Ajker Patrika

সেচ ভাড়া দ্বিগুণ আদায়ের অভিযোগ, অসহায় কৃষক

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২২, ১২: ৩১
সেচ ভাড়া দ্বিগুণ আদায়ের অভিযোগ, অসহায় কৃষক

নওগাঁর মান্দায় ব্যক্তিমালিকানার একটি গভীর নলকূপের অপারেটরের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সেচ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলা সেচ কমিটির বেঁধে দেওয়া ভাড়া আদায়ের নির্দেশনা মানছেন না ওই অপারেটর। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ঘটনায় উপজেলা বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী ও ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী এক কৃষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শালদহ মধ্যপাড়া গ্রামে ‘খেতমজুর সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের একটি সংগঠন বোরো ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করে। এ সমিতির সভাপতি, ক্যাশিয়ার ও অপারেটরের নেতৃত্বে এটি পরিচালনা করা হয়। চলতি মৌসুমে এক বিঘা জমিতে সেচের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে আদয় করা হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে। এর প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পাননি কৃষকেরা।

উপজেলা বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানা গেছে, উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে চলতি মৌসুমে এ দপ্তরের অধীনে গভীর নলকূপে অঞ্চল ভেদে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানার ক্ষেত্রে প্রতি বিঘায় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া আদায় করা যাবে। কোনোভাবেই এর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার সুযোগ নেই।

শালদহ গ্রামের কৃষক রবীন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, ওই গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে এবারে সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন তিনি। প্রতি বিঘার জন্য ভাড়া গুনতে হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। একটুও কম দিতে পারেননি তিনি। প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি।

একই ধরনের অভিযোগ করেন শালদহ গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক, আমিনুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, কার্তিক চন্দ্র হালদারসহ আরও অনেকে।

অভিযোগকারী কৃষক বিমান চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, গভীর নলকূপের সভাপতি কামাল হোসেন ওরফে কামরুলের নেতৃত্বে কৃষকের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্তত ৬০ বিঘা খাস জমি দখলে নিয়ে চাষাবাদ ও ভোগদখল করেছেন সমিতির সদস্যরা। তিনি আরও বলেন, কোনো কৃষক এসবের প্রতিবাদ করলে তাঁদের জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয় না। তাই প্রতিকার পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক ও বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।

শালদহ খেতমজুর সমবায় সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন কামরুল বলেন, গভীর নলকূপে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ জন্য প্রতি বিঘায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

উপজেলা বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা সেচ কমিটির সদস্যসচিব আনোয়ার হোসেন অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে একটি তদন্ত দল পাঠানো হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, সেচ কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত