জাহীদ রেজা নূর

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
দুটো পরোটা আর এক প্লেট ভাজির দাম রাখল ৪০ টাকা, অর্থাৎ পরোটা ১০ টাকা করে, ভাজি ২০ টাকা।
ঢাকা শহরে এখন প্রচুর সবজির আমদানি হয়েছে। দেশের কৃষকেরা কিন্তু অসাধ্যসাধন করেছেন। সবজি, ধান, মাছের চাষ খুলে দিয়েছে আশার দিগন্ত। কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ সেই সুফল কতটা পাচ্ছেন, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বলতে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী—সব সম্প্রদায়ের মানুষকেই ধরছি। যাঁরা নির্দিষ্ট অর্থপ্রাপ্তির পর সেই টাকা দিয়ে মাস কাটাতে গলদঘর্ম হন, তাঁদের কথাই বলছি।
যে আকারের দুটো পরোটা দেওয়া হয়েছিল দেশবন্ধুতে, তা বহুকাল ধরেই ৫-৬ টাকায় ছিল সীমাবদ্ধ। ভাজিটাও ১০ থেকে বেড়ে ১৫ হতে পারত। কিন্তু যে অদ্ভুত কারণগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, তার একটি হলো করোনাকালের ঝক্কি, অন্য একটি হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তৃতীয়টি হলো ব্যবসায়ীদের লোভ। তৃতীয় কারণটি কোনো অংশে অন্য দুটো কারণের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং এখানে ঠিকভাবে বলা দরকার, পৃথিবীর বহু দেশের চেয়ে আমাদের দেশে এসব অসৎ ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি। এসব ব্যবসায়ী শুধু পণ্যের দাম বাড়ান না, তাঁরা ওষুধেও ভেজাল দেওয়ার মতো সাহস রাখেন। একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর আশীর্বাদ না পেলে তাঁরা অনায়াসে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না।
ময়দাসংশ্লিষ্ট যেকোনো তৈরি খাবারেরই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিপুলভাবে। ফাস্ট ফুডের দোকানে যে চিকেন র্যাপটি এই তো সেদিন ছিল ৭০ টাকা, আজ তার গায়ে দাম ঝুলছে ১০০ টাকা। এক লাফে কী করে ৩০ টাকা দাম বাড়তে পারে, সে প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
শিঙাড়া কিংবা পুরি—দুটো খাদ্যের জন্যই দরকার ময়দা আর তেল। যুদ্ধের কারণে এই দুটো পণ্যের দাম বেড়েছে বটে, কিন্তু যেভাবে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে, তাকে যুক্তিসংগত ভাবার কোনো কারণ নেই। ৫ টাকা আকারের শিঙাড়া বা পুরি যদি ১০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে, যুদ্ধ ছাড়াও একটা ‘এক্স’ ফ্যাক্টর এখানে কাজ করছে।
দুই. বাজারে যাঁরা নিয়মিত যান, তাঁরা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন, কয়েক বছর আগেও যে টাকা পকেটে করে নিয়ে গেলে নিজেকে বেশ রাজা রাজা মনে হতো, আজ সেই টাকা নিয়ে বাজারে যেতে লজ্জা করে। গরুর মাংসের দাম যে আকাশছোঁয়া হয়ে গেল, সেটা মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা। উচ্চবিত্ত মানুষের কাছে বাজারদর কখনোই খুব বেশি বড় সমস্যা নয়। নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে এখন গরু বা খাসির মাংস কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এখনো গরিব মানুষের ঘরে প্রোটিনের জোগান দেয় যে মাংস, সেটা ব্রয়লার। কিছুদিন ধরে সেই মাংসের দামও নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে।
মাছ নিয়ে কথা বলার জন্য হিম্মত থাকতে হয়। মাছের দাম এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যা কল্পনায় আনতেও ভয় লাগে। ঢাকার টাউন হল বাজারে পুঁটি মাছ কিনতে গিয়ে দাম শুনতে হলো ১ হাজার টাকা কেজি। মাছগুলো একটু বড় আকারের বটে, কিন্তু কী কারণে সেই মাছের দাম চার অঙ্কের হবে, তা বুঝতে পারলাম না। কিন্তু কিছুক্ষণ আশপাশে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল, ১ হাজার টাকা দরে মাছ কেনার ক্রেতা বিরল নয়। তাঁদের হাতে কোত্থেকে টাকা আসে, তা নিয়ে গবেষণা করলে আরও কত নতুন গল্প এসে ভিড় জমাবে!
পাবদা একসময় অভিজাত মাছ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু চাষের কারণে সহজলভ্য হয়ে পড়ায় পাবদা-কই-শিং-মাগুর বরং অন্য অনেক মাছের চেয়ে সস্তা। কাজরি মাছ কিংবা তপসে মাছের দাম জিজ্ঞেস করুন তো বাজারে গিয়ে। চমকে উঠবেন!
সবজির বাজারটা মাঝে মাঝে গরিবের ঘরের বউ হয়, তখনো হয় রাজকুমারী—দেমাকে পা মাটিতে পড়ে না। পেঁয়াজ-বেগুন-লাউ নিয়ে কত কিছু যে ঘটে যায়, তার নাটকীয় কাহিনি বাজার করতে যাওয়া প্রতিটি মানুষ জানে।
বাজার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাটা যদি চাহিদা-জোগানের ওপর নির্ভর করত, তাহলে হয়তো দাম বাড়া-কমার একটা চিত্র পাওয়া যেত, কিন্তু সবখানেই তো দেখা যায় সিন্ডিকেটের জয়জয়কার। কিছুদিনের জন্য পণ্য গায়েব করে দিলেই কোটি কোটি টাকা ঘরে তোলা যায়। এই হিসাব তো অহরহ দেখা যাচ্ছে এখন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করলে কিংবা ভারত তা রপ্তানি করতে না চাইলে কীভাবে দাম বেড়ে যায়, সেটা কি আমরা দেখিনি? মজুত পেঁয়াজ তখন ‘গায়েব’ হয়ে যায়। দাম আরেকটু বাড়লে পেঁয়াজগুলো হেসেখেলে আবার আসে দোকানে। দামের ওঠানামার ওপর ‘চোর-পুলিশ’ খেলা চলতেই থাকে।
তেলের কথাও একইভাবে বলা যায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেটের মতো পুরো বাজার থেকে তেল উধাও করে দিল, সেই ঘটনার দগদগে ঘা তো এখনো আমাদের শরীরে। এই সবকিছুর জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দায়ী নয়। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিশ্রেণির মানুষের নিদারুণ অসততা, মজুতদারিপ্রবণতা, গরিব মানুষের পকেট কেটে সম্পদ গড়ে তোলার অমানবিক কর্মপ্রয়াসই প্রধানত দায়ী।
তিন. তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গটি কি ভুল?
না, একেবারেই ভুল নয়। তবে এখন যাকে যুদ্ধের ফল হিসেবে দেখাতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা, সেটা মিথ্যে। যতটা দাম বাড়ানো হয়েছে, ততটা বাড়ানোর মতো কারণ ঘটেনি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নিয়েছেন।
এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে যেভাবে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন পাল্টে যাবে, সেটা এখন কল্পনায়ও আনা যাচ্ছে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গল্পটা আমরা কার কাছ থেকে শুনছি, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমা দুনিয়া তাদের প্রচারণা যন্ত্রটিকে এতটাই শাণিত করে ফেলেছে এবং গরিব দেশগুলোর এতটাই আস্থাভাজন হয়ে উঠেছে তারা যে গরিব দেশগুলো পশ্চিমা বিশ্বের চশমা চোখে গলিয়েই পৃথিবীটাকে দেখে। নিজেদের কিছু বলার মতো রসদের অধিকারী তারা হয়ে ওঠে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যদি শুধু পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা শুনতে থাকে মানুষ, তাহলে সে বিশ্বাস করবে, সবকিছুর জন্য রাশিয়াই দায়ী। অথচ দনবাসের রুশ ভাষাভাষী নাগরিকদের প্রতি ইউক্রেন কতটা নৃশংস আচরণ করেছে, সে কথা পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটার পর একটা নিষেধাজ্ঞা দিয়েও যখন রাশিয়াকে দমানো যাচ্ছে না, তখন রাশিয়াকে নিয়ে আজগুবি সব গল্পও বানানো হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢালছেন ইউক্রেনে, অস্ত্র ব্যবসা করে যাচ্ছেন, ইউক্রেন কি জানে না, এর মাশুল একসময় তার দেশের মানুষকেই দিতে হবে?
অন্যদিকে, রাশিয়াকেও গণমানুষের বন্ধুরাষ্ট্র মনে করার কোনো কারণ নেই। এই যুদ্ধের পরিণতিতে সারা বিশ্বের মানুষ যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সে কথা রাশিয়া কি জানত না? ভ্লাদিমির পুতিনকে কি জনদরদি নেতা বলে মান্য করতে হবে? তাঁর একনায়কতন্ত্রী আচরণে রাশিয়ার মানুষ যে ধুঁকছে, সে কথাও কি কারও অজানা? তবে আমাদের দুর্ভাগ্য, দুই পক্ষের কথা শোনার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। বিদেশি কিছু নিরপেক্ষ পত্রপত্রিকায় যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো লেখা পড়ি, তখন মনে হয়, এ হলো সাম্রাজ্যবাদীদের অভ্যন্তরীণ লীলাখেলা, যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সারা বিশ্বের সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ।
তাহলে যুদ্ধে লাভবান হলো কে?
এক অর্থে, এই যুদ্ধ চীনকে একটা শক্তিশালী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ডলারকে হটিয়ে দিয়ে রুবল-ইউয়ান বাণিজ্যজগতে নতুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে উঠে আসছে। ইউরোপ-আমেরিকাজুড়ে নতুন পৃথিবীর মুদ্রাব্যবস্থা পাল্টে যাবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ।
কিন্তু তাতে কতটা ক্ষতি হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষের, সে অঙ্ক কেউ কষছে না।
চার. আপাত দূরের একটি বিষয়কে এখানে টেনে আনা হলো বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একেবারেই তা নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আলাপটা এখানে খুব জরুরি। রাশিয়ার তেল আর গ্যাস নিয়ে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার অভিঘাত কী হবে, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। তৃতীয় মাধ্যম হয়ে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়ায় রপ্তানির পথ খুঁজছে ইউরোপ, সেটাও তো দেখা যাচ্ছে। রাশিয়া আর ইউক্রেনের খাদ্যশস্য যদি রপ্তানি করা না যায়, তাহলে সমূহ বিপদে পড়তে যাচ্ছে—বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকার মানুষেরা।
বিশ্ববাণিজ্য খুবই জরুরি একটা বিষয় এখানে। যত বড় শত্রুই হোক না কেন, বাণিজ্য-স্বার্থে এই শত্রুতার সময়ও তলে তলে ব্যবসাটা পাকিয়ে নেওয়া চলছে। পৃথিবীর সব পুঁজিপতিই ‘পুঁজি’কেই সর্বাগ্রে স্থান দেয়।
আমরা লক্ষ রাখছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের দিকেও। সংযত হয়ে প্রকল্প হাতে নিতে বলছেন তিনি। মেগা প্রজেক্টগুলো কাজের না হলে অকারণে ঋণের বোঝা যে বাড়ানো যাবে না, সে বার্তা কিন্তু দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভয় হলো, ‘খাই খাই পার্টি’ কি এই বিপৎসংকেত আমলে নেবে? শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের দেশের পরিস্থিতি মেলানো ঠিক হবে না, কিন্তু সরকারের নানা অলিতে-গলিতে ‘খাই খাই পার্টি’র উপস্থিতি থাকার আশঙ্কা কম নয় এবং তারা যেকোনো সময় জাতির দুর্দশার বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। আর তখনই আমাদের নিত্যদিনের বাজার জীবনে নেমে আসতে পারে আতঙ্ক, সে কথাটি বলার জন্যই এত কথা বলা।

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
দুটো পরোটা আর এক প্লেট ভাজির দাম রাখল ৪০ টাকা, অর্থাৎ পরোটা ১০ টাকা করে, ভাজি ২০ টাকা।
ঢাকা শহরে এখন প্রচুর সবজির আমদানি হয়েছে। দেশের কৃষকেরা কিন্তু অসাধ্যসাধন করেছেন। সবজি, ধান, মাছের চাষ খুলে দিয়েছে আশার দিগন্ত। কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ সেই সুফল কতটা পাচ্ছেন, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বলতে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী—সব সম্প্রদায়ের মানুষকেই ধরছি। যাঁরা নির্দিষ্ট অর্থপ্রাপ্তির পর সেই টাকা দিয়ে মাস কাটাতে গলদঘর্ম হন, তাঁদের কথাই বলছি।
যে আকারের দুটো পরোটা দেওয়া হয়েছিল দেশবন্ধুতে, তা বহুকাল ধরেই ৫-৬ টাকায় ছিল সীমাবদ্ধ। ভাজিটাও ১০ থেকে বেড়ে ১৫ হতে পারত। কিন্তু যে অদ্ভুত কারণগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, তার একটি হলো করোনাকালের ঝক্কি, অন্য একটি হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তৃতীয়টি হলো ব্যবসায়ীদের লোভ। তৃতীয় কারণটি কোনো অংশে অন্য দুটো কারণের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং এখানে ঠিকভাবে বলা দরকার, পৃথিবীর বহু দেশের চেয়ে আমাদের দেশে এসব অসৎ ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি। এসব ব্যবসায়ী শুধু পণ্যের দাম বাড়ান না, তাঁরা ওষুধেও ভেজাল দেওয়ার মতো সাহস রাখেন। একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর আশীর্বাদ না পেলে তাঁরা অনায়াসে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না।
ময়দাসংশ্লিষ্ট যেকোনো তৈরি খাবারেরই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিপুলভাবে। ফাস্ট ফুডের দোকানে যে চিকেন র্যাপটি এই তো সেদিন ছিল ৭০ টাকা, আজ তার গায়ে দাম ঝুলছে ১০০ টাকা। এক লাফে কী করে ৩০ টাকা দাম বাড়তে পারে, সে প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
শিঙাড়া কিংবা পুরি—দুটো খাদ্যের জন্যই দরকার ময়দা আর তেল। যুদ্ধের কারণে এই দুটো পণ্যের দাম বেড়েছে বটে, কিন্তু যেভাবে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে, তাকে যুক্তিসংগত ভাবার কোনো কারণ নেই। ৫ টাকা আকারের শিঙাড়া বা পুরি যদি ১০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে, যুদ্ধ ছাড়াও একটা ‘এক্স’ ফ্যাক্টর এখানে কাজ করছে।
দুই. বাজারে যাঁরা নিয়মিত যান, তাঁরা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন, কয়েক বছর আগেও যে টাকা পকেটে করে নিয়ে গেলে নিজেকে বেশ রাজা রাজা মনে হতো, আজ সেই টাকা নিয়ে বাজারে যেতে লজ্জা করে। গরুর মাংসের দাম যে আকাশছোঁয়া হয়ে গেল, সেটা মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা। উচ্চবিত্ত মানুষের কাছে বাজারদর কখনোই খুব বেশি বড় সমস্যা নয়। নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে এখন গরু বা খাসির মাংস কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এখনো গরিব মানুষের ঘরে প্রোটিনের জোগান দেয় যে মাংস, সেটা ব্রয়লার। কিছুদিন ধরে সেই মাংসের দামও নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে।
মাছ নিয়ে কথা বলার জন্য হিম্মত থাকতে হয়। মাছের দাম এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যা কল্পনায় আনতেও ভয় লাগে। ঢাকার টাউন হল বাজারে পুঁটি মাছ কিনতে গিয়ে দাম শুনতে হলো ১ হাজার টাকা কেজি। মাছগুলো একটু বড় আকারের বটে, কিন্তু কী কারণে সেই মাছের দাম চার অঙ্কের হবে, তা বুঝতে পারলাম না। কিন্তু কিছুক্ষণ আশপাশে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল, ১ হাজার টাকা দরে মাছ কেনার ক্রেতা বিরল নয়। তাঁদের হাতে কোত্থেকে টাকা আসে, তা নিয়ে গবেষণা করলে আরও কত নতুন গল্প এসে ভিড় জমাবে!
পাবদা একসময় অভিজাত মাছ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু চাষের কারণে সহজলভ্য হয়ে পড়ায় পাবদা-কই-শিং-মাগুর বরং অন্য অনেক মাছের চেয়ে সস্তা। কাজরি মাছ কিংবা তপসে মাছের দাম জিজ্ঞেস করুন তো বাজারে গিয়ে। চমকে উঠবেন!
সবজির বাজারটা মাঝে মাঝে গরিবের ঘরের বউ হয়, তখনো হয় রাজকুমারী—দেমাকে পা মাটিতে পড়ে না। পেঁয়াজ-বেগুন-লাউ নিয়ে কত কিছু যে ঘটে যায়, তার নাটকীয় কাহিনি বাজার করতে যাওয়া প্রতিটি মানুষ জানে।
বাজার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাটা যদি চাহিদা-জোগানের ওপর নির্ভর করত, তাহলে হয়তো দাম বাড়া-কমার একটা চিত্র পাওয়া যেত, কিন্তু সবখানেই তো দেখা যায় সিন্ডিকেটের জয়জয়কার। কিছুদিনের জন্য পণ্য গায়েব করে দিলেই কোটি কোটি টাকা ঘরে তোলা যায়। এই হিসাব তো অহরহ দেখা যাচ্ছে এখন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করলে কিংবা ভারত তা রপ্তানি করতে না চাইলে কীভাবে দাম বেড়ে যায়, সেটা কি আমরা দেখিনি? মজুত পেঁয়াজ তখন ‘গায়েব’ হয়ে যায়। দাম আরেকটু বাড়লে পেঁয়াজগুলো হেসেখেলে আবার আসে দোকানে। দামের ওঠানামার ওপর ‘চোর-পুলিশ’ খেলা চলতেই থাকে।
তেলের কথাও একইভাবে বলা যায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেটের মতো পুরো বাজার থেকে তেল উধাও করে দিল, সেই ঘটনার দগদগে ঘা তো এখনো আমাদের শরীরে। এই সবকিছুর জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দায়ী নয়। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিশ্রেণির মানুষের নিদারুণ অসততা, মজুতদারিপ্রবণতা, গরিব মানুষের পকেট কেটে সম্পদ গড়ে তোলার অমানবিক কর্মপ্রয়াসই প্রধানত দায়ী।
তিন. তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গটি কি ভুল?
না, একেবারেই ভুল নয়। তবে এখন যাকে যুদ্ধের ফল হিসেবে দেখাতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা, সেটা মিথ্যে। যতটা দাম বাড়ানো হয়েছে, ততটা বাড়ানোর মতো কারণ ঘটেনি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নিয়েছেন।
এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে যেভাবে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন পাল্টে যাবে, সেটা এখন কল্পনায়ও আনা যাচ্ছে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গল্পটা আমরা কার কাছ থেকে শুনছি, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমা দুনিয়া তাদের প্রচারণা যন্ত্রটিকে এতটাই শাণিত করে ফেলেছে এবং গরিব দেশগুলোর এতটাই আস্থাভাজন হয়ে উঠেছে তারা যে গরিব দেশগুলো পশ্চিমা বিশ্বের চশমা চোখে গলিয়েই পৃথিবীটাকে দেখে। নিজেদের কিছু বলার মতো রসদের অধিকারী তারা হয়ে ওঠে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যদি শুধু পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা শুনতে থাকে মানুষ, তাহলে সে বিশ্বাস করবে, সবকিছুর জন্য রাশিয়াই দায়ী। অথচ দনবাসের রুশ ভাষাভাষী নাগরিকদের প্রতি ইউক্রেন কতটা নৃশংস আচরণ করেছে, সে কথা পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটার পর একটা নিষেধাজ্ঞা দিয়েও যখন রাশিয়াকে দমানো যাচ্ছে না, তখন রাশিয়াকে নিয়ে আজগুবি সব গল্পও বানানো হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢালছেন ইউক্রেনে, অস্ত্র ব্যবসা করে যাচ্ছেন, ইউক্রেন কি জানে না, এর মাশুল একসময় তার দেশের মানুষকেই দিতে হবে?
অন্যদিকে, রাশিয়াকেও গণমানুষের বন্ধুরাষ্ট্র মনে করার কোনো কারণ নেই। এই যুদ্ধের পরিণতিতে সারা বিশ্বের মানুষ যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সে কথা রাশিয়া কি জানত না? ভ্লাদিমির পুতিনকে কি জনদরদি নেতা বলে মান্য করতে হবে? তাঁর একনায়কতন্ত্রী আচরণে রাশিয়ার মানুষ যে ধুঁকছে, সে কথাও কি কারও অজানা? তবে আমাদের দুর্ভাগ্য, দুই পক্ষের কথা শোনার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। বিদেশি কিছু নিরপেক্ষ পত্রপত্রিকায় যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো লেখা পড়ি, তখন মনে হয়, এ হলো সাম্রাজ্যবাদীদের অভ্যন্তরীণ লীলাখেলা, যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সারা বিশ্বের সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ।
তাহলে যুদ্ধে লাভবান হলো কে?
এক অর্থে, এই যুদ্ধ চীনকে একটা শক্তিশালী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ডলারকে হটিয়ে দিয়ে রুবল-ইউয়ান বাণিজ্যজগতে নতুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে উঠে আসছে। ইউরোপ-আমেরিকাজুড়ে নতুন পৃথিবীর মুদ্রাব্যবস্থা পাল্টে যাবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ।
কিন্তু তাতে কতটা ক্ষতি হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষের, সে অঙ্ক কেউ কষছে না।
চার. আপাত দূরের একটি বিষয়কে এখানে টেনে আনা হলো বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একেবারেই তা নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আলাপটা এখানে খুব জরুরি। রাশিয়ার তেল আর গ্যাস নিয়ে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার অভিঘাত কী হবে, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। তৃতীয় মাধ্যম হয়ে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়ায় রপ্তানির পথ খুঁজছে ইউরোপ, সেটাও তো দেখা যাচ্ছে। রাশিয়া আর ইউক্রেনের খাদ্যশস্য যদি রপ্তানি করা না যায়, তাহলে সমূহ বিপদে পড়তে যাচ্ছে—বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকার মানুষেরা।
বিশ্ববাণিজ্য খুবই জরুরি একটা বিষয় এখানে। যত বড় শত্রুই হোক না কেন, বাণিজ্য-স্বার্থে এই শত্রুতার সময়ও তলে তলে ব্যবসাটা পাকিয়ে নেওয়া চলছে। পৃথিবীর সব পুঁজিপতিই ‘পুঁজি’কেই সর্বাগ্রে স্থান দেয়।
আমরা লক্ষ রাখছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের দিকেও। সংযত হয়ে প্রকল্প হাতে নিতে বলছেন তিনি। মেগা প্রজেক্টগুলো কাজের না হলে অকারণে ঋণের বোঝা যে বাড়ানো যাবে না, সে বার্তা কিন্তু দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভয় হলো, ‘খাই খাই পার্টি’ কি এই বিপৎসংকেত আমলে নেবে? শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের দেশের পরিস্থিতি মেলানো ঠিক হবে না, কিন্তু সরকারের নানা অলিতে-গলিতে ‘খাই খাই পার্টি’র উপস্থিতি থাকার আশঙ্কা কম নয় এবং তারা যেকোনো সময় জাতির দুর্দশার বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। আর তখনই আমাদের নিত্যদিনের বাজার জীবনে নেমে আসতে পারে আতঙ্ক, সে কথাটি বলার জন্যই এত কথা বলা।
জাহীদ রেজা নূর

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
দুটো পরোটা আর এক প্লেট ভাজির দাম রাখল ৪০ টাকা, অর্থাৎ পরোটা ১০ টাকা করে, ভাজি ২০ টাকা।
ঢাকা শহরে এখন প্রচুর সবজির আমদানি হয়েছে। দেশের কৃষকেরা কিন্তু অসাধ্যসাধন করেছেন। সবজি, ধান, মাছের চাষ খুলে দিয়েছে আশার দিগন্ত। কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ সেই সুফল কতটা পাচ্ছেন, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বলতে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী—সব সম্প্রদায়ের মানুষকেই ধরছি। যাঁরা নির্দিষ্ট অর্থপ্রাপ্তির পর সেই টাকা দিয়ে মাস কাটাতে গলদঘর্ম হন, তাঁদের কথাই বলছি।
যে আকারের দুটো পরোটা দেওয়া হয়েছিল দেশবন্ধুতে, তা বহুকাল ধরেই ৫-৬ টাকায় ছিল সীমাবদ্ধ। ভাজিটাও ১০ থেকে বেড়ে ১৫ হতে পারত। কিন্তু যে অদ্ভুত কারণগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, তার একটি হলো করোনাকালের ঝক্কি, অন্য একটি হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তৃতীয়টি হলো ব্যবসায়ীদের লোভ। তৃতীয় কারণটি কোনো অংশে অন্য দুটো কারণের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং এখানে ঠিকভাবে বলা দরকার, পৃথিবীর বহু দেশের চেয়ে আমাদের দেশে এসব অসৎ ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি। এসব ব্যবসায়ী শুধু পণ্যের দাম বাড়ান না, তাঁরা ওষুধেও ভেজাল দেওয়ার মতো সাহস রাখেন। একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর আশীর্বাদ না পেলে তাঁরা অনায়াসে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না।
ময়দাসংশ্লিষ্ট যেকোনো তৈরি খাবারেরই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিপুলভাবে। ফাস্ট ফুডের দোকানে যে চিকেন র্যাপটি এই তো সেদিন ছিল ৭০ টাকা, আজ তার গায়ে দাম ঝুলছে ১০০ টাকা। এক লাফে কী করে ৩০ টাকা দাম বাড়তে পারে, সে প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
শিঙাড়া কিংবা পুরি—দুটো খাদ্যের জন্যই দরকার ময়দা আর তেল। যুদ্ধের কারণে এই দুটো পণ্যের দাম বেড়েছে বটে, কিন্তু যেভাবে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে, তাকে যুক্তিসংগত ভাবার কোনো কারণ নেই। ৫ টাকা আকারের শিঙাড়া বা পুরি যদি ১০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে, যুদ্ধ ছাড়াও একটা ‘এক্স’ ফ্যাক্টর এখানে কাজ করছে।
দুই. বাজারে যাঁরা নিয়মিত যান, তাঁরা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন, কয়েক বছর আগেও যে টাকা পকেটে করে নিয়ে গেলে নিজেকে বেশ রাজা রাজা মনে হতো, আজ সেই টাকা নিয়ে বাজারে যেতে লজ্জা করে। গরুর মাংসের দাম যে আকাশছোঁয়া হয়ে গেল, সেটা মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা। উচ্চবিত্ত মানুষের কাছে বাজারদর কখনোই খুব বেশি বড় সমস্যা নয়। নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে এখন গরু বা খাসির মাংস কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এখনো গরিব মানুষের ঘরে প্রোটিনের জোগান দেয় যে মাংস, সেটা ব্রয়লার। কিছুদিন ধরে সেই মাংসের দামও নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে।
মাছ নিয়ে কথা বলার জন্য হিম্মত থাকতে হয়। মাছের দাম এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যা কল্পনায় আনতেও ভয় লাগে। ঢাকার টাউন হল বাজারে পুঁটি মাছ কিনতে গিয়ে দাম শুনতে হলো ১ হাজার টাকা কেজি। মাছগুলো একটু বড় আকারের বটে, কিন্তু কী কারণে সেই মাছের দাম চার অঙ্কের হবে, তা বুঝতে পারলাম না। কিন্তু কিছুক্ষণ আশপাশে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল, ১ হাজার টাকা দরে মাছ কেনার ক্রেতা বিরল নয়। তাঁদের হাতে কোত্থেকে টাকা আসে, তা নিয়ে গবেষণা করলে আরও কত নতুন গল্প এসে ভিড় জমাবে!
পাবদা একসময় অভিজাত মাছ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু চাষের কারণে সহজলভ্য হয়ে পড়ায় পাবদা-কই-শিং-মাগুর বরং অন্য অনেক মাছের চেয়ে সস্তা। কাজরি মাছ কিংবা তপসে মাছের দাম জিজ্ঞেস করুন তো বাজারে গিয়ে। চমকে উঠবেন!
সবজির বাজারটা মাঝে মাঝে গরিবের ঘরের বউ হয়, তখনো হয় রাজকুমারী—দেমাকে পা মাটিতে পড়ে না। পেঁয়াজ-বেগুন-লাউ নিয়ে কত কিছু যে ঘটে যায়, তার নাটকীয় কাহিনি বাজার করতে যাওয়া প্রতিটি মানুষ জানে।
বাজার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাটা যদি চাহিদা-জোগানের ওপর নির্ভর করত, তাহলে হয়তো দাম বাড়া-কমার একটা চিত্র পাওয়া যেত, কিন্তু সবখানেই তো দেখা যায় সিন্ডিকেটের জয়জয়কার। কিছুদিনের জন্য পণ্য গায়েব করে দিলেই কোটি কোটি টাকা ঘরে তোলা যায়। এই হিসাব তো অহরহ দেখা যাচ্ছে এখন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করলে কিংবা ভারত তা রপ্তানি করতে না চাইলে কীভাবে দাম বেড়ে যায়, সেটা কি আমরা দেখিনি? মজুত পেঁয়াজ তখন ‘গায়েব’ হয়ে যায়। দাম আরেকটু বাড়লে পেঁয়াজগুলো হেসেখেলে আবার আসে দোকানে। দামের ওঠানামার ওপর ‘চোর-পুলিশ’ খেলা চলতেই থাকে।
তেলের কথাও একইভাবে বলা যায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেটের মতো পুরো বাজার থেকে তেল উধাও করে দিল, সেই ঘটনার দগদগে ঘা তো এখনো আমাদের শরীরে। এই সবকিছুর জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দায়ী নয়। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিশ্রেণির মানুষের নিদারুণ অসততা, মজুতদারিপ্রবণতা, গরিব মানুষের পকেট কেটে সম্পদ গড়ে তোলার অমানবিক কর্মপ্রয়াসই প্রধানত দায়ী।
তিন. তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গটি কি ভুল?
না, একেবারেই ভুল নয়। তবে এখন যাকে যুদ্ধের ফল হিসেবে দেখাতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা, সেটা মিথ্যে। যতটা দাম বাড়ানো হয়েছে, ততটা বাড়ানোর মতো কারণ ঘটেনি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নিয়েছেন।
এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে যেভাবে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন পাল্টে যাবে, সেটা এখন কল্পনায়ও আনা যাচ্ছে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গল্পটা আমরা কার কাছ থেকে শুনছি, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমা দুনিয়া তাদের প্রচারণা যন্ত্রটিকে এতটাই শাণিত করে ফেলেছে এবং গরিব দেশগুলোর এতটাই আস্থাভাজন হয়ে উঠেছে তারা যে গরিব দেশগুলো পশ্চিমা বিশ্বের চশমা চোখে গলিয়েই পৃথিবীটাকে দেখে। নিজেদের কিছু বলার মতো রসদের অধিকারী তারা হয়ে ওঠে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যদি শুধু পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা শুনতে থাকে মানুষ, তাহলে সে বিশ্বাস করবে, সবকিছুর জন্য রাশিয়াই দায়ী। অথচ দনবাসের রুশ ভাষাভাষী নাগরিকদের প্রতি ইউক্রেন কতটা নৃশংস আচরণ করেছে, সে কথা পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটার পর একটা নিষেধাজ্ঞা দিয়েও যখন রাশিয়াকে দমানো যাচ্ছে না, তখন রাশিয়াকে নিয়ে আজগুবি সব গল্পও বানানো হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢালছেন ইউক্রেনে, অস্ত্র ব্যবসা করে যাচ্ছেন, ইউক্রেন কি জানে না, এর মাশুল একসময় তার দেশের মানুষকেই দিতে হবে?
অন্যদিকে, রাশিয়াকেও গণমানুষের বন্ধুরাষ্ট্র মনে করার কোনো কারণ নেই। এই যুদ্ধের পরিণতিতে সারা বিশ্বের মানুষ যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সে কথা রাশিয়া কি জানত না? ভ্লাদিমির পুতিনকে কি জনদরদি নেতা বলে মান্য করতে হবে? তাঁর একনায়কতন্ত্রী আচরণে রাশিয়ার মানুষ যে ধুঁকছে, সে কথাও কি কারও অজানা? তবে আমাদের দুর্ভাগ্য, দুই পক্ষের কথা শোনার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। বিদেশি কিছু নিরপেক্ষ পত্রপত্রিকায় যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো লেখা পড়ি, তখন মনে হয়, এ হলো সাম্রাজ্যবাদীদের অভ্যন্তরীণ লীলাখেলা, যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সারা বিশ্বের সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ।
তাহলে যুদ্ধে লাভবান হলো কে?
এক অর্থে, এই যুদ্ধ চীনকে একটা শক্তিশালী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ডলারকে হটিয়ে দিয়ে রুবল-ইউয়ান বাণিজ্যজগতে নতুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে উঠে আসছে। ইউরোপ-আমেরিকাজুড়ে নতুন পৃথিবীর মুদ্রাব্যবস্থা পাল্টে যাবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ।
কিন্তু তাতে কতটা ক্ষতি হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষের, সে অঙ্ক কেউ কষছে না।
চার. আপাত দূরের একটি বিষয়কে এখানে টেনে আনা হলো বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একেবারেই তা নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আলাপটা এখানে খুব জরুরি। রাশিয়ার তেল আর গ্যাস নিয়ে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার অভিঘাত কী হবে, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। তৃতীয় মাধ্যম হয়ে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়ায় রপ্তানির পথ খুঁজছে ইউরোপ, সেটাও তো দেখা যাচ্ছে। রাশিয়া আর ইউক্রেনের খাদ্যশস্য যদি রপ্তানি করা না যায়, তাহলে সমূহ বিপদে পড়তে যাচ্ছে—বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকার মানুষেরা।
বিশ্ববাণিজ্য খুবই জরুরি একটা বিষয় এখানে। যত বড় শত্রুই হোক না কেন, বাণিজ্য-স্বার্থে এই শত্রুতার সময়ও তলে তলে ব্যবসাটা পাকিয়ে নেওয়া চলছে। পৃথিবীর সব পুঁজিপতিই ‘পুঁজি’কেই সর্বাগ্রে স্থান দেয়।
আমরা লক্ষ রাখছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের দিকেও। সংযত হয়ে প্রকল্প হাতে নিতে বলছেন তিনি। মেগা প্রজেক্টগুলো কাজের না হলে অকারণে ঋণের বোঝা যে বাড়ানো যাবে না, সে বার্তা কিন্তু দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভয় হলো, ‘খাই খাই পার্টি’ কি এই বিপৎসংকেত আমলে নেবে? শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের দেশের পরিস্থিতি মেলানো ঠিক হবে না, কিন্তু সরকারের নানা অলিতে-গলিতে ‘খাই খাই পার্টি’র উপস্থিতি থাকার আশঙ্কা কম নয় এবং তারা যেকোনো সময় জাতির দুর্দশার বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। আর তখনই আমাদের নিত্যদিনের বাজার জীবনে নেমে আসতে পারে আতঙ্ক, সে কথাটি বলার জন্যই এত কথা বলা।

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
দুটো পরোটা আর এক প্লেট ভাজির দাম রাখল ৪০ টাকা, অর্থাৎ পরোটা ১০ টাকা করে, ভাজি ২০ টাকা।
ঢাকা শহরে এখন প্রচুর সবজির আমদানি হয়েছে। দেশের কৃষকেরা কিন্তু অসাধ্যসাধন করেছেন। সবজি, ধান, মাছের চাষ খুলে দিয়েছে আশার দিগন্ত। কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ সেই সুফল কতটা পাচ্ছেন, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বলতে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী—সব সম্প্রদায়ের মানুষকেই ধরছি। যাঁরা নির্দিষ্ট অর্থপ্রাপ্তির পর সেই টাকা দিয়ে মাস কাটাতে গলদঘর্ম হন, তাঁদের কথাই বলছি।
যে আকারের দুটো পরোটা দেওয়া হয়েছিল দেশবন্ধুতে, তা বহুকাল ধরেই ৫-৬ টাকায় ছিল সীমাবদ্ধ। ভাজিটাও ১০ থেকে বেড়ে ১৫ হতে পারত। কিন্তু যে অদ্ভুত কারণগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, তার একটি হলো করোনাকালের ঝক্কি, অন্য একটি হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তৃতীয়টি হলো ব্যবসায়ীদের লোভ। তৃতীয় কারণটি কোনো অংশে অন্য দুটো কারণের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং এখানে ঠিকভাবে বলা দরকার, পৃথিবীর বহু দেশের চেয়ে আমাদের দেশে এসব অসৎ ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি। এসব ব্যবসায়ী শুধু পণ্যের দাম বাড়ান না, তাঁরা ওষুধেও ভেজাল দেওয়ার মতো সাহস রাখেন। একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর আশীর্বাদ না পেলে তাঁরা অনায়াসে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না।
ময়দাসংশ্লিষ্ট যেকোনো তৈরি খাবারেরই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিপুলভাবে। ফাস্ট ফুডের দোকানে যে চিকেন র্যাপটি এই তো সেদিন ছিল ৭০ টাকা, আজ তার গায়ে দাম ঝুলছে ১০০ টাকা। এক লাফে কী করে ৩০ টাকা দাম বাড়তে পারে, সে প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
শিঙাড়া কিংবা পুরি—দুটো খাদ্যের জন্যই দরকার ময়দা আর তেল। যুদ্ধের কারণে এই দুটো পণ্যের দাম বেড়েছে বটে, কিন্তু যেভাবে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে, তাকে যুক্তিসংগত ভাবার কোনো কারণ নেই। ৫ টাকা আকারের শিঙাড়া বা পুরি যদি ১০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে, যুদ্ধ ছাড়াও একটা ‘এক্স’ ফ্যাক্টর এখানে কাজ করছে।
দুই. বাজারে যাঁরা নিয়মিত যান, তাঁরা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন, কয়েক বছর আগেও যে টাকা পকেটে করে নিয়ে গেলে নিজেকে বেশ রাজা রাজা মনে হতো, আজ সেই টাকা নিয়ে বাজারে যেতে লজ্জা করে। গরুর মাংসের দাম যে আকাশছোঁয়া হয়ে গেল, সেটা মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা। উচ্চবিত্ত মানুষের কাছে বাজারদর কখনোই খুব বেশি বড় সমস্যা নয়। নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে এখন গরু বা খাসির মাংস কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এখনো গরিব মানুষের ঘরে প্রোটিনের জোগান দেয় যে মাংস, সেটা ব্রয়লার। কিছুদিন ধরে সেই মাংসের দামও নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে।
মাছ নিয়ে কথা বলার জন্য হিম্মত থাকতে হয়। মাছের দাম এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যা কল্পনায় আনতেও ভয় লাগে। ঢাকার টাউন হল বাজারে পুঁটি মাছ কিনতে গিয়ে দাম শুনতে হলো ১ হাজার টাকা কেজি। মাছগুলো একটু বড় আকারের বটে, কিন্তু কী কারণে সেই মাছের দাম চার অঙ্কের হবে, তা বুঝতে পারলাম না। কিন্তু কিছুক্ষণ আশপাশে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল, ১ হাজার টাকা দরে মাছ কেনার ক্রেতা বিরল নয়। তাঁদের হাতে কোত্থেকে টাকা আসে, তা নিয়ে গবেষণা করলে আরও কত নতুন গল্প এসে ভিড় জমাবে!
পাবদা একসময় অভিজাত মাছ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু চাষের কারণে সহজলভ্য হয়ে পড়ায় পাবদা-কই-শিং-মাগুর বরং অন্য অনেক মাছের চেয়ে সস্তা। কাজরি মাছ কিংবা তপসে মাছের দাম জিজ্ঞেস করুন তো বাজারে গিয়ে। চমকে উঠবেন!
সবজির বাজারটা মাঝে মাঝে গরিবের ঘরের বউ হয়, তখনো হয় রাজকুমারী—দেমাকে পা মাটিতে পড়ে না। পেঁয়াজ-বেগুন-লাউ নিয়ে কত কিছু যে ঘটে যায়, তার নাটকীয় কাহিনি বাজার করতে যাওয়া প্রতিটি মানুষ জানে।
বাজার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাটা যদি চাহিদা-জোগানের ওপর নির্ভর করত, তাহলে হয়তো দাম বাড়া-কমার একটা চিত্র পাওয়া যেত, কিন্তু সবখানেই তো দেখা যায় সিন্ডিকেটের জয়জয়কার। কিছুদিনের জন্য পণ্য গায়েব করে দিলেই কোটি কোটি টাকা ঘরে তোলা যায়। এই হিসাব তো অহরহ দেখা যাচ্ছে এখন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করলে কিংবা ভারত তা রপ্তানি করতে না চাইলে কীভাবে দাম বেড়ে যায়, সেটা কি আমরা দেখিনি? মজুত পেঁয়াজ তখন ‘গায়েব’ হয়ে যায়। দাম আরেকটু বাড়লে পেঁয়াজগুলো হেসেখেলে আবার আসে দোকানে। দামের ওঠানামার ওপর ‘চোর-পুলিশ’ খেলা চলতেই থাকে।
তেলের কথাও একইভাবে বলা যায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেটের মতো পুরো বাজার থেকে তেল উধাও করে দিল, সেই ঘটনার দগদগে ঘা তো এখনো আমাদের শরীরে। এই সবকিছুর জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দায়ী নয়। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিশ্রেণির মানুষের নিদারুণ অসততা, মজুতদারিপ্রবণতা, গরিব মানুষের পকেট কেটে সম্পদ গড়ে তোলার অমানবিক কর্মপ্রয়াসই প্রধানত দায়ী।
তিন. তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গটি কি ভুল?
না, একেবারেই ভুল নয়। তবে এখন যাকে যুদ্ধের ফল হিসেবে দেখাতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা, সেটা মিথ্যে। যতটা দাম বাড়ানো হয়েছে, ততটা বাড়ানোর মতো কারণ ঘটেনি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নিয়েছেন।
এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে যেভাবে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন পাল্টে যাবে, সেটা এখন কল্পনায়ও আনা যাচ্ছে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গল্পটা আমরা কার কাছ থেকে শুনছি, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমা দুনিয়া তাদের প্রচারণা যন্ত্রটিকে এতটাই শাণিত করে ফেলেছে এবং গরিব দেশগুলোর এতটাই আস্থাভাজন হয়ে উঠেছে তারা যে গরিব দেশগুলো পশ্চিমা বিশ্বের চশমা চোখে গলিয়েই পৃথিবীটাকে দেখে। নিজেদের কিছু বলার মতো রসদের অধিকারী তারা হয়ে ওঠে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যদি শুধু পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা শুনতে থাকে মানুষ, তাহলে সে বিশ্বাস করবে, সবকিছুর জন্য রাশিয়াই দায়ী। অথচ দনবাসের রুশ ভাষাভাষী নাগরিকদের প্রতি ইউক্রেন কতটা নৃশংস আচরণ করেছে, সে কথা পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটার পর একটা নিষেধাজ্ঞা দিয়েও যখন রাশিয়াকে দমানো যাচ্ছে না, তখন রাশিয়াকে নিয়ে আজগুবি সব গল্পও বানানো হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢালছেন ইউক্রেনে, অস্ত্র ব্যবসা করে যাচ্ছেন, ইউক্রেন কি জানে না, এর মাশুল একসময় তার দেশের মানুষকেই দিতে হবে?
অন্যদিকে, রাশিয়াকেও গণমানুষের বন্ধুরাষ্ট্র মনে করার কোনো কারণ নেই। এই যুদ্ধের পরিণতিতে সারা বিশ্বের মানুষ যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সে কথা রাশিয়া কি জানত না? ভ্লাদিমির পুতিনকে কি জনদরদি নেতা বলে মান্য করতে হবে? তাঁর একনায়কতন্ত্রী আচরণে রাশিয়ার মানুষ যে ধুঁকছে, সে কথাও কি কারও অজানা? তবে আমাদের দুর্ভাগ্য, দুই পক্ষের কথা শোনার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। বিদেশি কিছু নিরপেক্ষ পত্রপত্রিকায় যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো লেখা পড়ি, তখন মনে হয়, এ হলো সাম্রাজ্যবাদীদের অভ্যন্তরীণ লীলাখেলা, যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সারা বিশ্বের সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ।
তাহলে যুদ্ধে লাভবান হলো কে?
এক অর্থে, এই যুদ্ধ চীনকে একটা শক্তিশালী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ডলারকে হটিয়ে দিয়ে রুবল-ইউয়ান বাণিজ্যজগতে নতুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে উঠে আসছে। ইউরোপ-আমেরিকাজুড়ে নতুন পৃথিবীর মুদ্রাব্যবস্থা পাল্টে যাবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ।
কিন্তু তাতে কতটা ক্ষতি হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষের, সে অঙ্ক কেউ কষছে না।
চার. আপাত দূরের একটি বিষয়কে এখানে টেনে আনা হলো বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একেবারেই তা নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আলাপটা এখানে খুব জরুরি। রাশিয়ার তেল আর গ্যাস নিয়ে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার অভিঘাত কী হবে, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। তৃতীয় মাধ্যম হয়ে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়ায় রপ্তানির পথ খুঁজছে ইউরোপ, সেটাও তো দেখা যাচ্ছে। রাশিয়া আর ইউক্রেনের খাদ্যশস্য যদি রপ্তানি করা না যায়, তাহলে সমূহ বিপদে পড়তে যাচ্ছে—বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকার মানুষেরা।
বিশ্ববাণিজ্য খুবই জরুরি একটা বিষয় এখানে। যত বড় শত্রুই হোক না কেন, বাণিজ্য-স্বার্থে এই শত্রুতার সময়ও তলে তলে ব্যবসাটা পাকিয়ে নেওয়া চলছে। পৃথিবীর সব পুঁজিপতিই ‘পুঁজি’কেই সর্বাগ্রে স্থান দেয়।
আমরা লক্ষ রাখছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের দিকেও। সংযত হয়ে প্রকল্প হাতে নিতে বলছেন তিনি। মেগা প্রজেক্টগুলো কাজের না হলে অকারণে ঋণের বোঝা যে বাড়ানো যাবে না, সে বার্তা কিন্তু দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভয় হলো, ‘খাই খাই পার্টি’ কি এই বিপৎসংকেত আমলে নেবে? শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের দেশের পরিস্থিতি মেলানো ঠিক হবে না, কিন্তু সরকারের নানা অলিতে-গলিতে ‘খাই খাই পার্টি’র উপস্থিতি থাকার আশঙ্কা কম নয় এবং তারা যেকোনো সময় জাতির দুর্দশার বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। আর তখনই আমাদের নিত্যদিনের বাজার জীবনে নেমে আসতে পারে আতঙ্ক, সে কথাটি বলার জন্যই এত কথা বলা।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
০৬ জুন ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
০৬ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
০৬ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

হাটখোলার কাছে ‘দেশবন্ধু’ নামে যে রেস্তোরাঁটা আছে, তার পরোটা-ভাজির সুনাম বহুদিনের। করোনার সময় রেস্তোরাঁয় বসে খেতে একটা সংশয় কাজ করত। করোনা কমে যাওয়ায় এখন সাহস কিছুটা বেড়েছে। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি খাওয়া হলো ওদের টেবিল-চেয়ারে বসেই।
০৬ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫