Ajker Patrika

আবারও করোনা?

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

চীন থেকে নতুন করে করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। বিএফ-৭ ধরনের করোনাভাইরাস আগের চেয়ে মারাত্মক বলে মনে করা হচ্ছে। শনিবার আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, করোনার নতুন ধরন সংক্রমণের ধাক্কা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে চীন। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর চাপ। প্রতিদিন ঠিক কতজন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা চীনা কর্তৃপক্ষ নাজানালেও 
দেশটির করোনা পরিস্থিতিকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিদিন সম্ভবত পাঁচ হাজারের বেশি রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। শুক্রবার মধ্য চীনের হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। চংকিং শহরের পিপলস হাসপাতালে ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা। এএফপির প্রতিনিধি হাসপাতাল 
ঘুরে দেখেছেন, সাধারণ শয্যা, জরুরি বিভাগ ও ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে বয়স্ক ও মধ্যবয়স্ক করোনা রোগীতে ভরা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহান প্রদেশেই প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল এবং বিশ্বের ২৩৯টি দেশ ও অঞ্চলে এর বিস্তার ঘটেছিল। করোনায় প্রায় ৬৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে চীনে করোনার খবর প্রকাশে কঠোর বিধিনিষেধ চলছিল। বিক্ষোভের মুখে চলতি মাসের শুরুর দিকে বেশির ভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেয় সরকার। তার পর থেকেই দেশটিতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে দেখা গেছে।

চীনের বিএফ-৭ ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ভারতজুড়েও শুরু হয়েছে ব্যাপক সতর্কতা। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীকে জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরতে এবং করোনার পরীক্ষার ওপর জোর দিতে অনুরোধ করেছেন। তবে এখনই লকডাউন বা অন্য কোনো কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ঘোষিত হয়নি।

তবে শুক্রবার থেকে ভারতে চালু হয়েছে করোনা মোকাবিলায় ন্যাসাল ভ্যাকসিন বা নাকে করোনা টিকা দেওয়া। ভারত বায়োটেকের তৈরি ন্যাজাল ভ্যাকসিনটি বুস্টার ডোজ হিসেবে কাজ করবে।

চীনের করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক বিএফ-৭ ধরনটি প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতে শনাক্ত হওয়ায় আমাদেরও সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতা অবলম্বন করাই ভালো। সতর্কতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। আগের দুই দফায় বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি দেশজুড়ে লকডাউনের মতো কঠোর ব্যবস্থা না নিয়েও ভালো ফল পেয়েছিল।

দেশে অনেকের মধ্যে করোনা নিয়ে একধরনের উদাসীনতাও আছে। এই ভাইরাস প্রতিরোধের আগাম প্রতিকারমূলক কিছু ব্যবস্থা—যেমন জনবহুল স্থানে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, সাবান ও পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া ইত্যাদি ব্যবস্থা আমরা এখনো অব্যাহত রাখতে পারি। এগুলো করলে যেহেতু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সেহেতু বড় বিপদ এড়ানোর জন্য এই অনুশীলনগুলো চালিয়ে যাওয়াই দরকার। দেশে এখনো করোনার এই নতুন ধরন শনাক্ত না হলেও কাছাকাছি যেহেতু সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, সেহেতু সাবধান হতে ক্ষতি কি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত