Ajker Patrika

প্রবাসে বাবার মৃত্যু, শোক চেপে পরীক্ষা দিল লিজা

গৌরীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৩
প্রবাসে বাবার মৃত্যু, শোক চেপে পরীক্ষা দিল লিজা

পরীক্ষার অতিরিক্ত মানসিক চাপ আর উদ্বেগের মধ্যেই শুনতে হলো প্রবাসী বাবার মৃত্যুর সংবাদ। এর মধ্যেই হাজির হতে হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রে। গতকাল সোমবার এই ঘটনাটি ঘটেছে গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি দক্ষিণপাড়া গ্রামে। পরীক্ষার্থী লিজা ওই গ্রামের সদ্য প্রয়াত আলাল উদ্দিনের (৪০) মেয়ে। সে স্থানীয় গিধাউষা হাসন আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

ঘড়ির কাটায় তখন সময় ৬টা। ঘুম থেকে জেগে বই নিয়ে পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী আফরিন জাহান লিজা। এমন সময় খবর আসে বাবা প্রবাসে মারা গেছেন। আকস্মিক বাবার মৃত্যুর সংবাদে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে লিজা। তবে শিক্ষক ও স্বজনদের চেষ্টায় কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, জীবিকার তাগিদে লিজার বাবা আলাল উদ্দিন দুই বছর ধরে সৌদি আরবের রিয়াদে আছেন। সৌদি আরবের স্থানীয় সময় গত রোববার দুপুরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে রিয়াদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আলাল উদ্দিনের বড় ভাই হাবিবুর রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমার ভাই ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন। রোববার অসুস্থ হওয়ার পর তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমরা প্রবাসে থাকা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করছি।’

এদিকে সৌদি আরব থেকে রোববার রাতেই আলাল উদ্দিনের মৃত্যুর খবর বাড়িতে আসলেও পরীক্ষার কথা ভেবে লিজার পরিবারের কাছে বিষয়টি গোপন রাখে স্বজনেরা। কিন্তু পরদিন সোমবার ভোরে বিষয়টি জানাজানি হলে বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়।

লিজার পরীক্ষা কেন্দ্র পার্শ্ববর্তী কেন্দুয়া উপজেলার বেখৈরহাটি নরেন্দ্র কান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে। গতকাল সোমবার সকালে বাবা হারানোর কষ্ট বুকে নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে কেন্দ্রে যায় লিজা। সহপাঠী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সহযোগিতায় জীববিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।

গিধাউষা হাসন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুজ্জামান ফকির বলেন, ‘লিজা আমার বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ফার্স্ট গার্ল। তার বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছি।’ সে যেন ভালোভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখার চেষ্টা করেছেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত