মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চর হেয়ারে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে নিতে কথাগুলো বলছিলেন জেলে আব্দুল আকন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গাবালীতে বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন চর হেয়ারে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা ‘ঘেরা জাল’ দিয়ে মাছ ধরছিলেন। ওই সময় আব্দুল আকন ছাড়াও মোশাররফ হাওলাদার, তোতা মৃধা, হোসেনসহ সাত-আটজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। একই দিনে রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলার আরও কয়েকটি চর ঘুরে বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায় চমকপ্রদ তথ্য।
মাছ শিকার করার জন্য বাঁশ পুঁতে, ডাল ফেলে জাল দিয়ে ঘিরে দেশের নদ-নদী দখল করার তথ্য বেশ পুরোনো। সংবাদমাধ্যমেও তা উঠে এসেছে নানা সময়ে। রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ার জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এবার জানা গেল সাগর দখল করে জেলেদের কাছ থেকে ইজারামূল্যের মতো নিয়মিত অর্থ আদায় করার তথ্য।
ওই জেলেরা জানান, কুয়াকাটার কাছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয়, রাঙ্গাবালীর চর হেয়ার, সোনারচর, মেছের চর, জাহাজমারা চর, চরমোন্তাজ, তুফানিয়া চর, হাইরের চরসহ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং গঙ্গামতি সৈকতের মোহনাসহ আশপাশে সাগর ও সৈকতে কারেন্ট জালের ঘের (স্থানীয় ভাষায় খুঁটা জাল) দিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলেদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হচ্ছে। আর এই চাঁদা আদায়ের রীতির প্রচলন করেছেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব।
জেলেদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে ‘জাল যার সাগরের মাছ তার’ রীতি চলে এলেও গত কয়েক বছরে তার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। পটুয়াখালী উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা সব চর, ডুবোচর, মোহনা ও সৈকতের স্থানে এখন আর নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারেন না জেলেরা। মাছ ধরতে হলে ইজারার মতো বছরভিত্তিতে টাকা দিতে হয় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের লোকজনকে। ওই জেলেরা জানান, ক্ষমতাসীন দল ও সংসদ সদস্যের কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে নেতৃত্ব দেন রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন, মহীপুর থানার ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালাল, একই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া, রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও শাহজুল মীর।
‘এমপি মহিব মেয়া লিজ দেছে বাবু তালুকদাররে’
রাঙ্গাবালী এলাকার জেলে তোতা মৃধা বলেন, ‘এমপি মহিব মেয়া বাবু তালুকদাররে লিজ (ইজারা) দেছে, তার কাছ থেহে আমাগো দেশি মানুষ খালগোড়ায় বাড়ি শাহজুল মীর আনছে। আমরা শাহজুল মীরের কাছ দিয়া এই বছর ৯০ হাজার টাহায় আনছি।’
একই এলাকার জেলে মোশাররফ হাং (হাওলাদার) বলেন, ‘তাগো কাছে দিয়া চর রাইখা যদি টাকা না দেওয়া লাগত, তাইলে আমাগো গরিব মানুষের উপকার হইতে। আর এহন এই চরে মাছ ধরনের লাইগা গদি দিয়া টাকা আইনা তাদের দেই। এরপর যা থাহে তা কিস্তি দিয়া (পরিশোধ করে) ঘর-সংসার লইয়া খাই।’
সংসদ সদস্য বললেন, ‘আমি জানি না’
সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সাগর ‘ইজারা’ দেওয়ার মতো কোনো ঘটনাই তাঁর জানা নেই। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কে বা কারা সাগর ইজারা দিচ্ছে, আমি তা জানি না। যাদের কথা বলছেন, তাদের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজুল মীর বলেন, ‘ওই জেলেদের কাছে দুই-তিন মাস আগে কিছু মাছ চেয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমার কাছে মাছ বিক্রি কর; কিন্তু ওরা দেয়নি। মাছ দেয় নাই, তাই আপনাদের কাছে মিথ্যা কথা বলছে।’
সোনারচরসংলগ্ন মেছের চরের এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মেছের চরে ১২ জনে জাল দিয়ে মাছ ধরি। এই চর দুই লাখ টাহা দিয়া ইজারা আনতে হইছে। টাহা দিছি রাঙ্গাবালীর চেয়ারম্যান মামুন খানরে। গত বছর লোকসান হইছে, এ বছর কী হয় জানি না।’
রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান খান মামুনের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা তা অস্বীকার করেন। তাঁরা দাবি করেন, চর কিংবা সাগর ‘ইজারা’র সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
‘এমপি সাব অয়ার পর থাইক্যা এই অবস্থা’
ধুলাসার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাস্টার জানান, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতসংলগ্ন মোহনাসহ যত চর আছে, সবই ‘ইজারা’ দেওয়া হয়েছে। আর এই ইজারা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। আব্দুল জলিল মাস্টার বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরতে জেলেগো টাহা দেওন লাগে।’ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাহা দ্যাতে অয় কেন, হের জবাব দ্যাতে পারুম না, তয় মাছ ধরলে দ্যাতে অয়।’ কত বছর ধরে এমনটি চলছে, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, চাইর বছর। বর্তমান এমপি সাব অয়ার (নির্বাচিত হওয়ার) পর থাইক্যা এই অবস্থা।’ ‘ইজারা’ কে দেন, জানতে চাইলে সাবেক এই জনপ্রতিনিধি প্রথমে বলেন, ‘আমরা ছোড মানুষ, এত কথা কইতে পারুম না।’ পরে এমপি সাহেব কি না, প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘হ্যাঁ’ বলে মাথা নাড়েন।
আব্দুল জলিল জানান, সমুদ্র ও নদীর সংযোগস্থল রামনাবাদ চ্যানেল থেকে সমুদ্রের ‘মালোর ট্যাক’ পর্যন্ত প্রতিবছর ২৬ লাখ টাকায় ‘ইজারা’ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। বিষয়টি তদারক করেন ধুলাসার ইউনিয়নের মিন্টু ভূইয়া। এ ছাড়া চর বিজয়ও এ বছর ৪ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। গঙ্গামতি সৈকতের যে খেয়া দিয়ে পর্যটকেরা লাল কাঁকড়ার চরে যান, সেই খেয়াঘাট থেকে প্রতিবছর তিন লাখ টাকা নেন সংসদ সদস্য।
অভিযোগের বিষয়ে ধুলাসার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া বলেন, ‘এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এমপি মহোদয় এ বিষয়ে জানেনই না।’
ধুলাসার ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য গঙ্গামতি এলাকার আনোয়ার ফকির বলেন, ‘সমুদ্রে মাছ ধরতে অইলে জেলেদের ট্যাহা দেওয়া লাগে। পার্টি অফিস করুম, এইডা করুম, ওইডা করুম—এইসব কইয়া ট্যাহা তুলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালসহ নেতারা। ট্যাহা না দিলে মাছ ধরতে দেয় না। এমপি সাবের ইশারা ছাড়া তো আর এইসব অয় না। ইউনুস জালালদের কি এত ক্ষ্যামতা আছে?’ তিনি আরও বলেন, গঙ্গামতি সমুদ্রসৈকতের খালের গোড়া, গঙ্গামতির হাইরের চর, গঙ্গামতির ইলিশ ধরার জালের খেও, চর ইজারা দেওয়া হয়েছে। এসব চর থেকে টাকা নেওয়া হয়।
ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালকে গত কয়েক দিনে দফায় দফায় ফোন করা এবং গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘সাগর কিংবা চর ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনাদের কাছে যেহেতু শুনলাম, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
কলাপাড়ার ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘চর বা সমুদ্রের মোহনা ইজারা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। যদি এ রকম হয়ে থাকে খোঁজ নেওয়া হবে।’
মাছের প্রাচুর্য কমছে
অভিযোগ উঠেছে, কিছু লোকের মুনাফা লোটার কারণে কুয়াকাটা ও রাঙ্গাবালীর সব মোহনায় অবৈধ কারেন্ট জালের ঘের বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে মোহনা দিয়ে নদীতে প্রবেশের আগেই ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ওই জালে ধরা পড়ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন ও বংশবিস্তার।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ এ বি সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুঁটা জালের কারণে ছোট-বড় সব মাছ নির্বিচারে ধ্বংস ও ইলিশ বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নদীতে মাছের প্রাচুর্য কমছে। মোহনায় ছোট-বড় ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। নদীও মরে যাবে। এখনই এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ দরকার।’

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চর হেয়ারে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে নিতে কথাগুলো বলছিলেন জেলে আব্দুল আকন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গাবালীতে বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন চর হেয়ারে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা ‘ঘেরা জাল’ দিয়ে মাছ ধরছিলেন। ওই সময় আব্দুল আকন ছাড়াও মোশাররফ হাওলাদার, তোতা মৃধা, হোসেনসহ সাত-আটজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। একই দিনে রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলার আরও কয়েকটি চর ঘুরে বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায় চমকপ্রদ তথ্য।
মাছ শিকার করার জন্য বাঁশ পুঁতে, ডাল ফেলে জাল দিয়ে ঘিরে দেশের নদ-নদী দখল করার তথ্য বেশ পুরোনো। সংবাদমাধ্যমেও তা উঠে এসেছে নানা সময়ে। রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ার জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এবার জানা গেল সাগর দখল করে জেলেদের কাছ থেকে ইজারামূল্যের মতো নিয়মিত অর্থ আদায় করার তথ্য।
ওই জেলেরা জানান, কুয়াকাটার কাছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয়, রাঙ্গাবালীর চর হেয়ার, সোনারচর, মেছের চর, জাহাজমারা চর, চরমোন্তাজ, তুফানিয়া চর, হাইরের চরসহ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং গঙ্গামতি সৈকতের মোহনাসহ আশপাশে সাগর ও সৈকতে কারেন্ট জালের ঘের (স্থানীয় ভাষায় খুঁটা জাল) দিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলেদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হচ্ছে। আর এই চাঁদা আদায়ের রীতির প্রচলন করেছেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব।
জেলেদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে ‘জাল যার সাগরের মাছ তার’ রীতি চলে এলেও গত কয়েক বছরে তার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। পটুয়াখালী উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা সব চর, ডুবোচর, মোহনা ও সৈকতের স্থানে এখন আর নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারেন না জেলেরা। মাছ ধরতে হলে ইজারার মতো বছরভিত্তিতে টাকা দিতে হয় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের লোকজনকে। ওই জেলেরা জানান, ক্ষমতাসীন দল ও সংসদ সদস্যের কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে নেতৃত্ব দেন রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন, মহীপুর থানার ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালাল, একই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া, রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও শাহজুল মীর।
‘এমপি মহিব মেয়া লিজ দেছে বাবু তালুকদাররে’
রাঙ্গাবালী এলাকার জেলে তোতা মৃধা বলেন, ‘এমপি মহিব মেয়া বাবু তালুকদাররে লিজ (ইজারা) দেছে, তার কাছ থেহে আমাগো দেশি মানুষ খালগোড়ায় বাড়ি শাহজুল মীর আনছে। আমরা শাহজুল মীরের কাছ দিয়া এই বছর ৯০ হাজার টাহায় আনছি।’
একই এলাকার জেলে মোশাররফ হাং (হাওলাদার) বলেন, ‘তাগো কাছে দিয়া চর রাইখা যদি টাকা না দেওয়া লাগত, তাইলে আমাগো গরিব মানুষের উপকার হইতে। আর এহন এই চরে মাছ ধরনের লাইগা গদি দিয়া টাকা আইনা তাদের দেই। এরপর যা থাহে তা কিস্তি দিয়া (পরিশোধ করে) ঘর-সংসার লইয়া খাই।’
সংসদ সদস্য বললেন, ‘আমি জানি না’
সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সাগর ‘ইজারা’ দেওয়ার মতো কোনো ঘটনাই তাঁর জানা নেই। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কে বা কারা সাগর ইজারা দিচ্ছে, আমি তা জানি না। যাদের কথা বলছেন, তাদের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজুল মীর বলেন, ‘ওই জেলেদের কাছে দুই-তিন মাস আগে কিছু মাছ চেয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমার কাছে মাছ বিক্রি কর; কিন্তু ওরা দেয়নি। মাছ দেয় নাই, তাই আপনাদের কাছে মিথ্যা কথা বলছে।’
সোনারচরসংলগ্ন মেছের চরের এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মেছের চরে ১২ জনে জাল দিয়ে মাছ ধরি। এই চর দুই লাখ টাহা দিয়া ইজারা আনতে হইছে। টাহা দিছি রাঙ্গাবালীর চেয়ারম্যান মামুন খানরে। গত বছর লোকসান হইছে, এ বছর কী হয় জানি না।’
রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান খান মামুনের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা তা অস্বীকার করেন। তাঁরা দাবি করেন, চর কিংবা সাগর ‘ইজারা’র সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
‘এমপি সাব অয়ার পর থাইক্যা এই অবস্থা’
ধুলাসার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাস্টার জানান, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতসংলগ্ন মোহনাসহ যত চর আছে, সবই ‘ইজারা’ দেওয়া হয়েছে। আর এই ইজারা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। আব্দুল জলিল মাস্টার বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরতে জেলেগো টাহা দেওন লাগে।’ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাহা দ্যাতে অয় কেন, হের জবাব দ্যাতে পারুম না, তয় মাছ ধরলে দ্যাতে অয়।’ কত বছর ধরে এমনটি চলছে, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, চাইর বছর। বর্তমান এমপি সাব অয়ার (নির্বাচিত হওয়ার) পর থাইক্যা এই অবস্থা।’ ‘ইজারা’ কে দেন, জানতে চাইলে সাবেক এই জনপ্রতিনিধি প্রথমে বলেন, ‘আমরা ছোড মানুষ, এত কথা কইতে পারুম না।’ পরে এমপি সাহেব কি না, প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘হ্যাঁ’ বলে মাথা নাড়েন।
আব্দুল জলিল জানান, সমুদ্র ও নদীর সংযোগস্থল রামনাবাদ চ্যানেল থেকে সমুদ্রের ‘মালোর ট্যাক’ পর্যন্ত প্রতিবছর ২৬ লাখ টাকায় ‘ইজারা’ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। বিষয়টি তদারক করেন ধুলাসার ইউনিয়নের মিন্টু ভূইয়া। এ ছাড়া চর বিজয়ও এ বছর ৪ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। গঙ্গামতি সৈকতের যে খেয়া দিয়ে পর্যটকেরা লাল কাঁকড়ার চরে যান, সেই খেয়াঘাট থেকে প্রতিবছর তিন লাখ টাকা নেন সংসদ সদস্য।
অভিযোগের বিষয়ে ধুলাসার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া বলেন, ‘এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এমপি মহোদয় এ বিষয়ে জানেনই না।’
ধুলাসার ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য গঙ্গামতি এলাকার আনোয়ার ফকির বলেন, ‘সমুদ্রে মাছ ধরতে অইলে জেলেদের ট্যাহা দেওয়া লাগে। পার্টি অফিস করুম, এইডা করুম, ওইডা করুম—এইসব কইয়া ট্যাহা তুলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালসহ নেতারা। ট্যাহা না দিলে মাছ ধরতে দেয় না। এমপি সাবের ইশারা ছাড়া তো আর এইসব অয় না। ইউনুস জালালদের কি এত ক্ষ্যামতা আছে?’ তিনি আরও বলেন, গঙ্গামতি সমুদ্রসৈকতের খালের গোড়া, গঙ্গামতির হাইরের চর, গঙ্গামতির ইলিশ ধরার জালের খেও, চর ইজারা দেওয়া হয়েছে। এসব চর থেকে টাকা নেওয়া হয়।
ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালকে গত কয়েক দিনে দফায় দফায় ফোন করা এবং গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘সাগর কিংবা চর ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনাদের কাছে যেহেতু শুনলাম, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
কলাপাড়ার ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘চর বা সমুদ্রের মোহনা ইজারা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। যদি এ রকম হয়ে থাকে খোঁজ নেওয়া হবে।’
মাছের প্রাচুর্য কমছে
অভিযোগ উঠেছে, কিছু লোকের মুনাফা লোটার কারণে কুয়াকাটা ও রাঙ্গাবালীর সব মোহনায় অবৈধ কারেন্ট জালের ঘের বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে মোহনা দিয়ে নদীতে প্রবেশের আগেই ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ওই জালে ধরা পড়ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন ও বংশবিস্তার।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ এ বি সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুঁটা জালের কারণে ছোট-বড় সব মাছ নির্বিচারে ধ্বংস ও ইলিশ বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নদীতে মাছের প্রাচুর্য কমছে। মোহনায় ছোট-বড় ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। নদীও মরে যাবে। এখনই এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ দরকার।’
মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চর হেয়ারে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে নিতে কথাগুলো বলছিলেন জেলে আব্দুল আকন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গাবালীতে বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন চর হেয়ারে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা ‘ঘেরা জাল’ দিয়ে মাছ ধরছিলেন। ওই সময় আব্দুল আকন ছাড়াও মোশাররফ হাওলাদার, তোতা মৃধা, হোসেনসহ সাত-আটজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। একই দিনে রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলার আরও কয়েকটি চর ঘুরে বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায় চমকপ্রদ তথ্য।
মাছ শিকার করার জন্য বাঁশ পুঁতে, ডাল ফেলে জাল দিয়ে ঘিরে দেশের নদ-নদী দখল করার তথ্য বেশ পুরোনো। সংবাদমাধ্যমেও তা উঠে এসেছে নানা সময়ে। রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ার জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এবার জানা গেল সাগর দখল করে জেলেদের কাছ থেকে ইজারামূল্যের মতো নিয়মিত অর্থ আদায় করার তথ্য।
ওই জেলেরা জানান, কুয়াকাটার কাছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয়, রাঙ্গাবালীর চর হেয়ার, সোনারচর, মেছের চর, জাহাজমারা চর, চরমোন্তাজ, তুফানিয়া চর, হাইরের চরসহ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং গঙ্গামতি সৈকতের মোহনাসহ আশপাশে সাগর ও সৈকতে কারেন্ট জালের ঘের (স্থানীয় ভাষায় খুঁটা জাল) দিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলেদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হচ্ছে। আর এই চাঁদা আদায়ের রীতির প্রচলন করেছেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব।
জেলেদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে ‘জাল যার সাগরের মাছ তার’ রীতি চলে এলেও গত কয়েক বছরে তার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। পটুয়াখালী উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা সব চর, ডুবোচর, মোহনা ও সৈকতের স্থানে এখন আর নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারেন না জেলেরা। মাছ ধরতে হলে ইজারার মতো বছরভিত্তিতে টাকা দিতে হয় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের লোকজনকে। ওই জেলেরা জানান, ক্ষমতাসীন দল ও সংসদ সদস্যের কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে নেতৃত্ব দেন রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন, মহীপুর থানার ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালাল, একই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া, রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও শাহজুল মীর।
‘এমপি মহিব মেয়া লিজ দেছে বাবু তালুকদাররে’
রাঙ্গাবালী এলাকার জেলে তোতা মৃধা বলেন, ‘এমপি মহিব মেয়া বাবু তালুকদাররে লিজ (ইজারা) দেছে, তার কাছ থেহে আমাগো দেশি মানুষ খালগোড়ায় বাড়ি শাহজুল মীর আনছে। আমরা শাহজুল মীরের কাছ দিয়া এই বছর ৯০ হাজার টাহায় আনছি।’
একই এলাকার জেলে মোশাররফ হাং (হাওলাদার) বলেন, ‘তাগো কাছে দিয়া চর রাইখা যদি টাকা না দেওয়া লাগত, তাইলে আমাগো গরিব মানুষের উপকার হইতে। আর এহন এই চরে মাছ ধরনের লাইগা গদি দিয়া টাকা আইনা তাদের দেই। এরপর যা থাহে তা কিস্তি দিয়া (পরিশোধ করে) ঘর-সংসার লইয়া খাই।’
সংসদ সদস্য বললেন, ‘আমি জানি না’
সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সাগর ‘ইজারা’ দেওয়ার মতো কোনো ঘটনাই তাঁর জানা নেই। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কে বা কারা সাগর ইজারা দিচ্ছে, আমি তা জানি না। যাদের কথা বলছেন, তাদের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজুল মীর বলেন, ‘ওই জেলেদের কাছে দুই-তিন মাস আগে কিছু মাছ চেয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমার কাছে মাছ বিক্রি কর; কিন্তু ওরা দেয়নি। মাছ দেয় নাই, তাই আপনাদের কাছে মিথ্যা কথা বলছে।’
সোনারচরসংলগ্ন মেছের চরের এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মেছের চরে ১২ জনে জাল দিয়ে মাছ ধরি। এই চর দুই লাখ টাহা দিয়া ইজারা আনতে হইছে। টাহা দিছি রাঙ্গাবালীর চেয়ারম্যান মামুন খানরে। গত বছর লোকসান হইছে, এ বছর কী হয় জানি না।’
রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান খান মামুনের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা তা অস্বীকার করেন। তাঁরা দাবি করেন, চর কিংবা সাগর ‘ইজারা’র সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
‘এমপি সাব অয়ার পর থাইক্যা এই অবস্থা’
ধুলাসার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাস্টার জানান, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতসংলগ্ন মোহনাসহ যত চর আছে, সবই ‘ইজারা’ দেওয়া হয়েছে। আর এই ইজারা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। আব্দুল জলিল মাস্টার বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরতে জেলেগো টাহা দেওন লাগে।’ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাহা দ্যাতে অয় কেন, হের জবাব দ্যাতে পারুম না, তয় মাছ ধরলে দ্যাতে অয়।’ কত বছর ধরে এমনটি চলছে, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, চাইর বছর। বর্তমান এমপি সাব অয়ার (নির্বাচিত হওয়ার) পর থাইক্যা এই অবস্থা।’ ‘ইজারা’ কে দেন, জানতে চাইলে সাবেক এই জনপ্রতিনিধি প্রথমে বলেন, ‘আমরা ছোড মানুষ, এত কথা কইতে পারুম না।’ পরে এমপি সাহেব কি না, প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘হ্যাঁ’ বলে মাথা নাড়েন।
আব্দুল জলিল জানান, সমুদ্র ও নদীর সংযোগস্থল রামনাবাদ চ্যানেল থেকে সমুদ্রের ‘মালোর ট্যাক’ পর্যন্ত প্রতিবছর ২৬ লাখ টাকায় ‘ইজারা’ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। বিষয়টি তদারক করেন ধুলাসার ইউনিয়নের মিন্টু ভূইয়া। এ ছাড়া চর বিজয়ও এ বছর ৪ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। গঙ্গামতি সৈকতের যে খেয়া দিয়ে পর্যটকেরা লাল কাঁকড়ার চরে যান, সেই খেয়াঘাট থেকে প্রতিবছর তিন লাখ টাকা নেন সংসদ সদস্য।
অভিযোগের বিষয়ে ধুলাসার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া বলেন, ‘এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এমপি মহোদয় এ বিষয়ে জানেনই না।’
ধুলাসার ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য গঙ্গামতি এলাকার আনোয়ার ফকির বলেন, ‘সমুদ্রে মাছ ধরতে অইলে জেলেদের ট্যাহা দেওয়া লাগে। পার্টি অফিস করুম, এইডা করুম, ওইডা করুম—এইসব কইয়া ট্যাহা তুলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালসহ নেতারা। ট্যাহা না দিলে মাছ ধরতে দেয় না। এমপি সাবের ইশারা ছাড়া তো আর এইসব অয় না। ইউনুস জালালদের কি এত ক্ষ্যামতা আছে?’ তিনি আরও বলেন, গঙ্গামতি সমুদ্রসৈকতের খালের গোড়া, গঙ্গামতির হাইরের চর, গঙ্গামতির ইলিশ ধরার জালের খেও, চর ইজারা দেওয়া হয়েছে। এসব চর থেকে টাকা নেওয়া হয়।
ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালকে গত কয়েক দিনে দফায় দফায় ফোন করা এবং গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘সাগর কিংবা চর ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনাদের কাছে যেহেতু শুনলাম, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
কলাপাড়ার ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘চর বা সমুদ্রের মোহনা ইজারা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। যদি এ রকম হয়ে থাকে খোঁজ নেওয়া হবে।’
মাছের প্রাচুর্য কমছে
অভিযোগ উঠেছে, কিছু লোকের মুনাফা লোটার কারণে কুয়াকাটা ও রাঙ্গাবালীর সব মোহনায় অবৈধ কারেন্ট জালের ঘের বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে মোহনা দিয়ে নদীতে প্রবেশের আগেই ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ওই জালে ধরা পড়ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন ও বংশবিস্তার।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ এ বি সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুঁটা জালের কারণে ছোট-বড় সব মাছ নির্বিচারে ধ্বংস ও ইলিশ বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নদীতে মাছের প্রাচুর্য কমছে। মোহনায় ছোট-বড় ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। নদীও মরে যাবে। এখনই এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ দরকার।’

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চর হেয়ারে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে নিতে কথাগুলো বলছিলেন জেলে আব্দুল আকন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গাবালীতে বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন চর হেয়ারে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা ‘ঘেরা জাল’ দিয়ে মাছ ধরছিলেন। ওই সময় আব্দুল আকন ছাড়াও মোশাররফ হাওলাদার, তোতা মৃধা, হোসেনসহ সাত-আটজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। একই দিনে রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলার আরও কয়েকটি চর ঘুরে বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায় চমকপ্রদ তথ্য।
মাছ শিকার করার জন্য বাঁশ পুঁতে, ডাল ফেলে জাল দিয়ে ঘিরে দেশের নদ-নদী দখল করার তথ্য বেশ পুরোনো। সংবাদমাধ্যমেও তা উঠে এসেছে নানা সময়ে। রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ার জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এবার জানা গেল সাগর দখল করে জেলেদের কাছ থেকে ইজারামূল্যের মতো নিয়মিত অর্থ আদায় করার তথ্য।
ওই জেলেরা জানান, কুয়াকাটার কাছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয়, রাঙ্গাবালীর চর হেয়ার, সোনারচর, মেছের চর, জাহাজমারা চর, চরমোন্তাজ, তুফানিয়া চর, হাইরের চরসহ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং গঙ্গামতি সৈকতের মোহনাসহ আশপাশে সাগর ও সৈকতে কারেন্ট জালের ঘের (স্থানীয় ভাষায় খুঁটা জাল) দিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলেদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হচ্ছে। আর এই চাঁদা আদায়ের রীতির প্রচলন করেছেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব।
জেলেদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে ‘জাল যার সাগরের মাছ তার’ রীতি চলে এলেও গত কয়েক বছরে তার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। পটুয়াখালী উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা সব চর, ডুবোচর, মোহনা ও সৈকতের স্থানে এখন আর নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারেন না জেলেরা। মাছ ধরতে হলে ইজারার মতো বছরভিত্তিতে টাকা দিতে হয় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের লোকজনকে। ওই জেলেরা জানান, ক্ষমতাসীন দল ও সংসদ সদস্যের কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে নেতৃত্ব দেন রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন, মহীপুর থানার ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালাল, একই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া, রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও শাহজুল মীর।
‘এমপি মহিব মেয়া লিজ দেছে বাবু তালুকদাররে’
রাঙ্গাবালী এলাকার জেলে তোতা মৃধা বলেন, ‘এমপি মহিব মেয়া বাবু তালুকদাররে লিজ (ইজারা) দেছে, তার কাছ থেহে আমাগো দেশি মানুষ খালগোড়ায় বাড়ি শাহজুল মীর আনছে। আমরা শাহজুল মীরের কাছ দিয়া এই বছর ৯০ হাজার টাহায় আনছি।’
একই এলাকার জেলে মোশাররফ হাং (হাওলাদার) বলেন, ‘তাগো কাছে দিয়া চর রাইখা যদি টাকা না দেওয়া লাগত, তাইলে আমাগো গরিব মানুষের উপকার হইতে। আর এহন এই চরে মাছ ধরনের লাইগা গদি দিয়া টাকা আইনা তাদের দেই। এরপর যা থাহে তা কিস্তি দিয়া (পরিশোধ করে) ঘর-সংসার লইয়া খাই।’
সংসদ সদস্য বললেন, ‘আমি জানি না’
সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সাগর ‘ইজারা’ দেওয়ার মতো কোনো ঘটনাই তাঁর জানা নেই। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কে বা কারা সাগর ইজারা দিচ্ছে, আমি তা জানি না। যাদের কথা বলছেন, তাদের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজুল মীর বলেন, ‘ওই জেলেদের কাছে দুই-তিন মাস আগে কিছু মাছ চেয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমার কাছে মাছ বিক্রি কর; কিন্তু ওরা দেয়নি। মাছ দেয় নাই, তাই আপনাদের কাছে মিথ্যা কথা বলছে।’
সোনারচরসংলগ্ন মেছের চরের এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মেছের চরে ১২ জনে জাল দিয়ে মাছ ধরি। এই চর দুই লাখ টাহা দিয়া ইজারা আনতে হইছে। টাহা দিছি রাঙ্গাবালীর চেয়ারম্যান মামুন খানরে। গত বছর লোকসান হইছে, এ বছর কী হয় জানি না।’
রাঙ্গাবালীর বাবু তালুকদার ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান খান মামুনের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা তা অস্বীকার করেন। তাঁরা দাবি করেন, চর কিংবা সাগর ‘ইজারা’র সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
‘এমপি সাব অয়ার পর থাইক্যা এই অবস্থা’
ধুলাসার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাস্টার জানান, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতসংলগ্ন মোহনাসহ যত চর আছে, সবই ‘ইজারা’ দেওয়া হয়েছে। আর এই ইজারা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। আব্দুল জলিল মাস্টার বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরতে জেলেগো টাহা দেওন লাগে।’ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাহা দ্যাতে অয় কেন, হের জবাব দ্যাতে পারুম না, তয় মাছ ধরলে দ্যাতে অয়।’ কত বছর ধরে এমনটি চলছে, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, চাইর বছর। বর্তমান এমপি সাব অয়ার (নির্বাচিত হওয়ার) পর থাইক্যা এই অবস্থা।’ ‘ইজারা’ কে দেন, জানতে চাইলে সাবেক এই জনপ্রতিনিধি প্রথমে বলেন, ‘আমরা ছোড মানুষ, এত কথা কইতে পারুম না।’ পরে এমপি সাহেব কি না, প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘হ্যাঁ’ বলে মাথা নাড়েন।
আব্দুল জলিল জানান, সমুদ্র ও নদীর সংযোগস্থল রামনাবাদ চ্যানেল থেকে সমুদ্রের ‘মালোর ট্যাক’ পর্যন্ত প্রতিবছর ২৬ লাখ টাকায় ‘ইজারা’ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। বিষয়টি তদারক করেন ধুলাসার ইউনিয়নের মিন্টু ভূইয়া। এ ছাড়া চর বিজয়ও এ বছর ৪ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। গঙ্গামতি সৈকতের যে খেয়া দিয়ে পর্যটকেরা লাল কাঁকড়ার চরে যান, সেই খেয়াঘাট থেকে প্রতিবছর তিন লাখ টাকা নেন সংসদ সদস্য।
অভিযোগের বিষয়ে ধুলাসার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূইয়া বলেন, ‘এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এমপি মহোদয় এ বিষয়ে জানেনই না।’
ধুলাসার ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য গঙ্গামতি এলাকার আনোয়ার ফকির বলেন, ‘সমুদ্রে মাছ ধরতে অইলে জেলেদের ট্যাহা দেওয়া লাগে। পার্টি অফিস করুম, এইডা করুম, ওইডা করুম—এইসব কইয়া ট্যাহা তুলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালসহ নেতারা। ট্যাহা না দিলে মাছ ধরতে দেয় না। এমপি সাবের ইশারা ছাড়া তো আর এইসব অয় না। ইউনুস জালালদের কি এত ক্ষ্যামতা আছে?’ তিনি আরও বলেন, গঙ্গামতি সমুদ্রসৈকতের খালের গোড়া, গঙ্গামতির হাইরের চর, গঙ্গামতির ইলিশ ধরার জালের খেও, চর ইজারা দেওয়া হয়েছে। এসব চর থেকে টাকা নেওয়া হয়।
ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস জালালকে গত কয়েক দিনে দফায় দফায় ফোন করা এবং গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘সাগর কিংবা চর ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনাদের কাছে যেহেতু শুনলাম, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
কলাপাড়ার ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘চর বা সমুদ্রের মোহনা ইজারা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। যদি এ রকম হয়ে থাকে খোঁজ নেওয়া হবে।’
মাছের প্রাচুর্য কমছে
অভিযোগ উঠেছে, কিছু লোকের মুনাফা লোটার কারণে কুয়াকাটা ও রাঙ্গাবালীর সব মোহনায় অবৈধ কারেন্ট জালের ঘের বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে মোহনা দিয়ে নদীতে প্রবেশের আগেই ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ওই জালে ধরা পড়ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন ও বংশবিস্তার।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ এ বি সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুঁটা জালের কারণে ছোট-বড় সব মাছ নির্বিচারে ধ্বংস ও ইলিশ বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নদীতে মাছের প্রাচুর্য কমছে। মোহনায় ছোট-বড় ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। নদীও মরে যাবে। এখনই এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ দরকার।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
১৮ অক্টোবর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
১৮ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
১৮ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

‘শাহজুল মীর ৬ লাখ টাহায় চর হেয়ার ইজারা আনছে এমপির থেহে। আর এই চরে আমরা ঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরমু। তাতে শাহজুল মীররে ৯০ হাজার টাহা দেতে হইছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসে টাহা দিছি, সামনের জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধরমু। আর গত বছর দিছিলাম ৬০ হাজার, তার আগে দিছি ৩৫ হাজার।’
১৮ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫