও ধেয়ে আসছে তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে ওমিক্রন। এখান থেকেও ব্যবসায়ীরা প্রচুর মুনাফা লুটবেন। দেখা গেছে, গত দুই বছরে ব্যবসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এই মহামারিতে ব্যবসা কীভাবে উন্নয়নের পথে সাহায্য করে, তা-ও ভাববার বিষয়। এই সবটা মিলিয়ে একটা গভীর বিবেচনা প্রয়োজন। বিবেচনাই-বা কারা করবেন?
শহরের অতি আলোকোজ্জ্বল জীবন দেখে সারা দেশটার সব রকমের উন্নতি হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে অদ্ভুত এক জগৎ যাঁরা গড়ে তুলছেন, তাঁরাও এই অর্থকে ভোগ করতে পারবেন কি না, সেটাও বিবেচনায় রাখবেন। ইতিমধ্যে জেনেছি, সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কঠোর হতে শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন রাষ্ট্রও তার মানি লন্ডারিংয়ের টাকাকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। অতএব দিন দিন সময়টা কঠোর হয়ে উঠছে। সার্বিক বিবেচনায় একটু পরামর্শ কি দিতে পারি? স্থির হও স্থির হও, কোথা যাও কোথা যাও…

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম, সান্ধ্য কর্মসূচিটি খুবই সক্রিয়। সান্ধ্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় এবং দুই বছর পর মাস্টার্সের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স পাস করে থাকে।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫