আবদুল মান্নান
বঙ্গবন্ধু, যিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে স্বীকৃত, যাঁর ১৯৭১ সালের সাতই মার্চের ভাষণ ইউনেসকো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত, যিনি নোবেল লরিয়েট অমর্ত্য সেনের ভাষায় শুধু বঙ্গবন্ধু ছিলেন না, বিশ্বেরও বন্ধু ছিলেন, তাঁর জন্মশতবর্ষ পালন করা হয়েছে। তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে নানাজন নানাভাবে আলোচনা করেছেন, লিখেছেন বা মন্তব্য করেছেন অনেকে; কিন্তু বলা বাহুল্য, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কোনো কিছু আলোচনা করতে হলে সবার আগে আলোচনার দাবি রাখে তাঁর শিক্ষা-ভাবনা বা শিক্ষাদর্শন; বিশেষ করে দেশের শিক্ষা নিয়ে যখন নানা দিকে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু এটি ঠিকই বুঝেছিলেন যে প্রাকৃতিক সম্পদবিহীন বাঙালি ও বাংলাদেশকে উন্নত করতে হলে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে তার শিক্ষাব্যবস্থাকে। তিনি এ-ও বুঝেছিলেন, শিক্ষায় অর্থ ব্যয়কে ব্যয় হিসেবে না দেখে বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। সেই বিনিয়োগের ফলে যেকোনো দেশের জনগোষ্ঠী অমূল্য জনসম্পদে রূপান্তরিত হতে পারে। জনসম্পদের চেয়ে মূল্যবান সম্পদ আর কিছুই হতে পারে না।
প্রাচীন গ্রিসে আধুনিক শিক্ষানীতি ও পদ্ধতির উদ্ভব হয়েছিল, যা পাশ্চাত্য শিক্ষাকে প্রভাবিত করেছিল। গ্রিক সভ্যতার উদ্ভব ও বিস্তার হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ শতক থেকে ৪৯০ শতক পর্যন্ত সময়কালে। সেই সময়, বিশেষ করে খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ শতকে আমরা পাশ্চাত্য সমাজে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রচলন হতে দেখি। প্রথম দিকে সেই শিক্ষা শুধু পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। নারীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৭ সালে গ্রিক দার্শনিক প্লেটো, যাঁকে বলা হয় আরেক গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের ছাত্র, তিনি ইউরোপে ‘দ্য একাডেমি’ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি ছিল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমতুল্য। তিনিই প্রথম তাঁর এই প্রতিষ্ঠানে সহশিক্ষা চালু করেন। প্লেটো তাঁর রিপাবলিক গ্রন্থে লিখেছেন, একটি সমাজ ও মানবজাতির সার্বিক অগ্রগতির জন্য শিক্ষার বিষয়টি অপরিহার্য। শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য হচ্ছে ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারা। তিনি আরও লিখেছেন, একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ সব সময় সবাইকে ভালো শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধু তাঁর আজীবনের লড়াই-সংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে উপলব্ধি করেছেন, বাঙালি সব সময় শিক্ষার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়েছে এবং ফলে তারা অন্যান্য ক্ষেত্রেও পিছিয়ে থেকেছে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেডিও ও টিভিতে তাঁর দীর্ঘ নির্বাচনী ভাষণে ২৩ বছরের শাসনামলে বাঙালিরা কীভাবে পাকিস্তানের শাসকদের দ্বারা বঞ্চিত হয়েছে, তা তুলে ধরেন। ভাষণে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না’। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৪৭ সালের পর বাংলাদেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পরিসংখ্যান একটা ভয়াবহ সত্য। আমাদের জনসংখ্যার শতকরা ৮০ জন অক্ষরজ্ঞানহীন। প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। শতকরা মাত্র ১৮ জন বালক ও ৬ জন বালিকা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। জাতীয় উৎপাদনের শতকরা কমপক্ষে ৪ ভাগ সম্পদ শিক্ষা খাতে ব্যয় হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। কলেজ ও স্কুল, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করতে হবে। নিরক্ষরতা অবশ্যই দূর করতে হবে। পাঁচ বছর বয়স্ক শিশুদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাদানের জন্য একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। মাধ্যমিক শিক্ষার দ্বার সবার জন্য খোলা রাখতে হবে। দারিদ্র্য যাতে উচ্চশিক্ষার জন্য মেধাবী ছাত্রদের ক্ষেত্রে অভিশাপ না হয়ে দাঁড়ায়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে যাতে বাংলা ও উর্দু ইংরেজির স্থান দখল করতে পারে, সে ব্যাপারে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আঞ্চলিক ভাষার বিকাশ ও উন্নয়নের ব্যাপারে উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে।’
১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত ভাষা আন্দোলনের স্মরণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি সৈয়দ মুর্তাজা আলী। স্বাগত ভাষণ দেন একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক কবীর চৌধুরী। বঙ্গবন্ধু তত দিনে পাকিস্তান গণপরিষদের একজন নির্বাচিত সদস্য। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নয়, মূলত শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ। এই দিনই বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে করাচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। একমাত্র কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্তই উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদ করেন এবং উর্দুর সঙ্গে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান। বাংলা ভাষার পণ্ডিতেরা পরিভাষা তৈরি করবেন, তারপর বাংলা ভাষা চালু হবে, সে হবে না। পরিভাষাবিদেরা যত খুশি গবেষণা করুন আমরা ক্ষমতা হাতে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা চালু করে দেব, সে ভাষা যদি ভুল হয়, তবে ভুলই চালু হবে, পরে তা সংশোধন করা যাবে।’ (প্রথমে মাতৃভাষা, পরভাষা পরে। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান)।
একটি রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধ শেষে স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালেই অনেক কিছুর পরিবর্তনের ওপর হাত দিয়েছিলেন ঠিক, তবে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন শিক্ষার ওপর। শুরুটা করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে। দ্রুত তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন। এটি ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই সময় দেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল আর ছিলেন লক্ষাধিক শিক্ষক। এখন থেকে তাঁদের সব খরচ সরকারের। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা বলতে শ তিনেক কলেজ, চারটি সাধারণ আর দুটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বসাকল্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ হাজার, যার প্রায় ৯০ শতাংশই ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবার কোনো ধরনের একাডেমিক স্বাধীনতা ছিল না। তথাকথিত পাকিস্তান ও ইসলামের তাহজিব তমুদ্দিনের বিরুদ্ধে যায় তেমন কিছু আলোচনা করাও শিক্ষকদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। যেমন মার্ক্সবাদ বা ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব আলোচনা করাকে এককথায় চরম অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বহুদিন ধরে দাবি করে আসছিলেন একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সরকারের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার। বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের সব সময় সম্মান করতেন। তিনি পাকিস্তান আমলের শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার এবং শিক্ষকদের একাডেমিক স্বাধীনতা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য ১৯৭৪ সালে গঠন করলেন ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি শিক্ষা কমিশন; যার আহ্বায়ক ছিলেন ড. মুহম্মদ কুদরত-ই-খুদা। এই কমিশনের নাম হলো কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন।
নতুন দেশের নতুন শিক্ষা কমিশন দ্রুত বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতিকে উপহার দিল একটি বাস্তবমুখী ও বিজ্ঞানসম্মত রিপোর্ট, যেটিকে সবাই কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট হিসেবে চেনে। এই কমিটির সদস্য ছিলেন প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। তিনি একবার আমাকে বলেছিলেন, তাঁরা এই রিপোর্ট বঙ্গবন্ধুর কাছে হস্তান্তর করার সময় কমিশনের আহ্বায়ক বঙ্গবন্ধুকে বলেন, তাঁরা রিপোর্ট তৈরি করেছেন, তিনি যেন এটি একবার পড়ে দেখেন। কোনো কিছু রদবদল করতে হলে তাঁরা তা করে দেবেন। জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার স্যাররা যে রিপোর্ট তৈরি করেছেন, তার ওপর কিছু করার যোগ্যতা আমার নেই।’ রিপোর্টে প্রাইমারি থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা, নারীশিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, বিশেষায়িত শিক্ষা, মেডিকেল, কৃষি, কারিগরি শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা—কোনো কিছুই বাদ যায়নি। রিপোর্টের সুপারিশ অনুযায়ী, চারটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার জন্য পৃথকভাবে চারটি আইন প্রণীত হয়। এই আইন প্রথমে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করা হয়। পরে তা সংসদে আইন হিসেবে গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধুর আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল বিশ্ববিদ্যালয় আর সরকারের মাঝখানে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আইন-১৯৭৩ সংসদে পাস করিয়ে এই কমিশন প্রতিষ্ঠা করা। এটি সম্পূর্ণ একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান; যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন কমিশন অথবা নির্বাচন কমিশন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, একটি মহল সব সময় সুপরিকল্পিতভাবে এটিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি অধিদপ্তর হিসেবে দেখতে চায়। আরও দুঃখের বিষয়, যাঁরা এই কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাঁরা প্রায় কেউই কখনো যে আইন দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত তা অথবা এর বিভিন্ন বিধি কখনো পড়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেন না। মঞ্জুরি কমিশন আইন যখন সংসদে পাস হয়, তখন দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৬টি। বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫২টি আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে এক শর ওপরে। এই আইন যুগোপযোগী করার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত তা করা সম্ভব হয়নি। একবার সচিব কমিটি যা প্রসব করেছিল, তা মূলত ছিল আমলা পুনর্বাসন নথি। কমিশনের দায়িত্বে থাকতে আমি অনেক দেনদরবার করে তা ঠেকিয়েছি। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিয়াত্তর সালের আইন বিভিন্ন সময় লঙ্ঘিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দুঃখ পেতেন।
বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন শিক্ষা বিষয়টা শিক্ষকদের হাতে থাকুক। তাঁর প্রথম সরকারের আমলে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন একজন শিক্ষক, অধ্যাপক ইউসুফ আলী। পর্যায়ক্রমে শিক্ষাসচিব ছিলেন ড. এ আর মল্লিক, ড. আবদুল্লাহ্ আল-মুতী শরফুদ্দিন আর প্রফেসর কবীর চৌধুরী। সেই ধারাবাহিকতার সমাপ্তি অনেক আগে হয়েছে। শিক্ষার সঙ্গে যাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই, দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরাই শিক্ষা নিয়ে মাতব্বরি করেন।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর পর তাঁরই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে আবার অগ্রগতির ছোঁয়া লেগেছে। বঙ্গবন্ধুর সময় দেশে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। বর্তমানে প্রায় ১৭ কোটি। সেই সময় সাক্ষরতার হার ছিল ২০ শতাংশ। বর্তমানে তা ৭৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্জন নারীশিক্ষা। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে তা এখন ৫০ শতাংশের বেশি। দেশ তাঁর হাত ধরে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বর্তমান বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন দেখে খুশি হতেন। বঙ্গবন্ধুসহ পঁচাত্তরের শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
আবদুল মান্নান, শিক্ষক ও গবেষক
বঙ্গবন্ধু, যিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে স্বীকৃত, যাঁর ১৯৭১ সালের সাতই মার্চের ভাষণ ইউনেসকো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত, যিনি নোবেল লরিয়েট অমর্ত্য সেনের ভাষায় শুধু বঙ্গবন্ধু ছিলেন না, বিশ্বেরও বন্ধু ছিলেন, তাঁর জন্মশতবর্ষ পালন করা হয়েছে। তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে নানাজন নানাভাবে আলোচনা করেছেন, লিখেছেন বা মন্তব্য করেছেন অনেকে; কিন্তু বলা বাহুল্য, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কোনো কিছু আলোচনা করতে হলে সবার আগে আলোচনার দাবি রাখে তাঁর শিক্ষা-ভাবনা বা শিক্ষাদর্শন; বিশেষ করে দেশের শিক্ষা নিয়ে যখন নানা দিকে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু এটি ঠিকই বুঝেছিলেন যে প্রাকৃতিক সম্পদবিহীন বাঙালি ও বাংলাদেশকে উন্নত করতে হলে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে তার শিক্ষাব্যবস্থাকে। তিনি এ-ও বুঝেছিলেন, শিক্ষায় অর্থ ব্যয়কে ব্যয় হিসেবে না দেখে বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। সেই বিনিয়োগের ফলে যেকোনো দেশের জনগোষ্ঠী অমূল্য জনসম্পদে রূপান্তরিত হতে পারে। জনসম্পদের চেয়ে মূল্যবান সম্পদ আর কিছুই হতে পারে না।
প্রাচীন গ্রিসে আধুনিক শিক্ষানীতি ও পদ্ধতির উদ্ভব হয়েছিল, যা পাশ্চাত্য শিক্ষাকে প্রভাবিত করেছিল। গ্রিক সভ্যতার উদ্ভব ও বিস্তার হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ শতক থেকে ৪৯০ শতক পর্যন্ত সময়কালে। সেই সময়, বিশেষ করে খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ শতকে আমরা পাশ্চাত্য সমাজে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রচলন হতে দেখি। প্রথম দিকে সেই শিক্ষা শুধু পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। নারীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৭ সালে গ্রিক দার্শনিক প্লেটো, যাঁকে বলা হয় আরেক গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের ছাত্র, তিনি ইউরোপে ‘দ্য একাডেমি’ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি ছিল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমতুল্য। তিনিই প্রথম তাঁর এই প্রতিষ্ঠানে সহশিক্ষা চালু করেন। প্লেটো তাঁর রিপাবলিক গ্রন্থে লিখেছেন, একটি সমাজ ও মানবজাতির সার্বিক অগ্রগতির জন্য শিক্ষার বিষয়টি অপরিহার্য। শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য হচ্ছে ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারা। তিনি আরও লিখেছেন, একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ সব সময় সবাইকে ভালো শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধু তাঁর আজীবনের লড়াই-সংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে উপলব্ধি করেছেন, বাঙালি সব সময় শিক্ষার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়েছে এবং ফলে তারা অন্যান্য ক্ষেত্রেও পিছিয়ে থেকেছে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেডিও ও টিভিতে তাঁর দীর্ঘ নির্বাচনী ভাষণে ২৩ বছরের শাসনামলে বাঙালিরা কীভাবে পাকিস্তানের শাসকদের দ্বারা বঞ্চিত হয়েছে, তা তুলে ধরেন। ভাষণে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না’। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৪৭ সালের পর বাংলাদেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পরিসংখ্যান একটা ভয়াবহ সত্য। আমাদের জনসংখ্যার শতকরা ৮০ জন অক্ষরজ্ঞানহীন। প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। শতকরা মাত্র ১৮ জন বালক ও ৬ জন বালিকা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। জাতীয় উৎপাদনের শতকরা কমপক্ষে ৪ ভাগ সম্পদ শিক্ষা খাতে ব্যয় হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। কলেজ ও স্কুল, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করতে হবে। নিরক্ষরতা অবশ্যই দূর করতে হবে। পাঁচ বছর বয়স্ক শিশুদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাদানের জন্য একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। মাধ্যমিক শিক্ষার দ্বার সবার জন্য খোলা রাখতে হবে। দারিদ্র্য যাতে উচ্চশিক্ষার জন্য মেধাবী ছাত্রদের ক্ষেত্রে অভিশাপ না হয়ে দাঁড়ায়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে যাতে বাংলা ও উর্দু ইংরেজির স্থান দখল করতে পারে, সে ব্যাপারে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আঞ্চলিক ভাষার বিকাশ ও উন্নয়নের ব্যাপারে উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে।’
১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত ভাষা আন্দোলনের স্মরণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি সৈয়দ মুর্তাজা আলী। স্বাগত ভাষণ দেন একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক কবীর চৌধুরী। বঙ্গবন্ধু তত দিনে পাকিস্তান গণপরিষদের একজন নির্বাচিত সদস্য। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নয়, মূলত শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ। এই দিনই বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে করাচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। একমাত্র কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্তই উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদ করেন এবং উর্দুর সঙ্গে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান। বাংলা ভাষার পণ্ডিতেরা পরিভাষা তৈরি করবেন, তারপর বাংলা ভাষা চালু হবে, সে হবে না। পরিভাষাবিদেরা যত খুশি গবেষণা করুন আমরা ক্ষমতা হাতে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা চালু করে দেব, সে ভাষা যদি ভুল হয়, তবে ভুলই চালু হবে, পরে তা সংশোধন করা যাবে।’ (প্রথমে মাতৃভাষা, পরভাষা পরে। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান)।
একটি রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধ শেষে স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালেই অনেক কিছুর পরিবর্তনের ওপর হাত দিয়েছিলেন ঠিক, তবে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন শিক্ষার ওপর। শুরুটা করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে। দ্রুত তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন। এটি ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই সময় দেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল আর ছিলেন লক্ষাধিক শিক্ষক। এখন থেকে তাঁদের সব খরচ সরকারের। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা বলতে শ তিনেক কলেজ, চারটি সাধারণ আর দুটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বসাকল্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ হাজার, যার প্রায় ৯০ শতাংশই ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবার কোনো ধরনের একাডেমিক স্বাধীনতা ছিল না। তথাকথিত পাকিস্তান ও ইসলামের তাহজিব তমুদ্দিনের বিরুদ্ধে যায় তেমন কিছু আলোচনা করাও শিক্ষকদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। যেমন মার্ক্সবাদ বা ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব আলোচনা করাকে এককথায় চরম অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বহুদিন ধরে দাবি করে আসছিলেন একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সরকারের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার। বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের সব সময় সম্মান করতেন। তিনি পাকিস্তান আমলের শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার এবং শিক্ষকদের একাডেমিক স্বাধীনতা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য ১৯৭৪ সালে গঠন করলেন ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি শিক্ষা কমিশন; যার আহ্বায়ক ছিলেন ড. মুহম্মদ কুদরত-ই-খুদা। এই কমিশনের নাম হলো কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন।
নতুন দেশের নতুন শিক্ষা কমিশন দ্রুত বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতিকে উপহার দিল একটি বাস্তবমুখী ও বিজ্ঞানসম্মত রিপোর্ট, যেটিকে সবাই কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট হিসেবে চেনে। এই কমিটির সদস্য ছিলেন প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। তিনি একবার আমাকে বলেছিলেন, তাঁরা এই রিপোর্ট বঙ্গবন্ধুর কাছে হস্তান্তর করার সময় কমিশনের আহ্বায়ক বঙ্গবন্ধুকে বলেন, তাঁরা রিপোর্ট তৈরি করেছেন, তিনি যেন এটি একবার পড়ে দেখেন। কোনো কিছু রদবদল করতে হলে তাঁরা তা করে দেবেন। জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার স্যাররা যে রিপোর্ট তৈরি করেছেন, তার ওপর কিছু করার যোগ্যতা আমার নেই।’ রিপোর্টে প্রাইমারি থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা, নারীশিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, বিশেষায়িত শিক্ষা, মেডিকেল, কৃষি, কারিগরি শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা—কোনো কিছুই বাদ যায়নি। রিপোর্টের সুপারিশ অনুযায়ী, চারটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার জন্য পৃথকভাবে চারটি আইন প্রণীত হয়। এই আইন প্রথমে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করা হয়। পরে তা সংসদে আইন হিসেবে গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধুর আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল বিশ্ববিদ্যালয় আর সরকারের মাঝখানে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আইন-১৯৭৩ সংসদে পাস করিয়ে এই কমিশন প্রতিষ্ঠা করা। এটি সম্পূর্ণ একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান; যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন কমিশন অথবা নির্বাচন কমিশন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, একটি মহল সব সময় সুপরিকল্পিতভাবে এটিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি অধিদপ্তর হিসেবে দেখতে চায়। আরও দুঃখের বিষয়, যাঁরা এই কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাঁরা প্রায় কেউই কখনো যে আইন দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত তা অথবা এর বিভিন্ন বিধি কখনো পড়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেন না। মঞ্জুরি কমিশন আইন যখন সংসদে পাস হয়, তখন দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৬টি। বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫২টি আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে এক শর ওপরে। এই আইন যুগোপযোগী করার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত তা করা সম্ভব হয়নি। একবার সচিব কমিটি যা প্রসব করেছিল, তা মূলত ছিল আমলা পুনর্বাসন নথি। কমিশনের দায়িত্বে থাকতে আমি অনেক দেনদরবার করে তা ঠেকিয়েছি। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিয়াত্তর সালের আইন বিভিন্ন সময় লঙ্ঘিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দুঃখ পেতেন।
বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন শিক্ষা বিষয়টা শিক্ষকদের হাতে থাকুক। তাঁর প্রথম সরকারের আমলে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন একজন শিক্ষক, অধ্যাপক ইউসুফ আলী। পর্যায়ক্রমে শিক্ষাসচিব ছিলেন ড. এ আর মল্লিক, ড. আবদুল্লাহ্ আল-মুতী শরফুদ্দিন আর প্রফেসর কবীর চৌধুরী। সেই ধারাবাহিকতার সমাপ্তি অনেক আগে হয়েছে। শিক্ষার সঙ্গে যাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই, দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরাই শিক্ষা নিয়ে মাতব্বরি করেন।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর পর তাঁরই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে আবার অগ্রগতির ছোঁয়া লেগেছে। বঙ্গবন্ধুর সময় দেশে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। বর্তমানে প্রায় ১৭ কোটি। সেই সময় সাক্ষরতার হার ছিল ২০ শতাংশ। বর্তমানে তা ৭৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্জন নারীশিক্ষা। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে তা এখন ৫০ শতাংশের বেশি। দেশ তাঁর হাত ধরে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বর্তমান বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন দেখে খুশি হতেন। বঙ্গবন্ধুসহ পঁচাত্তরের শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
আবদুল মান্নান, শিক্ষক ও গবেষক
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪