রোকেয়া রহমান

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ।
খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। দুই সপ্তাহ আগে, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের আনগোলিম শহরে একইভাবে পুলিশের হাতে ১৯ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হন। দৃশ্যটি কেউ ক্যামেরাবন্দী না করায় ঘটনাটি গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়নি।
প্যারিসের নানতেয়ার এলাকায় নাহেলকে গুলি করার দৃশ্যটি একজন পথচারী ভিডিও করেছিলেন। ওই ভিডিও ফুটেজটি পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনকে উল্টে দেয়। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাহেলের আচরণ দুই পুলিশ কর্মকর্তার জন্য ‘সরাসরি হুমকিমূলক’ ছিল। পুলিশের ওই দাবি একেবারে মিথ্যা। নাহেলকে গুলি করা হয়েছিল। কারণ পুলিশ তাকে থামতে বলেছিল, কিন্তু সে তা মানতে অস্বীকার করে।
ফরাসি আইনে, কেউ থামতে অস্বীকৃতি জানালে তা পুলিশকে হত্যা করার অধিকার দেয় না। এ কারণেই, যে পুলিশ কর্মকর্তা নাহেলকে গুলি করেছেন, তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে তিনি শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হবেন। কারণ ফরাসি বিচারব্যবস্থা খুব কমই পুলিশ কর্মকর্তাদের নিন্দামন্দ করে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ তড়িঘড়ি করে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘অমার্জনীয়’ বলে মন্তব্য করেন। ফ্রান্সে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নিন্দা করা সবচেয়ে অস্বাভাবিক। দেশটিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কেউ পুলিশের সমালোচনা করার সাহস পায় না। আসলে এটা ছিল জনগণকে খুশি করার একটি প্রয়াস মাত্র। মাখোঁ আশঙ্কা করেছিলেন যে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ফ্রান্সজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে এবং প্রকৃতপক্ষে সেটাই হয়েছে।
ফ্রান্সে কয়েক দশক ধরে বর্ণবাদী পুলিশি বর্বরতা চলছে। বর্তমান দাঙ্গা ২০০৫ সালের ঘটনাগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। সে বছর প্যারিসের শহরতলিতে আরব বংশোদ্ভূত দুই ফরাসি কিশোর জায়েদ বেন্না ও বোনা ট্রাউরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে একটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে লুকানোর চেষ্টা করলে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। অ্যাদামা ট্রাউরের কেসটির কথাও ভাবুন: ২৪ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক পুলিশ হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শ্বাসরোধে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বহু বছর পেরিয়ে গেলেও জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটেছে, যা লিখলে এ নিবন্ধ দীর্ঘ হবে।
পুলিশি সহিংসতা কেন সম্প্রতি খবরের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে? কয়েক বছর আগে পর্যন্ত, শুধু শহরতলিতে বসবাসকারী লোকেরাই পুলিশের সহিংসতার শিকার হতো। গণমাধ্যমে এসব ঘটনা খুব একটা জায়গা পেত না। মূলধারার রাজনীতিবিদেরাও পুলিশের কোনো দোষের কথা স্বীকার করতেন না; বরং তাঁরা এটা বলতেন, পুলিশ এই প্রজাতন্ত্রের একটি বাহিনী এবং তারা সাধারণ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ তাই কোনো অন্যায় করতে পারে না।
গত ১০ বছরে বা তারও বেশি সময় ধরে ফ্রান্সের ক্ষমতাপ্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী ক্রমবর্ধমানভাবে শহরের কেন্দ্রে রাজনৈতিক বিক্ষোভ দমনে কঠোর থেকে কঠোরতর কৌশল ব্যবহার করেছে। ২০১৮ সালে ইয়েলো ভেস্টস বা হলুদ পোশাক আন্দোলন এবং ২০২২-২৩ সালে পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের নৃশংস ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। শত শত বিক্ষোভকারী পুলিশের বর্বরতা ও নির্বিচার গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ পুলিশের ‘ফ্ল্যাশ-বল’ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে গেছেন এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যবহৃত গ্রেনেড অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত। মানুষ এখন বুঝতে পারছে, যে কেউ পুলিশের এই বর্বরতার শিকার হতে পারে। বামপন্থীদের বড় অংশ পুলিশের প্রতি আরও সরব হয়ে উঠেছে এবং ‘পুলিশের বর্বরতা’ কথাটি এখন গণমাধ্যমেও ব্যবহৃত হয়।
নাহেলকে নির্মমভাবে গুলি করা হয়েছিল। কারণ সে আলজেরীয় বংশোদ্ভূত একজন ফরাসি কিশোর ছিল। তার মা ফরাসি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর ছেলেকে গুলি করেছেন, তিনি ‘একটি আরব মুখ, একটি ছোট বাচ্চা দেখেছিলেন এবং তিনি তার জীবন নিতে চেয়েছিলেন।’
প্যারিসের শহরতলিতে অনেক জাতিগত সংখ্যালঘু যুবক প্রতিদিন পুলিশের হাতে উত্ত্যক্ত, হয়রানি এবং মারধরের শিকার হন। নাহেলের মায়ের এই বক্তব্য অবশ্যই গুরুত্ব বহন করে। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি আমেরিকান জনসাধারণের কাছে পরিচিত হতে পারে, তবে বেশির ভাগ ইউরোপীয় গণতন্ত্রে এটি ব্যতিক্রমী এবং মর্মান্তিক হিসেবে দেখা হয়।
ফরাসি পুলিশ বাহিনীতে প্রকৃতপক্ষে বর্ণবাদ বিষয়টি প্রবলভাবে বিদ্যমান; বিশেষ করে আপনি যদি আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ হন, তাহলে আপনি অবশ্যই প্রতিদিন পুলিশের বর্বরতার শিকার হবেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জাতিগত প্রোফাইলিংয়ের ব্যাপক চর্চায় জড়িত, যা পদ্ধতিগত বৈষম্যের ফল। একটি বিরল কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ রায়ে ২০২১ সালে প্যারিস কোর্ট অব আপিল দেখেছে যে ২০১৭ সালে একটি ট্রেন স্টেশনে মরক্কোন, মালিয়ান ও কমোরিয়ান বংশোদ্ভূত তিনজন হাইস্কুল ছাত্রের পুলিশ আইডি পরীক্ষার পেছনে বৈষম্য ছিল।
পুলিশের এ ধরনের আচরণের যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কোনো সরকারই সমস্যাটি সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের এই আইডি পরীক্ষার লক্ষ্য জাতিগত সংখ্যালঘু তরুণদের ‘অপমানিত’ করা। নাহেলের হত্যার পর, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আবারও ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষকে ‘আইন প্রয়োগে বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের গভীর সমস্যাগুলোকে গুরুত্বসহকারে সমাধান করার জন্য’ আহ্বান জানিয়েছে।
বরাবরের মতো, ফরাসি সরকার অস্বীকার করেছিল যে ‘পুলিশ বাহিনীতে বর্ণবাদ বা পদ্ধতিগত বৈষম্যের যে কোনো অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ এটি অত্যন্ত বিদ্রূপাত্মক: ফ্রান্সের অভিজাতেরা বিশ্বাস করেন, ফরাসি প্রজাতন্ত্রের আদর্শের কেন্দ্রস্থলে ‘বর্ণ-অন্ধ’ নীতি প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিষেধক। এটি ফরাসি বিপ্লবের উত্তরাধিকারগুলোর মধ্যে একটি, যা শ্রেণিপ্রবণ প্রাচীন শাসনকে ভেঙে সবার সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করে।
তাই বলে রাষ্ট্র কারও ঠিকুজি-কোষ্ঠী বিচার করবে না এই বলে যে, ভিন্ন জনগোষ্ঠী হওয়ার কারণে সে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এই কারণেই তো মূলধারার রাজনীতিতে কেউই সেই ফরাসি বিপ্লবের সাম্যের এই বিমূর্ত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে রাজি নয়। অনেকেই জানেন যে এটি একটি অলীক কল্পনা, কিন্তু সবাই চুপ করে থাকে। কারণ ফ্রান্সে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং এর ‘মূল্যবোধ’ পবিত্র।
২০১৭ সালের একটি বিল পাসের পর থেকে ফ্রান্সে পুলিশি বর্বরতা আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের আইন করে গুলি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, যদি তাঁরা দেখেন চালক বা গাড়ির যাত্রীরা ‘পুলিশের জীবন বা শারীরিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’। পুলিশ ইউনিয়ন তৎকালীন বাম ঘরানার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল এবং তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। ফ্রান্সের একটি বামপন্থী সরকারও পুলিশ অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের আইন পরিবর্তন করেছে এবং পুলিশের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য পেনাল কোডটি আবার লিখেছে।
ফরাসি বেসরকারি সংস্থা হিউম্যান রাইটস লিগ বলেছে, আইনটিতে অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে কোনো বাধা না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ এটি তাদের গুলি এবং হত্যার জন্য আইনি সুরক্ষা দেয়। এটি সত্য যে আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে পুলিশের গুলিতে হতাহত মানুষের সংখ্যা (তাদের বেশির ভাগই আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ) বেড়েই চলেছে: ২০১৭ সালে ২৭, ২০২০ সালে ৪০ ও ২০২১ সালে ৫২ জন নিহত হয়েছে।
নাহেল হত্যাকাণ্ডে গোটা ফ্রান্স এখন বিক্ষোভে উত্তাল। কিন্তু বর্ণবাদী আচরণের শিকার অনেকে সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁরা ভয় পান যে এসব বিক্ষোভ তাঁদের বিরোধিতাকারীদের সঠিক প্রমাণ করবে এবং জনস্বাধীনতা খর্ব করার আরও বিল পাসের মাধ্যমে তাঁদের ওপর নিপীড়ন আরও জোরদার করবে। দেখা যাচ্ছে খোদ রাষ্ট্রই পুলিশকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশের হাত থেকে ফ্রান্সের এসব জাতিগত সংখ্যালঘু শিশুদের তাহলে রক্ষা করবে কে?
ফিলিপ মারলিয়ার, অধ্যাপক, ফরাসি ও ইউরোপীয় রাজনীতি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
(কাউন্টারপাঞ্চে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ।
খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। দুই সপ্তাহ আগে, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের আনগোলিম শহরে একইভাবে পুলিশের হাতে ১৯ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হন। দৃশ্যটি কেউ ক্যামেরাবন্দী না করায় ঘটনাটি গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়নি।
প্যারিসের নানতেয়ার এলাকায় নাহেলকে গুলি করার দৃশ্যটি একজন পথচারী ভিডিও করেছিলেন। ওই ভিডিও ফুটেজটি পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনকে উল্টে দেয়। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাহেলের আচরণ দুই পুলিশ কর্মকর্তার জন্য ‘সরাসরি হুমকিমূলক’ ছিল। পুলিশের ওই দাবি একেবারে মিথ্যা। নাহেলকে গুলি করা হয়েছিল। কারণ পুলিশ তাকে থামতে বলেছিল, কিন্তু সে তা মানতে অস্বীকার করে।
ফরাসি আইনে, কেউ থামতে অস্বীকৃতি জানালে তা পুলিশকে হত্যা করার অধিকার দেয় না। এ কারণেই, যে পুলিশ কর্মকর্তা নাহেলকে গুলি করেছেন, তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে তিনি শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হবেন। কারণ ফরাসি বিচারব্যবস্থা খুব কমই পুলিশ কর্মকর্তাদের নিন্দামন্দ করে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ তড়িঘড়ি করে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘অমার্জনীয়’ বলে মন্তব্য করেন। ফ্রান্সে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নিন্দা করা সবচেয়ে অস্বাভাবিক। দেশটিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কেউ পুলিশের সমালোচনা করার সাহস পায় না। আসলে এটা ছিল জনগণকে খুশি করার একটি প্রয়াস মাত্র। মাখোঁ আশঙ্কা করেছিলেন যে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ফ্রান্সজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে এবং প্রকৃতপক্ষে সেটাই হয়েছে।
ফ্রান্সে কয়েক দশক ধরে বর্ণবাদী পুলিশি বর্বরতা চলছে। বর্তমান দাঙ্গা ২০০৫ সালের ঘটনাগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। সে বছর প্যারিসের শহরতলিতে আরব বংশোদ্ভূত দুই ফরাসি কিশোর জায়েদ বেন্না ও বোনা ট্রাউরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে একটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে লুকানোর চেষ্টা করলে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। অ্যাদামা ট্রাউরের কেসটির কথাও ভাবুন: ২৪ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক পুলিশ হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শ্বাসরোধে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বহু বছর পেরিয়ে গেলেও জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটেছে, যা লিখলে এ নিবন্ধ দীর্ঘ হবে।
পুলিশি সহিংসতা কেন সম্প্রতি খবরের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে? কয়েক বছর আগে পর্যন্ত, শুধু শহরতলিতে বসবাসকারী লোকেরাই পুলিশের সহিংসতার শিকার হতো। গণমাধ্যমে এসব ঘটনা খুব একটা জায়গা পেত না। মূলধারার রাজনীতিবিদেরাও পুলিশের কোনো দোষের কথা স্বীকার করতেন না; বরং তাঁরা এটা বলতেন, পুলিশ এই প্রজাতন্ত্রের একটি বাহিনী এবং তারা সাধারণ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ তাই কোনো অন্যায় করতে পারে না।
গত ১০ বছরে বা তারও বেশি সময় ধরে ফ্রান্সের ক্ষমতাপ্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী ক্রমবর্ধমানভাবে শহরের কেন্দ্রে রাজনৈতিক বিক্ষোভ দমনে কঠোর থেকে কঠোরতর কৌশল ব্যবহার করেছে। ২০১৮ সালে ইয়েলো ভেস্টস বা হলুদ পোশাক আন্দোলন এবং ২০২২-২৩ সালে পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের নৃশংস ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। শত শত বিক্ষোভকারী পুলিশের বর্বরতা ও নির্বিচার গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ পুলিশের ‘ফ্ল্যাশ-বল’ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে গেছেন এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যবহৃত গ্রেনেড অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত। মানুষ এখন বুঝতে পারছে, যে কেউ পুলিশের এই বর্বরতার শিকার হতে পারে। বামপন্থীদের বড় অংশ পুলিশের প্রতি আরও সরব হয়ে উঠেছে এবং ‘পুলিশের বর্বরতা’ কথাটি এখন গণমাধ্যমেও ব্যবহৃত হয়।
নাহেলকে নির্মমভাবে গুলি করা হয়েছিল। কারণ সে আলজেরীয় বংশোদ্ভূত একজন ফরাসি কিশোর ছিল। তার মা ফরাসি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর ছেলেকে গুলি করেছেন, তিনি ‘একটি আরব মুখ, একটি ছোট বাচ্চা দেখেছিলেন এবং তিনি তার জীবন নিতে চেয়েছিলেন।’
প্যারিসের শহরতলিতে অনেক জাতিগত সংখ্যালঘু যুবক প্রতিদিন পুলিশের হাতে উত্ত্যক্ত, হয়রানি এবং মারধরের শিকার হন। নাহেলের মায়ের এই বক্তব্য অবশ্যই গুরুত্ব বহন করে। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি আমেরিকান জনসাধারণের কাছে পরিচিত হতে পারে, তবে বেশির ভাগ ইউরোপীয় গণতন্ত্রে এটি ব্যতিক্রমী এবং মর্মান্তিক হিসেবে দেখা হয়।
ফরাসি পুলিশ বাহিনীতে প্রকৃতপক্ষে বর্ণবাদ বিষয়টি প্রবলভাবে বিদ্যমান; বিশেষ করে আপনি যদি আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ হন, তাহলে আপনি অবশ্যই প্রতিদিন পুলিশের বর্বরতার শিকার হবেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জাতিগত প্রোফাইলিংয়ের ব্যাপক চর্চায় জড়িত, যা পদ্ধতিগত বৈষম্যের ফল। একটি বিরল কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ রায়ে ২০২১ সালে প্যারিস কোর্ট অব আপিল দেখেছে যে ২০১৭ সালে একটি ট্রেন স্টেশনে মরক্কোন, মালিয়ান ও কমোরিয়ান বংশোদ্ভূত তিনজন হাইস্কুল ছাত্রের পুলিশ আইডি পরীক্ষার পেছনে বৈষম্য ছিল।
পুলিশের এ ধরনের আচরণের যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কোনো সরকারই সমস্যাটি সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের এই আইডি পরীক্ষার লক্ষ্য জাতিগত সংখ্যালঘু তরুণদের ‘অপমানিত’ করা। নাহেলের হত্যার পর, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আবারও ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষকে ‘আইন প্রয়োগে বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের গভীর সমস্যাগুলোকে গুরুত্বসহকারে সমাধান করার জন্য’ আহ্বান জানিয়েছে।
বরাবরের মতো, ফরাসি সরকার অস্বীকার করেছিল যে ‘পুলিশ বাহিনীতে বর্ণবাদ বা পদ্ধতিগত বৈষম্যের যে কোনো অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ এটি অত্যন্ত বিদ্রূপাত্মক: ফ্রান্সের অভিজাতেরা বিশ্বাস করেন, ফরাসি প্রজাতন্ত্রের আদর্শের কেন্দ্রস্থলে ‘বর্ণ-অন্ধ’ নীতি প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিষেধক। এটি ফরাসি বিপ্লবের উত্তরাধিকারগুলোর মধ্যে একটি, যা শ্রেণিপ্রবণ প্রাচীন শাসনকে ভেঙে সবার সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করে।
তাই বলে রাষ্ট্র কারও ঠিকুজি-কোষ্ঠী বিচার করবে না এই বলে যে, ভিন্ন জনগোষ্ঠী হওয়ার কারণে সে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এই কারণেই তো মূলধারার রাজনীতিতে কেউই সেই ফরাসি বিপ্লবের সাম্যের এই বিমূর্ত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে রাজি নয়। অনেকেই জানেন যে এটি একটি অলীক কল্পনা, কিন্তু সবাই চুপ করে থাকে। কারণ ফ্রান্সে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং এর ‘মূল্যবোধ’ পবিত্র।
২০১৭ সালের একটি বিল পাসের পর থেকে ফ্রান্সে পুলিশি বর্বরতা আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের আইন করে গুলি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, যদি তাঁরা দেখেন চালক বা গাড়ির যাত্রীরা ‘পুলিশের জীবন বা শারীরিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’। পুলিশ ইউনিয়ন তৎকালীন বাম ঘরানার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল এবং তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। ফ্রান্সের একটি বামপন্থী সরকারও পুলিশ অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের আইন পরিবর্তন করেছে এবং পুলিশের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য পেনাল কোডটি আবার লিখেছে।
ফরাসি বেসরকারি সংস্থা হিউম্যান রাইটস লিগ বলেছে, আইনটিতে অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে কোনো বাধা না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ এটি তাদের গুলি এবং হত্যার জন্য আইনি সুরক্ষা দেয়। এটি সত্য যে আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে পুলিশের গুলিতে হতাহত মানুষের সংখ্যা (তাদের বেশির ভাগই আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ) বেড়েই চলেছে: ২০১৭ সালে ২৭, ২০২০ সালে ৪০ ও ২০২১ সালে ৫২ জন নিহত হয়েছে।
নাহেল হত্যাকাণ্ডে গোটা ফ্রান্স এখন বিক্ষোভে উত্তাল। কিন্তু বর্ণবাদী আচরণের শিকার অনেকে সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁরা ভয় পান যে এসব বিক্ষোভ তাঁদের বিরোধিতাকারীদের সঠিক প্রমাণ করবে এবং জনস্বাধীনতা খর্ব করার আরও বিল পাসের মাধ্যমে তাঁদের ওপর নিপীড়ন আরও জোরদার করবে। দেখা যাচ্ছে খোদ রাষ্ট্রই পুলিশকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশের হাত থেকে ফ্রান্সের এসব জাতিগত সংখ্যালঘু শিশুদের তাহলে রক্ষা করবে কে?
ফিলিপ মারলিয়ার, অধ্যাপক, ফরাসি ও ইউরোপীয় রাজনীতি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
(কাউন্টারপাঞ্চে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
রোকেয়া রহমান

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ।
খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। দুই সপ্তাহ আগে, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের আনগোলিম শহরে একইভাবে পুলিশের হাতে ১৯ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হন। দৃশ্যটি কেউ ক্যামেরাবন্দী না করায় ঘটনাটি গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়নি।
প্যারিসের নানতেয়ার এলাকায় নাহেলকে গুলি করার দৃশ্যটি একজন পথচারী ভিডিও করেছিলেন। ওই ভিডিও ফুটেজটি পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনকে উল্টে দেয়। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাহেলের আচরণ দুই পুলিশ কর্মকর্তার জন্য ‘সরাসরি হুমকিমূলক’ ছিল। পুলিশের ওই দাবি একেবারে মিথ্যা। নাহেলকে গুলি করা হয়েছিল। কারণ পুলিশ তাকে থামতে বলেছিল, কিন্তু সে তা মানতে অস্বীকার করে।
ফরাসি আইনে, কেউ থামতে অস্বীকৃতি জানালে তা পুলিশকে হত্যা করার অধিকার দেয় না। এ কারণেই, যে পুলিশ কর্মকর্তা নাহেলকে গুলি করেছেন, তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে তিনি শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হবেন। কারণ ফরাসি বিচারব্যবস্থা খুব কমই পুলিশ কর্মকর্তাদের নিন্দামন্দ করে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ তড়িঘড়ি করে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘অমার্জনীয়’ বলে মন্তব্য করেন। ফ্রান্সে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নিন্দা করা সবচেয়ে অস্বাভাবিক। দেশটিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কেউ পুলিশের সমালোচনা করার সাহস পায় না। আসলে এটা ছিল জনগণকে খুশি করার একটি প্রয়াস মাত্র। মাখোঁ আশঙ্কা করেছিলেন যে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ফ্রান্সজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে এবং প্রকৃতপক্ষে সেটাই হয়েছে।
ফ্রান্সে কয়েক দশক ধরে বর্ণবাদী পুলিশি বর্বরতা চলছে। বর্তমান দাঙ্গা ২০০৫ সালের ঘটনাগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। সে বছর প্যারিসের শহরতলিতে আরব বংশোদ্ভূত দুই ফরাসি কিশোর জায়েদ বেন্না ও বোনা ট্রাউরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে একটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে লুকানোর চেষ্টা করলে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। অ্যাদামা ট্রাউরের কেসটির কথাও ভাবুন: ২৪ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক পুলিশ হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শ্বাসরোধে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বহু বছর পেরিয়ে গেলেও জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটেছে, যা লিখলে এ নিবন্ধ দীর্ঘ হবে।
পুলিশি সহিংসতা কেন সম্প্রতি খবরের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে? কয়েক বছর আগে পর্যন্ত, শুধু শহরতলিতে বসবাসকারী লোকেরাই পুলিশের সহিংসতার শিকার হতো। গণমাধ্যমে এসব ঘটনা খুব একটা জায়গা পেত না। মূলধারার রাজনীতিবিদেরাও পুলিশের কোনো দোষের কথা স্বীকার করতেন না; বরং তাঁরা এটা বলতেন, পুলিশ এই প্রজাতন্ত্রের একটি বাহিনী এবং তারা সাধারণ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ তাই কোনো অন্যায় করতে পারে না।
গত ১০ বছরে বা তারও বেশি সময় ধরে ফ্রান্সের ক্ষমতাপ্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী ক্রমবর্ধমানভাবে শহরের কেন্দ্রে রাজনৈতিক বিক্ষোভ দমনে কঠোর থেকে কঠোরতর কৌশল ব্যবহার করেছে। ২০১৮ সালে ইয়েলো ভেস্টস বা হলুদ পোশাক আন্দোলন এবং ২০২২-২৩ সালে পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের নৃশংস ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। শত শত বিক্ষোভকারী পুলিশের বর্বরতা ও নির্বিচার গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ পুলিশের ‘ফ্ল্যাশ-বল’ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে গেছেন এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যবহৃত গ্রেনেড অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত। মানুষ এখন বুঝতে পারছে, যে কেউ পুলিশের এই বর্বরতার শিকার হতে পারে। বামপন্থীদের বড় অংশ পুলিশের প্রতি আরও সরব হয়ে উঠেছে এবং ‘পুলিশের বর্বরতা’ কথাটি এখন গণমাধ্যমেও ব্যবহৃত হয়।
নাহেলকে নির্মমভাবে গুলি করা হয়েছিল। কারণ সে আলজেরীয় বংশোদ্ভূত একজন ফরাসি কিশোর ছিল। তার মা ফরাসি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর ছেলেকে গুলি করেছেন, তিনি ‘একটি আরব মুখ, একটি ছোট বাচ্চা দেখেছিলেন এবং তিনি তার জীবন নিতে চেয়েছিলেন।’
প্যারিসের শহরতলিতে অনেক জাতিগত সংখ্যালঘু যুবক প্রতিদিন পুলিশের হাতে উত্ত্যক্ত, হয়রানি এবং মারধরের শিকার হন। নাহেলের মায়ের এই বক্তব্য অবশ্যই গুরুত্ব বহন করে। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি আমেরিকান জনসাধারণের কাছে পরিচিত হতে পারে, তবে বেশির ভাগ ইউরোপীয় গণতন্ত্রে এটি ব্যতিক্রমী এবং মর্মান্তিক হিসেবে দেখা হয়।
ফরাসি পুলিশ বাহিনীতে প্রকৃতপক্ষে বর্ণবাদ বিষয়টি প্রবলভাবে বিদ্যমান; বিশেষ করে আপনি যদি আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ হন, তাহলে আপনি অবশ্যই প্রতিদিন পুলিশের বর্বরতার শিকার হবেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জাতিগত প্রোফাইলিংয়ের ব্যাপক চর্চায় জড়িত, যা পদ্ধতিগত বৈষম্যের ফল। একটি বিরল কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ রায়ে ২০২১ সালে প্যারিস কোর্ট অব আপিল দেখেছে যে ২০১৭ সালে একটি ট্রেন স্টেশনে মরক্কোন, মালিয়ান ও কমোরিয়ান বংশোদ্ভূত তিনজন হাইস্কুল ছাত্রের পুলিশ আইডি পরীক্ষার পেছনে বৈষম্য ছিল।
পুলিশের এ ধরনের আচরণের যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কোনো সরকারই সমস্যাটি সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের এই আইডি পরীক্ষার লক্ষ্য জাতিগত সংখ্যালঘু তরুণদের ‘অপমানিত’ করা। নাহেলের হত্যার পর, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আবারও ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষকে ‘আইন প্রয়োগে বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের গভীর সমস্যাগুলোকে গুরুত্বসহকারে সমাধান করার জন্য’ আহ্বান জানিয়েছে।
বরাবরের মতো, ফরাসি সরকার অস্বীকার করেছিল যে ‘পুলিশ বাহিনীতে বর্ণবাদ বা পদ্ধতিগত বৈষম্যের যে কোনো অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ এটি অত্যন্ত বিদ্রূপাত্মক: ফ্রান্সের অভিজাতেরা বিশ্বাস করেন, ফরাসি প্রজাতন্ত্রের আদর্শের কেন্দ্রস্থলে ‘বর্ণ-অন্ধ’ নীতি প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিষেধক। এটি ফরাসি বিপ্লবের উত্তরাধিকারগুলোর মধ্যে একটি, যা শ্রেণিপ্রবণ প্রাচীন শাসনকে ভেঙে সবার সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করে।
তাই বলে রাষ্ট্র কারও ঠিকুজি-কোষ্ঠী বিচার করবে না এই বলে যে, ভিন্ন জনগোষ্ঠী হওয়ার কারণে সে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এই কারণেই তো মূলধারার রাজনীতিতে কেউই সেই ফরাসি বিপ্লবের সাম্যের এই বিমূর্ত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে রাজি নয়। অনেকেই জানেন যে এটি একটি অলীক কল্পনা, কিন্তু সবাই চুপ করে থাকে। কারণ ফ্রান্সে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং এর ‘মূল্যবোধ’ পবিত্র।
২০১৭ সালের একটি বিল পাসের পর থেকে ফ্রান্সে পুলিশি বর্বরতা আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের আইন করে গুলি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, যদি তাঁরা দেখেন চালক বা গাড়ির যাত্রীরা ‘পুলিশের জীবন বা শারীরিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’। পুলিশ ইউনিয়ন তৎকালীন বাম ঘরানার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল এবং তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। ফ্রান্সের একটি বামপন্থী সরকারও পুলিশ অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের আইন পরিবর্তন করেছে এবং পুলিশের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য পেনাল কোডটি আবার লিখেছে।
ফরাসি বেসরকারি সংস্থা হিউম্যান রাইটস লিগ বলেছে, আইনটিতে অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে কোনো বাধা না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ এটি তাদের গুলি এবং হত্যার জন্য আইনি সুরক্ষা দেয়। এটি সত্য যে আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে পুলিশের গুলিতে হতাহত মানুষের সংখ্যা (তাদের বেশির ভাগই আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ) বেড়েই চলেছে: ২০১৭ সালে ২৭, ২০২০ সালে ৪০ ও ২০২১ সালে ৫২ জন নিহত হয়েছে।
নাহেল হত্যাকাণ্ডে গোটা ফ্রান্স এখন বিক্ষোভে উত্তাল। কিন্তু বর্ণবাদী আচরণের শিকার অনেকে সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁরা ভয় পান যে এসব বিক্ষোভ তাঁদের বিরোধিতাকারীদের সঠিক প্রমাণ করবে এবং জনস্বাধীনতা খর্ব করার আরও বিল পাসের মাধ্যমে তাঁদের ওপর নিপীড়ন আরও জোরদার করবে। দেখা যাচ্ছে খোদ রাষ্ট্রই পুলিশকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশের হাত থেকে ফ্রান্সের এসব জাতিগত সংখ্যালঘু শিশুদের তাহলে রক্ষা করবে কে?
ফিলিপ মারলিয়ার, অধ্যাপক, ফরাসি ও ইউরোপীয় রাজনীতি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
(কাউন্টারপাঞ্চে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ।
খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। দুই সপ্তাহ আগে, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের আনগোলিম শহরে একইভাবে পুলিশের হাতে ১৯ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হন। দৃশ্যটি কেউ ক্যামেরাবন্দী না করায় ঘটনাটি গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়নি।
প্যারিসের নানতেয়ার এলাকায় নাহেলকে গুলি করার দৃশ্যটি একজন পথচারী ভিডিও করেছিলেন। ওই ভিডিও ফুটেজটি পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনকে উল্টে দেয়। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাহেলের আচরণ দুই পুলিশ কর্মকর্তার জন্য ‘সরাসরি হুমকিমূলক’ ছিল। পুলিশের ওই দাবি একেবারে মিথ্যা। নাহেলকে গুলি করা হয়েছিল। কারণ পুলিশ তাকে থামতে বলেছিল, কিন্তু সে তা মানতে অস্বীকার করে।
ফরাসি আইনে, কেউ থামতে অস্বীকৃতি জানালে তা পুলিশকে হত্যা করার অধিকার দেয় না। এ কারণেই, যে পুলিশ কর্মকর্তা নাহেলকে গুলি করেছেন, তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে তিনি শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হবেন। কারণ ফরাসি বিচারব্যবস্থা খুব কমই পুলিশ কর্মকর্তাদের নিন্দামন্দ করে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ তড়িঘড়ি করে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘অমার্জনীয়’ বলে মন্তব্য করেন। ফ্রান্সে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নিন্দা করা সবচেয়ে অস্বাভাবিক। দেশটিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কেউ পুলিশের সমালোচনা করার সাহস পায় না। আসলে এটা ছিল জনগণকে খুশি করার একটি প্রয়াস মাত্র। মাখোঁ আশঙ্কা করেছিলেন যে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ফ্রান্সজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে এবং প্রকৃতপক্ষে সেটাই হয়েছে।
ফ্রান্সে কয়েক দশক ধরে বর্ণবাদী পুলিশি বর্বরতা চলছে। বর্তমান দাঙ্গা ২০০৫ সালের ঘটনাগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। সে বছর প্যারিসের শহরতলিতে আরব বংশোদ্ভূত দুই ফরাসি কিশোর জায়েদ বেন্না ও বোনা ট্রাউরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে একটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে লুকানোর চেষ্টা করলে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। অ্যাদামা ট্রাউরের কেসটির কথাও ভাবুন: ২৪ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক পুলিশ হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শ্বাসরোধে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বহু বছর পেরিয়ে গেলেও জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটেছে, যা লিখলে এ নিবন্ধ দীর্ঘ হবে।
পুলিশি সহিংসতা কেন সম্প্রতি খবরের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে? কয়েক বছর আগে পর্যন্ত, শুধু শহরতলিতে বসবাসকারী লোকেরাই পুলিশের সহিংসতার শিকার হতো। গণমাধ্যমে এসব ঘটনা খুব একটা জায়গা পেত না। মূলধারার রাজনীতিবিদেরাও পুলিশের কোনো দোষের কথা স্বীকার করতেন না; বরং তাঁরা এটা বলতেন, পুলিশ এই প্রজাতন্ত্রের একটি বাহিনী এবং তারা সাধারণ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ তাই কোনো অন্যায় করতে পারে না।
গত ১০ বছরে বা তারও বেশি সময় ধরে ফ্রান্সের ক্ষমতাপ্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী ক্রমবর্ধমানভাবে শহরের কেন্দ্রে রাজনৈতিক বিক্ষোভ দমনে কঠোর থেকে কঠোরতর কৌশল ব্যবহার করেছে। ২০১৮ সালে ইয়েলো ভেস্টস বা হলুদ পোশাক আন্দোলন এবং ২০২২-২৩ সালে পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের নৃশংস ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। শত শত বিক্ষোভকারী পুলিশের বর্বরতা ও নির্বিচার গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ পুলিশের ‘ফ্ল্যাশ-বল’ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে গেছেন এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যবহৃত গ্রেনেড অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত। মানুষ এখন বুঝতে পারছে, যে কেউ পুলিশের এই বর্বরতার শিকার হতে পারে। বামপন্থীদের বড় অংশ পুলিশের প্রতি আরও সরব হয়ে উঠেছে এবং ‘পুলিশের বর্বরতা’ কথাটি এখন গণমাধ্যমেও ব্যবহৃত হয়।
নাহেলকে নির্মমভাবে গুলি করা হয়েছিল। কারণ সে আলজেরীয় বংশোদ্ভূত একজন ফরাসি কিশোর ছিল। তার মা ফরাসি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর ছেলেকে গুলি করেছেন, তিনি ‘একটি আরব মুখ, একটি ছোট বাচ্চা দেখেছিলেন এবং তিনি তার জীবন নিতে চেয়েছিলেন।’
প্যারিসের শহরতলিতে অনেক জাতিগত সংখ্যালঘু যুবক প্রতিদিন পুলিশের হাতে উত্ত্যক্ত, হয়রানি এবং মারধরের শিকার হন। নাহেলের মায়ের এই বক্তব্য অবশ্যই গুরুত্ব বহন করে। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি আমেরিকান জনসাধারণের কাছে পরিচিত হতে পারে, তবে বেশির ভাগ ইউরোপীয় গণতন্ত্রে এটি ব্যতিক্রমী এবং মর্মান্তিক হিসেবে দেখা হয়।
ফরাসি পুলিশ বাহিনীতে প্রকৃতপক্ষে বর্ণবাদ বিষয়টি প্রবলভাবে বিদ্যমান; বিশেষ করে আপনি যদি আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ হন, তাহলে আপনি অবশ্যই প্রতিদিন পুলিশের বর্বরতার শিকার হবেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জাতিগত প্রোফাইলিংয়ের ব্যাপক চর্চায় জড়িত, যা পদ্ধতিগত বৈষম্যের ফল। একটি বিরল কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ রায়ে ২০২১ সালে প্যারিস কোর্ট অব আপিল দেখেছে যে ২০১৭ সালে একটি ট্রেন স্টেশনে মরক্কোন, মালিয়ান ও কমোরিয়ান বংশোদ্ভূত তিনজন হাইস্কুল ছাত্রের পুলিশ আইডি পরীক্ষার পেছনে বৈষম্য ছিল।
পুলিশের এ ধরনের আচরণের যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কোনো সরকারই সমস্যাটি সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের এই আইডি পরীক্ষার লক্ষ্য জাতিগত সংখ্যালঘু তরুণদের ‘অপমানিত’ করা। নাহেলের হত্যার পর, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আবারও ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষকে ‘আইন প্রয়োগে বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের গভীর সমস্যাগুলোকে গুরুত্বসহকারে সমাধান করার জন্য’ আহ্বান জানিয়েছে।
বরাবরের মতো, ফরাসি সরকার অস্বীকার করেছিল যে ‘পুলিশ বাহিনীতে বর্ণবাদ বা পদ্ধতিগত বৈষম্যের যে কোনো অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ এটি অত্যন্ত বিদ্রূপাত্মক: ফ্রান্সের অভিজাতেরা বিশ্বাস করেন, ফরাসি প্রজাতন্ত্রের আদর্শের কেন্দ্রস্থলে ‘বর্ণ-অন্ধ’ নীতি প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিষেধক। এটি ফরাসি বিপ্লবের উত্তরাধিকারগুলোর মধ্যে একটি, যা শ্রেণিপ্রবণ প্রাচীন শাসনকে ভেঙে সবার সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করে।
তাই বলে রাষ্ট্র কারও ঠিকুজি-কোষ্ঠী বিচার করবে না এই বলে যে, ভিন্ন জনগোষ্ঠী হওয়ার কারণে সে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এই কারণেই তো মূলধারার রাজনীতিতে কেউই সেই ফরাসি বিপ্লবের সাম্যের এই বিমূর্ত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে রাজি নয়। অনেকেই জানেন যে এটি একটি অলীক কল্পনা, কিন্তু সবাই চুপ করে থাকে। কারণ ফ্রান্সে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং এর ‘মূল্যবোধ’ পবিত্র।
২০১৭ সালের একটি বিল পাসের পর থেকে ফ্রান্সে পুলিশি বর্বরতা আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের আইন করে গুলি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, যদি তাঁরা দেখেন চালক বা গাড়ির যাত্রীরা ‘পুলিশের জীবন বা শারীরিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’। পুলিশ ইউনিয়ন তৎকালীন বাম ঘরানার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল এবং তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। ফ্রান্সের একটি বামপন্থী সরকারও পুলিশ অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের আইন পরিবর্তন করেছে এবং পুলিশের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য পেনাল কোডটি আবার লিখেছে।
ফরাসি বেসরকারি সংস্থা হিউম্যান রাইটস লিগ বলেছে, আইনটিতে অফিসারদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে কোনো বাধা না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ এটি তাদের গুলি এবং হত্যার জন্য আইনি সুরক্ষা দেয়। এটি সত্য যে আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে পুলিশের গুলিতে হতাহত মানুষের সংখ্যা (তাদের বেশির ভাগই আরব বা কৃষ্ণাঙ্গ) বেড়েই চলেছে: ২০১৭ সালে ২৭, ২০২০ সালে ৪০ ও ২০২১ সালে ৫২ জন নিহত হয়েছে।
নাহেল হত্যাকাণ্ডে গোটা ফ্রান্স এখন বিক্ষোভে উত্তাল। কিন্তু বর্ণবাদী আচরণের শিকার অনেকে সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁরা ভয় পান যে এসব বিক্ষোভ তাঁদের বিরোধিতাকারীদের সঠিক প্রমাণ করবে এবং জনস্বাধীনতা খর্ব করার আরও বিল পাসের মাধ্যমে তাঁদের ওপর নিপীড়ন আরও জোরদার করবে। দেখা যাচ্ছে খোদ রাষ্ট্রই পুলিশকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশের হাত থেকে ফ্রান্সের এসব জাতিগত সংখ্যালঘু শিশুদের তাহলে রক্ষা করবে কে?
ফিলিপ মারলিয়ার, অধ্যাপক, ফরাসি ও ইউরোপীয় রাজনীতি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
(কাউন্টারপাঞ্চে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ। খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
০৫ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ। খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
০৫ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ। খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
০৫ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

প্যারিসের একটি শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ফ্রান্সে এ ধরনের মারাত্মক ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ। খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ বছর ফ্রান্সে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। গত বছর এ ধরনের ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
০৫ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫