Ajker Patrika

পর্যটক বরণে প্রস্তুত কুয়াকাটা

পটুয়াখালী ও কলাপাড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২২, ১৩: ৫২
পর্যটক বরণে প্রস্তুত কুয়াকাটা

ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যটকদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন কুয়াকাটার হোটেল ব্যবসায়ীরা। হোটেল-মোটেলগুলোর ৭০ শতাংশ কামরার বুকিং ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার কারণে এখন ৬ ঘণ্টা ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় পৌঁছানো যাচ্ছে। দিনভর সৈকতে কাটিয়ে সূর্যাস্ত দেখে রাতেই আবার ঢাকায় ফিরতে পারবেন পর্যটকেরা। এ কারণে এবার বাড়তি পর্যটকদের উপস্থিতি প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে ঈদের পরে ভিড় বেশি হতে পারে বলে অনেক আবার এখনও নিরিবিলিতে ঘুরতে এসেছেন কুয়াকাটা সাগর সৈকতে।

কুয়াকাটায় রয়েছে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত। আছে রাখাইনের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত নানা স্থাপনা। ঈদের ছুটিতে এসব পর্যটন স্পট পর্যটকদের উপস্থিতিতে সরগরম থাকবে। পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি সাগর সৈকতে ছাতার নিচে বসে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের স্বাদও নিতে পারবেন পর্যটকেরা।

জানা গেছে, কুয়াকাটায় পর্যটকদের রাতযাপনের জন্য ১৬০টির বেশি আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে, এগুলোর ধারণক্ষমতা ১৫ হাজারের মতো। এই ছুটিতে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় কুয়াকাটার সঙ্গে সারা দেশের নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় আগের বছরগুলো থেকে এবার কুয়াকাটায় অনেক বেশি পর্যটকের আগমন ঘটবে বলে আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘পর্যটন মৌসুম হিসেবে আমরা নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ধরি, কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এখন সারা বছর আমরা পর্যটক পাব। আসন্ন ঈদ ও পদ্মা সেতুর সুফল হিসেবে আগামী ১০ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত একটানা অনেক পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সব পর্যটক ব্যবসায়ী তাঁদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।’

কুয়াকাটা টুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কে এম বাচ্চু বলেন, ‘পর্যটকদের আগমন ঘিরে আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছি, যাতে পুরোপুরি সেবা ও বিনোদন দিতে পারি। তবে কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের জন্য বাড়তি বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে তাঁরা এক দিন ঘোরাফেরা করে চলে যান। যদি বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে সম্ভাবনাটা আরও বাড়বে।’

হোটেল সমুদ্র বাড়ির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, ‘আমরা ১২-১৩ তারিখ পুরো রিসোর্ট অগ্রিম বুকিং পেয়েছি, আবার ১৪-১৫ তারিখেরও ৭০ শতাংশ বুকিং।’

এদিকে ঈদের সময় পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকবে এ কারণে কিছুটা নিরিবিলি পরিবেশে অনেকে ঈদের আগেই কুয়াকাটা এখন ঘুরতে এসেছেন। এসব পর্যটকেরা জানালেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা।

আফরোজা নামের এক পর্যটক বলেন, ‘রংপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে কুয়াকাটা এসেছি। সৈকতে পর্যটক কম দেখে ভালো লাগছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি।’

ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা হোসাইন সাব্বির বলেন, ‘ঈদের পরে বেশি দিন ছুটি থাকবে না তাই ঈদের আগেই ঘুরতে এসেছি। গতকাল রাত ১২টায় ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে সকাল ৬টায় কুয়াকাটা পৌঁছেছি। এর আগেও এখানে এসেছি আগের থেকে এখন ৭-৮ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হয়।’ কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের এই ভ্রমণটি যাতে স্মরণীয় করে রাখতে পারে, সে কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ এবং মহিপুর থানা-পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।

খেপুপাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন লিডার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘বাড়তি পর্যটকের কারণে সমুদ্রসৈকতে গোসল করতে নেমে কোনো পর্যটক যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হন সে কারণে এবার পালাক্রমে সৈকত এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।’

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খালেক বলেন, ‘সারা বছরই পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। এ ছাড়া বিশেষ দিনগুলোতে আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা থাকে। এই ঈদ ঘিরেও আমাদের বিভিন্ন টিম তৈরি রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত