গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ এগোল বাংলাদেশ

গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। ১৬৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৭৩তম। গত কয়েকবারের মতো এবারও হাইব্রিড (মিশ্র) শাসনব্যবস্থা বিভাগে পড়েছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) গত বৃহস্পতিবার ‘গণতন্ত্র সূচক-২০২২’ প্রকাশ করেছে। সূচকে সবার শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। আর সবার নিচে অবস্থান আফগানিস্তানের।

ইআইইউ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গণতন্ত্রের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ১০-এর মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ৫ দশমিক ৯৯। আর ৭ দশমিক শূন্য ৪ স্কোর নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবার ওপরে ভারত। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা শ্রীলঙ্কার স্কোর ৬ দশমিক ৪৭। চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে যথাক্রমে ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তান।

পাঁচ মানদণ্ডে একটি দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সূচকটি তৈরি করেছে ইআইইউ। মানদণ্ডগুলো হচ্ছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বহুদলীয় অবস্থান, সরকারে সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক অধিকার। সব সূচক মিলিয়ে কোনো দেশের গড় স্কোর ৮-এর বেশি হলে সেই দেশে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়েছে। স্কোর ৬ থেকে ৮-এর মধ্যে হলে সেখানে ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’, ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে হলে ‘মিশ্র শাসন’ এবং ৪-এর নিচে হলে সংশ্লিষ্ট দেশে ‘স্বৈরশাসন’ চলছে বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। সূচকে পূর্ণ গণতন্ত্র বিভাগে ২৪টি, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র বিভাগে ৪৮টি, হাইব্রিড শাসন-ব্যবস্থায় ৩৬ ও কর্তৃত্ববাদী শাসন-ব্যবস্থায় ৫৯টি দেশ রয়েছে।

বাংলাদেশ আছে হাইব্রিড (মিশ্র) শ্রেণিতে। হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা বলতে ইআইইউ এমন একটি ব্যবস্থাকে বুঝিয়েছে, যেখানে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনব্যবস্থা প্রায়ই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দল ও বিরোধী প্রার্থীদের ওপর সরকারের চাপ থাকে। দেশের বিচার ব্যবস্থাও স্বাধীন নয়। হয়রানি ও চাপ থাকে সাংবাদিকদের ওপরও। এ ছাড়া, দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার, দুর্বল আইনের শাসন, দুর্বল নাগরিক সমাজ এ ধরনের দেশের শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। 
বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ নেপাল ও পাকিস্তানও রয়েছে হাইব্রিড শ্রেণিতে। বিশ্বে দেশ দুটির অবস্থান যথাক্রমে ১০১ ও ১০৭। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাও রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের শ্রেণিতে।

ইআইইউর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে আট ভাগ মানুষ পূর্ণ গণতন্ত্রের শাসনে বাস করছে। আর ৩৬.৯ শতাংশ মানুষ কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার অধীনে রয়েছে। 
সূচকে সবার শীর্ষে থাকা নরওয়ের স্কোর ৯ দশমিক ৮১। এ ছাড়া, ৯ দশমিক ৬১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় অবস্থানে আইসল্যান্ড। দেশটির স্কোর ৯ দশমিক ৫২। সুইডেন ও ফিনল্যান্ড যথাক্রমে ৯ দশমিক ৩৯ ও ৯ দশমিক ২৯ স্কোর নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। সূচকে সবার নিচে অবস্থান করছে আফগানিস্তান। কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা বিভাগে থাকা দেশটির স্কোর শূন্য দশমিক ৩২। এ বিভাগে আরও রয়েছে মিয়ানমার (১৬৬তম), উত্তর কোরিয়া (১৬৫তম), মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র (১৬৪তম), সিরিয়া (১৬৩তম), চীন (১৫৬তম), ইয়েমেন (১৫৫তম), ইরান (১৫৪তম), সৌদি আরব (১৫০তম), রাশিয়া (১৪৬তম)।