শিশু রোগীদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে

দেশের উত্তরাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছেন অভিভাবকেরা।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত সাত দিনে কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও জ্বরের কারণে চিকিৎসা নিতে আসা শিশু রোগী কয়েক গুণ বেড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে যেতে হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আট বছরের কম বয়সী ৭৭ শিশু ভর্তি হয়েছে। সেই সঙ্গে বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ শিশু চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত আট শিশু ভর্তি হয়। এখানে শিশু ছাড়াও নানা বয়সী লোকজন ঠান্ডাজনিত রোগের শিকার হয়ে ভর্তি ও চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শীত যত বাড়ছে, দিন দিন রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের (ছয় মাস বয়স পর্যন্ত) নিয়মিত মায়ের বুকের দুধ পান করাতে হবে। পাশাপাশি সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার রায় বলেন, ‘ঠান্ডাজনিত কারণে শিশুসহ বয়স্কদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি ও জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। আমরা এসব রোগীর নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে এলাকা ঢাকা থাকছে। দুপুরে সূর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপ খুবই কম। বাসিন্দারা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত সাত দিনে ৩৪ শিশুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার উপসর্গ রয়েছে।

রমনা মডেল ইউনিয়নের আমিনা বেগম জানান, তাঁর মেয়ে মাইশা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। তিনি শিশুটিকে নিয়ে দুই দিন আগে হাসপাতালে এসেছেন। এখন সে সুস্থ আছে।

নয়ারহাট ইউনিয়নের খাদিজা বেগম বলেন, তাঁর দুই বছরের ছেলে আরিফের ঠান্ডার কারণে জ্বর ও বুকে কফ জমে গেছে। তাই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এসেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, শীতের কারণে বর্তমানে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। ঠান্ডা বৃদ্ধি পেলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এদিকে উপজেলার জনজীবন হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ও চরাঞ্চলে থাকা লোকজন অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, গতকাল জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনে এটি কমে ১০ ডিগ্রির নিচে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।