আজাদুল আদনান, ঢাকা
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বেঁচে থাকাদের অনেকের জীবনটাও যেন বদলে দিয়েছে এ মহামারি। তাঁদেরই একজন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার আলপিনা আক্তার। পরিবারের অসচেতনতা আলপিনার জীবনে দুঃস্বপ্ন নিয়ে আসে। বাল্যবিবাহের কারণে ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তাঁর পড়াশোনার স্বপ্ন।
২০২০ সালের এপ্রিলের কথা। মহামারিতে অন্য সবার মতো তখন ঘরবন্দী ছিলেন এই দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এর মধ্যেই বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে আলপিনার পরিবার। সে যাত্রায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিয়ে বন্ধ হয়। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। পাঁচ মাস পর ঠিকই বিয়ে হয়ে যায়। ফলে মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরোতেই থেমে যায় আলপিনার জীবন।
মহামারিতে আলপিনার মতো অনেক কিশোরীর গল্পটাও প্রায় একই রকম। ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত শুধু কিশোরগঞ্জ জেলায়ই ৪৯৬ জন কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি) প্রকল্পের আওতায় জেলার ৮৬টি গ্রামের তথ্য উঠে এসেছে জরিপে। তা ছাড়া, দেশের অন্য জেলাগুলোয়ও বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়ার তথ্য প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে বাল্যবিবাহের হার ৫৯ শতাংশ। করোনাকালে বাল্যবিবাহ বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধে আইনের কোনো ঘাটতি নেই, প্রয়োজন আইনের সঠিক বাস্তবায়ন। অনেকেই ভাবেন, মেয়েদের বিয়ে দিয়ে পরিবারের বোঝা কমাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের এটা বোঝাতে হবে যে মেয়েকে যোগ্য করে বিয়ে দেওয়া হলে পরিবারও সমৃদ্ধ হয়। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সচেতনতা প্রয়োজন।’
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের প্রচলন সবচেয়ে বেশি। এমনকি বিশ্বের শীর্ষ দশ দেশের মধ্যেও বাংলাদেশ চতুর্থ। বর্তমানে বাংলাদেশে ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের ৫১ শতাংশেরই বাল্যবিবাহ হয়েছে। সেই হিসাবে এই মুহূর্তে দেশে বাল্যবিবাহের শিকার নারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদন বলছে, করোনাকালে দেশে গড়ে প্রতিদিন ৬৫টি করে মোট ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিবাহ হয়েছে।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের অন্যতম কর্মসূচি কিশোর-কিশোরী ক্লাব। এই প্রকল্পের মাঠ তত্ত্বাবধায়ক পাপিয়া সুলতানা বলেন, ‘বিপুলসংখ্যক কিশোর-কিশোরীর মাধ্যমে শুধু বাল্যবিবাহ প্রতিরোধই নয়, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও মানবিক অধিকার নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ অধিদপ্তরের নারী ও শিশু নির্যাতন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসংক্রান্ত ফোকাল পয়েন্ট উপপরিচালক মো. আবুল কাশেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক কর্মসূচি করছি। এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকেও সম্পৃক্ত করা হয়।’
দেশে বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রথাগত আইনে সাজা হিসেবে ২ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা রয়েছে। কিন্তু আইন বাস্তবায়নে তৈরি হচ্ছে নানা জটিলতা। তাই আইনের চেয়ে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টা খুবই জরুরি বলে মনে করেন মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আইনজীবী নীনা গোস্বামী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মেয়েদের যদি আত্মনির্ভরশীল এবং স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার পরিবেশ করে দেওয়া যায়। তবে বাল্যবিবাহ এমনিতেই কমে যাবে।’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বেঁচে থাকাদের অনেকের জীবনটাও যেন বদলে দিয়েছে এ মহামারি। তাঁদেরই একজন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার আলপিনা আক্তার। পরিবারের অসচেতনতা আলপিনার জীবনে দুঃস্বপ্ন নিয়ে আসে। বাল্যবিবাহের কারণে ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তাঁর পড়াশোনার স্বপ্ন।
২০২০ সালের এপ্রিলের কথা। মহামারিতে অন্য সবার মতো তখন ঘরবন্দী ছিলেন এই দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এর মধ্যেই বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে আলপিনার পরিবার। সে যাত্রায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিয়ে বন্ধ হয়। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। পাঁচ মাস পর ঠিকই বিয়ে হয়ে যায়। ফলে মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরোতেই থেমে যায় আলপিনার জীবন।
মহামারিতে আলপিনার মতো অনেক কিশোরীর গল্পটাও প্রায় একই রকম। ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত শুধু কিশোরগঞ্জ জেলায়ই ৪৯৬ জন কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি) প্রকল্পের আওতায় জেলার ৮৬টি গ্রামের তথ্য উঠে এসেছে জরিপে। তা ছাড়া, দেশের অন্য জেলাগুলোয়ও বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়ার তথ্য প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে বাল্যবিবাহের হার ৫৯ শতাংশ। করোনাকালে বাল্যবিবাহ বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধে আইনের কোনো ঘাটতি নেই, প্রয়োজন আইনের সঠিক বাস্তবায়ন। অনেকেই ভাবেন, মেয়েদের বিয়ে দিয়ে পরিবারের বোঝা কমাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের এটা বোঝাতে হবে যে মেয়েকে যোগ্য করে বিয়ে দেওয়া হলে পরিবারও সমৃদ্ধ হয়। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সচেতনতা প্রয়োজন।’
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের প্রচলন সবচেয়ে বেশি। এমনকি বিশ্বের শীর্ষ দশ দেশের মধ্যেও বাংলাদেশ চতুর্থ। বর্তমানে বাংলাদেশে ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের ৫১ শতাংশেরই বাল্যবিবাহ হয়েছে। সেই হিসাবে এই মুহূর্তে দেশে বাল্যবিবাহের শিকার নারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদন বলছে, করোনাকালে দেশে গড়ে প্রতিদিন ৬৫টি করে মোট ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিবাহ হয়েছে।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের অন্যতম কর্মসূচি কিশোর-কিশোরী ক্লাব। এই প্রকল্পের মাঠ তত্ত্বাবধায়ক পাপিয়া সুলতানা বলেন, ‘বিপুলসংখ্যক কিশোর-কিশোরীর মাধ্যমে শুধু বাল্যবিবাহ প্রতিরোধই নয়, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও মানবিক অধিকার নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ অধিদপ্তরের নারী ও শিশু নির্যাতন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসংক্রান্ত ফোকাল পয়েন্ট উপপরিচালক মো. আবুল কাশেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক কর্মসূচি করছি। এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকেও সম্পৃক্ত করা হয়।’
দেশে বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রথাগত আইনে সাজা হিসেবে ২ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা রয়েছে। কিন্তু আইন বাস্তবায়নে তৈরি হচ্ছে নানা জটিলতা। তাই আইনের চেয়ে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টা খুবই জরুরি বলে মনে করেন মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আইনজীবী নীনা গোস্বামী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মেয়েদের যদি আত্মনির্ভরশীল এবং স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার পরিবেশ করে দেওয়া যায়। তবে বাল্যবিবাহ এমনিতেই কমে যাবে।’
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪