Ajker Patrika

কবিতা নিয়ে সিনেমা ‘যশোর রোড’

কবিতা নিয়ে সিনেমা ‘যশোর রোড’

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারে এক কোটির বেশি মানুষ শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন ভারতে। শরণার্থী শিবিরে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে দিন কাটান তাঁরা। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন মুল্লুক থেকে কলকাতায় এসেছিলেন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ। দেশে ফিরে গিয়ে লিখেছিলেন ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ নামের কবিতা। তাতে ফুটে উঠেছিল যশোর রোডের শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধচিত্র। সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল কবিতাটি। বিখ্যাত মার্কিন গায়ক বব ডিলান কবিতাটি নিয়ে গানও তৈরি করেছিলেন। গান করেছিলেন কলকাতার মৌসুমী ভৌমিকও। এবার ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ কবিতা অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে সিনেমা। নাম ‘যশোর রোড’। বানাবেন এফ এম শাহীন। সিনেমাটি তৈরি হবে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায়। 
সিনেমাটি নিয়ে এফ এম শাহীন বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বড় একটি ঘটনা এক কোটি মানুষের ভীনদেশে আশ্রয় গ্রহণ। সেখানে তাঁরা অসহনীয় কষ্টের মধ্যে সময় পার করেছেন। এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তুলে এনেছিলেন মার্কিন কবি গিন্সবার্গ। সবচেয়ে বেশি শরণার্থী অবস্থান নিয়েছিল কলকাতায়। যশোর রোডটি ছিল সেখানে যাওয়ার পথ। পাকিস্তানিদের ভয়ে অনেকেই যশোর রোড হয়ে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল। সেই যাত্রাটাই তুলে ধরা হবে সিনেমায়। এই যাত্রাপথে জন্ম, মৃত্যু, বাধা, যুদ্ধসহ সে সময়ের সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করা হবে।’

মিঠুন চক্রবর্তী, চঞ্চল চৌধুরী, ঋত্বিক চক্রবর্তীতিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ মানে যে শুধুই সামরিক যুদ্ধ এমনটা যেন আমাদের নতুন প্রজন্ম না জানে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অসংখ্য ঘটনা। নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে যাওয়া, রাস্তায় জন্ম বা মৃত্যুর মতো ঘটনাসহ কত দুর্ভোগ যে মানুষকে সহ্য করতে হয়েছে! সেই বিষয়গুলো নতুন প্রজন্মকে জানাতে চাই।’ 
দুই বাংলার তিন হাজারের বেশি শিল্পী-কলাকুশলী নিয়ে তৈরি হবে সিনেমাটি। তবে এখন পর্যন্ত চুক্তিস্বাক্ষর প্রক্রিয়া শুরু হয়নি বলে জানান নির্মাতা শাহীন। শিল্পী নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সিনেমাটি বড় ক্যানভাসে নির্মাণের জন্য তিন বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। গল্পের প্লট অনুযায়ী দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীদের নিয়েই কাজটি করতে চাই। আমাদের ভাবনায় আছেন চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, ওপার বাংলা থেকে মিঠুন চক্রবর্তী, ঋত্বিক চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্যসহ আরও অনেকে। অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা চলছে। তবে, কারও সঙ্গে এখনো চুক্তি হয়নি।’

সিনেমার গল্প ভাবনা, চিত্রনাট্যকার ও বাংলাদেশ অংশের প্রযোজক হিসেবেও থাকছেন এফ এম শাহীন। ওপার বাংলার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম জানাননি তিনি।

চলতি মাসেই ‘যশোর রোড সিনেমা’র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। সেখানেই জানানো হবে চূড়ান্ত অভিনয়শিল্পীদের নাম। এরপর ডিসেম্বর নাগাদ সিনেমার শুটিং শুরু করতে চান নির্মাতা। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই হবে দৃশ্যধারণের কাজ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত