এ কে এম শামসুদ্দিন

নতুন বছর ২০২৩ সাল শুরু হতে না হতেই দু-দুটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে গেল। পাঠক হয়তো ভাবছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের নতুন কোনো গোলাগুলির ঘটনার কথা বলছি। নতুন বছরে বিরোধী দলের সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং গুলির ঘটনা ঘটলেও; যে দুটো ঘটনার কথা বলতে চাইছি, সেই ঘটনার সঙ্গে পুলিশ নয়, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা জড়িত। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনেই। মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাঈন উদ্দিন টিটু ও তাঁর অনুসারীরা ১ জানুয়ারি ভোরে বিজয় মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই উপজেলা ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর অন্যায়ভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ডজনখানেককে মারাত্মকভাবে আহত করেন। হামলার সময় সামনে থেকেই পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করা হয়েছে। এই অপকর্মের জন্য মাঈন উদ্দিন টিটুকে অবশ্য দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কি না এবং যে পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে, সেটার কোনো লাইসেন্স আছে কি না, সে সম্পর্কে বিশদ কিছু জানা যায়নি।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ১৫ জানুয়ারি ঢাকার গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে। এই ঘটনার নায়কও ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত হয়েছে বলে নতুন করে এখানে আর উল্লেখ করা হলো না। বিকাশে টাকা পাঠানোকে কেন্দ্র করে ডিএনসিসি মার্কেটের মোবাইল এজেন্ট দোকানি হাবিবুর রহমানকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বেধড়ক মারধর করলে মার্কেটের অন্য দোকানিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং মিন্টু ও তাঁর লোকজনের ওপর চড়াও হন। এ সময় মিন্টু তাঁর কোমর থেকে পিস্তল বের করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকেন। মিন্টুর পিস্তল থেকে ছোড়া গুলিতে একজন ভ্যানচালক ও একজন গাড়িচালক আহত হন। এ ঘটনায় মামলা হয় এবং গুলশান থানার পুলিশ মিন্টুসহ তিনজনকে আটক করে। ঘটনায় যে পিস্তলটি ব্যবহৃত হয়েছে, সেই পিস্তলের লাইসেন্স আছে। ২০১৬ সালে পিস্তলটির লাইসেন্স নেওয়া হয়। দেশে বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের এমন খোলামেলা ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শীর্ষ ব্যবসায়ী এবং নানা পেশা ও শ্রেণির প্রভাবশালী মানুষের এসব অস্ত্র ব্যবহার আজকাল মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে; বিশেষ করে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার সমাজে আরও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বৈধভাবে পাওয়া এসব অস্ত্র সাধারণত ব্যবহার হয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে। এমনকি এসব বৈধ অস্ত্র অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়াও হচ্ছে। এসব অস্ত্র প্রকাশ্যে উঁচিয়ে মানুষকে যেমন ভয়ভীতি দেখানো হয়, তেমনি ব্যবহার হচ্ছে রাজনৈতিক গুন্ডামি, সন্ত্রাসী হামলা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখলসহ নানা অনৈতিক কাজে। গত বছরের বেশ কয়েকটি ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দলীয় কোন্দলে অস্ত্রের ব্যবহার, ক্ষমতাসীন দলের ভেতরই সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে সংঘর্ষে অস্ত্র দিয়ে যে পরিমাণ প্রাণ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, তার চেয়ে অধিকসংখ্যক প্রাণ সংহার হচ্ছে সমমনা দলের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে। প্রায়ই বড় বড় নেতার মুখে একটি কমন বাক্য শোনা যায়, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, আর দলের চেয়ে দেশ বড়’। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, এসব নেতার ছায়াতলে বসেই দলের নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে আসছেন। রাজনৈতিক নেতাদের ভেতর জাতীয় ও দলীয় স্বার্থের ওপর ব্যক্তিস্বার্থ ভর করাতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল, এর অঙ্গসংগঠন ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা নামধারী কতিপয় ব্যক্তি অস্ত্রের জোরে যেমন নিজে দলের বিপক্ষদের কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করে থাকে, তেমনি সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা অস্ত্রের মহড়া দিলেও তাদের নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। অথচ এ ধরনের অস্ত্রের ঝনঝনানিতে নিরীহ পথচারী ও সাধারণ মানুষ হতাহতের শিকার হয়। ১৫ জানুয়ারির ঘটনায় একজন ভ্যানচালক ও গাড়িচালকের আহত হওয়ার ঘটনা এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় এক যুগ ধরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মী এবং তাঁদের অনেক স্বজনও অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি কিংবা দলীয় কোন্দলে লাইসেন্সধারী অস্ত্রও ব্যবহার হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। প্রশ্ন হচ্ছে, কাউকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার আগে তার লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কি না। অনেক সময় দেখা যায়, যাদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়, তাদের আদৌ অস্ত্র রাখার যোগ্যতা আছে কি না, সেটা দেখা হয় না। এসব অস্ত্রের অপব্যবহার হলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হয় না। এ জন্য এসব অস্ত্রের অপব্যবহার কমছে না। অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে হলে কিছু শর্ত আছে, সেই শর্তগুলো পূরণ হলেই একজন নাগরিক অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। যিনি আবেদন করবেন, তাঁর জীবনের বাস্তব ঝুঁকি থাকতে হবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই আয়করদাতা হতে হবে; বছরে ৩ লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে। অস্ত্রের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স ন্যূনতম ৩০ থেকে ৭০ বছরের নিচে হতে হবে। ১৮৭৮ সালের আর্মস অ্যাক্ট এবং ১৯২৪ সালের আর্মস রুলস আইনের আওতায় যেকোনো সামরিক বা বেসামরিক নাগরিক বৈধ অস্ত্রের আবেদন করতে পারেন। ব্যক্তিগত অস্ত্রের বিষয়ে সর্বশেষ ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬’ আইনে কেবল আত্মরক্ষার জন্য ব্যক্তিগত অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়া, এই অস্ত্র অন্য কোনো প্রয়োজনে ব্যবহারের বিধিনিষেধ আছে। এমনকি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ‘টেস্ট ফায়ার’ও করা যাবে না। ব্যক্তিগত অস্ত্র লাইসেন্সধারী ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও ব্যবহারের অনুমতি নেই। এমনকি কোনো ব্যক্তি দেহরক্ষীকে ব্যবহারের জন্যও দিতে পারবেন না; বিশেষ কোনো প্রয়োজনে দেহরক্ষীকে ব্যবহার করতে হলে তার নামে লাইসেন্স থাকতে হবে। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা ব্যক্তিগত অস্ত্র ব্যবহার-সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে আরও বিস্তারিত ব্যবহারবিধি উল্লেখ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬’-এর অনুচ্ছেদ ২৫ (গ) অনুযায়ী, ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তি নিজ ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা সম্পত্তি রক্ষার জন্য অস্ত্রধারী প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত হতে পারবে না।’ একই ধারার অনুচ্ছেদ ২৫ (ক) অনুযায়ী, ‘কোনো ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্স এন্ট্রিকৃত অস্ত্র আত্মরক্ষার নিমিত্ত নিজে বহন/ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অন্যের ভীতি/বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে, এরূপভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না।’ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘এই আইন অনুসরণপূর্বক প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। অন্যথায় আদেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিধান মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ কিন্তু আমাদের দেশে দেখা গেছে, এত পরিষ্কার আইন থাকা সত্ত্বেও এ আইনের যথেচ্ছ বরখেলাপ হচ্ছে।
বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার যেমন হচ্ছে, তেমনি বৈধ অস্ত্রের দোকানের আড়ালে অবৈধ অস্ত্র বিক্রির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে একটি সংঘবদ্ধ চক্র বৈধ অস্ত্রের পরিচিতিমূলক কোড নম্বর ও কোম্পানির নাম মুছে বেশি মূল্যে বিক্রি করছে পিস্তল, রিভলবারসহ ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র থেকে শুরু করে একে-৪৭-এর মতো মারাত্মক অস্ত্র। এভাবেই পেশাদার অপরাধী, রাজনৈতিক ক্যাডারদের হাতে অবৈধ অস্ত্র চলে যাচ্ছে। ইউনিয়ন, উপজেলা কিংবা সংসদ উপনির্বাচনের সময় নির্বাচনী সহিংসতায় এসব অস্ত্রের বেশি ব্যবহার হতে দেখা যায়। এ ধরনের অস্ত্র কিনতে লাইসেন্সের দরকার হয় না। উপরন্তু এসব অস্ত্র দিয়ে মানুষ হত্যা করলেও সহজে শনাক্ত করা যায় না।
দেশে ৮৪ জন বৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁরা অস্ত্র আমদানি করেন। আবার কেউ কেউ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করেন। কোনো কোনো অস্ত্র ব্যবসায়ী অস্ত্র সংগ্রহের সময় চাহিদাপত্রের বাইরে অস্ত্র কিনে থাকেন। অতিরিক্ত এই অস্ত্রের লিখিত দলিল স্থানীয় ডিপুটি কালেক্টরের কাছে গোপন রাখেন। অতঃপর ওই সব অস্ত্রের ব্র্যান্ড ও নম্বর মুছে ফেলে চড়া দামে বিক্রি করেন। এসব অস্ত্রের ব্যবসা ও ব্যবহারের বিষয় পুলিশের বিশেষ শাখা ও স্থানীয় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নিয়মিত নজরদারির নির্দেশ থাকলেও ঠিকমতো নজরে রাখা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তো সন্দেহ রয়েই গেছে।
কেউ যদি বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করেন, তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম আছে। প্রমাণ সাপেক্ষে ওই ব্যক্তির অস্ত্রের লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করার বিধানও আছে। বিগত বছরগুলোয় বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের ফলে অনেকের লাইসেন্স বাতিল হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে সেসব ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যেসব ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে, কোনোভাবেই সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি, তেমন কিছু লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি কিংবা ক্ষমতাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটনা যে ঘটেনি, তা নয়। অনেক সময় দেখা গেছে, ‘চুজ অ্যান্ড পিক’ পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ হোক, দেশের সব নাগরিকই চান। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর যদি উচ্চমহলের চাপ না থাকে, তাহলে শূন্যের কোঠায় আনা সম্ভব না হলেও বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

নতুন বছর ২০২৩ সাল শুরু হতে না হতেই দু-দুটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে গেল। পাঠক হয়তো ভাবছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের নতুন কোনো গোলাগুলির ঘটনার কথা বলছি। নতুন বছরে বিরোধী দলের সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং গুলির ঘটনা ঘটলেও; যে দুটো ঘটনার কথা বলতে চাইছি, সেই ঘটনার সঙ্গে পুলিশ নয়, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা জড়িত। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনেই। মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাঈন উদ্দিন টিটু ও তাঁর অনুসারীরা ১ জানুয়ারি ভোরে বিজয় মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই উপজেলা ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর অন্যায়ভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ডজনখানেককে মারাত্মকভাবে আহত করেন। হামলার সময় সামনে থেকেই পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করা হয়েছে। এই অপকর্মের জন্য মাঈন উদ্দিন টিটুকে অবশ্য দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কি না এবং যে পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে, সেটার কোনো লাইসেন্স আছে কি না, সে সম্পর্কে বিশদ কিছু জানা যায়নি।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ১৫ জানুয়ারি ঢাকার গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে। এই ঘটনার নায়কও ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত হয়েছে বলে নতুন করে এখানে আর উল্লেখ করা হলো না। বিকাশে টাকা পাঠানোকে কেন্দ্র করে ডিএনসিসি মার্কেটের মোবাইল এজেন্ট দোকানি হাবিবুর রহমানকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বেধড়ক মারধর করলে মার্কেটের অন্য দোকানিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং মিন্টু ও তাঁর লোকজনের ওপর চড়াও হন। এ সময় মিন্টু তাঁর কোমর থেকে পিস্তল বের করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকেন। মিন্টুর পিস্তল থেকে ছোড়া গুলিতে একজন ভ্যানচালক ও একজন গাড়িচালক আহত হন। এ ঘটনায় মামলা হয় এবং গুলশান থানার পুলিশ মিন্টুসহ তিনজনকে আটক করে। ঘটনায় যে পিস্তলটি ব্যবহৃত হয়েছে, সেই পিস্তলের লাইসেন্স আছে। ২০১৬ সালে পিস্তলটির লাইসেন্স নেওয়া হয়। দেশে বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের এমন খোলামেলা ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শীর্ষ ব্যবসায়ী এবং নানা পেশা ও শ্রেণির প্রভাবশালী মানুষের এসব অস্ত্র ব্যবহার আজকাল মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে; বিশেষ করে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার সমাজে আরও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বৈধভাবে পাওয়া এসব অস্ত্র সাধারণত ব্যবহার হয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে। এমনকি এসব বৈধ অস্ত্র অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়াও হচ্ছে। এসব অস্ত্র প্রকাশ্যে উঁচিয়ে মানুষকে যেমন ভয়ভীতি দেখানো হয়, তেমনি ব্যবহার হচ্ছে রাজনৈতিক গুন্ডামি, সন্ত্রাসী হামলা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখলসহ নানা অনৈতিক কাজে। গত বছরের বেশ কয়েকটি ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দলীয় কোন্দলে অস্ত্রের ব্যবহার, ক্ষমতাসীন দলের ভেতরই সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে সংঘর্ষে অস্ত্র দিয়ে যে পরিমাণ প্রাণ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, তার চেয়ে অধিকসংখ্যক প্রাণ সংহার হচ্ছে সমমনা দলের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে। প্রায়ই বড় বড় নেতার মুখে একটি কমন বাক্য শোনা যায়, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, আর দলের চেয়ে দেশ বড়’। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, এসব নেতার ছায়াতলে বসেই দলের নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে আসছেন। রাজনৈতিক নেতাদের ভেতর জাতীয় ও দলীয় স্বার্থের ওপর ব্যক্তিস্বার্থ ভর করাতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল, এর অঙ্গসংগঠন ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা নামধারী কতিপয় ব্যক্তি অস্ত্রের জোরে যেমন নিজে দলের বিপক্ষদের কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করে থাকে, তেমনি সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা অস্ত্রের মহড়া দিলেও তাদের নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। অথচ এ ধরনের অস্ত্রের ঝনঝনানিতে নিরীহ পথচারী ও সাধারণ মানুষ হতাহতের শিকার হয়। ১৫ জানুয়ারির ঘটনায় একজন ভ্যানচালক ও গাড়িচালকের আহত হওয়ার ঘটনা এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় এক যুগ ধরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মী এবং তাঁদের অনেক স্বজনও অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি কিংবা দলীয় কোন্দলে লাইসেন্সধারী অস্ত্রও ব্যবহার হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। প্রশ্ন হচ্ছে, কাউকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার আগে তার লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কি না। অনেক সময় দেখা যায়, যাদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়, তাদের আদৌ অস্ত্র রাখার যোগ্যতা আছে কি না, সেটা দেখা হয় না। এসব অস্ত্রের অপব্যবহার হলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হয় না। এ জন্য এসব অস্ত্রের অপব্যবহার কমছে না। অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে হলে কিছু শর্ত আছে, সেই শর্তগুলো পূরণ হলেই একজন নাগরিক অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। যিনি আবেদন করবেন, তাঁর জীবনের বাস্তব ঝুঁকি থাকতে হবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই আয়করদাতা হতে হবে; বছরে ৩ লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে। অস্ত্রের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স ন্যূনতম ৩০ থেকে ৭০ বছরের নিচে হতে হবে। ১৮৭৮ সালের আর্মস অ্যাক্ট এবং ১৯২৪ সালের আর্মস রুলস আইনের আওতায় যেকোনো সামরিক বা বেসামরিক নাগরিক বৈধ অস্ত্রের আবেদন করতে পারেন। ব্যক্তিগত অস্ত্রের বিষয়ে সর্বশেষ ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬’ আইনে কেবল আত্মরক্ষার জন্য ব্যক্তিগত অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়া, এই অস্ত্র অন্য কোনো প্রয়োজনে ব্যবহারের বিধিনিষেধ আছে। এমনকি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ‘টেস্ট ফায়ার’ও করা যাবে না। ব্যক্তিগত অস্ত্র লাইসেন্সধারী ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও ব্যবহারের অনুমতি নেই। এমনকি কোনো ব্যক্তি দেহরক্ষীকে ব্যবহারের জন্যও দিতে পারবেন না; বিশেষ কোনো প্রয়োজনে দেহরক্ষীকে ব্যবহার করতে হলে তার নামে লাইসেন্স থাকতে হবে। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা ব্যক্তিগত অস্ত্র ব্যবহার-সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে আরও বিস্তারিত ব্যবহারবিধি উল্লেখ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬’-এর অনুচ্ছেদ ২৫ (গ) অনুযায়ী, ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তি নিজ ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা সম্পত্তি রক্ষার জন্য অস্ত্রধারী প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত হতে পারবে না।’ একই ধারার অনুচ্ছেদ ২৫ (ক) অনুযায়ী, ‘কোনো ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্স এন্ট্রিকৃত অস্ত্র আত্মরক্ষার নিমিত্ত নিজে বহন/ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অন্যের ভীতি/বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে, এরূপভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না।’ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘এই আইন অনুসরণপূর্বক প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। অন্যথায় আদেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিধান মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ কিন্তু আমাদের দেশে দেখা গেছে, এত পরিষ্কার আইন থাকা সত্ত্বেও এ আইনের যথেচ্ছ বরখেলাপ হচ্ছে।
বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার যেমন হচ্ছে, তেমনি বৈধ অস্ত্রের দোকানের আড়ালে অবৈধ অস্ত্র বিক্রির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে একটি সংঘবদ্ধ চক্র বৈধ অস্ত্রের পরিচিতিমূলক কোড নম্বর ও কোম্পানির নাম মুছে বেশি মূল্যে বিক্রি করছে পিস্তল, রিভলবারসহ ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র থেকে শুরু করে একে-৪৭-এর মতো মারাত্মক অস্ত্র। এভাবেই পেশাদার অপরাধী, রাজনৈতিক ক্যাডারদের হাতে অবৈধ অস্ত্র চলে যাচ্ছে। ইউনিয়ন, উপজেলা কিংবা সংসদ উপনির্বাচনের সময় নির্বাচনী সহিংসতায় এসব অস্ত্রের বেশি ব্যবহার হতে দেখা যায়। এ ধরনের অস্ত্র কিনতে লাইসেন্সের দরকার হয় না। উপরন্তু এসব অস্ত্র দিয়ে মানুষ হত্যা করলেও সহজে শনাক্ত করা যায় না।
দেশে ৮৪ জন বৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁরা অস্ত্র আমদানি করেন। আবার কেউ কেউ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করেন। কোনো কোনো অস্ত্র ব্যবসায়ী অস্ত্র সংগ্রহের সময় চাহিদাপত্রের বাইরে অস্ত্র কিনে থাকেন। অতিরিক্ত এই অস্ত্রের লিখিত দলিল স্থানীয় ডিপুটি কালেক্টরের কাছে গোপন রাখেন। অতঃপর ওই সব অস্ত্রের ব্র্যান্ড ও নম্বর মুছে ফেলে চড়া দামে বিক্রি করেন। এসব অস্ত্রের ব্যবসা ও ব্যবহারের বিষয় পুলিশের বিশেষ শাখা ও স্থানীয় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নিয়মিত নজরদারির নির্দেশ থাকলেও ঠিকমতো নজরে রাখা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তো সন্দেহ রয়েই গেছে।
কেউ যদি বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করেন, তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম আছে। প্রমাণ সাপেক্ষে ওই ব্যক্তির অস্ত্রের লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করার বিধানও আছে। বিগত বছরগুলোয় বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের ফলে অনেকের লাইসেন্স বাতিল হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে সেসব ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যেসব ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে, কোনোভাবেই সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি, তেমন কিছু লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি কিংবা ক্ষমতাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটনা যে ঘটেনি, তা নয়। অনেক সময় দেখা গেছে, ‘চুজ অ্যান্ড পিক’ পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ হোক, দেশের সব নাগরিকই চান। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর যদি উচ্চমহলের চাপ না থাকে, তাহলে শূন্যের কোঠায় আনা সম্ভব না হলেও বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

নতুন বছর ২০২৩ সাল শুরু হতে না হতেই দু-দুটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে গেল। পাঠক হয়তো ভাবছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের নতুন কোনো গোলাগুলির ঘটনার কথা বলছি। নতুন বছরে বিরোধী দলের সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং গুলির
২১ জানুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

নতুন বছর ২০২৩ সাল শুরু হতে না হতেই দু-দুটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে গেল। পাঠক হয়তো ভাবছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের নতুন কোনো গোলাগুলির ঘটনার কথা বলছি। নতুন বছরে বিরোধী দলের সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং গুলির
২১ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

নতুন বছর ২০২৩ সাল শুরু হতে না হতেই দু-দুটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে গেল। পাঠক হয়তো ভাবছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের নতুন কোনো গোলাগুলির ঘটনার কথা বলছি। নতুন বছরে বিরোধী দলের সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং গুলির
২১ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

নতুন বছর ২০২৩ সাল শুরু হতে না হতেই দু-দুটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে গেল। পাঠক হয়তো ভাবছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের নতুন কোনো গোলাগুলির ঘটনার কথা বলছি। নতুন বছরে বিরোধী দলের সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং গুলির
২১ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫