Ajker Patrika

নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা

সম্পাদকীয়
নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলো। দেশের জনগণ দেখতে চায়, আমাদের দেশে গণতন্ত্রের নামে যে জঞ্জালের পাহাড় গড়ে উঠেছে, তা থেকে গণতন্ত্র মুক্ত করা হয়েছে। গণতন্ত্রকে যেন তার প্রকৃতরূপে দেখতে পায় মানুষ। সামনের দিনগুলোয় ইতিবাচক কিছু দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দেশ। সেই পথে আমরা হাঁটতে পারি কি না, সেটাই দেখা দরকার। গণতন্ত্র নিয়ে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয় বলেই সত্যিকারের অর্জন নিয়ে ভাবতে দ্বিধান্বিত হয় মন। যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, সেই দলই গণতন্ত্রকে কলুষিত করার চেষ্টা করেছে। বলপ্রয়োগের ভাষাকেই গণতন্ত্রের ভাষা বলে অনুবাদ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সরকারবিহীন দেশের সর্বত্র যেভাবে গত কয়েক দিন অরাজকতা চলেছে, তা নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে পারা যায় না। জনমনে প্রশ্ন উঠতেই পারে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করল যারা, তারাই যদি অন্যায় করতে শুরু করে, তাহলে এ আন্দোলনটি করা হলো কিসের জন্য? আন্দোলনকারীরা কিংবা রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রতিশোধস্পৃহার বিরুদ্ধে মতামত দিলেও তাদের কথা মেনে চলা হয়নি। দেশজুড়েই চলেছে তাণ্ডব।

সদ্য সাবেক সরকারের প্রতি রোষের প্রকাশ দেখাতে গিয়ে যেভাবে ভাঙচুর, আগুন, লুটপাট চলতে দেওয়া হয়েছে, তা আমাদের রুচির দৈন্যের প্রকাশ। প্রচারমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গণভবনসহ বিভিন্ন ভবনে লুটের ঘটনাগুলো দেখা গেছে। এই ঘটনাগুলো থেকে প্রতীয়মান হয়, সুযোগ পেলে যে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে। সুযোগের অভাবে সৎ—কথাটা যেন প্রমাণ করার জন্যই এই সব ঘটনা ঘটছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার আগপর্যন্ত অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। এখন সময় এসেছে, সবকিছু নতুন করে ভাবতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে রূপরেখা রচিত হবে, তারই আলোয় একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা যায় কি না, সেটাই দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার অভিপ্রায়ে। কিন্তু দেখা গেছে, নানাভাবে সেই জায়গাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পৃথিবীর চলার গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে হলে আধুনিক অর্জনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। পশ্চাৎপদ হলে চলবে না। পৃথিবীর যেখানেই উন্নত জীবন গড়ার উপায় খুঁজে পাওয়া যায়, তা আমাদের দেশের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করে এগিয়ে চলতে হবে। রাজনৈতিক পরিচয়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিচয়টাও খুব জরুরি। সেই পরিচয়কে ধারণ করেই এগিয়ে যেতে হয়। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এই বর্তমানের কার্যাবলি দিয়েই গড়ে তুলতে হবে ভবিষ্যৎ।

এই সরকার কেবলই শপথ নিয়েছে। এখন তাদের অভিনন্দন জানানো যায়। কাজ শুরু করার পরই তাদের ক্রিয়াকাণ্ড নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হবে। আপাতত আমাদের আশা থাকবে, এই সরকার যেন দেশকে গণতন্ত্রের পথে চালিত করে। অতীতের ভুলগুলো খুঁজে বের করে সেই পথ থেকে দেশকে সরিয়ে নিয়ে আসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত