Ajker Patrika

সংকটে ২০ হাজার একর জমি

কক্সবাজার ও চকরিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৪৫
সংকটে ২০ হাজার একর জমি

কক্সবাজারের মাতামুহুরী নদীর সেচ প্রকল্পের রাবার ড্যাম ফেটে নোনাপানি ঢুকে পড়ছে। এতে এ ড্যামের ওপর নির্ভরশীল নদীর দুকূলের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার অন্তত ২০ হাজার একর বোরো চাষে মিঠাপানির সংকট দেখা দিয়েছে।

গত সোমবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঘগুজারা রাবার ড্যামের একটি স্প্যানের রাবার ব্যাগ ফেটে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

কৃষি অধিদপ্তর, এলাকাবাসী ও কৃষকদের সূত্রে জানা যায়, রাবার ড্যামের ব্যাগ ফেটে যাওয়ায় বোরো চাষের জন্য আটকানো মিঠাপানি সাগরের দিকে নেমে যাচ্ছে এবং জোয়ারে নোনাপানি ঢুকে পড়ছে। এতে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী, বিএমচর, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা, বদরখালী, ঢেমুশিয়া ও বরইতলী এবং পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও শীলখালী ইউনিয়নের বোরো চাষে মিঠাপানির সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এসব ইউনিয়নে এ ড্যামের ওপর অন্তত ২০ হাজার একর জমির বোরো ও রবিশস্যের চাষ হয়ে আসছে।

রাবার ড্যামের তত্ত্বাবধায়ক আবদুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে জানান, অতিরিক্ত সামুদ্রিক জোয়ারের চাপে ড্যামটির ২ নম্বর স্প্যানের রাবার ব্যাগ ফেটে যায়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, ড্যামের ওপরের অংশে বালু তোলার জন্য ৫-৬টি ড্রেজার রয়েছে। এক মাস ধরে ড্রেজার মালিকেরা রাবার ব্যাগ ডাউন করে ড্রেজারগুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে তদবির করে আসছিল। এতে কৃষক ও এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়, ড্রেজারগুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাগ ফুটো করে ফেলতে পারে। আগেও নৌকা চলাচল ও বাঁশ-গাছ ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এ রকম ঘটনা ঘটেছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১২ সালে মাতামুহুরী নদীর চকরিয়া-পেকুয়া অংশের বাঘগুজরা ও চকরিয়ার পালাকাটায় দুটি এবং এর আগে ২০০৩ সালে পেকুয়ার ভোলা খালে আরও একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করে। এই তিনটি রাবার ড্যামের সাহায্যে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে দুই উপজেলায় অন্তত ৬০ হাজার একর জমিতে ইরি-বোরো ও রবিশস্যের চাষ হয়ে আসছে।

ইরি-বোরো চাষ শেষে প্রতিবছরের মে মাসের শুরুর দিকে রাবার ড্যামগুলোর রাবার ব্যাগ আবার নামিয়ে দিয়ে মাতামুহুরী নদীর পানি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু বোরো চাষে পানি সেচের প্রয়োজনীয়তা আরও প্রায় এক মাস রয়ে গেছে। এ অবস্থায় সোমবার ভোরের কোনো একসময় পেকুয়ার বাঘগুজারা রাবার ড্যামটির ২ নম্বর স্প্যানের রাবার ছিঁড়ে গিয়ে নদীর ওপরের দিকের আটকানো মিঠাপানি বের হয়ে যাচ্ছে।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, এখন বোরো ধানের থোড় আসা শুরু হয়েছে। আরও ২০-২৫ দিন সেচের প্রয়োজন রয়েছে। এ মুহূর্তে মিঠাপানি আটকিয়ে রাখা না গেলে কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া শাখা কর্মকর্তা জামাল মোরশেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ড্যামের ব্যাগ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। হয়তো ৫-৭ দিন সময় লাগতে পারে। বালু তোলার ড্রেজার বের করতে কোনো নাশকতা করা হয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ড্যাম এলাকায় সার্বক্ষণিক পাহারা থাকে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ড্যামের ব্যাগগুলো প্রায় ১২ বছরের পুরোনো। লবণপানির ভেতরে ডুবে থাকে। তাতে ব্যাগগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, আপাতত ব্যাগটির ফুটো মেরামত করা হবে। আগামী বর্ষা মৌসুম শেষে নতুন করে রাবার ড্যামটি মেরামতের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সেনাসদস্যের বাড়িতে হামলা-আগুন দেওয়ার অভিযোগ

ফেসবুকে কমেন্টের জেরে বাড়িতে গিয়ে হুমকি, পরদিন ঢাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ

সরকারি অফিসে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ, নারীসহ গ্রেপ্তার ৩

বাংলাদেশ অধিনায়কের হাতে যে কারণে ‘তামিম নিখোঁজ’ প্ল্যাকার্ড

ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক: লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত